
05/08/2025
আমার এলোমেলো ভাবনা গুলোর একটি ----
আমি তখন খুবই ছোট্ট। বয়স আনুমানিক ৫/৬ হবে। আমি আর আমার বড় বোন পিঠাপিঠি ছিলাম। বাবার চাকরির সুবাদে থাকতাম করাচি তে। রহিমাবাদ নাকি নর্থ নাজমাবাদ সঠিক বলতে পারছিনা। দুপুর বেলায় মাস্ট আমাদের ঘুমাতে হতো। আম্মা বিছানার সলা নিয়ে বস্তেন। লাইন ধরে আমরা শুয়ে থাকতাম। যেটা নড়াচড়া করবে আম্মা হালকা করে বাড়ি মারতেন। এভাবেই একটি সময় আমরা ঘুমিয়ে পড়তাম।
ঘটনা দিন - সেদিন ছিলো শুক্রবার। বাবার অফিস বন্ধ। বাবাও বাসায় আছেন। আমারা দু-বোন চুপিচুপি ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। আম্মা মুরগী পালতেন শখ করে। একটি বাচ্চা মারা যাওয়ায় সেটাকে গাটারে ( ম্যানহোল) এ ফেলে দিয়েছেন।
আমরা সেটি দেখতে ভর দুপুরে সেখানে গিয়ে হাজির। আনমনে দেখছিলাম মরা বাচ্চাকে। গাটার ছিলো খোলা।
ঢাকনা নাই। হটাৎ পাশের বাসার ডানপিটে ডাক্তার এর ছেলে টা আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। বড় আপা একটি ঢিল তার দিকে ছুড়ে মারে। সে যেতে যেতে বলে আচ্ছা মজা দেখাবো। তারপর সে চলে গেলো। আমরা তো এক ধ্যানে শুধু মুরগির সেই মরা বাচ্চাকে ই দেখছিলাম।
এমন সময় হটাৎ ই সেই ছেলে কোন ফাঁকে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে গাটারে( ম্যানহোলে) ফেলে দেয়। সাথে সাথেই আপা আমার ফ্রক ধরে ফেলে। কিন্তু ফ্রকের কুচি একটা একটা করে ছিড়ছে আমাকে সে ধরে রাখতে পারছেনা।
আর চিৎকার করে যাচ্ছে সমানে। কিন্তু জনমানবহীন রাস্তায় কেও ই নাই। সবাই যার যার বাসায় ঘুমাচ্ছে।
এমন সময় উপরে ৪ তলায় একজন বয়স্ক মানুষ বারান্দায় বসে খবরের কাগজ পড়ছেন। তিনি নীচে তাকিয়ে দেখেই নীচে নেমে এবং আমাকে টেনে তুলেছেন নাকি কে তুলেছে আমার মনে নাই।
আম্মা আমাকে লাক্স সাবান দিয়ে সমানে গোসল করাচ্ছেন। অনেক ময়লা গায়ে। ভাগ্যিস বেচে গিয়েছিলাম। আর বাবা কথা শুনিনি কেন, ঘর থেকে বের হলাম কেন খুবই মেরেছেন। আমরা বাবাকে ভয় এবং শ্রদ্ধা করতাম।
পরে এটা নিয়ে নালিশ দেওয়া হয়েছে কিন্তু লাভ হয়নি কোন বিচার হয়নি।
--হুরের নাহার লিপি। ০৫/০৮/২০২৫ ইং