25/09/2025
আধ্যাত্মিক ইতিহাসের অনন্য দৃষ্টান্ত — “হযরত বাবা আদম শহীদ (রহ:)”
বাংলার সূফী ইতিহাসে কাদেরিয়া তরিকার আলো জ্বালিয়ে যিনি ইসলাম প্রচারের পথে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন, তিনি হলেন মহান সাধক হযরত বাবা আদম শহীদ (রহ:)। ১২ শতকে হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ:)-এর খলিফা হিসেবে তিনি ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে দূর আরব থেকে আগমন করেন বঙ্গভূমিতে। খোরাসান ও বাগদাদের জ্ঞানের আলোয় নিজেকে সমৃদ্ধ করে তিনি শুরু করেন বাংলায় তাসাওউফের দাওয়াতি সফর — প্রতিষ্ঠা করেন প্রথম কাদেরিয়া খানকা, এবং ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন সর্বান্তকরণে।
কিন্তু সত্যের পথে চলতে গিয়ে তাঁকে সম্মুখীন হতে হয়েছিল রাজশক্তির অমানবিক নিপীড়নের। বিক্রমপুরের রাজা বল্লাল সেনের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়ে তিনি শাহাদাতের অমর মর্যাদায় ভূষিত হন ২০ সেপ্টেম্বর ১১৭৮ সালে। মৃত্যুর পর তাঁর পবিত্র দেহ দাফন করা হয় রিকাবী বাজার দীঘিরপাড়ে, যা আজ লক্ষ লক্ষ আশেকের চোখে এক আধ্যাত্মিক প্রেরণার কেন্দ্র — “বাবা আদম শহীদ (রহ:) মাজার শরীফ”।
---
“বাবা আদম শহীদ জামে মসজিদ” — স্মৃতির ইমারত, বিশ্বাসের প্রতীক
৮৮৮ হিজরির রজব মাসে (১৪৮৩ খ্রিষ্টাব্দ) সুলতান জালালউদ্দীন ফতেহ শাহের শাসনামলে মালিক কাফুরের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে বাবা আদম শহীদ জামে মসজিদ। শাহাদাতের স্মৃতিতে নির্মিত এই ঐতিহাসিক মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে আছে মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিমে, ইতিহাস আর ঈমানের সাক্ষী হয়ে। ছয়টি পরপর বৃহৎ গম্বুজে ঘেরা এই স্থাপত্য নিদর্শন শুধু স্থাপনা নয়, এটি হলো প্রেম, ত্যাগ ও তাসাওউফের এক জীবন্ত নিদর্শন।
যে স্থানে রক্ত দিয়ে লেখা হয়েছে সত্যের ইতিহাস, সে স্থান আজও ডাকে সকল আশেককে — আসো, এই মসজিদের গম্বুজের ছায়ায় দাঁড়িয়ে নবীপ্রেমে ডুবে যাও, বাবা আদম (রহ:)-এর ত্যাগকে হৃদয়ে ধারণ করো।
---
📜 অতি শীঘ্রই আসছে...
হযরত বাবা আদম শহীদ (রহ:) ও তাঁর জামে মসজিদের অজানা ইতিহাস, শাহাদাতের কাহিনি এবং বাংলায় সূফীবাদের বিস্ময়কর যাত্রা নিয়ে আমাদের একটি বিশেষ ডকুমেন্টারি সিরিজ।
সাথে থাকুন — ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে উঠে আসা এক আধ্যাত্মিক অভিযাত্রার সাক্ষী হতে।