BanglaTimes71.com

BanglaTimes71.com BanglaTimes71.com provides you True, Neutral and Ethical news... Also Open Discussion, Career, Study

13/11/2021

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবের অনুবাদে বিকৃতি
===============================
কথিত সহীহ হাদিসের অনুসারী ওহাবী/খারেজী সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাদের সমাজে প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছে যে, ১২ই রবিউল নাকি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম তারিখ তো নয়ই, বরং এই বিষয়ে নাকি মতভেদ আছে। তাদের এই কথাকে সত্য প্রমাণ করার জন্য এরা আরবী কিতাবে ১২ই রবিউল আউয়াল লেখা আছে, সেখান থেকে এরা ১২ তারিখের যায়গায় অন্য তারিখ বসিয়ে অনুবাদ করছে।
এই পর্বে "আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া" কিতাবে বিকৃতি নিয়ে বলা আছে।
অথচ সহীহ্‌ সনদে মহানবী (সঃ) এর জন্ম তারিখ ১২ ই রবিউল আউয়াল সোমবার।
হাফিজে হাদীস হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ২৩৫ হিজরি) যেটা বিশুদ্ধ সনদে হাদীস শরীফে বর্ননা করেন-
ورواه ابن أبى شيبة في مصنفه عن عفان ، عن سعيد بن ميناء ، عن جابر وابن عباس أنهما قالا : ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الفيل يوم الاثنين الثانى عشر من شهر ربيع الاول
অর্থ : হযরত আফফান রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্নিত,তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা (রহঃ) থেকে বর্ননা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, হুজুর পাক (সঃ) এর বিলাদত শরীফ হস্তি বাহিনী বর্ষের ১২ই রবীউল আউয়াল সোমবার হয়েছিল।
[মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা; বুলূগুল আমানী ফী শরহিল ফাততিহর রব্বানী' ২য় খণ্ড, ১৮৯ পৃঃ বৈরুতে মুদ্রিত; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ' ২য় খণ্ড, ২৬০ পৃঃ বৈরুতে মুদ্রিত]
এই বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে দেখুনঃ
https://www.facebook.com/BanglaTimes71/posts/273981844727773

মহানবী (সঃ) এর জন্ম তারিখ কবে ?=====================কথিত সহীহ হাদিসের অনুসারী ওহাবী/খারেজী সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাদের সমা...
11/10/2021

মহানবী (সঃ) এর জন্ম তারিখ কবে ?
=====================
কথিত সহীহ হাদিসের অনুসারী ওহাবী/খারেজী সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাদের সমাজে প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছে যে, ১২ই রবিউল নাকি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম তারিখ নয়। এই পর্বে আমরা সহীহ হাদীসের আলোকে দেখবো আসলে কত তারিখ।
সহীহ্‌ সনদে মহানবী (সঃ) এর জন্ম তারিখ ১২ ই রবিউল আউয়াল সোমবার। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলিলসমূহ পেশ করা হলঃ
হাফিজে হাদীস হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ২৩৫ হিজরি) যেটা বিশুদ্ধ সনদে হাদীস শরীফে বর্ননা করেন-

ورواه ابن أبى شيبة في مصنفه عن عفان ، عن سعيد بن ميناء ، عن جابر وابن عباس أنهما قالا : ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الفيل يوم الاثنين الثانى عشر من شهر ربيع الاول

