কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂

কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 তুমি আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ♡
কিন্তু আমি তোমার জীবনে অপ্রকাশ্য ❦დ

 #আমার_কাঠগোলাপ 🌸 #কলমে :  #রাকিবা_আক্তার_রিনা  #পর্বঃ ১০ফজরের আজানের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে চারদিকে। এখনো বেশ অন্ধকার চারিপা...
28/01/2025

#আমার_কাঠগোলাপ 🌸
#কলমে : #রাকিবা_আক্তার_রিনা
#পর্বঃ ১০

ফজরের আজানের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে চারদিকে। এখনো বেশ অন্ধকার চারিপাশ। রাস্তার ধারের কুকুর গুলোর আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।

আবরার ম্যানশন এখন ঘুমন্তপুরীর ন্যায় নিস্তব্ধ। যেখানে কিছু ঘন্টা আগেই হৈ-হুল্লোড়ের আওয়াজে শান্তিতে বসার জো ছিলনা সেথায় এখন একটুও কোলাহল নেই।

এখনও ঘুম নেই কারো চোঁখে। ঘুম আসারও কথা নয়। কি থেকে কি হয়ে গেল! আর একটু হলেই মৃ*ত্যুর স্বাদ পেতো দুটো মানুষ । কিন্তু ভাগ্যের জোর! কথায় আছে না উপর ওয়ালা মৃ*ত্যু না দিলে কার কি করার আছে।

প্রায় ৬ ঘন্টা আগে,

পুরূ চঁন্দ্রের রাত। জ্যোৎস্নার আলোয় আলোকিত চারিপাশ।এখন প্রায় রাতের তিন ভাগের এক ভাগ শেষ হয়েছে।

--" আচ্ছা আহি এখনো আসছে না কেনো বল তো?"

কপালে থাকা বেবি হেয়ার গুলো সরিয়ে দিয়ে বলল, ইভানা।

--" বোন তো আন্টিদের রাতের খাবার বানাতে সাহায্য করছিলো দেখলাম। "

--" কি করবি বল আব্বু আর ছোট আব্বু তো বাইরের কারো হাতের বানানো খাবার খাবে না বলেছে। ক্যাটারার্স দের হাতের রান্না তো আরও চলবে না। তাই আহিকে ডেকেছে আম্মুরা। "
একটু মন খারাপ করে কথাটা বলল, ইভানা।

--" কোনো ব্যাপার না। তুই একটু দাঁড়া আমি আহিকে ডেঁকে আনি।

কথাটা বলেই নিচের যাওয়ার প্রস্তুতি নিল হিয়া।

ছাদ থেকে আহিয়াকে ডাকার জন্য নামল হিয়া। কিন্তু প্রায়
আধাঘন্টা হওয়ার পরেও কারো আসার নাম-গন্ধ না দেখে ইভানা নিজেই নিচে নামল ।

রান্নাঘরের একপাশে বসে আছে আহিয়া। ওর দেখা মিলতেই ইভানা জোরে চেঁচিয়ে উঠলো,
--" এই আহি শুন। "

আহিয়া আম্বিয়া বেগম ও হামিদা বেগমের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ইভানার কাছে আসলো।

--" সরি রে! আন্টিদের হেল্প করছিলাম তাই লেট হয়ে গেল।"
আলতো হাসি দিয়ে বলল, আহিয়া।
--" আমি তো জানি তুই একটা লেট লতিফ। "
একটু হাসি দিয়ে বলল, ইভানা। আহিয়া মুখ ভেঁঙালো।

--" তোর টুইনস তা কই? তোকে ডাঁকতে এসে নিজে উধাও হয়ে গেল কোথায়?"
আবার বলল, ইভানা।
--" দেখ তোর ভাইয়ের সাথে কোথাও চিপকে আছে। "
--" না তো! ভাইয়ারা তো সবাই ছাদে আড্ডা দিচ্ছে। হিয়া তো নেই। "
কিছুটা চিন্তিত গলায় বলল, ইভানা।
--" চিন্তা করিস না তো আছে কোথাও। চল ছাদে যাই। "
--" হুম চল। "

আহিয়ার যে চিন্তা হচ্ছে না তা না। তার শরীর ব্যথায় কাতর হয়ে যাচ্ছে। ও ভাবল আজকে বেশি কাজের চাপ থাকায় এমন টা হচ্ছে। এ নিয়ে বেশি কিছু না ভেবে ইভানার সাথে উপরে চলে গেল।

***

--" আ--আ--আ"

মাত্রই ছাদে এসে পৌঁছাল আহিয়া ও ইভানা। তার মাঝেই হিয়ার গগনবিদারী আওয়াজে থমকে দাঁড়ালো ওরা। মিউজিক সিস্টেম টাও মুহূর্তে অফ হয়ে গেল। আহিয়ার পায়ের নিচের মাটি সরতে লাগলো। কি হলো তার বোনের?
আহিয়া আর এক মুহূর্ত দেরি করল না। ছুটে গেল নিচের দিকে। নিচে এসে দেখে হামিদা বেগম ও বাকি সবাই বাগানের দিকে ছুটছে। আহিয়াও তাদের অনুসরণ করে দৌঁড়ে গেল বাগানের দিকে।

বাগানের দিক টাও পর্যাপ্ত আলোক রোশনিতে সাজানো ছিল কিন্তু এখন তার ছিটে ফোটাও নেই। জোৎস্নার আলোতেও সামান্য মলিনতা এসেছে। তাই ভালোই ভাবে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না।

কেউই নিজেদের সাথে টর্চলাইট বা মোবাইল নিয়ে আসেনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদ্র, হিমেল সহ বাকিরা চলে আসলো। হিমেলকে বেশ চিন্তিত লাগছে।

--" এডি এদিকের লাইটের কি হলো? "
আদ্রের দিকে তাকিয়ে তার এক বন্ধু বলে উঠল।

--" আসিফ গিয়ে দেখ তো লাইটের কি হয়েছে?"
আসিফকে উদ্দেশ্যে করে বলল, আদ্র।

এদিকে ইভানা,আহিয়া,হিমেল সহ বাকি সবাই হিয়ার নাম ধরে ডাকছে। কিন্তু হিয়ার আওয়াজ মিলছে না। আহিয়ার প্রায় পাগল পাগল অবস্থা।

হঠাৎই আহিয়া কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে একটু সামনে পড়ে গেল। অনেক বড় কোনো বস্তু। ও সামান্য কিছু ভেবে উঠে পড়ল। কিন্তু ওর মনে হলো, এক হাত দিয়ে পানির স্রোতের মতো কিছু গড়িয়ে পড়ছে। ও ভাবল, ' হয়তো এখানে পানি জাতীয় কিছু ছিল। '

আহিয়া সামনের দিকে এগিয়ে গেল। বাগানের সমস্ত লাইট জ্বলজ্বল করছে আগের মতো।

--" র-র-ক্ত"
আহিয়া নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে জোরে চেঁচিয়ে উঠলো।

ইভানা ওর কিছুটা পাশে থাকায় তারাতাড়ি ছুটে আসে আহিয়ার কাছে।

--" কি হয়েছে আহি। কিসের রক্ত?"

ইভানা আহিয়াকে আলতো করে আগলে ধরে কথাটা বলল।
আহিয়া কিছু না বলে ইভানাকে ওর হাত দেখালো।

আহিয়ার হাতে এতো রক্ত দেখে আতঙ্কে চিৎকার করে উঠল ইভানা। ইভানার চিৎকারের আওয়াজে সবাই তাদের কাছে আসলো।

--" কি হয়েছে ইভাপি? চিৎকার করলে কেনো?"

ইভানার পাশে দাঁড়িয়ে স্মিত কন্ঠে প্রশ্ন করল, আয়ান।

ইভানা আহিয়ার হাত টা সামনের দিকে উঠিয়ে রক্ত গড়ানো স্থান টা দেখালো।

অজানা আতঙ্ক সকলের মনে বাসা বাঁধলো। আহিয়ার সমস্ত শরীর কাঁপছে। বোনকে হারানোর আতঙ্ক বেঁধেছে মনে।

--" হুর তুমি এই রক্ত কোথায় পেলে?"
কম্পিত কন্ঠে বলল, আদ্র।

আহিয়া যেন নিজের বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। আবারও মুখে কিছু না বলে বাগানের দক্ষিণ দিক টায় ইশারা করল। হিমেল এক সেকেন্ড সময় নস্ট না করে দৌড়ে গেল। তার পিছনে সবাই। আরু আহিয়াকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। সাইফ, আসিফ ও আদ্রের কিছু বন্ধু পার্কিং এরিয়ার দিকে হিয়া কে খুঁজতে গেছে। আফিয়া খান কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন আম্বিয়া বেগম সহ অনেকে।

বাগানের এই দিক টা এখনো বেশ অন্ধকার। চারদিকে লাইটের পর্যাপ্ত আলো থাকলেও এখানে অনেকটা কম। আদ্র টর্চ লাইটের আলো ফেলল। সামনে যা দেখল তা ভীতিকর। তাদের বাড়ির বিশ্বস্ত কর্মচারী তাহের আলী রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানে পড়ে আছে। রাজ্জাক আবরার ব্যস্ত পায়ে এগিয়ে গেল সেদিকে। হিমেল এসবে তোয়াক্কা না করে ছুটে গেল আরেক দিকে।

