24/07/2025
থাইল্যান্ড ও ক্যাম্বোডিয়ার সীমান্তে চলমান উত্তেজনায় অনেক খবর আসছে—দুই পক্ষই বলছে, তারা নতুন এলাকা দখল করেছে বা প্রতিপক্ষকে হটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এসব খবরকে পুরোপুরি বুঝতে হলে আগে সীমান্ত এলাকার বাস্তব অবস্থা জানা জরুরি।
এই সীমান্ত খুব কঠিন একটি এলাকা, বিশেষ করে সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে। এর বড় অংশ ঘন জঙ্গলে ঘেরা, অনেক জায়গা পাহাড়ি, আর বেশিরভাগ এলাকায় রাস্তাঘাট বা কাঠামো প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে সৈন্যদের চলাচল কঠিন, খাবার বা গোলাবারুদ পৌঁছানো কঠিন, আর বড় আকারের কোনো অভিযান দীর্ঘ সময় চালিয়ে যাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
এর পাশাপাশি, অনেক এলাকায় এখনও পুরনো যুদ্ধের সময় পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন রয়ে গেছে। এগুলো এখনো বিস্ফোরণের ঝুঁকি রাখে, তাই সাধারণ টহল দেওয়াও জীবন ঝুঁকির ব্যাপার।
তাই যখন কেউ বলে যে তারা একটি এলাকা দখল করেছে বা ধরে রেখেছে, তখন সেটা শুনে মনে হতে পারে, খুব শক্ত অবস্থানে আছে তারা। কিন্তু বাস্তবে এই ধরনের অঞ্চলগুলোতে দখল ধরে রাখা বা নিয়ন্ত্রণ রাখা অনেক কষ্টসাধ্য—কারণ পরিবেশটাই সেখানে বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক সময়, শত্রু নয়, বরং পাহাড়, জঙ্গল, রাস্তার অভাব, আর ল্যান্ডমাইনই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তবে সীমান্তের সব অংশ একরকম কঠিন নয়। সামরিক দিক থেকে কিছু এলাকায় তুলনামূলক সুবিধা আছে। যেমন *প্রোহ বিহার মন্দির* (Preah Vihear Temple) এবং তার কাছের *চোম খসান্ত* (Choam Khsant) এলাকায় থাইল্যান্ডের দিক থেকে রাস্তাঘাট কিছুটা ভালো, দৃষ্টিসীমা খোলামেলা, আর এলাকা কিছুটা উঁচু বলে পাহারা দেওয়া সহজ। এই কারণে এই জায়গাটি আগেও দুই দেশের সংঘর্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
কিন্তু সীমান্তের অনেক জায়গা এতটাই দুর্গম যে সেখানে যুদ্ধ করা বা টিকে থাকাই কষ্টকর। যেমন *তা মোয়ান থম*, *তা ক্রাবে*, *মম বেই* বা *ফনম খাক* এলাকাগুলো। এগুলো ঘন জঙ্গল ও উঁচু-নিচু এলাকা, যেদিকে যাওয়ার রাস্তাও খুব কম। সেখানে কোনো সংঘর্ষ হলে, তা শুধু লড়াই নয়, সরবরাহ বজায় রাখা বা সৈন্যদের নিরাপদে রাখা—সবই চরম কষ্টসাধ্য।
সব মিলিয়ে বললে, কেউ কোথাও "জায়গা দখল করেছে" বা "এলাকা নিয়ন্ত্রণে এনেছে"—এই খবরগুলো শুধু শোনার ওপর ভিত্তি করে পুরো সত্য ধরা পড়ে না। বাস্তবে সেসব দখল কতটা টেকসই, তা নির্ভর করে বহু কষ্টকর বাস্তবতার ওপর—বিশেষ করে সীমান্ত অঞ্চলের কঠিন পরিবেশের ওপর।