অর্থ : হযরত আফফান রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্নিত,তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা (রহঃ) থেকে বর্ননা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, হুজুর পাক (সঃ) এর বিলাদত শরীফ হস্তি বাহিনী বর্ষের ১২ই রবীউল আউয়াল সোমবার হয়েছিল।
[মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা; বুলূগুল আমানী ফী শরহিল ফাততিহর রব্বানী' ২য় খণ্ড, ১৮৯ পৃঃ বৈরুতে মুদ্রিত; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ' ২য় খণ্ড, ২৬০ পৃঃ বৈরুতে মুদ্রিত]
উক্ত হাদীস শরীফের সম্মানিত রাবীগণ হচ্ছেন--
**হযরত আফফান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি
**সাঈদ ইবনে মীনা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি
**হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
**হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু।
উক্ত বর্ণনার 'সনদ'- এর মধ্যে শেষের দু’জন হলেন বিশিষ্ট সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। খোদ বুখারী-মুসলিমে তাদের থেকে হাদীস বর্ণিত আছে। প্রথম দু’জন বর্ণনাকারী সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ বলেছেন,
আফফান একজন উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য ইমাম, প্রবল স্মরণশক্তি ও দৃঢ় প্রত্যয়সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব
[খোলাসাতুত তাহযীব ২৬৮ পৃঃ বৈরুতে মুদ্রিত]
দ্বিতীয় বর্ণনাকারী সাঈদ ইবনে মীনা। তিনিও অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।
[খোলাসাহ ১৪৩ পৃঃ এবং তাক্বরীব ১২৬ পৃঃ]
এ দুজন উচ্চ পর্যায়ের ফক্বীহ সাহাবীর বিশুদ্ধ সনদসহকারে বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হলো, ১২ই রবিউল আউয়াল হচ্ছে হুযূর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র মিলাদ দিবস। সুতরাং পরবর্তী যুগগোলোর কোন ইতিহাস লেখকের ভিন্নকথা, ধারণা বা অনুমান অথবা কোনো জ্যোতির্বিদ (যেমন- মাহমুদ পাশা) উক্ত বিশুদ্ধ বর্ণনার মোকাবেলায় দৃষ্টিপাতযোগ্য ও গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। কেননা উপরের সনদটি সব থেকে ছোট এবং সম্পূর্ণ সহীহ। ১২ তারিখ ব্যতীত অন্য যে সব তারিখের কথা শোনা যায় সেগুলোর একটাও সহীহ সনদে বর্ণিত নয়।
এমনকি, হযরত যোবায়ের ইবনে বাক্কার, ইমাম ইবনুল আসাকির, ইমাম জামাল উদ্দিন ইবনে জূযী এবং ইবনুল জাযযার প্রমুখ ১২ই রবিউল আউয়াল 'বিশ্বনবীর মিলাদ দিবস' হওয়াই নির্ভরযোগ্য ও সেটার উপর গবেষক ইমামদের 'ইজমা' (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত হবার কথা ঘোষনা করেছেন।
[মায়াহেবুল লাদুননিয়া; সীরাত ই হালবিয়াহ ১ম খণ্ডঃ ৯৩ পৃঃ; যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ১ম খণ্ডঃ ১৩২ পৃঃ; মা-সাবাতা মিনাস সুন্নাহ কৃত শায়খ আল-মুহাক্বক্বিক্ব দেহলভী ৯৮ পৃঃ; শামামাহ-ই আম্বিয়াহ কৃত নাওয়াব সিদ্দীক্ব হাসান খান ভূপালী আহলে হাদীস ০৭ পৃঃ]
আরও যে সমস্ত কিতাবে ১২ই রবিউল আউয়াল পাওয়া যায় সেগুলো হল,
১. মুহাম্মাদ বিন ইসহাক (রাহ) এর মতঃ
মুহাম্মাদ বিন ইসহাক কে? তাঁর পুরো নাম হচ্ছে আবু বাকার মুহাম্মাদ বিন ইসহাক। তিনি ৮৫ হিজরীতে মদীনা মুনাওওয়ারায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় মদীনা শরীফে কাটিয়েছেন। তিনিই হচ্ছেন প্রথম মুসলিম ঐতিহাসিক যিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহান জীবনের উপর গ্রন্থ লিখেছিলেন। তাঁর সীরাত গ্রন্থটির নাম হচ্ছে “সীরাতু রাসুলিল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত উলামাদের মন্তব্যঃ
ক) ইমাম সুফিয়ান ছাওরী বলেন, আমি ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইসহাকের মজলিসে ৭০ বছরের চেয়েও বেশীদিন বসেছিলাম। আমি কাউকে কোনদিন তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করতে দেখিনি। [তারীখে বাগদাদঃ ১/২১৮]
খ) ইমাম শু’বাহ বলেন, ইমাম ইবনে ইসহাককে হাদিস শাস্ত্রে ব্যুৎপত্তির কারণে ইমামুল মুহাদ্দিসীন তথা মুহাদ্দিসগণের ইমাম বলা উচিৎ। [তারীখে বাগদাদঃ ১/২১৮]
গ) ইয়াহিয়া বিন মুয়ীন বলেন, হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে সিকাহ তথা নির্ভরযোগ্য। [তারিখে বাগদাদঃ ১/২১৮]
নোটঃ
ইমাম যাহাবীর লিখিত কিতাব ‘সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ পড়লে উপরোক্ত তথ্যগুলো পাবেন। কেউ কেউ ইমাম ইবনে ইসহাক সম্পর্কে সমালোচনা করার চেষ্টা করেছেন। ইমাম যাহাবী তাঁর এই কিতাবে প্রমাণ করেছেন যে, ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে সকল অভিযোগ মিথ্যা।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ সম্পর্কে ইমাম ইবনু ইসহাকের মতঃ
বিশ্বনন্দিত মুসলিম ঐতিহাসিক ইবনু হিশাম বলেন, ইমাম ইবনু ইসহাক বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ আমুল ফীলে (ঐ বছর, যে বছরে আবরাহা তার হস্তি বাহিনী নিয়ে মক্কা মুকাররামাহ আক্রমণ করেছিল) জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
[আস-সীরাতুন নাবাওয়িয়্যাহ, পৃঃ ২০৮]
২. তারীখুল ইসলাম, অধ্যায়ঃ মাওলিদুহুল মুবারাকু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এই গ্রন্থে ইমাম যাহাবী (রা) ১২ই রবিউল আউয়াল সম্পর্কিত কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। তাঁর উল্লেখকৃত প্রথম হাদীস সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এটি সহীহ নয়। উল্লেখকৃত বাকী হাদীসগুলোর ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি, যা প্রমাণ করে যে ঐ হাদীস গুলো সহীহ। অন্যথায় প্রথম হাদীসের ন্যায় এগুলোর ব্যাপারেও একই মন্তব্য করতেন। এখানে দুর্বল সনদের হাদীসটি উল্লেখ করছিনা। বরং যে সহীহ হাদীসগুলো ইমাম যাহাবী উল্লেখ করেছেন, তা উল্লেখ করছিঃ
ইমাম যুহরী বলেন, সাঈদ বিন মুসাইয়াব বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ ই রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।
মা’রুফ বিন খাররাবুয (রা) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।
৩. আস সীরাতুন নাবাওয়িয়্যাহ, খন্ড ১, পৃঃ ১৯৯