প্রায় ২০ মিনিট পর,

--" পু-চু। "
সাইফের চিৎকারে সবাই ছুটে গেল পার্কিং এরিয়ার দিকে। সামনের দৃশ্য দেখে সবার পায়ের নিচের মাটি সরে যেতে লাগল। সাইফের কোলে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় নিথর হয়ে পড়ে আছে হিয়া। সমস্ত শরীরে কামড় ও আঁচড়ের অনেক দাগ। বা হাতের বাহুর নিচে অনেক বড় কাটার দাগ। শরীরের শাড়ি টার অবস্থা বেহাল। নাক মুখ দিয়ে অনবরত রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।

আহিয়া নিজেকে শক্ত রাখতে পারলো না। আরুকে ধাক্কা দিয়ে হিয়ার দিকে এগিয়ে গেল।
--" বো-ন"
বলে চিৎকার দিয়ে উঠল।

***
বর্তমান_
ফজররের নামাজ শেষ করে আবার হিয়ার কেবিনের দিকে পা বাড়ালো হিমেল ও আদ্র। দু'জনকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে অনেক ক্লান্ত তারা। আফিয়া খান ও আরু কেবিনের সোফায় বসে চোখের পানি ফেলছেন। আজাদ খান ও সাইফ তাদের সামলানোর চেষ্টা করছে। হিয়ার জ্ঞান এখানো ফেরেনি। বেড এর পাশে থাকা একটা চেয়ারে পাথরের মতো বসে আছে আহিয়া। হিয়ার ডান হাত তার দু'হাতের মাঝে। অনবরত নিরবে চোখের নোনা পানি বিসর্জন দিচ্ছে বোনের অবস্থায়।

--" হুর পানি টা খাও। "
এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বলল, আদ্র।

--" আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।"
দুর্বল গলায় বলল, আহিয়া।

--" হুর খাও বলছি। "
আহিয়া আর কথা না বাড়িয়ে পানির গ্লাস টা নিয়ে একবারে সমস্ত পানি খেয়ে নিয়ে আদ্রকে গ্লাস টা ফিরিয়ে দিল।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায় ও । আদ্র পানির সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে এনেছিল। আহিয়া ও হিয়া জমজ হওয়ায় আহিয়ার শরীরের যে বেশ ব্যথা তা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে। কিন্তু আহিয়া যে এখন কিছু খাবে না তা সবাই বেশ ভালো জানে। তাই আদ্র বুদ্ধি করে পানির সাথে ঘুমের ওষুধ টা মিশিয়ে এনেছিল। সাইফ আলতো করে আহিয়াকে পাশের বেডে শুইয়ে দিয়ে একটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলল।

***
সকাল ১১ টা

#চলবে?

ভুল-ভ্রান্তি গুলোকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরবর্তী পর্ব পেতে কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 পেইজটি ফলো করুন। রিয়েক্ট ও কমেন্ট করে পাশে থাকবেন।❤️🌼
ধন্যবাদ। 💛🌸

কাঠগোলাপের সাদা মায়ায় মিশিয়ে দিয়ে ভাবি তুমি আছো 😊🤍
16/12/2024

কাঠগোলাপের সাদা মায়ায় মিশিয়ে দিয়ে ভাবি তুমি আছো 😊🤍

 #আমার_কাঠগোলাপ  #কলমে :  #রাকিবা_আক্তার_রিনা  #পর্ব :৯বিকেল গড়িয়ে পড়ছে মাঝে অনেক্ক্ষণ সময় যাবত। সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে ...
29/11/2024

#আমার_কাঠগোলাপ
#কলমে : #রাকিবা_আক্তার_রিনা
#পর্ব :৯

বিকেল গড়িয়ে পড়ছে মাঝে অনেক্ক্ষণ সময় যাবত। সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। চারদিক হালকা অন্ধকারের আভাস দেখা মিলছে। ছাদের এক কোণে এক সুদৃশ্যতা তরুণী ব্যাস্ত নিজের কাজে। গোলাপি পাড়ের হলুদ শাড়ি তার রুপ যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে!

গোলাপি রঙের জারবেরা ও সাদা রজনীগন্ধা ফুলের সংমিশ্রণে বানানো তাজা ফুলের গহনায় সজ্জিত করেছে নিজেকে। দেখে মনে হচ্ছে এ যেন জান্নাত থেকে নেমে আসা কোনো অপ্সরা! তার সাথে মানানসই হালকা মেকাপ। মৃগণয়নে দেওয়া কালো কাজল। গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁটে ডার্ক লিপস্টিক। বাম গালে থাকা কালো তিল। হাটু সমান কেশ গুলো ডিজাইন করে সামনে পেচানো ও পিছনের দিকে খোপা করা। সব মিলিয়ে কারও হৃদয়হরণ করার জন্য যথেষ্ট।

একইভাবে সেজেছে সব মেয়েরা। সবাইকে দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে।

কিছুক্ষণ আগে তানভীর ও আজাদ খান রা সহ পরিবারে চলে এসেছেন। তানভীরের মা-বাবা কালকে আসবে। তানভীর তার বোনকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে।

আহিয়া ছাদের কোণে দাঁড়িয়ে তিহুর জন্য গোলাপ গাছ থেকে কিছু গোলাপ ফুল তুলছে। বেশ মনযোগ দিয়েই ফুল গুলো তুলছে ও। কারন এই গোলাপ গাছ টায় অনেক কাটা আবার কখন না বিঁধে যায়।

হিয়া ও ইভানা ছাদের আরেক কোণে দাঁড়িয়ে গল্প করছিল। আভা ছাদে উঠে আহিয়ার পাশে গিয়ে দাড়াল।

মিষ্টি কন্ঠে বলল,
--" হুর আপি তোমাকে আম্মু ডাকছে। "
--" আচ্ছা আমি এখুনি যাচ্ছি।
ফুল গুলো ঝুড়িতে রেখে বলল, আহিয়া।

আভা আহিয়াকে রেখে স্টেজের দিকে পা বাড়ায়। আহিয়া ফুল নিয়ে নিচে নেমে যায়।

--" আন্টি আমাকে ডাকছিলেন? "

আহিয়ার রিনিঝিনি কন্ঠ পেয়ে রান্না ঘর থেকে বের হয়ে আসেন আম্বিয়া বেগম।
মুচকি হেসে বললেন,
--" হ্যাঁ হুর মা। বাহ! তোমাকে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে।
তোমাকে একটু দরকার ছিল মা। আসলে তুমি সকালে এতো সুন্দর চা বানিয়েছ ভাইজান বলছিলেন তুমি যদি ওনার চা টা বানিয়ে দিতে।"
শেষ কথাটা একটু অসস্তি ভরা কন্ঠেই বললেন আম্বিয়া বেগম।
--" আসলে আমরা তোমাকে এখন এইভাবে ডাকতে চাই নি কিন্তু কি করব বলো তোমার আঙ্কেল বলল তাই আরকি। তোমাকে দিয়ে কাজ করাতে আমাদেরই ভেতরে কেমন যানি ফিল হচ্ছে। এতো সুন্দর করে সেজেছ সব যদি নস্ট হয়ে যায়। "
আহিয়ার পাশে এসে অসহায় গলায় কথাটা বললেন হামিদা বেগম।
--" কোনো সমস্যা নেই আন্টি। আমি করে দিচ্ছি। "
বলেই চা বানানোর কাজে এগিয়ে গেল আহিয়া। সকালে আহিয়ার বানানো চা - কফি ও নাস্তা খেয়ে বাড়ির সবাই অনেক খুশি হয়। আহিয়ার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন সবাই। তা দেখে মুহূর্তে বিষন্নতা কেটে ভালো লাগার অনুভূতিরা ঘিরে ধরে ওর মনকে।

***
হলুদ পাঞ্জাবি এর সাথে সাদা রংয়ের পায়জামায় বেশ সুদর্শন লাগছে আদ্রকে। মাথার চুল গুলো সেটিং জেল দিয়ে দিয়ে সেট করা। বা হাতের কব্জিতে কালো রংয়ের জেন্স বেসলেট। দেখতে মারাত্মক সুন্দর লাগছে আদ্রকে।

আদ্রের মতো করে সেজেছে বাকি ছেলেরাও। সবাইকে দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে।

----*
ছাদে উঠে হলুদের জন্য সাজানো স্টেজের দিকে পা বাড়ায় আদ্র। হলুদের স্টেজটা বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিশিয়াল ফুল ও বিভিন্ন কালারের লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে। আদ্র ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কিছু লোককে আরও কিছু ইন্সট্রাকশন দিয়ে পাশেই একটা চেয়ার নিয়ে বিসে পড়ল। পকেট থেকে মোবাইল বের করে স্ক্রলিং করতে শুরু করে।

--" হেই আদ্র। কি করছো?"
পাশ থেকে মেয়েলী কন্ঠ ভেসে আসায় বেশ বিরক্ত হয় আদ্র। ও ভালো করেই যানে এই সুরের অধিকারী নারী টিকে।

--" আদ্র নয় আদ্র ভাইয়া হবে। আমি তোমার থেকে গুনেগুনে পাচঁ বছরে বড় রিয়া। তাই সম্মান দিয়ে কথা বলো।"

আদ্রের কথায় রিয়ার ভাব ভঙ্গিতে কোনো পরিবর্তনই দেখা গেল না। যেন সে জানতো আদ্র এমন তাই বলবে।

--" তুমি এতো ব্যাকডেটেড কেনো আদ্র? আজকের যুগে এসেও তোমার কাছে এসব ম্যাটার করে? সো ব্যাকডেটেড ইউ আর। "

