31/07/2025
মানিকগঞ্জ সহরের একমাত্র শিশু শিশুপার্ক এখন বন-জঙ্গলে রুপ নিয়েছে৷
মানিকগঞ্জ শহরে শিশুদের একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি এখন বন-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
২০০৭ সালে জেলা কালেক্টরেট ভবনের ৫০ গজ সামনের খালি জায়গায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা শিশুপার্ক গড়ে তোলা হয়। যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও তদারকির অভাবে এই শিশু পার্কটি রুগ্ন হয়ে পড়ে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জন্মলগ্ন থেকেই মানিকগঞ্জ অবহেলিত। তবে এই জেলা শহরের শিশুদের কোনো চিত্ত বিনোদনের নির্দিষ্ট কোন স্থান না থাকায় ২০০৭ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই পার্কটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে পার্কের নাম দেওয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা শিশুপার্ক।
প্রথমদিকে শিশুদের খেলার জন্য ৪টি স্লিপার, দোলনাসহ ৬টি বেঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়। শিশুদের এই সকল খেলনা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘ দন অকেজো হয়ে পড়ে থাকে শিশুদের বেশ কয়েকটি রাইড।
পরে জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো পার্কটি পুনরায় সংস্কারের দাবি তুলেন। একপর্যায়ে ২০১২ সালের দিকে জেলার বেশ কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ যৌথভাবে মানববন্ধন করেন পার্কটি সংস্কারের দাবিতে। শহরে যখন পার্কটি নিয়ে চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শুরু হয়, তখন প্রায় অর্ধযুগ পর ২০১৭ সালে সংস্কারের উদ্যোগ হাতে নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২০ লাখ টাকা ব্যায়ে নতুন করে সংযোজন করা হয় বৈদ্যুতিক ট্রেন, স্লিপার, দোলনা, বসার জন্য ছাউনি, বেঞ্চ, বাঘ, ভালুক, জিরাফ, হরিণসহ মোট ১৪টি ভাস্কর্য। পরে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নতুনভাবে উদ্বোধন করা হয়।
সেই একইভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পূনরায় নষ্ট হয়ে যায় পার্কের ভিতর থাকা সকল রাইড। বর্তমানে এই পার্কের ভেতর নেশা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্ম হরহামেশাই হচ্ছে।
বিমল রায় নামের এক স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের কর্মী বলেন, শিশুপার্কটি মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। শিশুদের খেলার কোনো পরিবেশ অনেক আগে থেকেই নেই। অনেক দাবির মুখে একবার সংস্থার করা হয়েছিল। তবে যথাযথ তদারকির অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে পার্কটি।
নাজমুল হাসান নামের এক অভিভাবক বলেন, এই শিশুপার্কে আমার বড় সন্তানকে নিয়ে এসেছি একটি সময়, যখন এখানে আসার পরিবেশ বা খেলার রাইডগুলো ছিল। এখন ছোট সন্তানকে নিয়ে আসবো, কিন্তু ভয় করে, পুরো পার্কটিই এখন বন-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র নেশাগ্রস্ত মানুষ বসে থাকে। আমার মনে হয়, দিনের বেলায় শিশুরা পার্কটির ভেতরে গেলে ভয় পাবে। যেহেতু শহরের ভেতর শিশুদের খেলার জায়গা নেই, তারা কোথায় খেলবে। পার্কটিকে দ্রুত সংস্থারের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ৫০ গজ দূরে এই পার্কটির বেহাল দশা। এই বিষয়টি কি তার চোখে পড়ে না, না কি তিনি না দেখার অভিনয় করছেন। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শিশুপার্কটি সংস্কারের মাধ্যমে খেলার উপযোগী করে তোলা হবে।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, শিশুপার্কটি বন-জঙ্গলে রুপ নিয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব পার্কের ভেতর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। শিশুদের খেলার যে সকল রাইড ছিল, সেগুলোর জন্য একটি বাজেট প্রয়োজন হবে, সেই অর্থ বরাদ্দ পেলেই