06/07/2025
আশুরা কী? কেন তা এত গুরুত্বপূর্ণ?
আল্লাহর রহমতে, আমরা মহররম মাসে প্রবেশ করেছি-একটি পবিত্র সময়, নতুন হিজরি বছরের সূচনা। আর এই মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হলো আশুরা, অর্থাৎ ১০ই মহররম।
কিন্তু আমাদের কতজন জানি, এই দিনটি আসলে কত বড় তাৎপর্য বহন করে?
আশুরা কী?
"আশুরা" )عاشوراء( শব্দটি আরবি "আ'শারা" থেকে এসেছে, যার অর্থ দশম। ইসলামি হিজরি সনের প্রথম মাস মুহাররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। এটি একটি পবিত্র দিন এবং ইসলামপূর্ব যুগেও এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচিত ছিল। নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগেও এদিনের বিশেষ তাৎপর্য ছিল।
আশুরার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
আল্লাহ তায়ালা এই দিনে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত করেছেন-যেমন:
হযরত মূসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীরা ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিল।
কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রাঃ) এবং তার পরিবারের শহীদ হওয়া।
হযরত নূহ (আ.)-এর নৌকা জুদি পর্বতে নোঙর করেছিল।
হযরত আদম (আ.)-এর তওবা কবুল হয়েছিল।
হযরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ইত্যাদি।
রাসূলুল্লাহ (স.) এর গুরুত্ব প্রদান:
রাসূল (স.) যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন দেখতে পান ইহুদিরা আশুরার রোজা রাখছে। তিনি জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, "এই দিনেই আল্লাহ মূসা আ.-কে রক্ষা করেছিলেন।"
তখন রাসূল বললেন:
"আমরা মূসার প্রতি তোমাদের অপেক্ষা অধিক হকদার।" (সহীহ বুখারী)
আশুরার ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
"আমি আশা করি, আশুরার রোযা গত এক বছরের গুনাহর কাফফারা হবে।" (সহিহ মুসলিম-১১৬২)
অর্থাৎ আশুরার রোজা রাখলে গত এক বছরের ছোট খাটো গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
বাংলাদেশে আশুরা কবে (ইংরেজি তারিখে)?
হিজরি ও ইংরেজি ক্যালেন্ডার এক না হওয়ায় আশুরার ইংরেজি তারিখ প্রতিবছর পরিবর্তিত হয়।
২০২৫ সালে আশুরা পড়বে ইন শা আল্লাহ:
6 জুলাই, রবিবার (২০২৫)
(১০ মুহাররম ১৪৪৭ হিজরি)
আশুরাকে ঘিরে কিছু ভ্রান্ত প্রথা:
আশুরা মানেই শোক পালন নয়।
নিজেকে আঘাত করা, রক্তপাত করা, সড়কে মাতম করা এগুলোর সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো বিদআত ও গোমরাহির পথ।
এই দিনটিকে অন্ধ আবেগ দিয়ে নয়, বরং সুন্নাহ অনুসারে পালন করা ইমানদারের দায়িত্ব।
কেন এখন থেকেই মানসিক প্রস্তুতি জরুরি?
আশুরা আসতে মাত্র কয়েকদিন বাকি।
এখন থেকেই মনকে প্রস্তুত করতে হবে যেনো রোযা, দোয়া, ইবাদত মিস না হয়।
গুনাহ মাফের এই বিরল সুযোগ যেন আমাদের হাতছাড়া না হয়!
তাহলে আমরা কী করবো এই দিনকে সামনে রেখে?
জেনে নেই আশুরার মূল উদ্দেশ্য। ও আত্মশুদ্ধি। তাওবা, কৃতজ্ঞতা
বিদআত নয়, বরং সুন্নাহ অনুযায়ী এই দিন পালন করবো।
সবার মাঝে এই দিনের সঠিক বার্তা ছড়িয়ে দেবো ইন শা
আল্লাহ্।
* পরবর্তী পর্বে থাকবে:
আশুরার দিনে করণীয় আমলসমূহ নিয়ে বিস্তারিত।
এই পোস্টটি যতটা সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে অন্যরাও আশুরার সওয়াবের সুযোগ না হারায়!