কথা টা বলেই পাশের একটা চেয়ার এনে আদ্রের গা ঘেঁষে বসল রিয়া।

--" আমি জানি আদ্র, তুমি কালকের বিষয় নিয়ে আমার উপর রেগে আছো। আই এম এক্সট্রিমলি সরি ফর দিস। আমি হুরের কাছেও ক্ষমা চেয়েছি। প্লিজ ফর্গিভ মি আদ্র।"

একটু ন্যাকা সুরে বলল, রিয়া।

--" ওকে। "
ছোট্ট করে উত্তর দিয়ে আবার ফোনের স্ক্রিনে মনযোগ দিল আদ্র।

ইভানা এসে দাঁড়ায় আদ্র ও রিয়ার পাশে। রিয়াকে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত একবার দেখল। মেয়েটা বেশ আধুনিক। তা তার ড্রেসআপ দেখলেই বোঝা যায়। আজকে সবার সাথে একটু মিল রাখার জন্য একটা পিংক ও হলুদের মিশ্রণের লেহেঙ্গা, স্লিপলেস ছোট একটা ব্লাউজ যার লং এতটাই ছোট যে পেট ও পিঠ সম্পুর্ন উদয়মান। একটা ওড়না নিয়েছে বাম কাধে। তার সাথে ভারী মেকাপ ও হেবি জুয়েলারি। চুল গুলো কার্ল করে ছেড়ে দেওয়া। দেখতে বেশ মর্ডান ও হ*ট লাগছে।

ইভানার রিয়াকে আদ্রের পাশে দেখতে বেশ বিরক্ত লাগল। কারণ ও আদ্রের পাশের যায়গা টা আহিয়ার জন্যই বরাদ্দ মনে করে। ইভানা রিয়াকে আদ্রের সাথে একাকী কথা বলতে দেবে না তাই ওদের পাশেই একটা চেয়ার নিয়ে বসে গেল।

***
তিহুকে ছাদে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। হলুদ ও লালের মিশ্রিত লেহেঙ্গা সঙ্গে লাল তাজা গোলাপ ও জারবেরা ফুলের গহনা। মাথায় লাল দোপাট্টা। ভারী মেকাপ। বেশ লাগছে দেখতে।

ক্যামেরাম্যান ক্যামেরা হাতে বিভিন্ন ধরনের স্টাইল দেখিয়ে দিচ্ছে তাকে। অনেক গুলো ছবি তুলা শেষে ছাদে নিয়ে আসা হলো। তিহুকে স্টেজেরমাঝে রাখা সোফায় বসানো হলো। পাশে ঘিরে ধিরে আছে অনেক মানুষ।

কেউবা ব্যাস্ত ছবি তুলতে কেউবা ব্যস্ত গল্প করতে। তাদের মাঝেই এক যুবক ব্যস্ত কারও অপেক্ষায়। এখনো যে সে তার মায়াবিনীর দেখা টুকুও পাই নি। রিয়া উঠে গেছে অনেকক্ষণ আগে। তাই শান্তি মতো বসে থাকার যো হয়েছে আদ্রের।

পাশেই শান্ত, নিরিবিরি, হালকা লাইটের আলোও বসে আছে হিমেল ও হিয়া। দুইজনেই নিশ্চুপ কিন্তু তাদের নিরবতাই অদ্ভুত মায়া ফেলছে। এক জোড়া অক্ষিপট ব্যস্ত এক তরুণীর রুপের বাহার দেখতে। কি সুন্দর মায়াবী তার চোখ জোড়া, ঠোঁটের পাশে ছোট্ট তিল, গোলাপের পাপড়ির ন্যায় অধর। কই তারই মতো তো তার যমজ বোন ও রয়েছে। তাকে তো কেনো এইভাবে কোনো দিন দেখেনি? তাকে তো দিব্বি বোনের নজরে দেখে তাহলে এই তরণী কে কেনো প্রথম দিন থেকেই নিজের মনে এক আলাদা রকমের স্থান দিয়েছে। এটাই হয়তো বা ভালোবাসা!

****

ফোনের কর্কশ আওয়াজে জিভ থেকে বিরক্তি সূচক 'চ' শব্দ উচ্চারণ করল হিমেল। সে এখনো ব্যস্ত ছিল হিয়ার সাথে সময় কাটাতে। হিয়াও কিছুটা বিরক্ত বোধ করল কিন্তু কিচ্ছু বলল না। হিমেল ফোন বের করে দেখে আদ্রের কল। মনে মনে ভাবল, 'এই শা*লা কি আমায় কোনো দিন প্রেম করতে দিবে না। সবসময় উল্টো-পাল্টা সময়ে ফোন করে।
ফোনের ওইপাশে কি বলল তা শোনা গেল না কিন্তু হিমেল বলল,' আচ্ছা একটু দাঁড়া যাচ্ছি। '

হিমেল হিয়াকে সাফাই দেওয়ার স্বরে বলল,
--" আসলে ভাই কল করেছিল একটু যেতে হবে। তুমি যাবে ওইদিকে? "
--" হুম চলুন। "
মুচকি হেসে বলল, হিয়া।

আদ্র বেশ বিরক্ত হলো এবার। নিজে নিজে চাঁপা কন্ঠে বলল,
"এই মেয়েটা কি করছে যে আসতে এতো সময় লাগছে।"

কিছুক্ষণের মধ্যেই হিমেল প্রবেশ করল সেখানে। আদ্রের পাশে গিয়ে একটা চেয়ারে বসে বেশ বিরক্তি ভরা কন্ঠে বলল,
--" তুই কি আমায় শান্তিতে প্রেম ও করতে দিবি না?"
--" কেন দেব না। আগে আমার বিয়ে হয়ে যাক তারপর নিশ্চিতে প্রেম করো তুমি। আমার সমস্যা নেই।"
শান্ত স্বরে বলল, আদ্র।
হিমেল আদ্রের আড়ালে মুখ বাঁকালো।

--" আহি আসে নি এখনো? "
হিমেল জিজ্ঞেস করল আদ্রকে।

--" আসলে কি তোমায় এখানে ডাকতাম। "
আবারও শান্ত কন্ঠে বলল, আদ্র।
--" বেয়াদব। বড় ভাই হই তোর ভুলে যাস না। "
--" এইটা এখনও মানি দেখে এখনো আপনার হাড়গোড়ের অস্তিত্ব আছে ভাইজান।"
একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলল, আদ্র। হিমেল আবারও মুখ বাঁকালো আদ্রের কথায়।

আদ্র নিজের ফোন পকেটে ঢুকিয়ে হিমেলের কাধে হাত রেখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল,

"সে এসে বসুক পাশে,
_যেভাবে অসুখ আসে।৺৺
_–তারপর হয়ে যাক যন্ত্রণা অনায়াসে _–

–তবুও আসুক সে,
জানুক,,,,,–

,,,,প্রিয়তম অসুখ সে –★"

#চলবে?

[বিঃদ্র:] গঠনমূলক কমেন্ট আশা করছি।

 #ভালোবাসা_  #অবিরাম 💘 #কলমে :  #রাকিবা_আক্তার_রিনা  #পর্ব :৫মুহিত গাড়ির দরজা খুলে দিল। গাড়ির দরজা খুলতেই দিশা কিছুটা ঘ...
12/11/2024

#ভালোবাসা_ #অবিরাম 💘
#কলমে : #রাকিবা_আক্তার_রিনা
#পর্ব :৫

মুহিত গাড়ির দরজা খুলে দিল। গাড়ির দরজা খুলতেই দিশা কিছুটা ঘাবড়ে গেল। ভেতরে শান বসে আছে। রাগে, দুঃখে ওর কান্না পাচ্ছে ' ওর '। নিজেকে কিছুটা শান্ত করে গাড়ির ভেতরে বসল। শান নিজের ফোন নিয়ে ব্যাস্ত। রায়া ও মুহিত কথা বলছে। গাড়ি চলছে আপন গতিতে। রাহি ঘুমিয়ে গেছে ওর মায়ের কোলে। দিশা অনেক বিরক্ত বোধ করছে। তার গাড়িতে উঠতে একটুও ভালো লাগে না। কেমন যেন বমি বমি পায়। এইযে এতোটা রাস্তা আসার পর এখন পাচ্ছে। নিজেকে অনেক কষ্টে কন্ট্রোল করে শান্ত হয়ে বসল দিশা। তার পাশে বসা মানুষটা এখনও নির্লিপ্ত। যেন কোনো জড়বস্তু। দিশা ধীরে ধীরে নিজের প্রতি কন্ট্রোললেস হয়ে পড়ছে।
শান ফোন পকেটে ঢুকিয়ে দিশার দিকে এগিয়ে গেল। দিশা ভীতসন্ত্রস্ত হলো।
শান গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
--" এইদিকে এসো দিশানী। খারাপ লাগছে খুব?"
শেষ কথাটা বড্ড নাজুক ভাবে বলল, শান।
দিশা ছোট্ট করে বলে 'হুম'।

দিশার মাথাটা স-যত্নে বুলিয়ে দিচ্ছে শান। দিশাকে যে বেশি খারাপ লাগছে তা বুঝতে পারল শান।

শান মুহিতকে গাড়ি থামাতে বলল। শান প্রথমে নিজে নেমে দিশাকে বের করল। গাড়ি থামানো আর ওর বের হওয়ার মধ্যেবর্তী সময়ের মধ্যেই দিশার নিজের উপর কন্ট্রোললেস হিয়ে শানের গায়েই বমি করে ফেলল। শান এখনও নির্বিকার। রায়া অতিদ্রুত গাড়ি থেকে নেমে দিশাকে ধরল।

মুহিত ভাবল, এখন না মেয়েটাকে উল্টো পালটা কিছু বলে ফেলে।

কিন্তু মুহিতের ভাবনার সম্পুর্ণ ভিন্ন কান্ড ঘটাল শান। দিশার শরীরে কিছুদিন আগে জ্বর থাকায় আর আজকে বমি করায় বেশ নাজুক হয়ে যায়। হাটা-চলার মতো শক্তিও যেন ওর নেই। রায়া পানি ও রুমাল দিয়ে দিশার শরীরের বেশ অনেকটা জায়গায় পরিষ্কার করে দিল। শানের পড়নে ছিল সাদা শার্ট ও ব্লাক প্যান্ট। হোয়াইট শার্ট যা সে খুলে ফেলল শান। এখন পড়নে শুধু এক স্লিভলেস সেন্টু গেঞ্জি ও ব্লাক প্যান্ট। তাতেও মারাত্মক দেখাচ্ছে তাকে।

দিশাকে কোলে তুলে আবার গাড়িতে বসিয়ে দিল শান। আর মাত্র কিছুটা রাস্তা। দিশাকে সাবধানে বসিয়া দিয়ে নিজেও বসে পড়ল। শান দিশার মাথাটা নিজের ঘাড়ের উপর রাখল। রায়া অবাক হয়ে তার ভাইকে দেখছে। যে ছেলেটার গায়ে একটু ধুলো লাগলেও বারবার পরিষ্কার করে। আর সে এখন!

