BILU 'S

BILU 'S Beauty is always seen from a distance, not up close.

Good Morning
01/11/2025

Good Morning

▌জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত নারীগণমুসলিমদের মধ্যে অনেকেই সাহাবী পুরুষদের জান্নাতের সুসংবাদের কথা জানেন, কিন্তু নারীদের মধ্...
30/10/2025

▌জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত নারীগণ

মুসলিমদের মধ্যে অনেকেই সাহাবী পুরুষদের জান্নাতের সুসংবাদের কথা জানেন, কিন্তু নারীদের মধ্যে এমন সাহাবিয়াও আছেন যাদেরকে নবী ﷺ সরাসরি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তাঁদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ—

১ খাদিজা বিনতে খুয়াইলদ (রাঃ)
রাসূল ﷺ–এর প্রথম স্ত্রী। ইসলামের প্রথম সমর্থক ও সাহসী চরিত্রের অধিকারী।
«اقرأ عليها السلام من ربها عز وجل ومني وبشرها ببيت في الجنة لا صخب فيه ولا نصب»
“আপনি খাদিজাকে তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে সালাম জানিয়ে দিন এবং তাঁকে জান্নাতে এমন এক গৃহের সুসংবাদ দিন, যেখানে থাকবে না কোনো শব্দের কোলাহল, থাকবে না কোনো কষ্ট।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 3820), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 2432)

২ ফাতিমা (রাঃ) রাসূল ﷺ–এর প্রিয় কন্যা। তাঁর ধৈর্য, ইবাদত ও আনুগত্য তাঁকে জান্নাতের সেরা নারীর মর্যাদা দিয়েছে।
«فاطمة سيدة نساء أهل الجنة»
“ফাতিমা হলো জান্নাতের নারীদের নেত্রী।” সহীহ তিরমিজী (হাদিস: 3805)

৩ উম্মু সুলাইম (রাঃ) আনাস ইবন মালিক (রাঃ)–এর মা। মক্কার হিজরতকালে নবী ﷺ–কে নিজের সন্তান আনাসকে উপহার দেন।
«دخلت الجنة فسمعت خشفةً فقلت: من هذا؟ قالوا: هذه العمیصاء بنت ملحان أم أنس بن مالك»
“আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম, হঠাৎ কারো পদধ্বনি শুনতে পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এটি কার? বলা হলো, উম্মু সুলাইম।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 3750), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 2420)

৪ উম্মু জাফর (রাঃ) তিনি মৃগীরোগে ভুগতেন। ধৈর্য ধারণের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ।
«أتصبرين ولك الجنة»
“তুমি যদি ধৈর্য ধারণ করো তবে তোমার জন্য জান্নাত।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 5683), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 2400)

৫ উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রাঃ) আনাস ইবন মালিক (রাঃ)–এর খালা।
«أول جيش من أمتي يغزون البحر قد أوجبوا»
“আমার উম্মতের প্রথম বাহিনী যারা সমুদ্রপথে যুদ্ধ করবে, তাদের জন্য জান্নাত অবধারিত।” তিনি প্রশ্ন করেন: আমি কি তাদের মধ্যে থাকব? নবী ﷺ উত্তর দিলেন: “হ্যাঁ, তুমি তাদের মধ্যে থাকবে।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 2907)

৬ নুসাইবা বিনতে কা’ব (উম্মু উমারা, রাঃ) উহুদ যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয়।
«اللهم اجعلهم رفقائي في الجنة»
“হে আল্লাহ! তাঁদের জান্নাতে আমার সঙ্গী বানিয়ে দাও।” সহীহ মুসলিম (হাদিস: 1730)

৭ রুবাইয়্যি বিনতে মু’আজ (রাঃ)
হুদায়বিয়ার সময় শাজারা বায়আতে অংশ নেন।
«لا يدخل النار أحد ممن بايع تحت الشجرة»
“যারা গাছের নিচে বায়আত করেছে, তাদের কেউই জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 3197), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 1820)

৮ সুমাইয়া বিনতে খায়্যাত (রাঃ)
ইসলামের প্রথম শহীদা, ইয়াসির (রাঃ)–এর স্ত্রী।
«صبرا آل ياسر فإن موعدكم الجنة»
“ধৈর্য ধারণ করো হে ইয়াসির পরিবার! তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারিত।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 2941), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 1812)