ইমাম ইবনু কাছীর (রাহ) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মতারিখ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত উল্লেখ করেছেন, যেমন, কেউ কেউ বলেছেন, ৮ই রবিউল আউয়াল কেউ কেউ বলেছেন, ১০ ই রবিউল আউয়াল কেউ কেউ বলেছেন, রামাদান মাসে কেউ কেউ বলেছেন, সফর মাসে তারপর ইমাম ইবনু কাছীর (রাহ) বলেন, কিছু উলামায়ে কেরাম বলেছেন, ১২ই রবিউল আউয়াল। ইমাম ইবনু ইসহাক এই মতকে গ্রহণ করেছেন। তাছাড়া ১২ই রবিউল আউয়ালের ব্যাপারে হাদীস ও পাওয়া যায়। হযরত জাবির ও ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমুল ফীলে ১২ ই রবিউল আউয়াল মাসে সোমবার দিন জন্ম গ্রহণ করেছেন। এইদিন তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। এইদিন তিনি মিরাজে যান, এবং এইদিন তিনি ইন্তেকাল করেন। এরপর ইমাম ইবনু কাছীর (রাহ) বলেন, এটাই (১২ই রবিউল আউয়াল) বেশীরভাগ উলামাগণ বলেছেন এবং এটাই সুপ্রসিদ্ধ মত।
৪. আস সীরাতুন নাবাওয়িয়্যাতু ওয়া আখবারুল খুলাফা, পৃঃ ৭
গ্রন্থকারঃ আল- হাফিযুল কাবীর আবু হাতিম মুহাম্মাদ বিন হিব্বান বলেন, রাসুল (সঃ) আমুল ফীলে ১২ই রবিউল আউয়ালে জন্মগ্রহণ করেন।
৫. উয়ূনুল আছারি ফী ফুনূনিল মাগাযী ওয়াশ শামাইলি ওয়াস সিয়ারি, খন্ড ১, পৃঃ ৩৮
ইমাম, হাফিয ইবনু সায়্যিদিন নাস তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমু ফীলের ঘটনার ৫০ দিন পর ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেন।
৬. আর রাউদুল উনফ, খন্ড ১, পৃঃ ৩০০
ইমাম সুহাইলী ইমাম ইবনু ইসহাকের মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং বলেছেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমুল ফীলে ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেছেন।
৭. সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদি ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদি, খন্ড ১, পৃঃ ৩৩৪-৩৩৬
ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ আস সালিহী এই গ্রন্থে ইমাম ইবনু ইসহাকের মতকে প্রাধান্য দিয়ে বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমুল ফীলে ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেন। শুধু তাই বলেই তিনি শেষ করেননি, তিনি এটাও বলেছেন, ‘আমাদেরকে এটা অনুসরণ করতে হবে’।
৮. বাহজাতুল মাহাফিলি ওয়া বাগিয়্যাতুল আমাছিলি ফী তালখীসিল মু’জিযাতি ওয়াস সিয়ারি ওয়াশ শামা ইলি, খন্ড ১, পৃঃ ৫১
ইমাম আবু যাকারিয়া ইমাদুদ্দীন আল আমিরী বলেন, সকল উলামা একমত হয়েছেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেছেন। বেশীর ভাগ উলামা একমত হয়েছেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন, আর এটাই বিশুদ্ধ মত।
৯. আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ ফী সীরাতিল আমীনিল মা’মূন (অন্য নাম ইনসানুল উয়ূন), খন্ড ১, পৃঃ ৯৩
ইমাম আলী বিন বুরহানুদ্দীন আল হালাবি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন ছিল ১২ই রবিউল আউয়াল। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে এটাই অনুসরণ করতে হবে।
১০. তারীখু তাবারী, অধ্যায়ঃ যিকরু মাওলিদি রাসূলিল্লাহ খন্ড ১, পৃঃ ২৬২
ইমাম, ফকীহ, মুফাসসির, মু’আররিখ আবু জা’ফার মুহাম্মাদ বিন জারীর আত তাবারী, ইমাম ইবনু ইসহাকের মতটি উল্লেখ পূর্বক সহমত পোষণ করে বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেন।
১১. আল কামিলু ফিত তারীখ, অধ্যায়ঃ যিকরু মাওলিদি রাসূলিল্লাহ, খন্ডঃ১, পেইজ নাম্বারঃ ৩৫৫
ইমাম ইবনুল আছীর ও একইভাবে ইমাম ইবনু ইসহাকের মতটি প্রাধান্য দিয়ে বলেন, ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার দিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছেন।
১২. দিওয়ানুল মুবতাদা ই ওয়াল খাবারি ফী তারীখিল আরাবি ওয়াল বারারি (গ্রন্থটি তারীখু ইবন খালদুন নামে পরিচিত), খন্ড ২, পৃঃ ৪০৭
বিশ্ববিখ্যাত ঐতিহাসিক আব্দুর রাহমান ইবনু খালদুন- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মতারিখ সম্পর্কে বলেন, এটা ছিল আমুল ফীলের ১২ ই রবিউল আউয়াল।
১৩. দালায়েলুল নবুওত ১ম খন্ড ৭৪ পৃঃ
প্রশিদ্ধ মোহাদ্দেস ইমাম বায়হাক্বী লিখেছেন হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম সোমবারের দিনে ১২ ই রবিউল আওয়ালে জন্মগ্রহন করেছিলেন।
১৪. আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আ’লাম ফি মাওলিদে সাইয়্যিদে উলদে আদম
আল্লামা ইবন হাজর হাইসামি (রাহঃ) বলেন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার দিবাগত রাতে জন্মগ্রহণ করেন।
**ওহাবীদের মন্তব্যঃ
--------------------
ভারতীয় উপমহাদেশের আহলে হাদীস ফিরকার জনক নবাব সিদ্দিক হাসান খান বোহাপালভি ১২ই রবিউল আউয়াল বলে উল্লেখ করেন।
[আশ শুমামা তুল আম্বিয়া ফি মাওলিদ খায়ির আল বারিয়া পৃঃ ০৭]
দেওবন্দীদের মন্তব্যঃ
দেওবন্দী/কাওমী সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের মুফতি ত্বকী উসমানী সাহেবকে খুব অনুসরণ করেন। এই মুফতি ত্বকী উসমানী সাহেবের পিতা হলেন মুফতি শফী উসমানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি যিনি তাফসির মা’রিফুল কুর’আনের রচয়িতা “ফতওয়ায়ে দেওবন্দ” এর অন্যতম লেখক। উনি ১২ই রবিউল আউয়াল বলে মন্তব্য করেছেন। [সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া পৃঃ ১৩, নাদিয়াতুল কুর’আন প্রকাশনী, চকবাজার, ঢাকা] তিনি উক্ত কিতাবে আরও বলেন,
১২ই রবিউল আউয়াল প্রসিদ্ধ অভিমত। হাফিজ ইবন হাজর আসকলানী (রঃ) এর উপর ইজহার দাবী করেছেন। মাহমুদ পাশা মিশরী যাহা গণনার মাধ্যমে ৯ তারিখ গ্রহণ করেছেন। তাহার অধিকাংশ নির্ভরযোগ্য অভিমতের বিরুদ্ধে সনদ বিহীন উক্তি। চন্দ্রোদয়ের স্থান বিভিন্ন হওয়ার কারণে গণনার উপর এমন কোন নির্ভরযোগ্যতার জন্ম হয় না যে, এর উপর ভিত্তি করে জামহুরের বিরুদ্ধাচারণ করা যাবে।
[প্রাগুক্ত ১৪ পৃ এর টিকা নং ১]
সুতরাং উপরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে প্রতীয়মাণ হল, ১২ই রবিউল আউয়াল হল সর্বগ্রহণযোগ্য মত, এর উপর সহীহ সনদে হাদীস বর্ণিত রয়েছে এবং এটার উপর ইজমাও হয়েছে। এছাড়া বাকি যে সব তারিখ আছে সেগুলো সহীহ সনদে বর্ণিত নয়।
একটি সংশয় নিরশনঃ
ইসলামি ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ এর বংজ্ঞানুবাদে বিলাদাত শরীফের তারিখ ১৯ লিখা আছে। কিন্তু মূল আরবী কিতাবে ১২ লিখা আছে। এরপর ইমাম ইবন কাসির রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন

