Md. Shahin Iqbal

  • Home
  • Md. Shahin Iqbal

Md. Shahin Iqbal Stronger love, better family! ❤️ সুখী সম্পর্ক ও পারিবারিক জীবন গড়ার টিপস পেতে ফলো করুন।

17/01/2025

#গল্প_তোমার_জন্য
#অধ্যায়_৪_শেষ_পর্ব

সময় এগিয়ে চলল। তমাল আর মেঘলার জীবনে ছোটখাটো পরিবর্তন এলেও তাদের ভালোবাসার বন্ধন অটুট ছিল। এই সময় তাদের জীবনে আরেকটি নতুন অধ্যায় শুরু হলো—একটি নতুন অতিথি। মেঘলা মা হতে চলেছে।

ডাক্তারের চেম্বারে বসে তমাল মেঘলার হাতে হাত রেখে বলল, "মেঘলা, আমি জানি তুমি সবকিছু সুন্দরভাবে সামলে নেবে। তুমি তো আগে থেকেই একজন অসাধারণ মানুষ। এবার তুমি একজন অসাধারণ মা হবে।"
মেঘলা হাসতে হাসতে বলল, "তাহলে তুমি একজন অসাধারণ বাবা হবে, তমাল।"

মেঘলা যখন হাসপাতালে ছিল, তখন তমাল প্রতিটা মুহূর্ত তার পাশে ছিল। অবশেষে সেই বিশেষ দিন এলো। তাদের জীবনে এক ফুটফুটে মেয়ে এল। তমাল মেঘলার কোলের দিকে তাকিয়ে বলল, "মেঘলা, আমাদের মেয়েটার নাম কী রাখব?"
মেঘলা একটু ভেবে বলল, "আকাশ। আকাশে মেঘ থাকে। তুমি আকাশ, আমি মেঘ। আর এই আমাদের আকাশের আলো।"

তমাল মুচকি হেসে বলল, "আমাদের আকাশের আলো, অদিতি।"

অদিতি বাড়তে লাগল, আর তার সঙ্গে বাড়তে লাগল তমাল আর মেঘলার জীবনের নতুন অভিজ্ঞতা। অদিতি ছিল খুবই চঞ্চল আর বুদ্ধিমতী। তমাল আর মেঘলা তার খেলার সঙ্গী হয়ে উঠল।
একদিন অদিতি মেঘলার কোলে বসে বলল, "মা, তুমি কেন এত কবিতা লেখো?"
মেঘলা হাসতে হাসতে বলল, "কারণ কবিতা আমার মনে যা আছে তা বলে দেয়।"
অদিতি বলল, "তাহলে আমাকেও শিখিও। আমি তোমার মতো লিখতে চাই।"

তমাল মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলল, "দেখলে? আমাদের ছোট্ট মেঘও কবি হতে চায়।"
মেঘলা হেসে বলল, "আমার বিশ্বাস, ও একদিন আমাদের গল্পটাকে আরও সুন্দর করে তুলবে।"

অদিতি বড় হতে লাগল। সে তার স্কুলে প্রথমবারের মতো কবিতা প্রতিযোগিতায় অংশ নিল। প্রতিযোগিতায় তার কবিতার বিষয় ছিল "বৃষ্টি।" মেঘলা যখন তার কবিতাটা শুনল, তখন চোখে জল এসে গেল।
অদিতি মাকে জিজ্ঞেস করল, "মা, তুমি কাঁদছ কেন?"
মেঘলা জবাব দিল, "কাঁদছি না মা, খুশিতে চোখে জল এসেছে। তুমি তো সত্যিই আমার মতো লিখছ।"

তমাল পাশ থেকে বলল, "আমার মনে হয়, আমাদের গল্পের নতুন লেখক এসে গেছে।"