৯ আয়িশা (রাঃ) রাসূল ﷺ–এর স্ত্রী, বিদ্বান ও জ্ঞানী।
«هذه زوجتك في الدنيا والآخرة»
“এটাই আপনার স্ত্রী, দুনিয়া ও আখিরাতে।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 3890), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 2320)

১০ উম্মু রুমান (রাঃ) আবু বকর (রাঃ)–এর স্ত্রী, আয়েশার মা।
«من أحب أن ينظر إلى امرأة من الحور العين فلينظر إلى أم رومان»
“যে ব্যক্তি জান্নাতের হুরে-আইনদের একজনকে দেখতে চায়, সে যেন উম্মু রুমানের দিকে তাকায়।” সহীহ তিরমিজী (হাদিস: 3898)

১১. ফাতিমা বিনতে আসাদ (রাঃ)
আলী ইবন আবি তালিব (রাঃ)–এর মা। প্রথম দিককার মুহাজিরা।
«إن جبريل أخبرني عن ربي عز وجل أنها من أهل الجنة»
“জিবরাইল আমাকে জানিয়েছেন, তিনি জান্নাতের অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 3755), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 2410)

১২ হাফসা বিনতে উমর (রাঃ) উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ)–এর কন্যা, নবী ﷺ–এর স্ত্রী।
«إنها صوامة قوامة، وإنها زوجتك في الجنة»
“তাঁকে তালাক দেবেন না, তিনি সিয়াম ও কিয়ামের অভ্যাসকারী এবং জান্নাতে আপনার স্ত্রী।” সহীহ বুখারি (হাদিস: 3810), সহীহ মুসলিম (হাদিস: 2425)

রাসূল ﷺ চারজন মহীয়সী নারীর শ্রেষ্ঠত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন:

• খাদিজা (রাঃ)
• ফাতিমা (রাঃ)
• আসিয়া বিনতে মুজাহিম (ফিরআউনের স্ত্রী)
• মরিয়ম বিনতে ইমরান

আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁদের অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে তাঁদের সঙ্গী বানান। আমিন।

াওয়াহ_মানহাজুস_সালাফ, ❛ইলম অন্বেষণে, সালাফদের পথে❜

30/10/2025

আবু জাহেলদের ইসলাম গ্রহণ না করার সাইকোলজি!


ইয়েমেন ছিলেন তখনকার এক সুপারপাওয়ার৷ এখনকার অনেকটা চীন, রাশিয়ার মতো।

সেই সুপারপাওয়ার আবরাহার বাহিনী যখন মক্কা আক্রমণ করতে আসে, তখন সবাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। কারণ, এই বাহিনীকে ঠেকানোর সামর্থ্য মক্কাবাসীর ছিলো না।

ফলে আব্দুল মুত্তালিব কা'বা ঘরে গিয়ে আল্লাহর কাছে দুআ করেন— আল্লাহ যেন এই ঘরকে হেফাজত করেন।

আল্লাহ গায়েবি সাহায্য করেন। আবরাহার বাহিনীকে আবাবিল পাঠিয়ে এমনভাবে ধ্বংস করেন, যেন এর কোনো অস্তিত্ব ছিলো না।

শুধুমাত্র দুআর ফলে, কোনো ধরনের উদ্যোগ ছাড়াই আল্লাহ এমন সাহায্য সাধারণত কম করেন (এটা আল্লাহর সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন না, বরং সুন্নাতুল্লাহ। প্রচেষ্টা করতে হয়, অতঃপর ফল)।

কিন্তু, আবরাহার ঘটনা ছিলো একেবারে ব্যতিক্রম। কোনো ধরনের প্রচেষ্টা ছাড়াই আল্লাহ সাহায্য করেন। এই ঘটনা বিশ্লেষণ করে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ রাগিব সারজানি একটি বই লিখেন যা বাংলায় অনূদিত 'আমরা আবরাহার যুগে নই'।

অর্থাৎ, চেষ্টা না করে শুধু দুআ করেই ফল পেতে চান?

