
27/07/2025
বিশ্বব্যাপী অনেক ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর, বিশেষ করে আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অঞ্চলে, poverty po*n কনটেন্ট তৈরি করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তারা দরিদ্র শিশুদের, অভুক্ত পরিবার, কুঁড়েঘরের জীবন, কিংবা পথশিশুর কষ্টের ভিডিও বানিয়ে “এত সুন্দর সাহায্য করছে” এমন ভাবমূর্তি তৈরি করত। অনেক সময় ভিডিওতে দেখা যেত—একটি প্লেট খাবার দিচ্ছে, নতুন জামা কিনে দিচ্ছে, কিংবা সামান্য অর্থ সহায়তা করছে, এবং তা এমনভাবে উপস্থাপন করত যেন তারা পৃথিবীর সবচেয়ে দয়ালু মানুষ। এইসব ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক, নাটকীয় সংলাপ, এবং ক্যামেরার ফোকাস কৌশলে এমনভাবে সাজানো হতো, যাতে দর্শক কাঁদে এবং ভিডিওটি শেয়ার করে। এর ফলে মিলিয়ন ভিউ, সাবস্ক্রাইবার, স্পন্সরশিপ এবং ইউটিউব অ্যাডসেন্স থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আসতো।
তবে সময়ের সাথে সাথে দর্শকরা বুঝতে শুরু করে—এইসব কনটেন্টে সাহায্যের চাইতে নাটক বেশি, আর দরিদ্র মানুষের সম্মান অনেক সময় ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। এমনকি অনেক সময় এই “সহযোগিতার ভিডিওগুলো” সাজানো বা মিথ্যা হত, যার প্রমাণও মেলে। কিছু ইউটিউবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তারা ওই দরিদ্র ব্যক্তিদের ব্যবহার করে শুধুই নিজের ফেম ও টাকা বাড়াচ্ছে, পরবর্তীতে আর কোন ফলোআপ বা স্থায়ী সহায়তা করছে না। ফলস্বরূপ, ইউটিউব ও ফেসবুক অনেক চ্যানেলের মনিটাইজেশন বন্ধ করে দেয়, দর্শকরা আনসাবস্ক্রাইব করে, এবং কনটেন্টের নিচে সমালোচনার ঝড় উঠে—এভাবে এই “ভুয়া মানবতা” কনটেন্টগুলোর জনপ্রিয়তায় পতন আসে।
বাংলাদেশে এখন যেসব ইউটিউবার “মানবতার ফেরিওয়ালা” হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছেন, তাদের জন্যও এটি একটি গভীর সতর্কবার্তা। সাময়িক ভিউ আর আবেগ দিয়ে হয়তো জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়, কিন্তু যদি উদ্দেশ্য খাঁটি না হয়, দর্শক একদিন ঠিকই বুঝে ফেলবে। কারণ আজকের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অনেক সচেতন—মানবতা আর মনেটাইজেশনের পার্থক্য বুঝে ফেলতে তাদের বেশিক্ষণ লাগে না।
সুতরাং, মানবতা যেন ব্যবসার মুখোশ না হয়—এই বোধটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।