***
দিশাকে কোলে নিয়েই বাসায় প্রবেশ করল শান। সবাই লিভিং রুমেই বসেছিল। দিশাকে কোলে নিয়ে আসতে দেখে সবার মন শঙ্কিত হল।
দিলারা বেগম ও ইরা খান একইসাথে ভীতস্বরে বললেন,
--" কি হয়েছে দিশার?"
শান সতর্কতার সাথে দিশাকে সোফায় বসিয়ে দিল। কারও কথার পাল্টা জবাব না দিয়েই সিঁড়ির দিকে গটগট পায়ে এগিয়ে গেল। শানের এমন উদাসীনতায় বেশ রুষ্ট হলেন ইমতিয়াজ খান ও তামিম শিকদার। রায়া ও মুহিতকে দেখতে পেয়ে ইমতিয়াজ খান কঠিন গলায় বললেন,
--" কেউ কি বলবে কি হয়েছে দিশা মার? "
--" আসলে পাপা আমরা জানতাম না যে দিশা গাড়িতে উঠতে পারে না। আর আমরা তো গাড়ি নিয়ে দিশাকে আনতে গেছিলাম। ও মাঝ রাস্তায় বমি করে ভাইয়ের শরীর ভিজিয়ে দিয়েছে। দিশা এখন কিছুটা উইক। আর তোমার ছেলের কি মুড আমি জানি না।"

বলেই রায়াকে শুইয়ে দিতে নিজের জন্য বরাদ্দ রুমের দিকে পা বাড়ায় রায়া। লজ্জায়, কুন্ঠায় দিশার মরিমরি অবস্থা। মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে। নিজের উপর রাগে, দুঃখে ওর অক্ষিপটে নোনাপানির সৃষ্টি হলো। তা একসময় অক্ষিকোটর ভেদ করে গণ্ডদেশ ভেদ করল। রায়া উপর থেকে নেমে এলো। দিশাকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য বলতে এসেছে। এসে দিশার পাশে বসতেই দেখে দিশা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছে। কি হলো আবার এই মেয়ের!

বাড়ির সকলের মাথায় ভর করেছে অন্য চিন্তা। কারন শান বড্ড খুঁতখতে। একটু এইদিক সেদিক হলেই বাড়ির হেল্পিং হ্যান্ডদের কথা শুনাতে ছাড়ে না। সেখানে দিশা তো!

রায়া দিশার মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে বলল,
--" কি হয়েছে ছোট পরি? কাঁদছো কেন?"
রায়ার কথা শুনে সবার দৃষ্টি দিশার পানে গিয়ে থামল।
ইরা খান অস্থির গলায় বলল,
--" কি হয়েছে দিশা মা? কাঁদছিস কেন?"
--" ম-মা-মামনী উনি আমায় বকবেন তাই না। আ-আমি ইচ্ছা করে করিনি। আ-আ-আমি অনেক স-সরি।"
কান্নার তাপে কথাও স্পষ্ট হচ্ছে না দিশার।

--" দিশানী। আমি কি তোমায় কিছু বলেছি? হুদাই ফেচফেচ করে কাদছো কেন?"
সিঁড়ি থেকে গম্ভীর কণ্ঠে ভেঁসে আসলো শানের কন্ঠ।
দিশা মাথা দুইদিকে নাড়াল। যার অর্থ 'না'।

--" তাহলে কাঁদছো কেন?"
সিঁড়ি থেকে নেমে বলল, শান।

--" ও এমনই জিজু। একটু'তেই ফেচফেচ করে। "
কথাটা বলেই শানের পাশে গিয়ে দাঁড়াল দিয়া। দিয়ার কথা মুখ ফুলালো দিশা।

--" দিশা মা রায়ার সাথে শানের রুমে যা। ফ্রেশ হয়ে আয়। "
দিশা পাশে বসে থাকা ইরা খান মুচকি হাসি দিয়ে কথাটা বলল।
--" মামনী আমি তো কোনো জামা নিয়ে আসিনি। ফ্রেশ হয়ে কি পড়ব? "
অসহায় গলায় বলল, দিশা।
--" শানের রুমে তোর অনেক জামা আছে। যা যেটা ভালো লাগে পড়ে নিস। "

উনার রুমে আমার অনেক জামা আছে এটা কিভাবে সম্ভব। আমার তো মনে পড়ছে না যে এখানে আমি কোনো জামা রেখে গেছি।

দিশা মুখ ফুটে আর কিছুই বলতে পারল না। রায়ায় পিছু পিছু হাটতে লাগল।

শান গিয়ে সোফায় বসল। দিয়া তার সাথে। কুনুই দিয়ে শানকে হালকা খোঁচা দিয়ে বলল,
--" জিজু। কবে জামা কিনে রেখেছো বউয়ের জন্য? "
--" আঁট বছরে নিজের হাতে একটা একটা করে সযত্নে কিনেছি। আমার জানপাখির জন্য। "
--" ওহ গুড।"
বলেই মুচকি হাসি দিল দিয়া।

---*
রায়া শানের আলমারি খুলে দিল দিশাকে। দিশা এগিয়ে আসলো আলমারির সামনে। আলমারিতে রাখা ড্রেস দেখে তার চক্ষু চরক গাছ। একি দেখছে ও! আলমারিটা দুইটা আলাদা আলাদা ভাগে বিভক্ত করা আছে কাপরের সাড়িতে। একদিকে ব্লাক ও হোয়াইট কালারের অনেক ছেলেদের জামা আছে। আর একদিকে মেয়েদের অনেক সুন্দর সুন্দর সেলয়ার-সুট, কুরতি ও টপস টাইপের।

রায়ার দিশার চেহারা দেখে বুঝতে বাকি নেই 'ও' কি ভাবছে। রায়া মুচকি হেসে বলল,
--" এগুলো তো কিছুই না দিশা। ওই কাভার্ড টার মধ্যে আরও আছে। তোমার প্রয়োজনীয় সবকিছু। এই নেও চাবি দেখে নাও। "

রায়ার কথায় দিশার যেন আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা হলো। তার চেহারায় বিস্মিত পরিলক্ষিত। দিশা রায়ার হাত থেকে চাবি টা নিয়ে কাভার্ড টা খুলল।

কাভার্ড খুলতেই দিশা নিজের প্রয়োজনীয় সবকিছু দেখে আবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেল। ওর পছন্দের সব ধরনের জিনিসপত্রে ভরা।

রায়া দিশার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
--" তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও। আমি নিচে যাচ্ছি।"
দিশা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। রায়া বের হয়ে গেল রুম থেকে। দিশা নীল রঙের একটি সেলয়ার সুট হাতে নিল।
জামাটার মধ্যে একটা চিরকুট রাখা। যেখানে লেখা,,,,

--~ আমার ছোট্ট পরির জন্য নীল উপহার।__~💖

_ #চলবে?

পরবর্তী পর্ব পেতে কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 পেইজটি ফলো করুন। পোস্টে রিয়েক্ট ও কমেন্ট করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ 💖🤍
Happy Reading 💓

 #ভালোবাসা_  #অবিরাম  #কলমে :  #রাকিবা_আক্তার_রিনা  #পর্ব :৪ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে শান। সামনের বকুল ফুলের গাছটা'তে বাধা আ...
07/11/2024

#ভালোবাসা_ #অবিরাম
#কলমে : #রাকিবা_আক্তার_রিনা
#পর্ব :৪

ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে শান। সামনের বকুল ফুলের গাছটা'তে বাধা আছে সেই দিনের ৪ টা লোক। ওদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে কেউ বেধড়ক পিটিয়েছে। কারও মাথা ফেটে গেছে, কারও শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। আর দেখতে পারলো না দিশা। ওই মানুষ গুলো দিকে আবার একনজর তাকিয়ে শানের দিকে তাকাল। আজও কালো কালারের শার্ট, কালো প্যান্ট, কালো সানগ্লাস হাতের কব্জিতে ব্লাক রোপ বেসলেট টাইপ কিছু একটা ছোট , পায়ে হাই টপ স্নিকার, চুল গুলো পরিপাটি। কোনো মেয়ে দেখলেই ক্রাশ খাবে তা নিশ্চিত। কিন্তু দিশার ক্ষেত্রে ঘটলো পুরো বিপরীত। ক্রাশ তো দূর বরং ভীতসন্ত্রস্ত হলো।
ভীতু গলায় বলল,
--" ওদের কে কি আপনি মেরেছেন? ওরা কি আবার কাউকে ইভটিজিং করেছে?"
শান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিল। নিয়ে স্বভাবগত গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
--" না কালকের শাস্তি টা কম মনে হয়েছিল তাই, আজকে আবার ধরে মেরেছি। ওরা একটু বেশিই ভাব নিচ্ছিল আজকে আরও ছেলেপেলে নিয়ে এসেছিল। তাই গাছের সাথে বেধেছি। কিন্তু এই ৪ টাকে বাধতে দেখে বাকি গুলো ভয়ে পালিয়ে গেছে। "
কথাটা বলেই বাইকে গিয়ে বসল শান। কারও সাথে ফোনে কথা বলছে।

