01/10/2025
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসব এর সূচনা যেভাবে হয়েছিল তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশে
চন্দ্রবংশীয় সুশাসক ছিলেন রাজা সুরথ।এক যুদ্ধে তিনি শত্রুদের কাছে পরাস্থ হন।রাজা সুরথ পরাস্থ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেন বনবাসের।
বনবাসের জীবনে রাজা সুরথ এক পর্যায়ে আশ্রয় নেন তপোবনে মেধা ঋষির আশ্রমে যার বর্তমান অবস্থান আজকের বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা পাহাড়ের চূড়ায়।
ওদিকে রাজা সুরথের অনুপস্থিতিতে তাঁরই অমাত্যরা রাজ্য দখল করে। ক্রমে আশ্রমের জীবনযাপন রাজার মন থেকে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ এবং মাৎসর্যের বিলোপ ঘটায়। সংসারের কোনও খেয়ালই আর তাঁর মনে স্থান পায় না। এমনকী তিনি নিজের হৃত রাজ্য নিয়েও ভাবনাচিন্তা ত্যাগ করেন।
ঠিক এমন সময় সমাধি নামক এক বৈশ্যের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলে রাজা জানতে পারেন, স্ত্রী-পুত্র-সহ তাঁর পরিবার বৈশ্যের সঙ্গে প্রতারণা করে সর্বস্ব হরণ করেছে।কিন্তু দু'জনেই নিজ নিজ পরিবারের শুভাশুভ নিয়ে উৎকণ্ঠিত। মনে প্রশ্ন জাগল, যাঁরা তাঁদের দু'জনকেই প্রতারণা করে পথে বসিয়েছে, তাদের প্রতি সামান্য ক্রোধ না জেগে হঠাৎ কেন অনুকম্পা তৈরি হচ্ছে হৃদয়ে?
দু'জনেই একসঙ্গে মেধা ঋষির শরণাপন্ন হলেন।ঋষি তখন চণ্ডীর দেবীমাহাত্ম্যের কাহিনি তুলে ধরেন।ঋষির কথা শুনে রাজা ও তাঁর সঙ্গী নদীর তীরে তিন বছর ধরে কঠোর তপস্যায় মগ্ন রইলেন। তপস্যা শেষে রাজা সুরথ দুর্গোৎসব করেন।তবে এ পুজো হয়েছিল বসন্তকালে।
আবার কেউ বলে
বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার তাহেরপুরে একসময় বসতি ছিল প্রাচীন কিছু রাজবংশের।এই বংশের রাজা কংসনারায়ণ এমন কিছু করতে চাইলেন, যার জন্য হিন্দু সমাজ তাঁকে আজীবন মনে রাখবে।রাজা পণ্ডিতদের ডাকলেন রাজসভায়।জানালেন, তিনি আয়োজন করতে চান অশ্বমেধ যজ্ঞ।পণ্ডিতেরা রাজার এ ইচ্ছে নাকচ করে দিলেন প্রথমেই।তাঁরা বললেন, কলিযুগে অশ্বমেধ যজ্ঞের বিধান শাস্ত্রে নেই।
এ কথা শুনে রাজা কংসনারায়ণের মন খারাপ। ঠিক তখনই পণ্ডিত রমেশ শাস্ত্রী দিলেন দুর্গাপুজোর পরামর্শ।কারণ, দেবী দুর্গতিনাশিনীর পুজো নিজেই এক মহাযজ্ঞ। তিনি আদেশ করলেন, এই শরতেই যেন আয়োজন হয় এ উৎসবের। কথামতো কাজ। মহাসমারোহে হলো দুর্গোৎসব।
ষোলো শতকের সে উৎসবে ব্যয় হয় প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ, মতান্তরে ৯ লক্ষ টাকা।
ছবিঃ
মেধস মুনির আশ্রম চট্টগ্রাম,
রাজশাহী তাহিরপুর,ও
বাড়াই পাড়া দুর্গা মন্ডপ
ও কেন্দ্রীয় বিষ্ণু মন্দির
নীলফামারী,বৃহত্তর রংপুর
বাংলাদেশ।