না, এরকম চাওয়াটা উচিত না। বাবা ছাড়া ঈসা আলাইহিসসালামের জন্ম যেমন রেয়ার ঘটনা, আবরাহার ঘটনাও রেয়ার।


সেই ঘটনার পর কুরাইশদের সম্মান, মর্যাদা অনেক বেড়ে গেলো। পুরো আরবের লোকজন তাদেরকে সমীহ করছে, নিরাপত্তা দিচ্ছে। নিরাপদে তারা ব্যবসা করতে পারছে।

সবাই মনে করলো— কুরাইশরা তো তারা, যাদেরকে আল্লাহ সাহায্য করেছেন। আবরাহা যাদের ক্ষতি করতে পারেনি, আমরা তাদের ক্ষতি করতে গেলে আমাদের পরিণতি আবরাহার মতোই হবে।

একে তো তারা কা'বা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারী, তারওপর এরকম গায়েবি সাহায্যপ্রাপ্ত। পুরো আরব, সিরিয়া, ইয়েমেনের মাঝে তাদের মর্যাদা চিন্তা করুন।


আব্দুল মুত্তালিবের দুআয় আল্লাহ কা'বা রক্ষা করেন। এটা শুধু আব্দুল মুত্তালিবেরই দুআ ছিলো না। এটা ছিলো কয়েক হাজার বছর পূর্বে ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের দুআ— "রব্বি জাআল হাযা বালাদান আমিনা"। হে আল্লাহ, এই শহরকে আপনি নিরাপদ শহর বানান৷ (সূরা বাকারা: ১২৬)

কা'বা ধ্বংস করতে এসেও আবরাহার বাহিনী ধ্বংস করতে না পারার পেছনে হাজার বছর পূর্বের কবুল হওয়া দুআ ছিলো, ছিলো আব্দুল মুত্তালিবের দুআ।


আবরাহার ঘটনার সাক্ষী কারা ছিলো?

আবু জাহেল, আবু লাহাব, ওয়ালিদ ইবনে মুগিরা, উতবা, শাইবা, উমাইয়া ইবনে খালাফ, আবু সুফিয়ান, আবু কুহাফা (আবু বকর রা. এর বাবা), সুহাইল ইবনে আমর, আ'স ইবনে ওয়ালি (যে রাসূলুল্লাহকে 'আবতার' বলেছিলো)।

তাদের প্রায় সবাই ছিলো আবরাহার ঘটনার সময় টিন-এজার।

তারা দেখলো, কীভাবে আবরাহার বাহিনীকে আল্লাহ গায়েবি সাহায্যে ধ্বংস করলেন।

এই ঘটনা দেখার পর তারা কী চিন্তা করলো? তারা দেখলো যেই ঘরকে আল্লাহ রক্ষা করলেন, এই ঘরের কতো মর্যাদা।

কিন্তু, সেই ঘরে তখন কী ছিলো?

৩৬০ টি মূর্তি।

তখন কা'বার প্রতি তাদের ঈমান না বেড়ে ঈমান বেড়ে যায় মূর্তির প্রতি!

তারা এই ঘটনাকে এভাবেই নিয়েছিলো— যেই মূর্তিগুলি আল্লাহ রক্ষা করলেন আবরাহার বাহিনী থেকে, সেই মূর্তিগুলি কতো মর্যাদাবান। তাহলে তো আমাদের আরো বেশি মূর্তিপূজা করা উচিত।

এটা ছিলো তাদের 'Perception'। আল্লাহ তো মূর্তি রক্ষা করেননি, করেছিলেন কা'বা।

কিন্তু, এই ঘটনায় তারা ম্যাসেজ পেলো মূর্তির গুরুত্ব, অন্যরা পেলো কাবার গুরুত্ব।

সেই জাহেলী আরবেও অনেকেই মূর্তিপূজা করতেন না, তারা এক আল্লাহর ইবাদত করতেন। তাদেরকে বলা হতো 'হানিফ'।

এরকম কয়েকজন ছিলেন— জায়েদ ইবনে আমর, ওয়ারাকা ইবনে নওফেল, হাকিম ইবনে হিজাম, উসমান ইবনু হুয়াইরিস, উবাইদুল্লাহ ইবনু জাহশ।

যার মানে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পূর্বেই মূর্তিপূজা নিয়ে আরবে দুটো গ্রুপ ছিলো। মূর্তিপূজার পক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি।


আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম হয়েছিলো আবরাহা যে বছর কা'বা আক্রমণ করে সেই বছর। এটা কি কাকতালীয়? কোনোভাবেই না।

কেনো আরবদের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বছরেই রাসূলুল্লাহ ﷺ জন্মগ্রহণ করেন? এর perception বদলানোর জন্য? এই মিথ্যা উন্মোচনের জন্য?