وهذا هو المشهور عند الجمهور والله أعلم

অর্থঃ এটাই বেশীর ভাগ আলেমদের মত এবং আল্লাহ-ই ভাল জানেন।
তিনি হাদীসটি মুসান্নাফ আবি শায়বা থেকে সংগৃহীত করেন। সেখানেও ১২ লিখা আছে।

"দেহবাদী "আহলে হাদিস/ সালাফি আকিদা" যেখানে এসে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে"( প্রসঙ্গঃ মরহুম প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর...
23/09/2021

"দেহবাদী "আহলে হাদিস/ সালাফি আকিদা" যেখানে এসে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে"
( প্রসঙ্গঃ মরহুম প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেবের সালাফি আকিদা ও তাঁর বই পড়া)
-------------------------------------------------------------
আল্লাহ তায়া'লা বলেন,
"কুল্লু মান আ'লাইহা ফা-ন। ওয়া ইয়াবকা ওয়াজহু রাব্বিকা যুলজালালি ওয়াল ইকরাম"
শাব্দিক অর্থ করছি সালাফি ভাইদের মতো করেঃ
"এখানকার সবকিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালনকর্তার ওয়াজহুন বা মুখমন্ডল ছাড়া।" (সূরা আর রাহমান, ৫৫ঃ২৬-২৭)
"কুল্লু শাইইন হালিকুন ইল্লা ওয়াজহাহু"
"আল্লাহর ওয়াজহুন বা মুখমন্ডল ব্যাতীত সবকিছু ধ্বংস হবে।" (সূরাতুল কাসাস, ২৮ঃ৮৮)
অথচ আমরা জানি কুরআন -সুন্নাহতে আল্লাহর হাত, পা, পায়ের গুছা ইত্যাদি সম্পর্কেও অনেক কিছু বলা আছে। এখন আল্লাহ পাকের এসব গুণকে আমরা যদি সালাফিদের মত শাব্দিকভাবে যেভাবে আছে সেভাবেই নিই, তবে এর মানে কী এই দাঁড়ায় যে, কেয়ামতের দিনে আল্লাহর মুখমণ্ডল ছাড়া বাকি অঙ্গসমূহ ধ্বংস হয়ে যাবে? মায়া'জাল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহাল আজিম। আল্লাহ পাক কি তবে আংশিক ধ্বংসশীল?
ইমাম বুখারি রাহ. বুখারি শরিফের কিতাবুত তাফসিরে সাহাবা ও তাবিইন তথা সালফে সালিহিনদের অনুসরণে, এই ওয়াজহুন বা মুখমন্ডল এর তাফসির করেছেন আল্লাহর জাত বা অস্তিত্ব দ্বারা, এবং এটাই সঠিক। অর্থ্যাৎ আল্লাহ তায়ালার জাত বা অস্তিত্ব ছাড়া সব ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা কমন সেন্সের বিষয় যে, এই গুণগুলো রুপক। কিন্তু সেজন্য সালাফিরা ইমাম বুখারির রাহ. প্রচন্ড সমালোচনা করে তার উপর গোমরাহীর (জাহমি) ফতোয়া দিয়েছে। নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক। কারণ কমন সেন্স খুবই আনকমন।
আল্লাহ পাক আরশের উর্ধ্বে, এটা রুপক বিষয়। অপর আয়াতে এসেছে, তিনি আকাশের উর্ধ্বে। এসবই রুপক।
আপনি আল্লাহ পাককে আরশের উর্ধ্বে মানেন আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আল্লাহর বাড়ি আরশে, তিনি আরশে বসে আছেন? তাহলে এর আগে "সুম্মাস তাওয়া ইলাস সামা-ই" (আল কুরআন, ২ঃ২৯) বলা হয়েছে। এর মানে কী এর আগে আকাশে ছিলেন আল্লাহ পাক? এভাবে স্থানান্তর হচ্ছেন আল্লাহ পাক আমরা সৃষ্টির মত করে? তাহলে আল্লাহ পাক আরশ ও আকাশ সৃষ্টির আগে, বিগ ব্যাং এর আগে আল্লাহ পাক কই ছিলেন? যখন টাইম, স্পেস কিছুই ছিল না, তখন? আল্লাহ পাক কোন স্থান -কাল- পাত্রের মূখাপেক্ষী না, তিনি সামাদ, সূরা ইখলাসের কথা, তিনি অমূখাপেক্ষী। তিনি আগেও যেভাবে ছিলেন, এখনো সেভাবেই আছেন এবং থাকবেন। আল্লাহ পাককে তাঁর সৃষ্টি আরশ, আকাশ ও পৃথিবী কোনকিছুই ধারণ করতে পারে না। তিনি সৃষ্টির মাঝে প্রবিষ্ট হতে পারেন না। তিনি সকল সৃষ্টিকে পরিবেষ্টন করে আছেন। ওয়া কা-নাল্লাহু বি কুল্লি শাইইম মুহিতা৷ (সূরা নিসা, আয়াত নং- ১২৬, সূরা ফুসসিলাত, আয়াত নং -৫৪)
হ্যাঁ, তাদের ওস্তাদ ও ইমাম শায়খ ইবনে তাইমিয়া সাহস করে তাদের প্রকৃত দেহবাদী আকিদা সুস্পষ্ট করে গেছেনঃ
"আমি এখন মিম্বরের উপরের সিড়ি থেকে নিচে যেভাবে নেমে আসলাম, আল্লাহ পাকও প্রতি রাত্রের শেষে আরশ থেকে দুনিয়ার আকাশে এভাবেই নেমে আসেন"। - শায়খ ইবনে তাইমিয়া রাহ.
নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
এটা দেহবাদ না হলে দেহবাদ কী?
সূত্রঃ রিহলাতু ইবনে বতুতা/প্রথম খন্ড- ৫৭ ও ৫৮ পৃষ্ঠা- প্রকাশক: মাত্ববাআতুল আযহার, মিসর, ১৩৪৬ হিজরী। বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বাতুতা দামেশকের মসজিদে তাঁর স্বচক্ষে দেখা ঘটনা তিনি বর্ণনা করেন।
এই যুগে আল্লাহর দেহ সাব্যস্তকারীরা পাবলিকের মাইর খাবে বলে এসব বলার সাহস করে না। অন্তরে সেই গোমরাহ বিশ্বাসই লালন করে।
অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন, লাইসা কামিছলিহি শাইউন। তাঁর মতো কোনকিছুই নেই। - আল কুরআন
তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। (আয়াতুল কুরসি, সূরা বাকারা, আয়াত নং-২৫৫)
তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। (সূরাতুল হাদিদ, আয়াত নং ৪)
আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী। (সূরা কাফ, আয়াত নং -১৬)
তারা বলেন, এ সংক্রান্ত তাদের পক্ষের সব আয়াত বিনা তাভিল বা ব্যাখ্যা ছাড়াই মানতে হবে, যেভাবে আছে সেভাবেই। আবার আমাদের পক্ষের আয়াতগুলো ও হাদিসগুলো ঠিকই তারা তাভিল করে, ব্যাখ্যা করে। আজব প্রাণী এরা।
আমি এগুলো নিয়ে ওপেন মঞ্চে আলোচনা করতে রাজিই না। তবে করলে ব্যালেন্স ১০০% থাকতে হবে, কারণ এগুলো ইমান আকিদার বিষয়। অন্যথায় সাধারণ মানুষের আকিদার জটিল এসব বিষয় জানার কোন প্রয়োজনই নেই। অথচ আহলে হাদিস /সালাফিরা এসব প্রচারের জন্য ওঠেপড়ে লেগেছে। যত্রতত্র এসব নিয়ে আলোচনা। মানুষের জীবনের কঠিন কঠিন বিষয় নিয়ে কথা নেই।
অথচ মরহুম প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেবের খুব বড় ভক্ত আমাদের দেশের সবচাইতে বড় আজহারী তথাকথিত সেলিব্রেটিকে বক্তব্য দিতে দেখলাম, তিনি বলছেন, (আল্লাহ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে কি বলল আজহারি এটা, সম্পূর্ণভাবে আজহারের আকিদার বিপরীত) "আল্লাহ বলেন, আর রাহমান, আমরা বলি ভাল হইছে আপনি আর রাহমান, আপনি থাকেন কই? আল্লাহ বলেন, আর রাহমানু আলাল আরশিসতাওয়া। আমার বাড়ি আরশে।" নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক। মায়াজাল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহাল আজিম।
এর মানে কি? এটা আল্লাহর শানে কথা বলার আদব? এটা এপ্রোচ? ভাই বন্ধু নিয়ে কথা বলছে নাকি সে? "ভালো হইছে আপনি রাহমান, আপনার বাড়ি কই!" ছিঃ! এভাবে আল্লাহ সম্পর্কে মন্তব্য!
"আল্লাহর বাড়ি আরশে" গত ১৪০০ বছরে কোন সালফে সালিহিন কী এমন কথা বলেছেন?
আধুনিক ও স্টাইলিশ হতে হতে পচাইয়া ফেলছে সমাজ। আজব। ইসলাম পুরোটাই আদবের নাম, অথচ আদব নামক কোন জিনিস নাই। আর ভন্ড পীরের মুরিদদের মত আপনারাও শায়খ পূজায় মজে আছেন। শায়খ যা বলে তাই ঠিক। আজব!
পরিশেষে সবার প্রতি অনুরোধ, দয়া করে সালাফি আহলে হাদিসদের এসব বিভ্রান্তিকর আকিদাতে বিশ্বাসী প্রফেসর ড. মরহুম আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেবের কিতাবসমূহ সাধারণ মানুষজন পড়বেন না প্লিজ। বিভ্রান্ত হবেন। উলামায়ে কেরামকে পড়তে দিন এসব। আর যদি সাধারণ মানুষ পড়েনও, তবে দয়া করে কোন আকিদা গ্রহণ করবেন না তাঁর কিতাব থেকে।
আল্লাহ পাক তাঁকে ও আমাদের সকলকে ক্ষমা করে দিন। আমিন।
আর সকলের প্রতি আরেকটা অনুরোধ, আল্লাহর ওয়াস্তে মৃত কিংবা জীবিত কাউকে গালাগালি, বকাবকি, লানত করা ইত্যাদি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য বন্ধ করি। বিভ্রান্তির জবাব একাডেমিক ভাষায় দিতে হবে। যাদের কাছে দলিল থাকে না তারাই আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলে, গালাগালি করে। আমাদের সাথে ১৪০০ বছরের সালফে সালিহিন আছেন, কুরআন সুন্নাহের দলিল আছে, তদোপরি আমরা গালাগালি, লানত, বকাবকি, অশ্লীল শব্দচয়ন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কেন করব? এগুলো মুসলমানদের ভাষা হতে পারে না।
কৃতঃ সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী

প্রথমেই বলে নিচ্ছি আমি আলা হযরত মসলকের কেউ নই। অনলাইনে বা ফেসবুকে প্রচার করা একটা দলবাজীপূর্ণ মিথ্যাচারে ভরপুর একটা আর্ট...
11/09/2021