একদিন বারান্দায় বসে তমাল আর মেঘলা তাদের ছোট্ট পরিবার নিয়ে গল্প করছিল। বৃষ্টির শব্দে চারপাশ ভিজে ছিল। অদিতি মেঘলার খাতায় কিছু লিখছিল।
তমাল বলল, "তুমি জানো, মেঘলা, আমি আমাদের গল্পটা নিয়ে একদমই চিন্তা করি না। কারণ আমাদের মেয়েটা সেই গল্পটা বহন করবে।"
মেঘলা বলল, "আমাদের জীবন তো এক অশেষ কবিতা। যতদিন আকাশে মেঘ থাকবে, আর মেঘে বৃষ্টি থাকবে, আমাদের গল্পটা চলতেই থাকবে।"

তারা তিনজন হাসল। বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে যেন পুরো পৃথিবী তাদের ভালোবাসার গল্প শুনতে লাগল।

#লেখক_শাহিন_ইকবাল

17/01/2025

#গল্প_তোমার_জন্য
#অধ্যায়_৩

তমাল আর মেঘলার জীবন ভালোই চলছিল, তবে জীবনের পথ কখনোই একরেখায় চলে না। নতুন শহরে তমালের কাজের চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল। দিন দিন সে মেঘলার সঙ্গে কম সময় কাটাতে পারত। মেঘলা এটা মেনে নিতে পারছিল, কারণ সে জানত তমাল তার পরিবারের জন্যই এত পরিশ্রম করছে।

একদিন মেঘলা তমালের অফিস থেকে ফিরে আসার অপেক্ষা করছিল। রাত দশটা বেজে গেছে, কিন্তু তমালের কোনো খোঁজ নেই। মেঘলা চিন্তিত হয়ে ফোন করল।
"তমাল, তুমি কোথায়? এত দেরি কেন?"
তমালের ক্লান্ত গলা শোনা গেল, "মেঘলা, আজ একটা জরুরি মিটিং ছিল। ফিরতে দেরি হয়ে গেল। তুমি চিন্তা করো না। আমি রাস্তায় আছি।"

মেঘলা জানত তমাল কখনোই তার দায়িত্ব এড়িয়ে চলে না। তবে তার মনে একটা শূন্যতা তৈরি হচ্ছিল।

তমালের ব্যস্ত জীবন আর মেঘলার একাকিত্ব ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করছিল। তমাল বাড়ি ফিরলেও অনেক সময় কথা বলার মতো শক্তি পেত না। মেঘলা সেটা বুঝত, কিন্তু তবুও তার মনে কষ্ট হতো।

এক সন্ধ্যায় মেঘলা বলল, "তমাল, আমরা কি আগের মতো নেই? আমাদের গল্পটা কি বদলে যাচ্ছে?"
তমাল কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, "মেঘলা, আমার কাজের চাপ বেড়ে গেছে। কিন্তু তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা কখনো বদলাবে না। আমি তোমার জন্যই এই সব করছি।"
মেঘলা তার দিকে তাকিয়ে বলল, "আমি তোমার কাজের গুরুত্ব বুঝি, তমাল। কিন্তু আমাদের সম্পর্কটা যেন সময়ের অভাবে শুকিয়ে না যায়।"

তমাল মেঘলার হাত ধরে বলল, "তুমি ঠিক বলছ। আমি চেষ্টা করব সময় বের করার। আমাদের গল্পটা কখনো শেষ হতে দেব না।"

তমাল কথা রেখেছিল। সে তার কাজের সময়সূচি একটু পরিবর্তন করে মেঘলার জন্য সময় বের করতে শুরু করল। তারা আবার একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যাওয়া শুরু করল। পাহাড়ি এলাকায় একটা ছোট্ট কটেজে গিয়ে তারা দুজন কয়েকটা দিন কাটাল।

এক রাতে মেঘলা তমালের পাশে বসে বলল, "তুমি জানো, তমাল, আমি ভেবেছিলাম আমরা হয়তো একে অপরকে হারিয়ে ফেলব। কিন্তু তোমার ভালোবাসা আমাকে ভুল প্রমাণ করল।"
তমাল মৃদু হেসে বলল, "তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি তোমাকে হারাব এমন কিছু কখনো হতে দেব না।"

