04/12/2024
আজ ফুলবাড়ী পাক হানাদার মুক্ত দিবস
============================
Voice of Phulbari-ফুলবাড়ী কন্ঠঃ আজ ৪ ডিসেম্বর দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর সঙ্গে প্রচন্ড লড়াইয়ের মাধ্যমে তাদের ফুলবাড়ী থেকে বিতাড়িত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। চুড়ান্ত বিজয়ের ১২ দিন আগেইে এখানে বিজয় আসে।
এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গৌরবভরে স্মরণ করে এরপর থেকে ৪ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী পাক হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে আসছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর ভোর থেকে উপজেলার সীমান্ত এলাকা আটপুকুর, আমড়া ও জলপাইতলি এলাকা দিয়ে একযোগে খানসেনাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী। সম্মুখ যুদ্ধে দাঁড়াতে না পেরে, খান সেনারা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পিছনে পালাতে শুরু করে। নিশ্চিত পরাজয় ভেবে ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর প্রবেশ রোধ করতে ফুলবাড়ী শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর ওপর লোহার ব্রীজটির পূর্ব অংশ ১৯৭১ সালের ৪ ডিস্মেবর বেলা ২ টার সময় ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয় খান সেনারা। এই সুযোগে ফুলবাড়ীতে অবস্থান করা খান সেনারদল ও তারদের সহযোগী অবাঙ্গালী রাজাকারেরা একটি ট্রেনে করে ফুলবাড়ী থেকে সৈয়দপুরের উদ্দ্যেশে পালিয়ে যায়। খান সেনাদের উড়িয়ে দেওয়া লোহার ব্রীজটি পুনরায় ইট সিমেন্ট দিয়ে নির্মাণ করা হয়। যা আজো মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ’৭১ সালে ওই দিন অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টায় ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী ও মিত্রবাহিনী প্রবেশ করে ফুলবাড়ীকে শত্রæমুক্ত বলে ঘোষণা দেন এবং স্বাধীন বাংলা পতকা।
উলেখ্য, শহরের প্রবীণ ব্যক্তিরা ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ২৫ মার্চ পর্যন্ত ফুলবাড়ী শান্ত ছিল। ফুলবাড়ীকে শান্ত রাখার জন্য একটি সর্বদলীয় ও সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির ব্যানারে ২৬ মার্চ একটি শান্তি মিছিল ফুলবাড়ী শহর প্রদক্ষিণ করার সময় শহরের কাটাবাড়ী বাংলা স্কুলের সামনে অবাঙ্গালী কলনী থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর হামলা করা হয়। এতে কয়েকজন আহত হলে ওই দিন অবাঙ্গালী নেতা শওকত ডাক্তারের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে শওকত ডাক্তারের পরিবারের ৫ সদস্য অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সৈয়দপুর আর্মি ক্যাম্প হতে খান সেনারা ফুলবাড়ীতে প্রবেশ করে এবং বাঙ্গালীদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগসহ নির্যাতন শুরু করে।
সেদিনের পর থেকে আজও ফুলবাড়ীর জনগণ ৪ ডিসেম্বর দিনটিকে ফুলবাড়ী পাক হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।