প্রথমেই বলে নিচ্ছি আমি আলা হযরত মসলকের কেউ নই। অনলাইনে বা ফেসবুকে প্রচার করা একটা দলবাজীপূর্ণ মিথ্যাচারে ভরপুর একটা আর্টিকেলের জবাবের জন্য শেয়ার করা।
=======================
দেওবন্দী ধারার একজন মুরুব্বি আলিমের অনেক প্রশংসা শুনছিলাম অনেক দিন থেকে। মাওলানা আব্দুল মালিক সাহেব উনার নাম। মাসিক আল কাওসারের অনলাইন ভার্সনে কিছু লেখাও পড়েছি। ভালো লেগেছিল। অনেকের মতে তিনি নাকি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস। ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অনেকেই। প্রথমবার খটকা লেগেছে যখন শুনলাম তিনি বলেছেন, বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাই, মুসনাদ আহমদ ইবনে হাম্বলের হাদিসসমূহে যত জায়গায় প্রিয়নবীর ﷺ আহলে বায়তের সদস্যগণ তথা মাওলা আলি, সায়্যিদাহ ফাতেমা, ইমাম হাসান হোসাইন আ. রা. এঁর নামের শেষে আলাইহিসসালাম কিংবা আলাইহাস সালাম কিংবা আলাইহিমুস সালাম যে এসেছে সেসব নাকি মূল মাখতুতাতে নেই। শিয়া রাফেজিরা নাকি এগুলো লাগিয়েছে এই কিতাবগুলোতে। এই অযৌক্তিক কথাটা শুনেও চুপ থাকলাম। সিরিয়াসলি নিই নাই। কী আসে যায় কে কী বলল তা নিয়ে, এমন ভাব ছিল আমার।
কিন্তু গত কদিন থেকে মাওলানা আব্দুল মালিক সাহেবের নামে একটা লেখা দেখতে পাচ্ছি যা ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ও পেইজে ভেসে বেড়াচ্ছে, যা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের অন্যতম প্রধান একটি ধারা বেরেলভি মসলকের বিভিন্ন আকিদা খন্ডন করে লেখা। মসলকে আলা হজরত তথা ইমাম আহমদ রেজা খান বেরেলভি রাহ. কে যারা অনুসরণ করে তাদের আকিদার বিরুদ্ধে লেখাটি। লেখাটি নাকি তাদের মাসিক আল কাওসারে প্রকাশিত বলে নিচে উল্লেখ আছে। তিনি (যদি তার লেখা হয়ে থাকে) নিঃসন্দেহে সেই লেখাটিতে অসংখ্য অগুণিত মিথ্যা অপবাদ ও ছল চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি সর্বপ্রথম পয়েন্টেই তিনি মসলকে আলা হজরত এর উপর মিথ্যাচার ও ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন, কিংবা বলতে পারি তিনি অজ্ঞানতার পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি এক নং পয়েন্টেই হুজুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার ইলমে গায়ব বা অদৃশ্যের জ্ঞান যে আল্লাহ পাক তাঁকে দিয়েছেন সেটাকে অস্বীকার করেছেন। বলেছেন এগুলো নাকি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিপরীত আকিদা। আমি কোট করছি, তিনি লিখেন,
"উল্লেখিত ঈমানী আকীদার সম্পূর্ণ বিপরীত বেরলভীদের আকীদা হচ্ছে- দৃশ্য-অদৃশ্য সকল কিছুর ইলম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেয়া হয়েছে। একই সাথে অতীতে যা কিছু হয়েছে ও কিয়ামত পর্যন্ত ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সব বিষয়ে তিনি সম্যক অবগত ছিলেন! সৃষ্টির সূচনা থেকে জান্নাত জাহান্নামে প্রবেশ পর্যন্ত সামান্যতম বিষয়ও তার জ্ঞানের বহির্ভূত ছিল না। উক্ত বাতিল আকীদা প্রচারের জন্য স্বয়ং আহমদ রেযা খান একাধিক বই লিখেছে। যেমন ‘ইম্বাউল মুস্তফা’ ও ‘আদ দাওলাতুল মাক্কিয়াহ বিল মাদ্দাতিল গাইবিয়্যাহ’। আরো দেখা যায়, প্রসিদ্ধ বেরলভী আলেম মৌলভী নাঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী রচিত ‘আলকালিমাতুল উল্য়া’ পৃ. ৩, ৪৩, ও ৬৩। এবং কাজী ফযল আহমদ লুধিয়ানভী রচিত ‘আনওয়ারে আফতাবে সাদাকাত’ পৃ. ১৩৭"
নিচের এই অংশটুকুর দিকে ফোকাস করুন প্রিয় পাঠকঃ
"একই সাথে অতীতে যা কিছু হয়েছে ও কিয়ামত পর্যন্ত ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সব বিষয়ে তিনি সম্যক অবগত ছিলেন! সৃষ্টির সূচনা থেকে জান্নাত জাহান্নামে প্রবেশ পর্যন্ত সামান্যতম বিষয়ও তার জ্ঞানের বহির্ভূত ছিল না। উক্ত বাতিল আকীদা প্রচারের জন্য স্বয়ং আহমদ রেযা খান একাধিক বই লিখেছে। যেমন ‘ইম্বাউল মুস্তফা’ ও ‘আদ দাওলাতুল মাক্কিয়াহ বিল মাদ্দাতিল গাইবিয়্যাহ’।"
হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺর ইলমে গায়ব তথা অদৃশ্যের জ্ঞানকে অস্বীকার করতে গিয়ে তিনি অন্তত ৪ খানা সহিহ হাদিসকে অস্বীকার করেছেন। তার মতে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺকে আল্লাহ পাক সৃষ্টির শুরু থেকে জান্নাত বাসী জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত সকল জ্ঞান নাকি দেন নাই। আমি বুঝি না হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺর শান মান মর্যাদাকে খাটো করে কী মজা পান তারা?
আসুন সাহাবায়ে কেরাম বুখারি মুসলিম শরিফের সহিহ হাদিসে কী বলছেন এই ব্যাপারে দেখিঃ
وعَنْ أَبي زَيْدٍ عمْرُو بنِ أخْطَبَ الأنْصَارِيِّ  قَال: صلَّى بِنَا১।
رَسُولُ اللَّه ﷺ الْفَجْر، وَصعِدَ المِنْبَرَ، فَخَطَبنَا حَتَّى حَضَرَتِ الظُّهْرُ، فَنَزَل فَصَلَّى. ثُمَّ صَعِدَ المِنْبَر حَتَّى حَضَرتِ العصْرُ، ثُمَّ نَزَل فَصَلَّى، ثُمَّ صعِد المنْبر حتى غَرَبتِ الشَّمْسُ، فَأخْبرنا مَا كان ومَا هُوَ كِائِنٌ، فَأَعْلَمُنَا أحْفَظُنَا. رواهُ مُسْلِمٌ.
আবূ যায়দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নিয়ে ফজরের সলাত আদায় করলেন। তারপর মিম্বারে আরোহণ করে ভাষণ দিলেন। পরিশেষে যুহরের সলাতের সময় উপস্থিত হলে তিনি মিম্বার হতে নেমে সলাত আদায় করলেন। তারপর পুনরায় মিম্বারে উঠে তিনি ভাষণ দিলেন। এবার আসরের সলাতের ওয়াক্ত হলে তিনি মিম্বার থেকে নেমে সলাত আদায় করে পুনরায় মিম্বারে উঠলেন এবং আমাদেরকে লক্ষ্য করে খুতবাহ্ দিলেন, এমনকি সূর্যাস্ত হয়ে গেল, এ ভাষনে তিনি আমাদেরকে পূর্বে যা ঘটেছে এবং ভবিষ্যতে যা ঘটবে ইত্যকার সকল কিছু সম্বন্ধে সংবাদ দিলেন। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, যে লোক এ কথাগুলো সর্বাধিক মনে রেখেছেন আমাদের মধ্যে এ সম্বন্ধে তিনিই সবচেয়ে বেশী জানেন। (ই.ফা. ৭০০৩, ই.সে. ৭০৬০)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১৫৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
قَامَ فِينَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وَسَلَّمَ مَقَامًا، ما تَرَكَ২। شيئًا يَكونُ في مَقَامِهِ ذلكَ إلى قِيَامِ السَّاعَةِ، إلَّا حَدَّثَ به، حَفِظَهُ مَن حَفِظَهُ وَنَسِيَهُ مَن نَسِيَهُ، قدْ عَلِمَهُ أَصْحَابِي هَؤُلَاءِ، وإنَّه لَيَكونُ منه الشَّيْءُ قدْ نَسِيتُهُ فأرَاهُ فأذْكُرُهُ، كما يَذْكُرُ الرَّجُلُ وَجْهَ الرَّجُلِ إذَا غَابَ عنْه، ثُمَّ إذَا رَآهُ عَرَفَهُ.
