
03/07/2025
মিথ্যাবাদীরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামে জালিয়াতি করে বলেছে:
আশুরার দিনে আল্লাহ আসমান ও যমিন সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি পাহাড়, পর্বত, নদনদী.... সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি কলম সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি লাওহে মাহফূয সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি আরশ সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি আরশের উপরে সমাসীন হয়েছেন।
এ দিনে তিনি কুরসী সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি জান্নাত সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি জিবরাঈলকে (আঃ) সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি ফিরিশতাগণকে সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি আদমকে (আঃ) সৃষ্টি করেছেন।
এ দিনে তিনি আদমকে (আঃ) জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন।
এ দিনে তিনি ইদরীসকে (আঃ) আসমানে উঠিয়ে নেন।
এ দিনে তিনি নূহ (আঃ)-কে নৌকা থেকে বের করেন।
এ দিনে তিনি দায়ূদের (আঃ) তাওবা কবুল করেছেন।
এ দিনে তিনি সুলাইমান (আঃ)-কে রাজত্ব প্রদান করেছেন।
এ দিনে তিনি আইঊব (আঃ)-এর বিপদ-মসিবত দূর করেন।
এ দিনে তিনি তাওরাত নাযিল করেন।
এ দিনে ইবরাহীম (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন... খলীল উপাধি লাভ করেন।
এ দিনে ইবরাহীম (আঃ) নমরূদের অগ্নিকুন্ডু থেকে রক্ষা পান।
এ দিনে ইসমাঈল (আঃ) কে কুরবানী করা হয়েছিল।
এ দিনে ইউনূস (আঃ) মাছের পেট থেকে বাহির হন।
এ দিনে আল্লাহ ইউসূফকে (আঃ) জেলখানা থেকে বের করেন।
এ দিনে ইয়াকুব (আঃ) দৃষ্টি শক্তি ফিরে পান।
এ দিনে ইয়াকূব (আঃ) ইউসূফের (আঃ) সাথে সম্মিলিত হন।
এ দিনে মুহাম্মাদ (ﷺ) জন্মগ্রহণ করেছেন।
এ দিনে কেয়ামত সংঘঠিত হবে....।
কেউ কেউ বানিয়েছে: মুহার্রামের ২ তারিখে নূহ (আঃ) প্লাবন হতে মুক্তি পেয়েছেন, ৩ তারিখে ইদরীসকে (আঃ) আসমানে উঠানো হয়েছে, ৪ তারিখে ইবরাহীমকে (আঃ) অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরূপ অগণিত ঘটনা এ মাসে বা এ দিনে ঘটেছে এবং ঘটবে বলে উল্লেখ করেছে জালিয়াতরা তাদের এ সকল কল্প-কাহিনীতে। মোট কথা হলো, আশুরার দিনে মূসা (আঃ) ও তাঁর সাথীদের মুক্তি পাওয়া ছাড়া আর কোনো ঘটনা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। আদমের (আঃ) এর তাওবা কবুল, নূহ (আঃ) এর নৌকা জূদী পর্বতের উপর থামা ও ঈসা (আঃ) জন্মগ্রহণ করার কথা অনির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো কোনো সাহাবী-তাবিয়ী থেকে বর্ণিত। আশুরা বা মুহার্রাম সম্পর্কে আর যা কিছু বলা হয় সবই মিথ্যা ও বাতিল কথা। দুঃখজনক হলো, আমাদের সমাজে মুহার্রাম বা আশূরা বিষয়ক বই পুস্তকে, আলোচনা ও ওয়াযে এ সমস্ত ভিত্তিহীন কথাবার্তা উল্লেখ করা হয়।
ইবনুল জাওযী, আল-মাউদূ‘আত ২/১১২-১১৭; ইবনুল কাইয়িম, আল-মানার, পৃ. ৫২; যাহাবী, মীযানুল ই’তিদাল ২/১৯০; ইবনু হাজার, লিসানুল মীযান ২/১৬৯; সুয়ূতী, আল-লাআলী ২/১০৮-১০৯; ইবনু আর্রাক, তানযীহ ২/১৪৯; মোল্লা কারী, আল-আসরার, পৃ. ৩০০; আব্দুল হাই লাখনবী, আল-আসার, পৃ. ৯৪-৯৭; দরবেশ হূত, আসনাল মাতালিব, পৃ. ২৭৭-২৭৮; আজলূনী, কাশফুল খাফা ২/৫৫৭।
সূত্র- হাদিসের নামে জালিয়াতি (৮/৫০৬-৫০৭ পৃষ্ঠা)