আবু জাহেলদের মূর্তিপূজার ওপর দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো, পাশাপাশি ছিলো গোত্রীয় আধিপত্য, কায়েমি স্বার্থবাদী চিন্তা। এসবের কারণে তারা ইসলাম গ্রহণ করেনি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইসলামের দাওয়াত দেন, তখন তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখায়। তারমধ্যে অন্যতম ছিলো মূর্তির অবমাননা।

তাদের বিশ্বাস, যেই মূর্তি কারণে আবরাহার বাহিনী থেকে আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করলেন, তুমি এসে সেই মূর্তির বিরোধিতা করছো? আমাদের দেব-দেবীদের মন্দ নামে ডাকছো? পারলে গায়েবি সাহায্য এনে প্রমাণ দাও।

এরকম চ্যালেঞ্জ তারা বারবার ছুঁড়েছিলো।

কিন্তু, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেন কা'বা ঘরের মূর্তির না, বরং কা'বার রবের ইবাদত করতে।

আল্লাহ রেফারেন্স হিসেবে আবরাহার ঘটনা উল্লেখ করেন 'সূরা ফিল' -এ, তারপর কুরাইশদের প্রতি আল্লাহ কীভাবে রহম করেছেন সেটা উল্লেখ করেন 'সূরা কুরাইশ' -এ।

অতঃপর আল্লাহ তাদের চিন্তা বদলানোর জন্য কানেক্ট করতে থাকেন কা'বার রবের, কা'বার মূর্তির না।

আল্লাহ বলেন- "ফালই'আবুদু রাব্বা হাযাল বাইত।"

"অতএব, তারা যেন এই ঘরের (কা'বা) রবের ইবাদত করে।" (সূরা কুরাইশ: ৩)

কিন্তু, আল্লাহর কথা না শুনে নিজেদের ইগো'র কারণে তারা এই ঘরের মূর্তির পূজা করে।

আবু জাহেলরা শুধু যে ইগো না, তারা যে 'ঈমানদার কাফের' ছিলো, তারা যে সত্যি সত্যি মূর্তিপূজায় বিশ্বাসী ছিলো, এটাকেই হক্ব মনে করতো, তার উদাহরণ পাওয়া যায় দুআয়।

বদর যুদ্ধের আগের দিন সে কা'বায় গিয়ে দুআ করেছিলো— আল্লাহ, মুহাম্মাদের বাহিনী আর আমার বাহিনীর মধ্যে যারা হক্বের ওপর আছে, তাদেরকে বিজয় দাও।

অর্থাৎ, সে মূলত নিজের জন্যই বদদু'আ করে!


প্রায় ২১ বছর পরের ঘটনা। মক্কা বিজয়ের সময় সাহাবীদের স্মৃতিতে ভাসছিলো আবরাহার ঘটনা।

১০ হাজার সৈন্য নিয়ে সাহাবীরা মদীনা থেকে মক্কায় যাচ্ছেন। মনে পড়ছে ৬১ বছর আগে বাপ-চাচাদের কাছে শুনা আবরাহার ঘটনা। এভাবে আবরাহাও এসেছিলো মক্কা আক্রমণ করতে।

কিন্তু, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের মনোবল চাঙ্গা করলেন, সংশোধন করলেন— আমরা যুদ্ধের জন্য যাচ্ছি না।

উপরন্তু, মক্কা বিজয়ের সময় যারা যুদ্ধের জন্য তখন স্লোগান দিয়েছিলেন, রাসূলুল্লাহ তাদেরকে দায়িত্ব থেকে অব্যবহিত দেন।

কুরাইশরা অপেক্ষা করছিলো, আল্লাহ যেমন আবরাহার বাহিনীকে ধ্বংস করেছেন, মুসলিম বাহিনীকেও এভাবে ধ্বংস করবেন।

অনেকগুলো যুদ্ধে পরাজিত হবার পরও মক্কায় তখন কয়েক হাজার মূর্তিপূজারী। কারণ, মূর্তির প্রতি তাদের বিশ্বাসে চিড় ধরেনি।

আমরা ইতিহাসে পড়ি, মক্কা বিজয় কোনো ধরনের সংঘাত ছাড়াই হয়েছিলো।

যদিও তখন ছোট্ট একটা গ্রুপ, আবু জাহেলের ছেলে ইকরিমার নেতৃত্বে প্রতিহত করতে চেয়েছিলো। কিন্তু, মক্কার বেশিরভাগই যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়নি।

অথচ কয়েক বছর আগেই তো তারা ১০ হাজার সৈন্য নিয়ে মদীনা আক্রমণ করতে গিয়েছিলো, হুদাইবিয়ার সন্ধি করেছিলো।

হঠাৎ করে ঈমান না এনেও তারা কেনো প্রতিরক্ষা করেনি? তারা তো জানে না যে মক্কা বিজয় হলে তাদেরকে ক্ষমা করা হবে নাকি প্রতিশোধ নেয়া হবে?

