29/07/2025
আজকে টঙ্গীতে অফিস থেকে ফেরার সময় একজন
মহিলা ম্যানহোলের ড্রেনে পড়ে গিয়েছে। অনেকদিন
যাবতই ম্যানহোলের ওই ঢাকনাটা খোলা ছিল, সিটি
কর্পোরেশনের লোকেরা গাফিলতি করে ঠিক করেনি।
আজকে হাঁটু সমান বৃষ্টির পানিতে ঢাকনা আছে কি
নাই সেটা দেখার কোন উপায় ছিল না। মহিলাটাও
প্রতিদিনকার মতই অফিস থেকে বাসায় ফিরছিল,
কিন্তু ঢাকনা না থাকায় মুহুর্তেই যেন নিচে তলিয়ে
গেল ম্যানহোলে। একজন লোক দৌড়ে এসে উনাকে
ধরতে চেয়েছিল কিন্তু বাঁচাতে পারেনি।
এরপর ফায়ার সার্ভিস এসেছে, সিটি কর্পোরেশনের
লোকজন এসেছে কিন্তু মহিলার লাশটা পর্যন্ত খুঁজে
পায়নি।
স্থানীয় লোকজন বলছে- ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা
একটু খোঁজাখুজির পর না পেয়ে বসে
দেখছিল।
ফায়ার সার্ভিস দোষারোপ করছিল সিটি
কর্পোরেশনকে আর সিটি কর্পোরেশন দোষারোপ
করছিল ফায়ার সার্ভিসকে। কাজের কাজ কিছুই
হচ্ছিল না।
কিন্তু মহিলার লাশটা আর উদ্ধার হলো না। অলরেডি
২৪ ঘন্টা হয়ে গিয়েছে। মহিলাটার ২ টা জমজ বাচ্চা
আছে। ওদের নানা নানুও কেউ নেই, একদম একা।
বাচ্চাগুলো বিকেলের দিকে মায়ের জন্যে অপেক্ষা
করছিল, কিন্তু যখন পাড়াপ্রতিবেশীরা জানিয়েছে
তাদের মা ড্রেনে পড়ে মারা গিয়েছে তখন থেকে তারা
মায়ের লাশের জন্যে অপেক্ষা করছে।
কিন্তু সেই লাশও এখনো বাড়িতে এলো না ।
এদেশের বিমানে সমস্যা, রাস্তায় সমস্যা, আরও
কতকিছুতে সমস্যা।
একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে। সেই পানিতে
কারেন্টের ক্যাবল পড়ে শক খেয়ে মানুষ মরে, ড্রেনে
পড়ে মানুষ মরে কিন্তু ঠিকঠাক আর হয়না।
একটু আগে এই মহিলার বোনের মেয়ে আমাকে নক
করে করুণভাবে বলছিল- একটু দেখেন না ভাইয়া
কিছু করা যায় কি-না, আমরা শুধু লাশটা চাই আর কিছু করা যায় কি-না, আমরা শুধু লাশটা চাই আর
কিচ্ছু না।
বেশি দেরি হলে পানির স্রোতে লাশটা দূরে কোথাও
চলে যাবে, আর হয়তো পাওয়া যাবে না ।
মহিলার মাত্র ৮ বছরের দুইটা জমজ বাচ্চা এত
রাতেও জেগে আছে। মা মা বলে বারবার হাউমাউ
করে কাঁদতেছে । অথচ আজকে মা বাসায় ফিরলে
এতক্ষণে খেয়ে ঘুমানোর কথা ছিল ওদের।
কিন্তু দু চোখে ঘুম নেই বাচ্চাগুলোর। জীবিত মা'য়ের
আশা করছে না, ওরা কেঁদে কেঁদে মায়ের লাশটা
চাচ্ছে শুধু।
বৃষ্টির দিনে আমরা হয়তো আরাম করে ঘুমোচ্ছি
কিংবা মুভি দেখছি কিন্তু এই বাচ্চা দুটো অপেক্ষা
করছে মায়ের লাশের জন্যে!
তাই একটু আওয়াজ তুলুন, শেয়ার করে ছড়িয়ে
দিন। মাসুম বাচ্চাগুলোকে তার মায়ের লাশটা পেতে
অন্তত সাহায্য করুন।