الراوي : حذيفة بن اليمان | المحدث : مسلم | المصدر : صحيح مسلم
হুযাইফাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে কিয়ামাত পর্যন্ত যা কিছু হবে, সকল বিষয় বর্ণনা করলেন। তারপর যে স্মরণ রাখবার সে স্মরণ রাখল এবং যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেল। তিনি বলেন, আমার এ সঙ্গীগণ জানেন যে, তন্মধ্যে কতক বিষয় এমন আছে, যা আমি ভুলে গেছি। কিন্তু সেটা সংঘটিত হতে দেখে আমার তা আবার মনে পড়ে যায়। যেরূপ কোন লোক দূরে চলে গেলে তার চেহারার কথা মানুষ ভুলে যায়। অতঃপর তাকে দেখে সে চিনে নেয়। [১৪] (ই.ফা. ৬৯৯৯, ই.সে. ৭০৫৬)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১৫৫
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
لقَدْ خَطَبَنَا النبيُّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ خُطْبَةً، ما تَرَكَ فِيهَا৩। شيئًا إلى قِيَامِ السَّاعَةِ إلَّا ذَكَرَهُ، عَلِمَهُ مَن عَلِمَهُ وجَهِلَهُ مَن جَهِلَهُ، إنْ كُنْتُ لَأَرَى الشَّيْءَ قدْ نَسِيتُ، فأعْرِفُ ما يَعْرِفُ الرَّجُلُ إذَا غَابَ عنْه فَرَآهُ فَعَرَفَهُ.
الراوي : حذيفة بن اليمان | المحدث : البخاري | المصدر : صحيح البخاري
الصفحة أو الرقم: 6604 | خلاصة حكم المحدث : [صحيح]
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমাদের প্রতি এমন একটি ভাষণ প্রদান করলেন যাতে কেয়ামত পর্যন্ত যা সংঘটিত হবে এমন কোন কথাই বাদ দেননি। এগুলো মনে রাখা যার সৌভাগ্য হয়েছে সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে। আমি ভুলে যাওয়া কোন কিছু যখন দেখতে পাই তখন তা চিনতে পারি এভাবে যেমন, কোন ব্যক্তি কাউকে হারিয়ে ফেললে আবার যখন তাকে দেখতে পায় তখন চিনতে পারে। [মুসলিম ৫২/৬, হাঃ ২৮৯১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬১৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫১)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৬০৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
৪।
يقول عمر بن الخطاب رضي الله عنه : " قام فينا النبي - صلى الله عليه وسلم - مُقاما، فأخبرنا عن بدء الخلق حتى دخل أهل الجنة منازلهم، وأهل النار منازلهم، حفظ ذلك من حفظه، ونسيه من نسيه " رواه البخاري .
তারিক ইব্‌নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মধ্যে দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি আমাদের সৃষ্টির সূচনা থেকে শুরু করে অবশেষে তিনি জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসীর নিজ নিজ নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করা পর্যন্ত সকল কিছু উল্লেখ করলেন। যে ব্যক্তি এ কথাটি স্মরণ রাখতে পেরেছে, সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩১৯২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
পাঠক এখন বিচারের ভারাভার আপনাদের হাতেই দিয়ে দিলাম।
তিনি একইভাবে বাকি অনেকগুলো পয়েন্টেও নুংরামীর আশ্রয় নিয়েছেন।
২। নবি করিম ﷺ হাজির নাজির এর পয়েন্টেও তিনি ছলনার আশ্রয় নেন। বেরেলভি মসলকের আলিম উলামারা কী বলেন তা বাদ দিয়ে তিনি সকল ক্ষেত্রেই অল্প কিছু মূর্খ আম মানুষ কী বলে তা বর্ণনা করেছেন।
হাজির নাজিরের আকিদা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি লিখেন, আমি কোট করছি,
"কিন্তু আফসোস, বেরলভীরা উল্লেখিত শিরকী আকীদার প্রবক্তা। তারা শুধু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেই নয়, বুযুর্গানে দ্বীনকেও হাযির-নাযির মানে।"
নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক।
ওলী আওলিয়াগন তো দূরের কথা নবি করিম ﷺ সর্বসময় সকল জায়গায় হাজির এই আকিদা আমরা কেউ পোষণ করি না। বরং আমাদের আকিদা হচ্ছে, আল্লাহ পাকের দেয়া ক্ষমতাতে নবী রাসূলগণ হাজির হতে পারেন দুনিয়ার যেকোন জায়গাতে। এই হিসেবে হাজির।
এই মর্মে মে'রাজের সময়কার বিখ্যাত হাদিসগুলোই যথেষ্ট। মেরাজ রজনীতে বায়তুল মুকাদ্দাস যাওয়ার পথে হজরত মুসা আ. কে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর রওজাতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে দেখেছেন। আবার হজরত মুসা আ. সহ সকল নবীগণ বায়তুল মুকাদ্দাসে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺর পেছনে নামাজ আদায় করেছেন। আবার অন্তত ১০ জন নবী-রাসূল (মুসা আ. সহ) আকাশের ৭ টি স্তরে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺকে স্বাগত জানিয়েছেন। হজরত মুসা আ. হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺকে ষষ্ঠ আকাশে পরামর্শ দিয়েছিলেন নামাজ ৫০ ওয়াক্ত থেকে ৫ ওয়াক্তে নামিয়ে আনার জন্য আল্লাহ পাকের কাছে অনুরোধ করতে। মুসা আ. উনার মাজারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেছেন, সেই মুসা আ. আবার বায়তুল মুকাদ্দাসে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺর পেছনে নামাজও আদায় করেছেন, আবার ষষ্ঠ আকাশে গিয়ে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺকে ওয়েলকামও করেছেন। এই হাদিসগুলো তো বুখারি ও মুসলিমের মশহুর সহিহ হাদিস যা রেফারেন্সেরও মূখাপেক্ষী না।
অন্যান্য নবীগণ যদি বাহ্যিক ইন্তেকালের পর পৃথিবী ও আকাশের বিভিন্ন জায়গায় হাজির হতে পারেন তাহলে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺযিনি সকল নবীগণের সর্দার ও সকল রাসূলগনের ইমাম তিনি কেন বাহ্যিক ইন্তেকালের পর দুনিয়ার কোথাও হাজির হতে পারবেন না? সুরতে মিসালী নিয়ে হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺ অবশ্যই দুনিয়ার যেকোন জায়গাতে হাজির হতে পারেন, আল্লাহ পাকের ইচ্ছায়। এই হিসেবে নবীজিকেﷺ আমরা হাজির বলি। আর রওজা মোবারকে শুয়ে শুয়েই নবীজি ﷺ আমাদের আমলসমূহ দেখেন, সেই হিসেবে নাজির বা দর্শক বলি। কিন্তু হুজুর রাসূলুল্লাহ ﷺসর্বসময় সকল জায়গায় সর্বাবস্থায় হাজির এই আকিদা আমরা পোষণ করি না। আর তিনি বলছেন, আমরা নাকি বুজুর্গানে দ্বীনকেও হাজির নাজির মানি। নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক।
আর কোন পয়েন্ট রদ করার আমার রুচিতে দেয়নি। লেখাটিতে এত এত মিথ্যা অপবাদ, ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়া হয়েছে যা ভাষায় বর্ণনা করার মতো না।
এত বড় মুহাক্কিক আলিম বলে যার সুনাম করে সবাই তার কাছ থেকে এমন দলবাজী ও মসলকবাজী আচরণ অনভিপ্রেত। আল্লাহ পাক আমাদের উপর খাস রহমত করুন। আমিন।
কৃতঃ সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী

