23/05/2025
নওয়াপাড়ায় পৌর কৃষকদল সভাপতিকে গুলি করে হত্যা
সিটিভি সংবাদ প্রতিনিধি যশোর
জাতীয়তাবাদী কৃষকদল যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তিনি খুন হন। মাছের ঘের নিয়ে বিবাদের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন স্থানীয়রা। ঘটনার পর পরই বিক্ষুব্ধ জনতা মাছের ঘেরের কয়েকটি টং ঘরে আগুন দেন। খুনিদের ধরতে পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা শুরু
করেছে। স্থানীয়রা জানান, তরিকুল ইসলাম সরদার অভয়নগর উপজেলার ডহর
মশিয়াহাটি এলাকায় অংশীদারদের সঙ্গে মাছের ঘেরের ব্যবসা করতেন।
ঘেরের ডিড করে দেওয়ার কথা বলে পিন্টু বিশ্বাস নামে একজন অংশীদার বৃহস্পতিবার তরিকুলকে ঘেরের কাছে ডেকে নেন। তরিকুল ইসলাম মিষ্টি নিয়ে সেখানে যান। তখন তরিকুলের সঙ্গে সুমন নামে একজন সহকারী ছিলেন।
সুমন জানান, কথাবার্তার এক পর্যায়ে অংশীদাররা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে তরিকুলকে ডেকে নিয়ে পিন্টু বিশ্বাসের ঘরে গুলি করে। এসময় সুমন জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যান। সুমন জানিয়েছেন, ওই ঘরে মোট ছয়জন ছিলেন। প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।
স্থানীয়রা জানান, তরিকুলের মাথায় তিন রাউন্ড গুলি করা হয়েছে, শরীরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ইট দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলের বাড়িটি পিন্টু বিশ্বাসের বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন।
আশপাশে মাত্র চারটি বাড়ি আছে। রাত ৮টার দিকে বাড়িগুলো ফাঁকা ছিল।
যে ঘরে তরিকুলকে খুন করা হয়েছে, সেখানে দুটি পাসপোর্ট পেয়েছেন স্থানী-য়রা। একটি অমর বিশ্বাসের ছেলে বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের, অন্যটি ধীরেশ্বর বিশ্বাসের স্ত্রী দুর্গারানী বিশ্বাসের। স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন যে, দুর্গারানী হলেন পিন্টু বিশ্বাসের মা।
কৃষকদল নেতা খুনের খবর পেয়ে অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাত আটটা দশ মিনিটের দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ মর্গের উদ্দেশে নিয়ে যায়।
সকাল ১১ টায় অভয়নগর ও বাঘারপাড়ার বিএনপির মননীত প্রার্থী, ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আয়য়ুব উপস্থিত হন। কিছুক্ষণ পর যশোর ৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী,বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব অনিন্দ্যে ইসলাম অমিত উপস্থিত হন সাথে যশোর জেলা বিএনপির সম্মানিত সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ সাবেরুল হক সাবু উপস্থিত হন।
এ সময় নেতারা এই ঘটনার বিচার দাবি করেন এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ওসি আব্দুল আলিম বলেন, খুনিদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
সন্দেহভাজন দুইজনকে পুলিশ আটক করেছে। যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান,
ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা জোরদারে অভয়নগর থানা, দামুখালি ও গাজীপুর ক্যাম্প এবং যশোর পুলিশলাইন থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীকেও খবর দেওয়া হয়েছে।
কারা কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।