এর কারণ, তারা অপেক্ষা করছিলো আবরাহার বাহিনীর মতো কিছু একটা হবে।


কিন্তু, হলো না। সামান্য সংঘর্ষ হয়, সহজেই মক্কা বিজয় হয়।

এটা ছিলো কুরাইশদের মূর্তিপূজার প্রতি বিশ্বাসে ধাক্কা। মূর্তি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে মক্কায় এসে তাদেরকে পরাজিত করা গেলো?

এরপর আসলো তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা!

যুদ্ধে পরাজিত হয়েও তারা এমন ধাক্কা খায়নি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের পর প্রথম কী করেন?

কা'বা ঘরের ৩৬০ টি মূর্তি ভাঙ্গার প্রজেক্ট হাতে নেন।

কুরাইশরা এতো কিছুর পরও তারা বিশ্বাস করছিলো, অপেক্ষায় ছিলো— মূর্তি ভাঙ্গতে গিয়ে সাহাবীদের কিছু না কিছু হবে, আল্লাহর গায়েবী সাহায্য আসবে।

কিন্তু, তাদের আশার গুড়েবালি।

সাহাবীরা সফলতার সাথে কা'বা ঘর মূর্তিমুক্ত করেন।

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করেন— "জা'আল হাক্কু ওয়া জাহাকাল বাতিল। ইন্নাল বাতিলা কানা জাহূকা।"

অর্থাৎ, "সত্য এসেছে, মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হবারই ছিলো।" (সূরা ইসরা: ৮১)


এই আয়াতটি মূলত perception change এর প্রমাণ।

কুরাইশরা ভেবেছিলো মূর্তি কারণেই তারা সম্মানিত, মূর্তির কারণেই তারা দাম পাচ্ছে, সবাই নিরাপত্তা দিচ্ছে। আল্লাহ এই মাইন্ডসেট বদলানোর জন্য আয়াতও নাযিল করেছিলেন কয়েক বছর পূর্বে।

"তারা কি দেখে না যে, আমি ‘হারাম’ কে নিরাপদ বানিয়েছি, অথচ তাদের আশপাশ থেকে মানুষদেরকে ছিনিয়ে নেয়া হয়? তাহলে কি তারা 'অসত্যেই বিশ্বাস' করবে এবং আল্লাহর নিআমতকে অস্বীকার করবে?" (সূরা আনকাবুত: ৬৭)

সেই মূর্তি ভেঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমাণ করেন, তারা এতোদিন অস্যতকেই বিশ্বাস করেছিলো। আজ সত্য উন্মোচিত হলো।


মক্কা বিজয়ের পর কী হয়?

যারা আবরাহার ঘটনা দেখেছিলো, ধরেই নিয়েছিলো আবরাহাকে ধ্বংস করেছেন আল্লাহ মূর্তিরক্ষার জন্য, তাদের ভুল ভাঙ্গে।

এর আগে অসংখ্য ঘটনা, নিদর্শন, প্রমাণের পরও তারা ঈমান আনেনি।

কিন্তু, যখন দেখলো মূর্তির মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই, কা'বার মূর্তি ভাঙ্গার পরও কারো কিছু হয়নি, তখন তার ঈমান আনলো।

এই তালিকায় ছিলেন সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবী আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বাবা আবু কুহাফা; যিনি ছিলেন তখন ৯০+ বছর বয়সী।

আবরাহার সময় যিনি ছিলেন ৩০ বছরের যুবক, ২১ বছরের দাওয়াত দেখে যিনি ঈমান আনেননি, তিনি কা'বার মূর্তি ভাঙ্গার পর ঈমান আনেন!


