
08/08/2025
জার্মানির মার্টিন লুথার ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ও উচ্চ প্রযুক্তির প্রটোটাইপ ন্যানো-স্কেল সোলার প্যানেল তৈরি করেছেন। যার পুরুত্ব হচ্ছে কিনা মাত্র ২০০ ন্যানোমিটার (মানুষের চুলের ৪০০ ভাগের এক ভাগ)।
ফেরোইলেকট্রিক ক্রিস্টাল ব্যবহৃত এই প্রযুক্তি প্রচলিত সিলিকন সোলার সেলের চেয়ে আনুমানিক ১,০০০ গুণ বেশি শক্তি উৎপাদন করতে পারে। যদিও এই প্রযুক্তি এখনো পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বাণিজ্যিক পর্যায়ে উৎপাদনের উপযোগী করা সম্ভব হয়নি।
গবেষকেরা মনে করেন যে, নিরবচ্ছিন্ন সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবিত এই ন্যানো সোলার প্যানেল দীর্ঘ মেয়াদে তাপ, আর্দ্রতাযুক্ত পরিবেশে টেকসই ও কার্যকর থাকবে। এই উদ্ভাবন সৌরশক্তির বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত ব্যবহারে এক নতুন বিপ্লব আনতে পারে।
এই প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো Ferroelectric Photovoltaic Effect টেকনোলজির কার্যকর ব্যবহার। যার ফলে প্যানেলে আলো পড়লে স্ফটিক উপাদানগুলো নিজস্ব বৈদ্যুতিক চার্জ উৎপন্ন করতে পারে। এটি উচ্চ দক্ষতা, কম তাপীয় ক্ষয় এবং নমনীয় ডিজাইনের সুবিধা দেয়, যা ভবিষ্যতে প্রচলিত সিলিকন সোলার প্রযুক্তিকে ছাপিয়ে যেতে পারে।
এই প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হয়েছে তিন ধরনের ফেরোইলেকট্রিক স্ফটিক উপাদান। বেরিয়াম টাইটানেট (BaTiO₃), স্ট্রনশিয়াম টাইটানেট (SrTiO₃) এবং ক্যালসিয়াম টাইটানেট (CaTiO₃) যখন সূর্যালোক এই উপাদানগুলোর উপর পড়ে, তখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৈদ্যুতিক পোলারাইজেশন সৃষ্টি হয়।
এই প্রক্রিয়ায় যখন ফেরোইলেকট্রিক উপাদান (যেমন বেরিয়াম টাইটানেট)-এর উপর সূর্যের আলো পড়ে, তখন ফোটন শোষিত হয়ে ইলেকট্রন-হোল জোড়া সৃষ্টি হয়। আর পোলারাইজেশনের ফলে তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলাদা হয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে।
যা প্রচলিত সিলিকন সোলার প্যানেল বিপরীতে এতে পি-এন জংশন বা ডোপিং প্রয়োজন নেই। ফলে এই প্রযুক্তিতে খুব সহজে এবং দ্রুত আনুমানিক ১,০০০ গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
এই সোলার প্যানেলের অতি-পাতলা স্তরটি তৈরি করা হয়েছে লেজার-নির্ভর “থিন-ফিল্ম ডিপোজিশন” (Thin-Film Deposition) পদ্ধতির মাধ্যমে। যা ভবিষ্যতের সৌর প্রযুক্তিকে আরও হালকা, নমনীয়, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব করে তুলতে পারে।
এই সোলার প্যানেল টেকনোলজির ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ব্যবহারের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবে স্মার্টফোন এবং ছোট আকারের ডিজিট