শানের কথায় দিশার সারা শরীর কাপতে লাগল। কি লোক রে বাবা! কালকে এতো পেটানোর পরও বলছে কম হয়েছেল।

এতোক্ষনে দিশার ফ্রেন্ড রাও রিক্সা থেকে নেমে আসে। শানকে দেখে দুইজনেই ক্রাশ নামক বাশ খেয়েছে নাকি।
পায়েল দিশাকে জিজ্ঞেস করল,
--" কি রে তুই কি উনাকে চিনিস? আর ওই লোক গুলোই বা কে?
শেষ কথাটা গাছের দিকে আঙুল তাক করে বলল।
--" না না আমি উনাকে চিনিনা। চল বাড়ি যাই। "
তোতলানো কন্ঠে বলল, দিশা।
--" কিন্তু রিক্সা ওয়ালা মামা তো চলে গেছে। কিভাবে যাবো এখন?"
পায়েল বলল।
--" আর তো দুই মিনিটের রাস্তা । চল হেটেই যাই।"
দিশার কথায় সম্মতি দিয়ে হেটেই বাড়ি গেল ওরা।

***
দিশার শরীর ঘেমে ঘেঁটে একাকার। এইদিনের পরের দিনটা যে আরও ভয়ংকর ছিল ওর জন্য। টেবিলে রাখা পানির গ্লাস টা নিয়ে খেতে লাগল। না কিছুতেই পড়ায় মন বসছে না। একটু বারান্দায় যাওয়া প্রয়োজন। নিজের মন কে একটু সময় দেওয়া প্রয়োজন ওর। বারান্দায় দাঁড়িয়েই সামনের বারান্দায় চোখ গেল তার। দিপা দাঁড়িয়ে আর তার সাথে ধ্রুব। ধ্রুব পেছেন থেকে জড়িয়ে ধরে আছে দিপাকে। দিপার চুল গুলো সরিয়ে ছোট্ট একটা কিস করল।সঙ্গে সঙ্গে নিজের চোখ খিচে বন্ধ করল দিশা। চোখ বন্ধ করা অবস্থায় রুমের দিকে দৌড় দিল। রুমে যাওয়ার পথে আচমকা পায়ের সাথে পা বারি খেয়ে পড়ে গেল। নিজেকে সামলে রুমে ছুটে আসে দিশা। বেডের উপর শুয়ে পড়ল। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ও। বার বার চোখের সামনে ভাসছে বারান্দায় দেখা দৃশ্যটা। কেন তার সাথেই এমন হয়? কি এমন পাপ করেছে ও? যার জন্য এতো বড় শাস্তি। ও যাকে দুই দুইটা বছর নিজের সমুদয় দিয়ে ভালোবাসল সে কিনা তার আপুনির বর। আর যাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভয়, ঘৃনা করল সেই তার বর। এমন বাধাই করা কপাল আর কয় জনেরই হয়।
কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে গেল দিশা। বেশি কাদার জন্য ওর মুখ চোখ লাল রংয়ের হয়ে গেছে। যে কেউ দেখলেই বুঝবে যে ও অনেক কেদেছে। তাই রাতের খাবার খেতে যাইনি ও। দিয়া ডাকতে এসেছেল কিন্তু ও বলেছে, ' খিদে নেই ছোটপু। তুমি যাও।'

****
সকাল ৮ টা

সকাল সকাল কলেজের উদ্দেশ্যে রেডি হচ্ছে দিশা। কিছুদিন পর ওদের টেস্ট পরীক্ষা। এখন নিয়মিত কলেজ না করলে ক্ষতি হতে পারে। তাই কোনো রকম রিস্ক নেওয়া অসম্ভব। ঝটপট রেডি হল দিশা। রেডি হয়ে নিজে গেল সকালের নাস্তা করার জন্য। এইবাড়িতে সবাই সকাল আট টার মধ্যেই নাস্তা সেরে ফেলে। শুধু দিপা ব্যাতিত। ডাইনিং টেবিলের সবাই ইতিমধ্যে বসেই আছে। সবাইকে 'গুড মর্নিং '
বলে ওর জন্য বরাদ্দ চেয়ারে বসে পড়ল দিশা। রান্না ঘরের দিকে তাকাতেই বেশ অবাক হলো ও। ঠোঁট দুখানা আপনা আপনি ফাঁকা হয়ে গেছে। ওর আপুনি রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে। একে একে খাবারের গামলা এনে রাখছে ডাইনিং টেবিলে। দিয়া ওর ব্যাপার টা বুঝতে পেয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
--" মুখ টা বন্ধ কর, মাছি ঢুকে যাবে তো।"
--" আমি যা দেখছি তা কি তুমিও দেখছ ছোটপু?"
--" তুই কি দেখছিস বনু তা তো জানি না। কিন্তু আমি আজকে সক্কাল সক্কাল আমাদের বাড়ির নবাবজাদি কে রান্না ঘরে দেখছি।"
দিয়ার কথা ও কথা বলার স্টাইল শুনে ফিক করে হেসে দিল দিশা। তার সাথে হাসল বাকিরাও। দিপা এসেই দিয়ার মাথার একটা চাটা মারল।
--" আম্মু দেখ তোমার নতুন বউ আমার মাথায় চাটা মারল।"
ন্যাকামি করে অভিযোগের সুরে বলল, দিয়া।
যা দেখে আবার খাবার টেবিলে হাসির শব্দ হলো।

খাওয়া - দাওয়া করে তাড়াতাড়ি কলেজের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ল দিশা। রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে কলেজে প্রবেশ করল দিশা। কলেজের মাঠে ওর জন্য দাঁড়িয়ে আছে মিতু ও পায়েল। ওদের দেখে ব্যাস্ত পায়ে এগিয়ে গেল সেইদিকে। পায়েল ধমকের সুরে বলল,
--" ওই বেদ্দপ মাইয়া। তোর জন্য কতক্ষণ অপেক্ষা করছি জানিস? কই মরতে গেছিলি এতোক্ষন?"
--" এমন করে কেন বলছিস? দেরি হয়ে গেছে। সরি। "
মন খারাপ করে বলল, দিশা।
--" হইছে চল। "
বলেই ক্লাস রুমের দিকে পা বাড়ায় তিন বান্ধবী।

***
কলেজ শেষ করে কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে ভেলপুরি খাচ্ছে ওরা।
মিতু দিশাকে জিজ্ঞেস করল,
--" দিশু আমাদের জিজুকে তো দেখলাম না। কি ব্যাপার কবে দেখাবি?
দিশা ভাবল একবার দেখলে এই দেখার শখ তোর মরে যাবে। যার ভয়ে জ্বরে বিছানা থেকে তিনদিন উঠতে পারিস নি। যাকে নিজের জীবনের সমস্ত খারাপ খারাপ অভিশাপ গুলো দিয়েছিলি, সেই গুন্ডা মস্তান টাই তোদের জিজু।
কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারল না দিশা। কেন বলতে পারল না নিজেও জানে না। এসব না বলে শান্ত স্বরে শুধু বলল,
--" সময় হলেই দেখতি পাবি।"
ওদের কথার মাঝেই বাজখাই স্বরে একটা গাড়ির হর্ণ বাজল। পায়েল কঠিন ভাষায় কিছু বলবে তার পূবেই গাড়ি থেকে নেমে আসল রায়া, রাহি ও মুহিব। রায়াকে ওরা সবাই চেনে তাই কিছু আর না বলে বলে শান্ত গলায় সালাম দিল। রায়া সালামের উত্তর দিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময় করল।
দিশা মুচকি হেসে বলল,
--" রায়াপি তোমরা এখন এখানে? "
--" তোমাতেই নিতে এতেতি নতুন মামনী। ওহ্ তরি, তোমাতে তো তুন্দরী বউ দাকতে বলেতে শানশান।
রাহির কথা শুনে সবাই 'থ' হিয়ে গিয়েছে। এইটুকু বয়সে মেয়েটা কতই না পাকা!
---" এই শানশান টা আবার কে রাহি?"
রাহিকে কোলে নিয়ে বলল, পায়েল।
--" আল্লাহ! তুমি শানশান কে তেনো না? শানশান আমাল নতুন মামনীর বল হয়। আমার মাম্মি, পাপা দেমন বল-বউ তিক ওইলকম। "
কপালে হাত দিয়ে বলল, রাহি।
দিশা এখনও হা করে তাকিয়ে আছে রাহির দিকে।
--" তোমরা কি ভেলপুরি খাবে রায়া?"
গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মুহিত বলল।
--" দাঁড়াও না একটু। দেখছ না কথা বলছি?"
মৃদু ধমক দিয়ে বলল, রায়া। আবার দিশাদের উদ্দেশ্যে বলল,
--" দিশা তোমারা খাবে না? "
--" আমরা এইমাত্র খেলাম রায়াপি। তুমি খাও। "
--" ওকে। তাহলে আমি খাই হ্যাঁ।"
সবাই মিলে মাথা নাড়াল। রায়া ভেলপুরি ওয়ালাকে ভেলপুরি বানাতে বলবে সেই সময় রায়ার ফোনে কোল এলো।
এইদিক থেকে কি বলল শোনা গেল না কিন্তু রায়া ক্রমশ সরি বলতে লাগল। ব্যাপার টা খুব অদ্ভুত লাগল দিশার কাছে।
রায়া ভেলপুরি ওয়ালাকে ভেলপুরি প্যাক করে দিয়ে বলল।
দিশা উদ্দেশ্যে বলল,
--" দিশা গাড়িতে গিয়ে বসো।"
দিশা বেশ অবাক হলো।
--" পাপা অসুস্থ। তোমাদের বাড়ির সবাই আমাদের বাসায় তাই তোমাকেও নিতে এসেছি। মিম্মি বলল তুমি এখনও কলেজেই আছো তাই আর বাসায় যাই নি। চলো।"
--" আচ্ছা। "
মিনমিনে গলা বলল, দিশা।
--" আমরা তাহলে যাই রে দিশু। "
মুচকি হেসে বলল, মিতু।
--" আচ্ছা সাবধানে যাস। "
দুইজনে মাথা নাড়িয়ে চলে গেল। দিশা ওই বাড়িতে যেতে চাচ্ছে না। আবার মানাও করতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়ে যেতেই হচ্ছে। গাড়ির দিকে পা বাড়াল দিশা। মনে হচ্ছে গাড়ির ভিতরে কেউ আছে? সত্যিই কি কেউ আছে না ওর মনের ভুল। এইসব ধারণা বাদ দিল দিশা। গাড়ির সামনে চলে এসেছে।