আবু কুহাফা শুধু একা নন।

কা'বার মূর্তি ভাঙ্গা হয়েছে, তবুও কিছু হয়নি, এই নিউজ ছড়িয়ে যায় চারিদিকে। সামরিক পরাজয়ের পরও আরবের আশেপাশের সবাই নিজেদের বিশ্বাস নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শুরু করে।

আগে ভেবেছিলো মূর্তির কারণে কা'বাকে আল্লাহ রক্ষা করেছিলেন, এখন তারা দেখলো কা'বার মূর্তি অপসারণের পরও মুসলিমদের কিছুই হয়নি।

তখন তারা দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করে।

যেই ঘটনা আল্লাহ 'সূরা আন-নাসর' এ উল্লেখ করেন— "ওয়া রাইতা ন-নাসা ইয়াদখুলূনা ফি দীনি আল্লাহি আফওয়াজা"

অর্থাৎ, "আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবেন!" (সূরা আন-নাসর ২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ২১ বছরের দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন আনুমানিক ২০ হাজার সাহাবী (সর্বোচ্চ)।

আর মক্কা বিজয় থেকে বিদায় হজ্জ পর্যন্ত এই ২৭ মাসে মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে যায় প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার থেকে দেড় লক্ষ।

অর্থাৎ, ৫-৭ গুণ!


আমাদের মনে রাখতে হবে, মক্কা বিজয় কোনো ছোটোখাটো ঘটনা না!

এটার সাইকোলজিকাল ইমপ্যাক্ট অনেক। আমাদের চিন্তারও বাইরে।

নেক্সট টাইম যখন আমরা সীরাত পড়বো, তখন এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে সীরাত পড়ে আনন্দ পাবো।


🚀 লেখা এবং ভিডিওটি Share করতে পারেন, প্লিজ। অন্যরা উপকৃত হবে, ইনশা আল্লাহ।


✍️ আরিফুল ইসলাম

মার্কেটিং সাইকোলজি স্পেশালিস্ট


30/10/2025
Kunafa — a must-try dessert in Saudi Arabia.কুনাফা - সৌদি আরবে একটি অবশ্যই চেষ্টা করা মিষ্টি।
30/10/2025

Kunafa — a must-try dessert in Saudi Arabia.

কুনাফা - সৌদি আরবে একটি অবশ্যই চেষ্টা করা মিষ্টি।

Good morning
30/10/2025

Good morning

.মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাণী—জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধিতে সে অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু এই উন্নতির ভিড়ে এক কঠিন সত্য আমরা প্রায়...
30/10/2025

.
মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাণী—জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধিতে সে অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু এই উন্নতির ভিড়ে এক কঠিন সত্য আমরা প্রায়ই ভুলে যাই—মা ছাড়া এই পৃথিবীতে সত্যিকারের নিঃস্বার্থ কেউ নেই।

মানবজাতি যতই সভ্য হোক না কেন, স্বার্থ তার রক্তে মিশে আছে। বন্ধুত্বে, প্রেমে, সম্পর্কের প্রতিটি বাঁকে কোথাও না কোথাও লুকিয়ে থাকে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার হিসাব।

কেউ ভালোবাসে যতদিন নিজের প্রয়োজন মেটে, কেউ পাশে থাকে যতদিন নিজের সুবিধা থাকে। সমাজে মানুষ মানুষের জন্য কাজ করে, কিন্তু সেখানে প্রতিদানের আশা যেন অঘোষিত নিয়ম।

শুধু একটিমাত্র সম্পর্কই আছে যা কোনো প্রতিদানের আশা করে না—মায়ের ভালোবাসা। মা সন্তানের জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিতে পারে, নিঃস্বার্থভাবে হাসিমুখে সব কষ্ট সহ্য করে। সন্তান ভুল করলে মা কষ্ট পায়, কিন্তু ঘৃণা করে না। সে চায় না কিছু, শুধু চায় সন্তানের মঙ্গল।

একজন মা’ই একমাত্র মানুষ, যিনি নিজের সুখ ত্যাগ করে সন্তানের হাসিতে সুখ খোঁজেন। তাঁর ভালোবাসায় নেই কোনো শর্ত, নেই কোনো স্বার্থ। পৃথিবীর সব সম্পর্কের ওজন মেপে দেখলেও, মায়ের ভালোবাসা সব কিছুর চেয়ে পবিত্র ও নির্মল।

এই জন্যই বলা হয়— “মা বাদে পুরো মানবজাতি স্বার্থপর।” কারণ মা-ই একমাত্র মানুষ, যিনি স্বার্থের ঊর্ধ্বে, যিনি ভালোবাসেন শুধু দিতে, না পেতে।