ছুটির পর তারা বাড়ি ফিরল। মেঘলা তার লেখার কাজ শুরু করল। এবার সে নতুন কিছু ভাবছিল—একটা নাটক লেখার।
তমাল একদিন রাতে মেঘলার লেখার টেবিলে এসে বলল, "তোমার নতুন কাজ কেমন চলছে?"
মেঘলা হেসে বলল, "ভালোই চলছে। তবে এটা লিখতে গিয়ে বুঝতে পারছি, সম্পর্কের গুরুত্ব কতটা গভীর।"
তমাল বলল, "তুমি সবসময়ই সম্পর্কের গভীরতা বোঝো। আর সেটা তোমার লেখার মধ্যেও স্পষ্ট।"

মেঘলা বলল, "তাহলে আমার পরের নাটকের নায়ক তুমি।"
তমাল হেসে বলল, "তাহলে তোমার নায়ক যেমনই হোক, আমাকে তার মতো হতে দাও।"

মেঘলার নাটক মঞ্চস্থ হলো। তমাল প্রথম সারিতে বসে পুরো নাটকটা দেখল। নাটকের শেষে মেঘলা যখন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিল, তখন বলল, "এই নাটকটা আমি আমার জীবনসঙ্গী তমালকে উৎসর্গ করছি, যার ভালোবাসা আর সমর্থন আমার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সুন্দর করে তুলেছে।"

তমালের চোখে জল চলে এল। সে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে লাগল। মেঘলা তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।

তমাল আর মেঘলা বুঝেছিল, সম্পর্কের সৌন্দর্য শুধু ভালো মুহূর্তে নয়, কঠিন সময় একসঙ্গে কাটানোর মধ্যেও লুকিয়ে থাকে। তাদের গল্পটা শুধু একটা কবিতা ছিল না, ছিল জীবনের প্রতিচ্ছবি।

বৃষ্টির এক সন্ধ্যায় তারা বারান্দায় বসে গল্প করছিল।
মেঘলা বলল, "তমাল, আমাদের গল্পটা কি চিরকাল এভাবেই চলবে?"
তমাল বলল, "যতদিন বৃষ্টি থাকবে, আকাশ থাকবে, আর তুমি থাকবে, আমাদের গল্পটা চলতেই থাকবে।"

তারা দুজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসল। বৃষ্টির শব্দে তাদের জীবনের গান বাজতে লাগল।

#লেখক_শাহিন_ইকবাল

17/01/2025

#গল্প_তোমার_জন্য
#অধ্যায়_২

তমাল আর মেঘলার বিয়ে হয়ে গেল এক মধুর পরিবেশে। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল কবিতার গন্ধ, গানের সুর, আর তাদের ভালোবাসার ছোঁয়া। তবে বিয়ের পরের জীবন শুরু হওয়া মানে নতুন দায়িত্ব, নতুন সম্পর্ক।

"তমাল, তুমি কি মনে করো, বিয়ের পর আমাদের জীবন কবিতার মতোই থাকবে?" মেঘলা একদিন জিজ্ঞেস করল।
তমাল মুচকি হেসে বলল, "কেন থাকবে না? তবে বাস্তব জীবনের কবিতাগুলো একটু জটিল, একটু কঠিন। কিন্তু যতক্ষণ তুমি আমার পাশে আছো, সব ঠিক হবে।"

মেঘলা চায়ের কাপ হাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূরের আকাশ দেখছিল। হঠাৎ তমাল এসে পেছন থেকে বলল, "তোমার জন্য একটা নতুন চমক আছে।"
"এবার আবার কী?" মেঘলা অবাক হয়ে বলল।
"আমাদের বাড়ির একটা কোণায় আমি তোমার জন্য ছোট একটা লাইব্রেরি বানিয়েছি। শুধু তোমার কবিতা লেখার জন্য।"