#চলবে?

(রিচেক করা হয়নি।)

পরবর্তী পর্ব পেতে কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 পেইজটি ফলো করুন। পোস্টে রিয়েক্ট ও কমেন্ট করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ। 💖🌸

Happy Reading 💓

Sorry 🥺Ajke  #ভালোবাসা_  #অবিরাম asbe na😔
05/11/2024

Sorry 🥺
Ajke #ভালোবাসা_ #অবিরাম asbe na😔

 #আমার_কাঠগোলাপ  #কলমে:  #রাকিবা_আক্তার_রিনা #পর্ব :৮আহিয়া আদ্র ও আসিফের দিকে তাকিয়ে নিল একবার। ঠোঁটের কোণে আবার কৃত্তিম...
05/11/2024

#আমার_কাঠগোলাপ
#কলমে: #রাকিবা_আক্তার_রিনা
#পর্ব :৮

আহিয়া আদ্র ও আসিফের দিকে তাকিয়ে নিল একবার। ঠোঁটের কোণে আবার কৃত্তিম হাসির রেখা টেনে বলল,
--" এখানে বললেই পারেন ভাইয়া। "
--" বললাম তো পারসোনাল। "
হালকা ধমক দিয়ে বলল, সাব্বির।
--" ওকে চলুন।
অসস্থি ভরা কন্ঠে বলল, আহিয়া।

আহিয়াকে নিয়ে সাব্বির বাগানের এক সাইডে গেল।
আসিফ আদ্রের উদ্দেশ্যে বলল,
--" আদ্র। তোর হৃদয়হরনী কে নিয়ে গেল আর তুই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিস। "
--" ওকে নিয়ে এমনিতেই ওইদিন অনেক সিনক্রিয়েট হয়েছে রিয়ার জন্য আবার কিছু হলে সবাই ওকে ব্লেম করবে। বিয়ে টা হয়ে যাক তারপর দেখাচ্ছি, সাফওয়ান আবরার আদ্রের মায়াবিনীর দিকে নজর দেওয়ার পরিণতি। "
শেষ কথাটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলল আদ্র। বলাবাহুল্য আদ্রের সব ফ্রেন্ডরা আহিয়ার বিষয়ে জানে।

***
বাগানের পাশের একটা চেয়ারে বসে আছে আহিয়া। তার পাশের একটা চেয়ারে বসেছে সাব্বির। যখন থেকে নিয়ে এসেছে নিজের ব্যাপারেই বলে যাচ্ছে। যেমন, 'ও একটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করে। ওর বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা ও মা একজন শিক্ষিকা। ভাই বোন না থাকায় সব কিছুই ওর। ব্লা ব্লা! '

সব শুনে অতিষ্ঠ হয়ে আহিয়া জোঁরে বলে উঠল,
--" আপনি কি আমাকে এসব শোনাতে এখানে নিয়ে এসেছেন? বিরক্তিকর। নেক্সট টাইম আমার সামনে ঘুর ঘুর করতে দেখলে একদম পা ভেঙে রেখে দেব। "
বলে হনহন পায়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। এইদিকে সাব্বির আহিয়ার এমন রিঅ্যাকশন দেখে রীতিমতো ১১০০ ভল্ডের শর্ট খেয়েছে মনে হয়। ছাদ থেকে দুইজন যুবক তা দেখে হাসি থামাতে ব্যর্থ হয়। এতক্ষণ ধরে চিলের নজরে তাকিয়ে ছিল তাদের দিকে।
আসিফ আহিয়ার এমন রুপ দেখে আদ্রকে বলল,
--" কি হলো ব্যাপার টা? হুর তো এমন না। "
--" ও এমনি। কিন্তু নিজেকে শক্ত খোলসে আবদ্ধ করে রেখেছে যাতে কেউ তার দুর্বলতাকে আর কাজে লাগাতে না পারে। "

***
আহিয়া রুমে এসে দেখে হিয়া ও ইভানা এখনো ঘুমাচ্ছে। তা যেন তার রাগে ঘি ঢালার মতো কাজ করল। ঘরের জানালা গুলো খুলল। ইভানা ও হিয়াকে কয়েক বার ডাকলেও তাদের আওয়াজ পাওয়া গেল না। জানালার পর্দা সরিয়ে দিতেই আবার সাব্বির কে নজরে আসলো ওর। রাগে সাপের মতো ফসফস করতে লাগল। পানি ভর্তি একটা জগ তাদের শরীরের উপর ঢেলে দিল। হিয়া 'বৃষ্টি এসেছে ' বৃষ্টি এসেছে ' বলে ধড়ফড় করে উঠল। সরাসরি ইভানার মুখের উপর পানি পড়ায় ও রীতিমতো চেঁচিয়ে উঠেছে। আহিয়ার অগ্নিরুপ দেখে কেউ আর টু শব্দ না করে উঠে পড়ল। আহিয়া রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
ইভানা খাটের কোণে আবার আধশোয়া হয়ে বলল,
--" সকাল সকাল একে আবার কোন পেত্নী তে ধরল? ধুর! মাত্র সকাল ৭ টা বাঁজে। কে ঘুম থেকে উঠে এখন!"
--" চল ফ্রেশ হই। তারপর নিজে থেকেই বলবে কি হলো ওর সকাল সকাল।
বলে বাথরুমে প্রবেশ করল হিয়া।

***
রান্না ঘরে সবার জন্য ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছেন আবরার বাড়ির তিন বউ। সঙ্গে হাতে হাতে সাহায্য করছে বাড়ির হেল্পিং হ্যান্ড রা। আহিয়া রান্না ঘরে প্রবেশ করল। আম্বিয়া বেগমকে সামনে দেখতে পেয়ে অকৃত্তিম মুচকি হাসি ঠোঁটের কোণে বলল,
--" গুড মর্নিং আন্টি।"
--" গুড মর্নিং হুর মা। কিছু লাগবে?"
--" না না আন্টি। এমনি এসেছে। একটু থাকি এইখানে? "
--" কেন নয়। অবশ্যই। "
স্বভাবগত মুচকি হেসে বলল, আম্বিয়া বেগম। উনার এই মুচকি হেসে কথা বলাটা আহিয়ার বেশ পছন্দসই। হামিদা বেগম ও হাফিজা বেগমের সাথে কথা বলল।
আভা ডাইনিং টেবিলে বসে হামিদা বেগমের উদ্দেশ্যে বলল,
--" বড়মা আমাকে একটু কফি দেবে গো? খুব মাথা ব্যাথা করছে। "
--" আচ্ছা মা। আদ্রের জন্য ডিম টা বয়েল করেই দিচ্ছি।"
মুচকি হেসে বলল, হামিদা বেগম।
--" আভা নিজে করে নাও। আমরা অনেক বিজি। "
আম্বিয়া বেগম হালকা ধমকের সুরে বললেন।
--" থাক তাহলে খাব না। এমনিতে মাথা ব্যাথা তার উপর নাকি নিজে বানিয়ে খেতে হবে। হুহ!"
ডাইনিং টেবিলে নিজের মাথা এলিয়ে দিয়ে বলল, আভা।
--' আন্টি আমি করে দেই?"
--" না না হুর মা। আমি করে দেব এখন। "
ফ্রিজ থেকে ডিম বের করে বলল, হামিদা বেগম।
--" করি না প্লিজ। "
--" বড়দি ও যখন করতে চাইছে তাহলে করুক না। "

মুচকি হেসে বলল, আম্বিয়া বেগম। তার সাথে যোগ দিলেন হাফিজা বেগমও। আহিয়া সম্মতি পেয়ে কফি বানাতে শুরু করলো। আভার জন্য নরমাল কফি বানিয়ে তাকে দিয়ে আসলো। পরিবারের ছোট -বড় কে চা বা কফি খায় তা যেনে বানিয়ে নিল। হামিদা বেগমরা মানা করলেও তা কর্নপাত করল না আহিয়া। চা কফি বানানো শেষে নাস্তা বানাতেও সাহায্য করল। বাড়ির এতো জনের নাস্তা আবার মেহমানরা তো আছেন।