আইয়ামে হাররা কী??============**আইয়ামে হাররা ঐ দিন গুলোকে বলা হয়, যখন ইয়াযীদের নির্দেশে মদীনা মুনাওওয়ারা আক্রমণ করা হয়েছি...
14/08/2021

আইয়ামে হাররা কী??
============
**আইয়ামে হাররা ঐ দিন গুলোকে বলা হয়, যখন ইয়াযীদের নির্দেশে মদীনা মুনাওওয়ারা আক্রমণ করা হয়েছিল। এ সময় তার নির্দেশে মদীনাতে হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ সব কিছু সংঘটিত করেছিল ইয়াযিদের বাহিনী। অনেক সাহাবীদেরকে এ সময় শহীদ করা হয়েছিল।
[আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ - ষষ্ট খন্ড - অধ্যায়ঃ আল ইখবারু আন ওয়াকআতিল হাররাহ; আত তাবারীঃ ৫/৪৮৪; আল কামিলঃ ৪/১১২; আল বিদায়াহঃ ৮/২১৮]
**আইয়ামে হাররা এর সময় মসজিদে নববীতে তিন দিনের জন্য আজান দেয়া হয়নি। একামত ও দেয়া হয়নি। সায়ীদ বিন মুসাইয়াব (সাইয়্যিদুত তাবিয়ীন) মসজিদে নববী থেকে বের হতে পারেননি। (ঐ তিন দিন তিনি মসজিদে নববীতে অবস্থান করছিলেন)। তিনি (এ সময়) মসজিদে নববী থেকে এক ধরণের আওয়াজ শুনে নামাজের সময় অনুধাবন করতেন।
(অন্যত্র বলা হয়েছে, ঐ আওয়াজ ছিল আজানের ধ্বনি)।
[তাখরীজু আহাদীসিল মাসাবীহঃ ৫/২৩৬১ - মুহাদ্দিসঃ মুহাম্মাদ আল মানাওয়ী - হাদীসটি সহীহ; সুনানে দারিমী - খন্ড-১ - পেইজ নাম্বার-২২৮ - হাদীস সহীহ]
**এ ঘটনাকালে মুসলমানের রক্তে পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল মদীনার রাস্তাগুলো। মুসলমানের রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওযা মোবারক পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মসজিদে নববী রক্তে ভরে গিয়েছিল। ১০০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল। ধর্ষণের ফলে ১০০০ জারজ সন্তান জন্ম নিয়েছিল।
[আত তাযকিরাহ - ইমাম ইবনুল জাওযী - পেইজঃ ৬৩,১৬৩]
**হাররার দিন গুলোতে সায়ীদ বিন মুসাইয়্যাব (রাঃ) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাওযা মুবারক থেকে নামাজের সময়গুলোতে আজানের আওয়াজ শুনতেন। এ সময় তিনি ছাড়া আর কেউ মসজিদে ছিলনা।
[কিতাবুল ফারকি বাইনা আউলিয়া ইর রাহমানি ওয়া আউলিয়া ইশ শাইতানি - ইবনু তাইমিয়াহ - অধ্যায়ঃ কারামাতুস সাহাবাতি ওয়াত তাবিয়ীন]
**সায়ীদ বিন মুসাইয়াব কে ছিলেন?
সায়ীদ বিন মুসাইয়াব ছিলেন মদীনা মুনাওওয়ারার ফকীহদের মধ্য থেকে একজন। তিনি হাদীস, তাফসীর এবং ফিকহ সম্পর্কে অনেক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।
[কিতাবু শাযারাতিয যাহাবি ফী আখবারিম মিন যাহাবি - ইবনু ইমাদ হাম্বালী]
**তালহা বিন মুহাম্মাদ বলেন, হাররার দিন গুলোতে সায়ীদ বিন মুসাইয়াব মসজিদে নববীতে ছিলেন। কোথাও বের হন নাই। তিনি বলেছেন, যখন নামাজের সময় হত, আমি রাসুলের রাওযা হতে আজানের আওয়াজ বের হতে শুনতাম।
[সিয়ারু আ’লামিন নুবালা - ইমাম যাহাবী; দালাইলুন নুবুওওয়াহঃ ৫০৯/৫১০ - আবু নাঈম; আত তাবাকাতুল কুবরা - ইবনু সা’দ (৫৮১৯)-৫:৬]

সাহাবীদের (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) পাশাপাশি একজন ইহুদীও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাতা ও পা চুম্বন করেছিল।ع...
02/08/2021

সাহাবীদের (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) পাশাপাশি একজন ইহুদীও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাতা ও পা চুম্বন করেছিল।
عن صفوان بن عسال ان قوما من اليهود قبلوا يد النبى صلى الله عليه وسلم ورجله
অর্থঃ, হযরত ছাফওয়ান বিন আ'সল আল মুরাদি রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই ইয়াহুদীদের একটি গোত্র হুজুর এ পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’র হাত ও পা মোবারক চুম্বন করে।
তথ্যসূত্রঃ
১) ইমাম ইবনে মাজাহ : আস-সুনান : ২/১২২ পৃ: হাদিস ৩৭০৫
তিনি বলেন, সহিহ।
২) ইমাম তিরমিযী : আস-সুনান : ৫/৭২ পৃ: হাদিস ২৭৩৩
তিনি বলেন, হাসান।
৩) ইমাম নাসায়ী : আস-সুনান : ৭/১১১ পৃ: হাদিস ৪০৭৮
তিনি বলেন, সহিহ।
৪) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল : আল- মুসনাদ : ৪/২৩৯ পৃ:
৫) ইমাম আবি শায়বা : আল-মুসান্নাফ : ১/১২৭ পৃ: হাদিস ৩
৬) ইমাম ইবনে শায়বা : আল-মুসান্নাফ : ৫/২৯২ পৃ: হাদিস ২৬২০৭
৭) ইমাম খতিব তিবরিযী : মিশকাত : ১/৩২ পৃ: হাদিস ৫৮
৮) ইবনে হাজর আসকালানী : আদ-দিরায়্যাত ফি তাখরিজ আহাদিসুল হিদায়াত : ২/২৩২ পৃ:
৯) ইমাম জায়লায়ী : নাসিবুর রায়্যাহ : ৪/২৫৮ পৃ:
১০) ইমাম হাকিম নিশাপুরী : আল- মুস্তাদরাক : কিতাবুল ইমান : হাদিস নং ২০। তিনি বলেন, সহিহ।
১১) শায়খ মাহমুদ মুহাম্মদ খলিল : আল মুসনাদিল জামে : ৭/৫০৪ পৃ:
১২) Tayalisi in al-Musnad (p. 160 # 1164);
১৩) Maqdisi in al-Ahadith al-Mukhtara (vol. 8, p. 29 # 18).

