19/06/2025
ঘুম আসছেনা! একটা কথা বার বার মনে আসছে...
ইস/রায়েল থেকে আমেরিকার দূরত্ব হল ১১,২৭৪ (এগারো হাজার দুইশত চুয়াত্তর) কিলোমিটার৷
এত দূর হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা নিয়মিত ইস-রায়েলে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সর্বপ্রকার সহযোগিতা করে যাচ্ছে৷
অপরদিকে মিশর, জর্দান, সৌদী আরব ফিলি-স্তীনের সাথে একেবারে পাশবর্তী লাগোয়া দেশ হওয়ার পরেও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করবে দূরের কথা খাবার সহযোগিতাও পাঠাতে ব্যর্থ৷
এটা কেন?? জর্দান, মিশর, সৌদীর কাছে কি অস্ত্র নেই? আধুনিক প্রযুক্তি নেই?
সবই আছে, কিন্তু কুফফারদের বিরোদ্ধে ব্যবহার করছেনা বা করতে পারবে না৷
এর কারণ কী? আসুন জেনে নেই!
আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে এর কারণ নবীজী বলে গেছেন, সুনানে আবু দাউদের ৪২৯৭ নং হাদিসের বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يُوشِكُ الأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ كَمَا تَدَاعَى الأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا " .
অর্থঃ হযরত সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খাদ্য গ্রহণকারীরা যেভাবে খাবারের পাত্রের চতুর্দিকে একত্র হয়, অচিরেই বিজাতিরা তোমাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই একত্রিত হবে।
فَقَالَ قَائِلٌ وَمِنْ قِلَّةٍ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ قَالَ " بَلْ أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ كَثِيرٌ وَلَكِنَّكُمْ غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ وَلَيَنْزِعَنَّ اللَّهُ مِنْ صُدُورِ عَدُوِّكُمُ الْمَهَابَةَ مِنْكُمْ وَلَيَقْذِفَنَّ اللَّهُ فِي قُلُوبِكُمُ الْوَهَنَ " . فَقَالَ قَائِلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْوَهَنُ قَالَ " حُبُّ الدُّنْيَا وَكَرَاهِيَةُ الْمَوْتِ " .
একথা শুনে এক ব্যক্তি বললো, সেদিন আমাদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে কি এরূপ হবে? তিনি বললেনঃ তোমরা বরং সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে; কিন্তু তোমরা হবে প্লাবনের স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত। আর আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হতে তোমাদের পক্ষ হতে আতঙ্ক দূর করে দিবেন, তিনি তোমাদের অন্তরে ভীরুতা ভরে দিবেন। এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! ‘আল-ওয়াহ্ন’ কি? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার মোহ এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪২৯৭)
সহীহুল বুখারীর ৩১৫৮ নং হাদীসের বর্ণনায় এসেছে,
فَوَاللَّهِ لاَ الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ، وَلَكِنْ أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُبْسَطَ عَلَيْكُمُ الدُّنْيَا كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا وَتُهْلِكَكُمْ كَمَا أَهْلَكَتْهُمْ ".
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্র কসম! আমি তোমাদের ব্যাপারে দারিদ্রের ভয় করি না। কিন্তু তোমাদের ব্যাপারে এ আশঙ্কা করি যে, তোমাদের উপর দুনিয়া এরূপ প্রসারিত হয়ে পড়বে যেমন তোমাদের অগ্রবর্তীদের উপর প্রসারিত হয়েছিল। আর তোমরাও দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে, যেমন তারা আকৃষ্ট হয়েছিল। আর তা তোমাদেরকে ধ্বংস করবে, যেমন তাদের ধ্বংস করেছিল।’ (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩১৫৮)
আমরা দারুল উলুম দেওবন্দে পড়াকালীন একদিন আসরের পর শাইখুল হাদীস আল্লামা সাঈদ আহমাদ পালপুরী রহঃ বলেছিলেন, আরব হল মুসলিম উম্মাহর কলব বা রূহ৷
আর কলব দূর্বল বা নষ্ট হয়ে গেলে পুরো দেহ যত সুন্দরই হোক না কেন সেই দেহে কোনো শক্তি থাকে না৷
ঠিক তেমনি আরবরা জাগ্রত না হলে, সিপাহসালারের ভূমিকা গ্রহণ না করলে পুরো মুসলিম জাতি মিছিল মিটিং আর বিক্ষোভ সমাবেশ যতই করুক তেমন লাভজনক হবে না৷
এই কথাটি অধম নিজ কানে হুজুরের যবান থেকে শুনেছি৷
আরেকবার আরবদের কয়েকজন লোক পালনপুরী রহিমাহিল্লার কাছে আসরের পর আসছিল, হুজুর সালাম মুসাফাহা করে আর তাদেরকে বসতে বলেননি, হুজুর তাদেরকে বলেন: যখন থেকে তোমরা মহিলাদের মত টাখনুর নিচে জুব্বা পরিধান শুরু করেছো তখন থেকে তোমাদের মাঝে জুবুন তথা কাপুরুষতা গালেব হয়ে গেছে৷
আরবরা এখন সারা বিশ্বের কাফের বেঈমানদের গোলামে পরিণত হয়েছে৷
আল্লামা ইকবাল মারহুমের এই কবিতাটি মনে পড়ছে,
يا رب! دل مسلم کو وہ زندہ تمنا دے
جو قلب کو گرما دے ، جو روح کو تڑپا دے
আল্লাহ তাআলা আমাদের দূর্বলতা ও নেফাকীকে দূর করে দিন, সাহাবাওয়ালা ঈমান দান করুন, আমীন৷