02/06/2025
আরো একটি ইউনুসের ম্যাজিক : বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সৌদি আরবের ‘ওয়ার্ক ভিসা’ স্থগিত!
সৌদি আরব বাংলাদেশিদের জন্য ওয়ার্ক ভিসা বন্ধ করেছে। শুনতে হয়তো একটা কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত মনে হয়—কিন্তু আসলে এটা হলো একটা আন্তর্জাতিক চপেটাঘাত। এবং এই চড়টি খাওয়া হয়েছে মোহাম্মদ ইউনুসের সেই তথাকথিত ‘অন্তর্বর্তী সরকার’-এর গালে, যারা এনজিওর চায়ের টেবিল থেকে উঠে এসে রাষ্ট্র চালাতে নেমেছে।
তারা ভাবছে, “কর্মসূচি” আর “ফান্ডিং” দিয়েই একটা দেশ চালানো যায়। বাস্তবতা হলো—রাষ্ট্র হলো হাড়ভাঙা বাস্তবতা, এখানে মিটিংয়ে বসে প্রজেক্ট প্রপোজাল বানানোর মতো কিছুই চলে না।
একটা সরল মনের প্রশ্ন : যদি এনজিও চালানো আর দেশ চালানো একই হতো, তাহলে দুনিয়ার সব দেশেই মোহাম্মদ ইউনুসের মতো “নোবেলপুষ্ট” এনজিও ডনদের দিয়ে সরকার গঠন হতো। কেন হয় না? কারণ সবাই জানে, এনজিওর আদর্শ রাষ্ট্রের রূপরেখা হতে পারে না।
এনজিওরা ত্রাণ দিতে পারে, টাকায় স্কুল বানাতে পারে, মহিলাদের গ্রুপ মিটিং করাতে পারে—কিন্তু রাষ্ট্র কূটনীতি, রাজনীতি, সামরিক ভারসাম্য, অর্থনৈতিক গ্লোবাল পজিশনিং, শ্রমবাজার কৌশল—এই ভয়ানক জটিল বাস্তব জিনিসগুলো সামাল দেওয়া এক অতিমানবীয় কাজ।
আর ইউনুস? তিনি এখনো প্রেস কনফারেন্সে “ইনোভেশন” আর “সোশ্যাল বিজনেস” নিয়ে ব্লা ব্লা করেন। সৌদি ওয়ার্ক ভিসা বাতিল করল? তিনি বলবেন—“এটা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ড, আমরা একটা প্রক্রিয়ায় আছি।”
না স্যার, এটা প্রক্রিয়া না, এটা জাস্ট ডাহা ফেল মারা।
যে রাষ্ট্র কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ করতে পারে না, বিদেশি বন্ধুদের ধরে রাখতে পারে না, তাদের পক্ষে শ্রমবাজার ধরে রাখা তো দূরের কথা—নিজেদের অস্তিত্বই টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যায়।
সৌদি ওয়ার্ক ভিসা বন্ধের ঘটনা এমন এক সময় এলো, যখন বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বড় প্রবাসী শ্রমবাজার ছিল সৌদি। লাখ লাখ তরুণ সেখানে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। অনেকে ইতিমধ্যে দালালের হাতে টাকা দিয়ে বসে আছে, কেউ ধার করেছে, কেউ বসতভিটে বিক্রি করেছে।
কিন্তু তথাকথিত সরকার কী করছে? মুখে শব্দ নেই। কারণ এই সরকার অবৈধ, দায়িত্ববোধহীন, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এনজিও চালানো মানে কী?
বিদেশি ডোনারদের খুশি করা, রিপোর্ট বানানো, সেমিনারে বসে সুন্দর ইংরেজিতে বুলি আওড়া।
রাষ্ট্র চালানো মানে?
মাটিতে দাঁড়িয়ে, রক্ত-মাটি-পরিস্থিতির হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
মোহাম্মদ ইউনুস এবং তাঁর 'শুভানুধ্যায়ী'রা আসলে এখনো বুঝতেই পারছেন না, তাঁরা কোথায় এসে পড়েছেন।
তাঁরা ভাবছেন, দেশ চালানো মানে কোনো এক ‘গভর্ন্যান্স মডেল’ বা ‘ডেভেলপমেন্ট থিওরি’ বাস্তবায়ন করা।
না ভাই, রাষ্ট্র চালানো মানে হচ্ছে জবাবদিহিতা, দায়, আস্থা অর্জন—দেশি ও আন্তর্জাতিক দুই জগতেই।
আপনারা সে জায়গায় নেই। আর দুনিয়া আপনাদের পুঁছেও না।
আজ সৌদি ভিসা বন্ধ করেছে, কাল হয়তো মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার—সবাই একে একে বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ করে দেবে। কারণ তারা জানে, এখন বাংলাদেশে যেটা চলছে, সেটা কোনো সরকার না—এটা একটা সমঝোতা-চক্রে গঠিত ক্ষমতাসীন এনজিও ক্যাম্প।
প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে চলা অর্থনীতি আজ এই ‘শোভন পরিবর্তনের’ খপ্পরে পড়ে কাঁপছে।
আর এই সময়ে তথাকথিত নেতারা ইউরোপের শহরে গলা পরিষ্কার করে বক্তৃতা দিচ্ছেন—“ডেমোক্রেসি উইল বি রিবিল্ট”—আরে ভাই, আগে রাষ্ট্রটা টিকিয়ে রাখেন! নিজের লুঙ্গির গিঁঠের ঠিক নাই, আপনি আছেন চুলে কলপ কোনটা ভালো হবে সেটা নিয়ে!