আল খোবারের আজদান আইল্যান্ড টাওয়ার হল আজদান রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্টের একটি আসন্ন ওয়াটারফ্রন্ট গন্তব্য, যা পর্যটন, বিন...
29/10/2025

আল খোবারের আজদান আইল্যান্ড টাওয়ার হল আজদান রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্টের একটি আসন্ন ওয়াটারফ্রন্ট গন্তব্য, যা পর্যটন, বিনোদন, খুচরা বিক্রেতা এবং আতিথেয়তাকে একত্রিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে উন্মোচিত এই প্রকল্পটি খোবারের ওয়াটার টাওয়ার দ্বীপকে সৌদি ভিশন ২০৩০ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি আধুনিক মিশ্র-ব্যবহারের কেন্দ্রে রূপান্তরিত করবে, যা আরব উপসাগরে বিলাসবহুল জীবনযাপন, অবসর আকর্ষণ এবং প্রাণবন্ত সমুদ্রতীরবর্তী অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।

সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নতুন প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম চালু করেছে, যা অনানুষ্ঠানিকভাবে "সৌদি গ্রিন কার্ড" না...
29/10/2025

সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নতুন প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম চালু করেছে, যা অনানুষ্ঠানিকভাবে "সৌদি গ্রিন কার্ড" নামে পরিচিত, যা তাদের ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার একটি প্রধান অংশ। এই যুগান্তকারী উদ্যোগটি যোগ্য বিদেশীদের স্থানীয় পৃষ্ঠপোষক ছাড়াই রাজ্যে বসবাস, কাজ, সম্পত্তির মালিকানা এবং বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়।

এই প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকটি বিকল্প অফার করে, যার মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য সীমিত মেয়াদী আবাসন (১০০,০০০ SAR/বছর) এবং সীমাহীন মেয়াদী (স্থায়ী) আবাসন (৮০০,০০০ SAR এককালীন ফি)। বিনিয়োগের সীমা বা কর্মসংস্থানের লক্ষ্যের মতো নির্দিষ্ট শর্ত পূরণকারী কম প্রবেশ ফি (৪,০০০ SAR থেকে শুরু) সহ উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্দিষ্ট বিভাগ-ভিত্তিক পথও উপলব্ধ।

আবেদনকারীদের কমপক্ষে ২১ বছর বয়সী হতে হবে, একটি মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা দেখাতে হবে। এই পদক্ষেপটি ব্যবসা পরিচালনার স্বাধীনতা এবং সরলীকৃত ভ্রমণ, রাজ্যের অর্থনীতিকে বিশ্বব্যাপী পেশাদারদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার মতো বিশাল সুবিধা প্রদান করে।

#সৌদিআরবিয়া🇸🇦 #গ্রিনকার্ড #আরবভাইনস #এফবিলাইফস্টাইল

কাতার 🇶🇦 লন্ডনের বৃহত্তম জমির মালিকদের মধ্যে নিঃশব্দে পরিণত হয়েছে, এমনকি রাজা চার্লসকেও ছাড়িয়ে গেছে!তার শক্তিশালী সার...
29/10/2025

কাতার 🇶🇦 লন্ডনের বৃহত্তম জমির মালিকদের মধ্যে নিঃশব্দে পরিণত হয়েছে, এমনকি রাজা চার্লসকেও ছাড়িয়ে গেছে!

তার শক্তিশালী সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের মাধ্যমে, উপসাগরীয় দেশটি শহরের কিছু বিখ্যাত সম্পত্তি অর্জন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে হ্যারডস, দ্য শার্ড, ক্যানারি ওয়ার্ফ এবং হিথ্রো বিমানবন্দরের অংশীদারিত্ব। এই উচ্চ-প্রোফাইল বিনিয়োগগুলি কাতারকে যুক্তরাজ্যের রিয়েল এস্টেট বাজারে একটি প্রধান শক্তিতে পরিণত করেছে, যা রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে বিদেশী মালিকানার ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

সমালোচকদের কাছে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঐতিহাসিক শহরগুলির মধ্যে একটিকে পুনর্গঠিত করার জন্য বিপুল সম্পদের একটি ঘটনা। কাতারের কাছে, এটি কৌশলগত বিনিয়োগ এবং বিশ্বব্যাপী নরম শক্তির একটি গণনাকৃত মিশ্রণ।

#কাতার🇶🇦 #আরবভাইনস #কিংচার্লস

Address

Dohar
1332

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when BILU 'S posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share