সকাল ৯ টা

বাড়ির ছোট-বড় সকলে নাস্তা খাওয়ার জন্য নেমে এলো। এটা এইবাড়ির নিয়ম সকালে ও রাতে একসাথে সবাই মিলে ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেন। দুপুরে নিজ নিজ কাজে থাকায় কেউ বাড়িতে আসার সময় পান না। তাই সাত্তার আবরার এই নিয়ম বানিয়েছেন। সবাই নিজ নিজ চেয়ারে বসে পড়লেন। বআসায় মেহমান থাকায় আবরার পরিবারের চেয়ারের সাথে আরও বেশ কিছু চেয়ার যোগ হয়েছে। ডাইনিং টেবিলে হরেক রকমের নাস্তা সাজানো আছে। যার যা ভালো লাগে নিজেদের মতো কাস্টমাইজ করে নেওয়ার জন্য।

আদ্র তার প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার প্লেটে নিয়ে হামিদা বেগমের উদ্দেশ্যে বলল,
--" বড়আম্মু তুমি আমার মর্নিং কফি টা আজকে পাঠাও নি যে?"
--" সরি আব্বা! একদম ভুলে গেছি।"
জিভ কেটে বলল, হামিদা বেগম।
--" ইট'স ওকে। "
বলে নিজের খাবার প্লেটে মনোযোগ দিল আদ্র।
--" মা আজকের কফি টা কে বানিয়েছে?"
কফির কাপে চুমুক দিয়ে বলল, আদ্র।
--" চা টা কি কি তোমাদের বাইরে কেউ বানিয়েছে হামিদা?"
সাত্তার আবরার বললেন।
--" আসলে চা টা কেমন জানি খেতে?"
রাজ্জাক আবরার ও বাকি বাড়ির সবাই বললেন। সবার কথা শুনে আহিয়ার শরীর হিম হয়ে আসার উপক্রম। ভাবল 'কেন যে আগ বাড়িয়ে করতে গেলাম। সবার নিশ্চয়ই খেতে খারাপ লেগেছে না হকে এভাবে কেন বলবে।'
মূহুতেই মনটা বিষন্নতার ঘিরে ধরল।

#চলবে?

পরবর্তী পর্ব পেতে কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 পেইজটি ফলো করুন। পোস্টে রিয়েক্ট ও কমেন্ট করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ। 💖🌸
Happy Reading 💓

 #ভালোবাসা  #অবিরাম  #কলমে :  #রাকিবা  #আক্তার  #রিনা  #পর্ব :৩--" দিশা মা যাও। তোমরা একটু আলাদা করে কথা বলে এসো।"মুচকি...
03/11/2024

#ভালোবাসা #অবিরাম
#কলমে : #রাকিবা #আক্তার #রিনা
#পর্ব :৩

--" দিশা মা যাও। তোমরা একটু আলাদা করে কথা বলে এসো।"
মুচকি হেসে বললেন, ইরা খান।

দিশার অনিচ্ছার শর্তেও ' ও' শানের পিছু পিছু হাটতে লাগলো। দিশার মনের ভাব শান খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারল। ও দিশাকে আর একটু অসস্তি তে ফেলার জন্য বলল,
--" তোমার কি আমার সাথে যেতে কোনো প্রবলেম দিশানী?"
শান ও দিশা সিড়ি তে দাঁড়িয়ে থাকায় শানের কথা স্পষ্ট শুনে পায় সবাই। সবাই দিশার দিকে তাকিয়ে আছে। দিশা এদিক সেদিক তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে বলল,
--" না চলুন। "
যা দেখে ঠোঁট টিপে হাসল, শান।

শান দিশাকে ছাদে নিয়ে এসেছে। আলাদা কথা বলার নাম করে এনে ফোন টিপছে চেয়ারে বসে। দিশা বিরক্ত হয়ে ছাদে রাখা দোলনা'টায় গিয়ে বসল।

আচ্ছা এই লোকটা কি আমায় ছাদে বসিয়ে রাখার জন্য নিয়ে এসেছে। যখন থেকে এসেছে ফোনেই ব্যস্ত তাহলে আমায় কি জন্য ডেকে আনল? বসিয়ে রাখার জন্য না উনার চেহারা দেখার জন্য। হুউহ বিরক্তিকর।

--" দিশানী।"
থমথমে কন্ঠে বলল, শান।
--" জ্বি বলুন। "
দোলনা থেকে নেমে বলল, দিশা।
--" তুমি আমার সম্পর্কে ঠিক কতটা জানো?"
--" বেশি কিছু না শান ভাই।"
--" হোয়াট? আমি তোমার ভাই হই?"
--" আপনি যদি মামনী আর বাবাই'য়ের ছেলে হন তাহলে আমার তো ভাই'ই হবেন তাই না।"
--" হোয়াট রাবিশ! ডাফার কোথাকার।"
বলে হনহন পায়ে নিচে নেমে গেল শান।

কি হলো উনি আমার সাথে রাগান্বিত কন্ঠে কথা বললেন কেনো? আমার সাথে তো কেউ এইভাবে কথা বলে না। তাহলে উনি কেনো বললেন? ভাইকে ভাই বলবো না তো কি বলবো হুমম? ধ্রুব ভাই আমাকে কতটা আদর করতো, কেয়ার করতো। কিন্তু উনি? উনি একটা আস্ত বজ্জাত। রাক্ষস কোথাকার। আমায় বলে নাকি আমি ডাফার। উনি কি জানেন আমি এখন পর্যন্ত সব ক্লাসে টপ করেছি? উনি নিজেই একটা ডাফার। না না উনি ডাফার হবে কিভাবে উনি তো স্কলারশিপ নিয়ে ইউ.কে গিয়েছিলেন। তাহলে ডাফার কে? ধুর ধ্রুব ভাই কতো ভালো ছিল।

নিজের ভাবনায় নিজেই বিরক্ত হলো দিশা। ছি ছি! এসব কি ভাবছি আমি উনি এখন আমার আপুনির স্বামী। আমাকে উনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা মানায় না।

--" দিশা এই দিশা।"
নিচ থেকে গমগমে গলায় আওয়াজ শোনা গেল দিলারা বেগমের।

মায়ের আওয়াজ শুনে ব্যাস্ত পায়ে নিচে নামল দিশা। আবার ওর নামে কিছু বানিয়ে বানিয়ে ওর মায়ের কাছে নালিশ দেয়নি তো বজ্জাত লোকটা। দিয়ার মামাতো ভাই রায়হান এসেছে। বয়সে দিপার সমবয়সী। ফর্সা, স্বাস্থ্যবান ছেলেটা। দিশার অসহ্য এই ব্যাক্তি। এইখানে আসলে সারাদিন দিশু দিশু করতেই থাকে। দিশাকে দেখতে পেয়ে সোফা থেকে নেমে দিশার সামনে এসে বলল,
--" হেই দিশু। কেমন আছো তুমি?
--" আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া। আপনি?"
কৃত্তিম হাসি দিয়ে বলল, দিশা।
--" জোস। তোমাকে দেখে আরও বেশি জোস হয়ে গেলাম। তুমি দেখতে কিন্তু আরও বেশি সুন্দর হয়েছ।"
রায়হানের কথায় শানের ভ্রু যুগল সংকুচিত হয়ে আসল। দিয়া কে ডেকে বলল,
--" কে এই ফোর টুয়েন্টি মা*ল। বড় শালিকা?"
--" আমার মামাতো ভাই। বিরক্তিকর মা*ল মাইরি। এখানে আসলে সারাদিন দিশু দিশু করতেই থাকে। আমার তো মনে হয় দিশু কে লা*ইন মারার চেষ্টা করে। "
--" হুউ। তাহলে তো পরিচয় করতে হয়। পরিচয় পর্বটা সেরে ফেলা যাক বড় শালিকা।"
চোখ মেরে বলল শান। দিয়াও দুষ্টু হাসি দিল।
--" রায়হান ভাইয়া। "
দিয়া বলল।
--" হ্যাঁ দিয়া। বল?"
--" উনি হচ্ছেন আমাদের দিশুর বর শান ভাই।... "
--"কি দিশু তোমার বিয়ে হয়েছে? কবে? কিভাবে?"
রায়হান দিয়ার সম্পুর্ণ কথা শেষ না করতে দিতেই চিৎকার করে বলল। রায়হানের আওয়াজে সবাই ছুটে নিচে চলে এসেছে। দিয়া যে এখনই শান আর দিশার বিয়ের ব্যাপারে বলে দিবে তা কেউ ধারণাই করতে পারেনি। দিয়ার দিকে গমগমে চোখে তাকিয়ে আছেন দিয়ার মা রিয়া বেগম। দিয়া একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শানের পাশে। দিয়া ও শান মিটিমিটি হাঁসছে।
তাসিন শিকদার রাগী কন্ঠে বলল,
--" কি হচ্ছে এখানে? এতো জোরে চিৎকার করছো কেন? "

তাসিন শিকদারকে বরাবরই সবাই ভয় করে চলে। তার এই হুংকার এ শিকদার বাড়ির সবার কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে। তার সাথে রায়হানেরও। রাহি তো ভয়ে কুঁকড়ে তার মায়ের কোলে বসে আছে।

