16/07/2025
#ফরিদপুরের মধুখালীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও অর্থ পাচার চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
দেশজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ভয়ঙ্কর চক্রের বড় একটি অংশ ধরা পড়েছে ফরিদপুরের মধুখালীতে।
ফরিদপুর সেনা ক্যাম্প ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত যৌথ অভিযানে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। একাধিক অভিযোগ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে ফরিদপুর সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ আসে, যেখানে ভুক্তভোগীরা জানান—বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ভুয়া কাস্টমার কেয়ার সেজে প্রতারকরা তাদের কাছ থেকে একাউন্ট, পিন ও ওটিপি সংগ্রহ করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তদন্তে দেখা যায়, এই অর্থ দেশের নানা স্থান থেকে উঠিয়ে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডোমাইন ইউনিয়নের এক এলাকায় পাঠানো হচ্ছিল।
১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে ৩ দিন ধরে প্রযুক্তি ব্যবহার, আর্থিক লেনদেন ও অবস্থান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়—এই চক্র অবৈধভাবে আদায়কৃত অর্থ দেশের শতাধিক অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটে ব্যবহার করত। বিভিন্ন সফটওয়্যার ও স্ক্রিপ্টের মাধ্যমে জুয়ায় ‘নিশ্চিত জয়’ নিশ্চিত করে সেই অর্থ আবার পাচার করা হতো বিদেশে—বিশেষ করে সৌদি আরব ও আমিরাতে থাকা বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে।
গত ১৪ জুলাই ভোররাতে প্রায় সাত ঘণ্টার অভিযানে ডোমাইন বাজার এলাকার কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় প্রতারণা চক্রের হোতা মো. কামরুল মিয়া (৪০) এবং তার চার সহযোগী—অমরেশ বিশ্বাস (৩০), সোহান মালিক (২৪), হাফিজুর রহমান (৪২), ও শেখ শাকিল আহমেদ (২৬) কে।
অভিযানে ১০৬ পিস ইয়াবা, ৪২টি গ্রামীণফোন সিমকার্ড ও ১০টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে, ভুয়া কল সেন্টারের মাধ্যমে প্রতারণা করে তারা এই অর্থ আদায় করত এবং সেই অর্থ অনলাইন জুয়ায় ব্যবহার করে বিদেশে পাচার করত। তারা অবৈধ সিম সরবরাহকারী ফেসবুক গ্রুপ থেকে পূর্ব-নিবন্ধিত নাম্বার কিনে নতুন একাউন্ট চালু রাখত।
তদন্তে আরও জানা গেছে, এই চক্রের নেটওয়ার্ক কেবল ফরিদপুরে নয়—রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ দেশের সব বিভাগেই বিস্তৃত ছিল। এটি দেশের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি ভয়ঙ্কর ডিজিটাল প্রতারণার চিত্র তুলে ধরছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধুখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, সাইবার অপরাধ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও ডিজিটাল লেনদেনের স্বচ্ছতা রক্ষায় তারা জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে, এ ধরনের অপরাধ চিহ্নিত ও দমনে জনগণকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
---
#প্রিয়_ফরিদপুর #মধুখালী #অপরাধবিরোধী_অভিযান #ডিজিটাল_প্রতারণা #মানি_লন্ডারিং #সাইবার_ক্রাইম #বাংলাদেশ