মেঘলার চোখে জল এসে গেল। "তমাল, তুমি কেন সবসময় এমন করো? আমার স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপ দাও!"
তমাল হেসে বলল, "তোমার স্বপ্নগুলোই তো আমার ভালোবাসার প্রকাশ।"

বিয়ের পর তমাল আর মেঘলার মধ্যে ভালোবাসা আরও গভীর হচ্ছিল। তারা দুজনেই একে অপরের প্রতি খুব যত্নশীল। তমাল তার কাজের ফাঁকে সময় বের করে মেঘলার কবিতা পড়ত। মেঘলা তমালের জন্য বিশেষ রান্না করত, যা তমাল ভীষণ পছন্দ করত।

একদিন তমাল অফিস থেকে ফিরে বলল, "মেঘলা, আমি একটা বড়ো সুযোগ পেতে যাচ্ছি। কিন্তু সেটা আমাকে অন্য শহরে নিয়ে যাবে।"
মেঘলা কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল, "তুমি কি সেটা গ্রহণ করবে?"
"আমি তোমার মতামত ছাড়া কিছুই করব না।"
মেঘলা তমালের দিকে তাকিয়ে বলল, "তোমার স্বপ্ন পূরণের পথে আমি বাধা হবো না। আমরা একসাথে নতুন শহরে যাব।"

নতুন শহরে তাদের জীবন শুরু হলো। মেঘলা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তমাল ব্যস্ত থাকলেও মেঘলার প্রতি তার যত্ন একটুও কমেনি।
একদিন সন্ধ্যাবেলায় তমাল বাড়ি ফিরে দেখল মেঘলা বারান্দায় বসে কবিতা লিখছে।
"মেঘলা, তুমি আজকাল কি লিখছো?"
মেঘলা হেসে বলল, "তোমার আর আমার গল্প।"

তমাল মেঘলার পাশে বসে বলল, "তাহলে এটাকে একটা উপন্যাস বানাও। আমি তোমার প্রথম পাঠক হবো।"
মেঘলা হেসে বলল, "তুমি সবসময় এমন উৎসাহ দাও কেন?"
তমাল বলল, "কারণ আমি জানি, তুমি যা লেখো তা সত্যিই বিশেষ কিছু।"

মেঘলার উপন্যাস প্রকাশিত হলো। উপন্যাসের নাম ছিল ‘নায়িকার নাম মেঘলা’। গল্পটা ছিল এক মেয়ে আর তার ভালোবাসার মানুষের জীবনের গল্প।
উপন্যাসটি পাঠকদের মন জয় করে নিল। মেঘলার খ্যাতি বেড়ে গেল।

একদিন মেঘলা তমালের দিকে তাকিয়ে বলল, "তুমি জানো তমাল, এই গল্পটা আমি তোমাকে উৎসর্গ করেছি। কারণ তুমি আমার জীবনের গল্পটা এত সুন্দর করে গড়েছো।"
তমাল মুচকি হেসে বলল, "তুমি যদি আমার জীবনে না থাকতে, তাহলে এই গল্পটা শুরুই হতো না।"

তমাল আর মেঘলার জীবন ছিল এক চলমান কবিতা। তাদের প্রতিটি দিন যেন ছিল এক নতুন অধ্যায়।
এক সন্ধ্যায় তারা দুজন নদীর ধারে বসে সূর্যাস্ত দেখছিল। মেঘলা তমালের হাত ধরে বলল, "তোমার সঙ্গে থাকা মানে একটা রঙিন স্বপ্নের মধ্যে থাকা।"
তমাল বলল, "তোমার জন্য এই স্বপ্নটা বাস্তব করতে পেরেছি, এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো পাওয়া।"

তারা দুজন নদীর ধারে বসে থাকল, বাতাসে ভেসে বেড়াল তাদের জীবনের গল্পের গান।

#লেখক_শাহিন_ইকবাল

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Md. Shahin Iqbal posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Md. Shahin Iqbal:

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share