20/06/2025
বছরের পর বছর পূজা আসলেই এক ধরনের “ধর্মীয় ডিজে মৌসুম” শুরু হয়।
চারপাশ আলোয় ঝলমল, প্যান্ডেল বিশাল, বাজেট ছয় অঙ্ক ছাড়ায়।
তবে প্রশ্ন হলো সেই জাঁকজমকের আড়ালে ভগবান কোথায়?
আর তার চেয়েও বড় প্রশ্ন ভক্তি কোথায়?
পূজা এখন অনেকের কাছে শুধু একটা ফেস্টিভাল।
না মন্ত্র জানে, না মানসিকতা শুদ্ধ, না হৃদয়ে আছে শ্রদ্ধা।
কিন্তু ডিজে? আছে।
মদ? ঠাকুরের পেছনের গলিতে রেডি।
গাঁজা? “ভোলেনাথের প্রসাদ” বলে বৈধতা পায়।
আর ছেলে-মেয়েদের চলাফেরা? মেলামেশা? দেখে মনে হয় প্রেম দিবসই চলছে ৫ দিন ধরে।
অথচ অন্য ধর্ম কী করছে?
খ্রিস্টানরা মিশনারি পাঠায় গ্রামে গ্রামে।
তারা স্কুল বানায়, হসপিটাল দেয়, গরিবের ঘরে খাবার পৌঁছায় আর তার বিনিময়ে ধর্ম চর্চা শেখায়।
ওরা জানে, মানুষের মন জয় করতে হলে সাহায্য করতে হয়।
এদিকে হিন্দুদের অবস্থা?
আমরা লক্ষ টাকা খরচ করি মণ্ডপে,
কিন্তু কোনো শিশু হিন্দু ধর্ম শিখে না, কোনো তরুণ গীতার একটা শ্লোক জানে না,
আর কেউ জানতেও চায় না "আমার ধর্ম আসলে বলে কী?"
এই সুযোগেই মিশনারিরা প্রবেশ করে
"ভাই, মা দূর্গা কী বলেছে জানো?" কেউ জিজ্ঞেস করে না,
কিন্তু "যীশু খ্রীষ্ট তোমাকে ভালোবাসেন" সেটা কানে কানে এসে পৌঁছে যায়।
ধর্মান্তর দেখতে দেখতে চুপ কেন আমরা?
যখন দেখি আমাদের পাশের বাড়ির ছেলেটা,
যে একসময় হোলিতে রঙ খেলত, দুর্গাপূজায় কাঁসার থালা বাজাত —
সে এখন ক্রিসমাসে চার্চে গিয়ে বলে “Jesus is my savior"
তখন শুধু চোখ নামিয়ে নিঃশব্দে বলি — ‘ওর ইচ্ছা’…
না ভাই, এটা তার ইচ্ছা না —
এটা আমাদের ব্যর্থতা।
আমরা ধর্মচর্চা শিখাইনি, শাস্ত্র বুঝাইনি, যুক্তির ভাষায় ঈশ্বরকে ধরিয়ে দিইনি।
শুধু বলেছি এটাই আমাদের ধর্ম, মানতে হবে।”
আর ওদিকে মিশনারি এসে বলেছে এসো, বুঝি, ভালোবাসি, বদলাই।
সেই ভালোবাসায় সে বিশ্বাস পেয়েছে, আর আমরাও হারিয়ে ফেলেছি।
পূজার নামে এই প্রহসন চলতে পারে না।
তিন দিনের উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে গেছি।
তিন দিনেই শেষ ভক্তি, তারপর আবার ভেসে যায় সব।
ভগবান যেন ফুলের মতো সাজিয়ে রাখা এক গেস্ট,
যার সামনে মদ খাওয়াটাও অনেকের জন্য ফ্যাশন।
একটা সময় আসবে,
যখন লাখ টাকার মণ্ডপে দাঁড়ানোর মতো হিন্দু থাকবে না।
কারণ তারা হয় ধর্মান্তরিত হয়ে গেছে,
না হয় নিজের ধর্ম নিয়েই সন্দিহান।
কলমে _বন্ধুমহল