08/10/2024
নতুন স্ত্রীকে নিয়ে টেবিলে খেতে বসেছি। টেবিলে আরো আছে বাবা মা ভাই বোন। স্ত্রী সবার প্লেটে খাবার তুলে দিলো। খানিক পর আমি সবার প্লেটে মাছ তুলে দিতে লাগলাম। বাবা মা ভাই বোনের প্লেটে মাছ তুলে দেয়ার সময় কোনো সমস্যা হলো না। কিন্তু স্ত্রীর প্লেটে যেই মাছ দিলাম, দেখলাম কলেজ পড়ুয়া ছোটো বোনটা ফিক করে হেসে দিলো। ভার্সিটি পড়ুয়া ছোটো ভাইটাও মুচকি হাসলো। বাবার চেহারায় অস্বস্তি ফুটে উঠলো। মা তীক্ষ্ণ চোখে আমার দিকে তাকালো। আর স্ত্রী বিব্রত হয়ে পড়লো।
খাওয়া শেষে রুমে এসে স্ত্রী বললো,"বাসার মানুষদের সামনে তুমি কখনো আমার প্লেটে খাবার তুলে দেবে না।"
অবাক হয়ে বললাম,"তুমি সবার সামনে আমার প্লেটে খাবার তুলে দিতে পারবে, সেটাতে কোনো সমস্যা হবে না, আর আমি দিলে সমস্যা হবে? এটা কেমন নিয়ম?"
"আমাদের সমাজের এটাই নিয়ম। দয়া করে সবার সামনে আমাকে আর বিব্রত কোরো না। আড়ালে এসব নিয়ে হাসাহাসি হয়, মন কষাকষি হয়।"
পরদিন খাওয়ার টেবিলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীর প্লেটে খাবার তুলে দিলাম না। তবে স্ত্রী যখন সবার প্লেটে খাবার দেয়ার পর আমার প্লেটে খাবার দিচ্ছিলো, আমি তখন স্ত্রীকে বললাম,"আমাকে দিতে হবে না। আমি নিজে নিতে পারবো। তুমি নাও।"
সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম, ছোটো বোনটা আবারো ফিক করে হেসে দিলো। ছোটো ভাইটাও মুচকি হাসলো। বাবার চেহারায় আবারো অস্বস্তি দেখা দিলো। মায়ের চোখ আবারো হয়ে উঠলো তীক্ষ্ণ। আর স্ত্রী হয়ে গেলো আবারো বিব্রত।
খাওয়া শেষে রুমে এসে স্ত্রী কিছু বলার আগেই বললাম,"কথা দিচ্ছি খাওয়ার টেবিলে তোমাকে আর কিছু বলবো না। তোমাকে আর বিব্রত করবো না।"
স্ত্রী বললো,"তুমি আমার প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছো, আমাকে খাবার নিতে বলছো, এতে আমি খুশি হই। কিন্তু আমাদের সমাজের নিয়ম হলো, স্ত্রী স্বামীর সেবা করবে। এর উল্টো হলে শুরু হয়ে যাবে হাসাহাসি, বদনাম।"
পরদিন থেকে স্ত্রীর প্লেটে খাবার তুলে দেয়া কিংবা স্ত্রীকে খাবার নিতে বলা বন্ধ করে দিলাম। এতে অন্যদের হাসাহাসি, অস্বস্তি, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিও বন্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
আমি তখন এর সমাধানের চেষ্টা করতে লাগলাম। ভেবে দেখলাম, সমাধানের পথ দুটি। এক. বাবা মা ভাই বোনের সাথে না খেয়ে নিজের রুমের ভেতর স্ত্রীকে নিয়ে খেতে হবে। দুই. আলাদা বাসা নিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে হবে।
বাবা মা'র সাথে থেকে প্রথমটা করা সম্ভব নয়। এটা করলে আমি আর স্ত্রী দুজনই প্রশ্নবিদ্ধ হবো। একমাত্র পথ হলো,