09/10/2025
এ বছর ক্যামিস্ট্রিতে নোবেল পাওয়া ওমর ইয়াগির উইকিপিডিয়া পেইজটা পড়ছিলাম।
উনার জন্ম জর্ডানে, এক ফিলস্তিনি রিফিউজি পরিবারে।
উনার পরিবার ফিলিস্তিনের গাজা থেকে রিফিউজি হয়ে জর্ডানে যায়। ছোটবেলায় উনারা একটা মাত্র ঘরে অনেকগুলো মানুষ, বাচ্চাকাচ্চা এমনকি গবাদি পশুর সাথে গাদাগাদি করে থাকতেন। সেই রিফিউজি ক্যাম্পে না ছিলো ইলেক্ট্রিসিটি, না পাওয়া যেত বিশুদ্ধ পানি!
উনারা বয়স যখন মাত্র ১৫ তখন তিনি তাঁর বাবার অনুপ্রেরণায় যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। শুরুতে ইংরেজি ভালো না পারলেও তিনি কমিউনিটি কলেজের মাধ্যমে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক থেকে আন্ডারগ্র্যাড, ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় থেকে পিএইচডি এবং হার্ভার্ড থেকে পোস্ট ডক করেন।
এরপর তিনি আ্যরিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে উনার শিক্ষকতা জীবন শুরু করে আরো ২টা ইউনিভার্সিটি হয়ে ২০১২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়া বার্কলিতে স্থিতু হন। এখানেই উনি ২০২৫ সালে সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে "University Professor" পদে উন্নীত হোন।
এক সময় বিদ্যুত বা বিশুদ্ধ পানির মত মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উদ্বাস্তু মানুষটা Reticular Chemistry নামক রসায়নের নতুন একটা ফিল্ডের অন্যতম পথিকৃত হিসেবে সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত হয়েছেন।জৈব যৌগ আর ধাতব পরমাণু ব্যবহার করে জালিকার মত এমন কাঠামো বানানো হয়েছে যা দিয়ে গ্যাস সংরক্ষণ (যেমন হাইড্রোজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড), পানি পরিশোধন, ওষুধ পরিবহন, সেন্সর, অনুঘটক ইত্যাদি তৈরীতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রফের ওমর রসায়ানের জগতে অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত। ২০০৭ সাল থেকেই বিজ্ঞানের অনেক বড় বড় পুরস্কার তিনি ইতিমধ্যে পেয়েছেন। তার নোবেল পাওয়াটা অপ্রত্যাশিত ছিলো না। তারপরও একজন ফিলিস্তিনি রিফিউজি পরিবারে বড় হওয়া মানুষকে নোবেল দেওয়ার মাধ্যমে নোবেল কমিটি সারা দুনিয়ায় যে ফিলিস্তিনের পক্ষে একটা জনমত দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে, সেটার সাথেই পরোক্ষভাবে একাত্মতা ঘোষণা করলো— এটা ধরে নিতেই পারি! ❤🇵🇸