তাসিন শিকদারের কথার উপর শিকদার পরিবারের কেউ কথা বলতে পারে না। তাসিন শিকদারের রাগের সম্মুখীন যাতে রায়হান না হয় তাই দিলারা বেগম সাফাই দেওয়ার বললেন,
--" কিছু হয় নি ভাইজান। আমার হাতে একটু ছ্যাঁকা লেগেছে তো, তাই রায়হান ভয়ে চিৎকার দিয়ে ফেলেছে। "
--" ও। নেক্সট টাইম থেকে সাবধানে কাজ করবে। আর ছেলেদের এতো ভীতু হওয়া মানায় না রায়হান। "

গম্ভীর কণ্ঠে বলে নিজের কক্ষের দিকে পা বাড়ান তাসিন শিকদার। তাসিন শিকদারকে আর কিছু না বলতে দেখে স্বস্তির শ্বাস ফেলল দিলারা বেগম ও রিয়া বেগম। দিয়া ও শান এখনও মিটিমিটি হাসছে। রায়হান গেস্ট রুমের দিকে এগিয়ে গেল। মন তার বড্ড বিষন্ন। তামিম শিকদার, ধ্রুব ও দিপা বাসায় নেই। তামিম শিকদার ব্যাংকে গিয়েছেন। ধ্রুব ও দিপা শপিংয়ের জন্য গিয়েছে।

দিপার যে নতুন বিয়ে হয়েছে তা ওকে দেখে বোঝার উপায় নেই। আগের মতই শর্ট টপ্স, লেগিন্স ও স্কার্ফ গলায় পেচিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাসিন শিকদার এই এক বেশ ভালো কাজ করেছেন। নাহলে এই মেয়ের যে ড্রেস আপ ও কথাবার্তা বলার ধরন। প্রথম দিন বিয়ে করে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দিনই ফেরত দিয়ে যেতেন। সকাল ১১ টা না বাজলে কখনো তাকে ঘুম থেকে উঠানো যায় না। নিজ হাতে এক গ্লাস পানিও গড়িয়ে খেতে দেখা যায় যে কখনো। পড়ালেখায় তো অষ্টরম্ভা। লজ্জা নারীর ভূষণ। কিন্তু তার ক্ষেত্রে লজ্জার লেস মাত্র নেই। রান্নাঘরে ভুলেও কোনো দিন পা রাখেনি সে।কিন্তু দিশা তার সম্পুর্ণ ভিন্ন। যেন এক বাড়িতে দুই মেরু।

সন্ধ্যা ৭ টা

পড়ার টেবিলে বসে আছে দিশা। কিন্তু কিছুতেই পড়ায় মন বসছে না তার। কিভাবে একজন কে ভালোবেসে অন্য কারও সঙ্গে সংসার করবে? কিচ্ছু ভালো লাগছে না ওর। ধ্রুব ভাই তার অনেক শখের ছিল। কতো যত্ন করতো, ভালোবাসতো কিন্তু শান ভাই সে তো প্রথম দিন থেকেই শুধু ধমক দেয়। যেদিন প্রথম দেখা হয়েছিল সেদিন কতো অপমান করেছেন উনি। আবার থাপ্পড় ও মেরেছে। ভিলেন কোথাকার। হুহ। দিশার চোখের সামনে ভেসে উঠল ১ মাস আগের কাহিনী।

১ মাস আগে,,,,,

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পিচ ঢালা রাস্তায় দ্রুত গতিতে হাটছে দিশা। এই গরমের মধ্যে একটা রিক্সার দেখা নেই। এই নিয়ে বেশ বিরক্ত ও। আজকে ভালবাসা দিবস হওয়ায় ওর বেস্টটিস পায়েল ও মিতু তাদের বফ এর সাথে ঘুরতে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে একাই যেতে হচ্ছে তাকে। কলেজ থেকে বাড়ি অনেক টা দূরে হওয়ায় বেশ অনেকক্ষণ সময় লাগছে ওর। আজ ওর চাচাতো ভাই ধ্রুব তাকে নিতে আসেনি। কি জানি কই গেছে ? হয়তোবা অফিসে গেছে। দিশার বাড়ি পৌঁছাতে আরও ১৫ মিনিটের মতো লাগবে। দুপুর হওয়ায় পুরো রাস্তা ফাঁকা। কাউকে দেখা যাচ্ছে না আশেপাশে। আরও কিছুক্ষণ হাটার পর ও বুঝতে পারে ওর পিছনে কেউ আসছে। পিছনে ঘুরে দেখে কিছু বখাটে টাইপের কিছু ছেলে ওর পিছনে হাটছে আর মুখ দিয়ে শিস বাজাচ্ছে। ওদের দেখে হাটার গতি আরও বেশি করে দেয় দিশা। ওরা সংখ্যায় ৪ জন। ওদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকলে কি করবে ও? পারবে নিজেকে বাচাতে? এসব ভিয় মাথার মধ্যে জেকে বসে ওর। ভয়ে প্রাণপণে দৌড়াতে লাগল। ছেলেগুলোও পিছনে দৌড়ে আসছে। হঠাৎ একটা ইটের সাথে পা লেগে পড়ে যায় দিশা। ছেলে গুলো ওকে চারদিকে ঘিরে ধরল।

ফর্সা করে একটা ছেলে বলে উঠলো,
--" কি মামনী! বাসায় যাচ্ছ নাকি?"
--" এই মামনী বলছিস কি? বল মা*ল।
পাশ থেকে একটা ছেলে বলে উঠল। বলেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল সবাই। ওদের কথায় দিশার শরীর ঘৃনায় রি রি করে উঠল।
--" তা বফ নেই বুঝি? তো চল আমাদের সাথে নাহয় আজকের দিনটা সেলিব্রেট করলে।"
--" হ্যাঁ হ্যাঁ চল।"
বলেই পাশ থেকে একটা ছেলে হাত টেনে ধরল দিশার। দিশার হাত ছাড়ানোর জন্য মোচড়া মুচড়ি করতে লাগল। হঠাৎ একটা বাইক এসে দাঁড়াল ছেলেগুলোর পায়ের সামনে। মাথায় হেলমেট থাকায় মুখটা স্পষ্ট দেখতে পেলো না দিশা। প্রথমে ভাবল এই ছেলেটাও হয়তো এদেরই দলেরই। কিন্তু তার ধারণা ভুল করে বাইক থেকে নেমে ছেলেগুলো কে বেধড়ক পেটাতে লাগল ছেলেটা। ছেলে গুলো পাল্টা মারার কোনো সুযোগই পেল না। একে একে সবাই পালিয়ে গেল এইখান থেকে। দিশা ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই সজোড়ে একটা থাপ্পড় এসে পড়ে ওর গালে। হঠাৎ আক্রমণের জন্য প্রস্তুত না থাকায় আবার পিচ ঢালা রাস্তায় পড়ে গেল ও। ছেলেটি মাথার হেলমেট টা খুলল। রাগী ও গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
--" এমন ছোট ছোট জামা পড়ে কি ছেলেদের নিজের ফি*গা*র দেখানোর বের হয়?"
ছেলেটির কথায় নিজের দিকে তাকায় দিশা। আজ ওর সব ভালো ড্রেস ভুলে ওর মা লন্ড্রিতে দেওয়াও ওর বড় বোনের শর্ট টপ্স ও লেগিন্স পড়েছে ও। যা দেখতে ওর কাছেও দৃষ্টি কটু লেগেছে বাট বাড়ির সবাই বলেছে ওতো তাও খারাপ লাগছে না। আর ওর সব ফ্রেন্ডরাও তো এইরকমই ড্রেস পড়ে তাহলে এই লোকটা এমন ভাবে বলল কেন?
--" কি হলো উঠতে পারছো না? "
নিজের ভাবনার মধ্যে আবার ধমক খেয়ে চমকে উঠে দিশা। হাতে পায়ে লেগেছে অনেক। আবার গালেও অনেক জ্বালা করছে। কি জানি হাত না হাতুড়ি? সাবধানে উঠে দাঁড়লো ও।
--" বাড়ি কোথায় তোমার? "
--" ওই তো সামনেই।"
--" বাইকে বসো পৌঁছে দিয়ে আসি।"
--" না না! থাক লাগবে না। এমনিতেই অনেক সাহায্য করেছেন আর লাগবে না। "
দিশার কথায় পাত্তা না দিয়ে ওর হাত ধরে বাইকের সামনে দাড় করায় ছেলেটা। নিজে উঠে ওকেও উঠার জন্য বলে। আর কিছু না বলে দিশাও বাইকে উঠে বসে। বাসার সামনের মোড়ে এসে বাইক থামাতে বলে দিশা। ছেলেটিকে ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় চলে যায়। সেই ছেলেটি ছিল শান।

কিছুদিন পর,,,,,

কলেজ শেষ করে রিক্সা নিয়ে বাসায় যাচ্ছিল দিশা ও ওর বান্ধবীরা। মাঝরাস্তায় রিক্সা থামায় রিক্সা ওয়ালা। রিক্সা থামায় গল্প থেকে বের হয়ে রিক্সা থামার উৎস দেখার জন্য সামনে তাকালে দিশার চক্ষু রসগোল্লার মতো হয়ে যায়। একি দেখছে ও।

#চলবে?

বি:দ্র:- রিচেক করা হয়নি।

কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 পেইজে ফলো দিয়ে পাশে থাকুন। পোস্টে রিয়েক্ট ও কমেন্ট করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ। ❤️🌼
Happy Reading 💓

Address

Dinajpur

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কাঠগোলাপ- 𝑹𝒂𝒌𝒊𝒃𝒂 𝑹𝒊𝒏𝒂 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share