আজকাল আমাদের সমাজে বিশেষ করে ইন্টারনেটে (ফেসবুক/ইউটিউব), টিভি-মিডিয়ার কতিপয় বক্তা সহ অনেকেই তোতাপাখির মত মুখস্ত কিছু বুল...
30/07/2021

আজকাল আমাদের সমাজে বিশেষ করে ইন্টারনেটে (ফেসবুক/ইউটিউব), টিভি-মিডিয়ার কতিপয় বক্তা সহ অনেকেই তোতাপাখির মত মুখস্ত কিছু বুলি আউড়িয়ে থাকেঃ-
///ক্বদমবুছি করতে গেলে তো মাথা নিচু করতে হয় আর এটা কি সিজদার অন্তর্ভুক্ত হয় না? আর আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করা তো শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাহলে কি শিরক করে ক্বদমবুছি করা জায়িয আছে?///
-
///মাথা নিচু করলেই শিরক হয়ে যায়///
এটা কতটুকু সত্য??
জবাবঃ
শরীয়তের উসুলটি হলো সিজদার নিয়ত ব্যতীত মাথা নিচু করে কোন ব্যক্তির সম্মানার্থে যদি ক্বদমে বুছা দেয়া হয় তাহলে সেটা জিদার অন্তর্ভুক্ত হবে না। আর আমাদের সমাজে অনেকে কম বুঝের কারণে বলে থাকে বা ধারণা করে থাকে যে, মাথা নিচু করলেই শিরকের অন্তর্ভুক্ত হয়। তাদের এ বক্তব্যটি সম্পূর্ণ ভুল ও মনগড়া। তাদের এ বক্তব্য ভাঙতে বা খন্ডন করতে কয়েকটি নযীর স্থাপন করা যায়। যেমন-
১. সাধারণত ঘর ঝাড় দিতে গেলে মাথা নিচু করতে হয় আবার ঘর মুছতে গেলে বা চকির নিচে ঝাড় দিতে গেলেও মাথা নিচু করতে হয়। তখন সামনে জীব ও জড় দুই ধরনের বস্তুই থাকে। তখন কী মাথা নিচু করার জন্য শিরকের ফতওয়া দেওয়া হয়??
২. তাছাড়া কাটা-কাটি, বাটা-বাটি করতে গেলে একই অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। অর্থাৎ, মাথা নিচু করে বটিতে কাটাকাটি আর পাটায় মাথা নিচু করে বাটাবাটি করা হয়। তখন কী মাথা নিচু করার জন্য শিরকের ফতওয়া দেওয়া হয়??
৩. সবাই মিলে গল্প করছে আর এই মাঝে কিছু নিচে পরে গেলে তা তোলার সময় মাথা নিচু করে তোলা হলো। এই ক্ষেত্রে শিরকের ফতওয়া কোথায়??
৪. গ্যারেজে গাড়ি ঠিক করার সময় মাথা নিচু করা হয়। তখনও আশেপাশে জীব ও জড় উভয়ই থাকে। শিরকের ফতওয়া কোথায়??
৫. বাইরে বের হওয়ার আগে জুতা পড়ার সময় মাথা নিচু করা হয়। তখনও আশেপাশে জীব ও জড় উভয়ই থাকে। শিরকের ফতওয়া কোথায়??
৬. আমরা অফিসে চেয়ার-টেবিলে কাজ করার সময় টেবিল থেকে কিছু পড়ে গেলে মাথা নিচু করে তারপর তুলি, অথচ তখনও কেউই শিরকের ফতওয়া দেয়া না!!!
৭. বাচ্চারা ঘরে খেলতে খেলতে অনেক সময় খেলনা খাটের নিচে চলে যায়। তখন পাশে বাচ্চা বা অন্য যে কেউ থাকতে পারে। তখন তো মাথা নিচু করে খাটের তোলা থেকে সেসব বের করা লাগলো। এখানে শিরকের ফতওয়া কোথায়??
৮. আবার অনেক বৃদ্ধরা কুজো হয়ে হাটে, এক্ষেত্রে অনেক সময় মাথা নিচু হয়ে যায়, তখনও সেসব বক্তাদের শিরকের ফতওয়া নেই!!
৯. আপনি বাজারে সবজি কেনার সময় মাথা নিচু করে সবজিতে হাত দিয়ে বলেন, ভাই, আলু কত করে? পিঁয়াজ কত করে? আবার দাঁড়িয়ে আপনি মাথা নিচু করে ভালো আলু, পিঁয়াজ, পটল ইত্যাদি বেছে বেছে নিচ্ছেন অথচ আপনার সামনে তখন দোকানদার। তখন কী আপনি দোকানদারকে সিজদাহ করলেন?? এসব ক্ষেত্রে ইন্টারনেট আর টিভি-মিডিয়ার বক্তাদের শিরকের ফতওয়া কোথায় থাকে??
১০. বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার সময় মশা থেকে বাঁচতে মশারী লাগাই আর মশারীর ভিতরে প্রবেশের সময় মাথা নত হয়ে যাচ্ছে। তখন শিরকের ফতওয়া কোথায়??
উপরোক্তা আলোচনা থেকে কেউ একটু কমন সেন্স ব্যবহার করে চিন্তা করলে দেখবে এরকম মাথা নিচু আমরা প্রতিনিয়ত করছি কোনো না কোনো ক্ষেত্রে। অথচ ইন্টারনেটের ও টিভি-মিডিয়ার কতিপয় বক্তারা এসব ক্ষেত্রে কোনো শিরকের ফতওয়া নেই, ফতওয়া শুধুমাত্র “কদমবুসীর” এর ক্ষেত্রে দেয়। মাথা খাটালেই এটাই প্রতীয়মাণ হয় যে, শুধুমাত্র কদমবুসির ক্ষেত্রে এদের এসব ফতওয়াবাজিতে আসলেই ঘাপলা আছে।
এখন একটি ঘটনা উল্লেখ করে লিখাটা এখানেই শেষ করছি। ঘটনাটি হচ্ছেঃ-
বিদেশ থেকে আগত সনদপ্রাপ্ত এক ব্যক্তি যে ছিলো একজন আলিম। সে এক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যেই দেখতে পেলো কৃষকরা ফসল ফলাচ্ছে। এই দেখে সেই আলিমটি বলে উঠলো, হায়! হায়! কি করছো তোমরা? কি করছো? এটা তো শিরক হচ্ছে। তখন কৃষকদের মধ্যে একজন জ্ঞানী লোক ছিলেন। তিনি বললেন, আচ্ছা, এই মাসয়ালা তো আমাদের জানা ছিলো না। তাহলে আপনি তো সনদপ্রাপ্ত আলিম। যদি আপনি একটি কাগজে এ মাসয়ালাটি লিখে দিতেন তবে হয়তো সকলকে জানানো সহজ হবে। তখন সেই সনদপ্রাপ্ত আলিম তার পকেট থেকে কলম ও কাগজ বের করতে গেলে কলমটি পড়ে যায়। আর সেই আলিম কলমটি উঠাতে গেলো জ্ঞানী কৃষকটি বলে উঠে, হায়! হায়! আপনিই তো শিরক করছেন। এ কথা শুনে সেই সনদপ্রাপ্ত আলিম মুঝতে পারলো যে, শুদু মাথা নিচু করলেই সিজদা হয় না। বরং সিজদার জন্য প্রয়োজন নিয়তের। কেননা দাঁড়িয়ে নামায পড়তে অক্ষম এরূপ ব্যক্তি যখন শুয়ে ইশারায় নামায পড়ে তখন তো মাথা নিচু করতে হয় না, বরং নিয়ত দ্বারাই তা আদায় হয়ে যায়।
ইসলাম নিয়ে যারা একটু পড়াশোনা করেন তারা বুঝবেন, এরকম পাইকারী হারে শিরক ফতওয়া দেওয়া আর "মাথা নিচু করলেই শিরক" ফতওয়া দেওয়া আসলে খারেজী সম্প্রদায়ের আপডেট ভার্সনের রূপ মাত্র।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন এবং ইন্টারনেট ও টিভি-মিডিয়ার কতিপয় বক্তাদের থেকে আমাদের রক্ষা করুন। আমীন।

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when BanglaTimes71.com posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share


Other Media/News Companies in Dhaka

Show All