02/10/2025
ছবির মানুষ, পাশের মানুষ
__________________
আমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যার অধীনে পিএইচডি করেছিলাম, তার নাম স্যার ওয়াল্টার বডমার। পাঁচ বছর ছিলাম তার সাথে। একজন সুপারভাইজার হিসেবে যতটা পারেন, স্বাধীনতা দিয়েছিলেন আমাকে। নানান রকম কাজে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত হবার সুযোগ পেয়েছিলাম সে কারণেই। চলে আসার সময় নিজের সাইন করা একটা ছবি উপহার দিয়েছিলেন, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কক্ষে রেখে দিয়েছি। অনেক দিন ইচ্ছে ছিল ছবির সেই মানুষটিকে আমার রুমে নিয়ে বসানোর।
এবার সেই ইচ্ছেটি বাস্তব হলো। তৃতীয় বারের মতো আমার আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। আটটা ব্যস্ত দিন কাটিয়েছি। এক ফাঁকে আমার রুমে নিয়ে আসলাম তাঁকে। আমার বেতের চেয়ারে বসালাম। বললেন-"চেয়ারটা বেশ আরামদায়ক"। তারপর আমার মাথার উপরে রাখা ছবিটা নামিয়ে আমি হাতে নিয়ে বললাম- "অনেকদিনের ইচ্ছে, ছবিটা হাতে নিয়ে তোমাকে পাশে নিয়ে এরকম একটা ছবি তোলার।" তারপর ছবির মানুষটাকে পাশে নিয়ে তৈরি হলো এই স্মৃতিময় ছবি।
৮৯ বছর বয়সেও এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যান স্যার ওয়াল্টার বডমার। বিজ্ঞান হোক, ইতিহাস হোক কিংবা হোক কোনো সাধারণ আলাপ—তিনি স্বচ্ছন্দে অংশগ্রহণ করেন সেই আলোচনায়। আমাকে দেখেছেন, এখনো দেখেন সন্তানের মতো। আমিও কি তাকে পিতার মতোই দেখি না? একাডেমিক জীবনের একজন মেন্টর জীবনের বাকি অধ্যায়েও এমন অংশ হয়ে ওঠা একটা বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার বটে।
সুস্বাস্থ্যে আরও দীর্ঘায়িত হোক তাঁর আয়ু—এই প্রার্থনা এই জ্ঞানপিপাসু মানুষটির জন্য।