30/07/2025
নিজে দলিল পড়া শিখুন, ছেলে মেয়েদেরকেও শিখান। পুরাতন ও নতুন ফরমেটে দলিল পড়া ও বুঝা শিখতে ১ম কমেন্টের ভিডিও দেখুন। দলিলে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দ দেখে নিন:
১. মৌজা: গ্রাম।
২. জে.এল নং: মৌজা নং বা গ্রাম নম্বর।
৩. ফর্দ: দলিলের পাতা।
৪. খং: খতিয়ান।
৫. সাবেক: আগের/পূর্বের।
৬. হাল: বর্তমান।
৭. বং: বাহক (যিনি নিরক্ষর ব্যক্তির নাম লেখেন)।
৮. নিং: নিরক্ষর।
৯. গং: আরো অংশীদার আছে।
১০. সাং: সাকিন/গ্রাম।
১১. তঞ্চকতা: প্রতারণা।
১২. সনাক্তকারী: যিনি বিক্রেতাকে চেনেন।
১৩. এজমালী: যৌথ।
১৪. মুসাবিদা: দলিল লেখক।
১৫. পর্চা: বুঝারতের সময় প্রাথমিক খতিয়ানের যে নকল দেওয়া হয়।
১৬. বাস্তু: বসত ভিটা।
১৭. বাটোয়ারা: বন্টন।
১৮. বায়া: বিক্রেতা।
১৯. মং/মবলক: মোট।
২০. এওয়াজ: সমপরিমাণ কোনো কিছুর বিনিময়ে সমপরিমাণ কোনো কিছু বদল করা।
২১. হিস্যা: অংশ।
২২. একুনে: যোগফল।
২৩. জরিপ: পরিমাপ।
২৪. এজমালী (সম্পত্তি/জোত): কোনো ভূমি বা জোতের একাধিক শরীক থাকলে তাকে এজমালী সম্পত্তি বা এজমালী জোত বলে।
২৫. চৌহদ্দি: সীমানা।
২৬. সিট: নকশার অংশ বা মৌজার অংশের নকশা।
২৭. দাখিলা: খাজনার রশিদ।
২৮. নক্সা: ম্যাপ।
২৯. নল: জমি পরিমাপের নিমিত্তে তৈরি অংশ দণ্ড।
৩০. নাল: চাষাবাদের উপযোগী ভূমি।
৩১. পিং: পিতা।
৩২. জং: স্বামী।
৩৩. দাগ নং: জমির নম্বর।
৩৪. এতদ্বার্থে: এতকিছুর পর।
৩৫. স্বজ্ঞানে: নিজের বুঝ মতে।
৩৬. সমূদয়: সব কিছু।
৩৭. ইয়াদিকৃত: পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করলাম।
৩৮. পত্র মিদং: পত্রের মাধ্যমে।
৩৯. বিং: বিস্তারিত।
৪০. দং: দখলকার।
৪১. পত্তন: সাময়িক বন্দোবস্ত।
৪২. বদল সূত্র: এক জমি দিয়ে অন্য জমি গ্রহণ করা।
৪৩. মৌকুফ: মাপ।
৪৪. দিশারী রেখা: দিকনির্দেশনা।
৪৫. হেবা বিল এওয়াজ: কোনো জিনিসের পরিবর্তে ভূমি/জমি দান করাকে হেবা বিল এওয়াজ বলে।
৪৬. বাটা দাগ: কাটা দাগ; এটি ভগ্নাংশ আকারে থাকে, যার উপরের সংখ্যা আগের দাগ এবং নিচের সংখ্যা এই দাগের বাটা।
৪৭. অধুনা: বর্তমান।
৪৮. রোক: নগদ।
৪৯. ভায়া: বিক্রেতার পূর্বের ক্রয়কৃত দলিল।
৫০. দান সূত্র: কোনো ভূমি দলিল মূলে দান করলে দান গ্রহণকারী দান সূত্রে ভূমির মালিক বলে গণ্য হয়।
৫১. দাখিল খারিজ: কোনো জোতের ভূমি ও জমা হতে কতেকাংশ ভূমির খরিদ্দার বা ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ব্যক্তিকে পৃথকভাবে নাম জারি করে দিলে তাকে দাখিল খারিজ বলে।
৫২. তফসিল: তালিকা; কোনো দলিলের নিম্নভাগে লিখিত সম্পত্তির তালিকা।
৫৩. খারিজ: যখন কোনো সরকার বা জমিদার কোনো প্রজাকে তার অংশীদারের জমা হতে পৃথকভাবে খাজনা দেওয়ার অনুমতি দেন, তখন তাকে খারিজ বলে।
৫৪. খতিয়ান: প্রত্যেক মৌজার এক বা একাধিক ভূমির জন্য একত্রে যে রেকর্ড সৃষ্টি করা হয় তাকে খতিয়ান বলা হয়। খতিয়ানে তৌজি নম্বর, পরগনার নাম, জে.এল বা গ্রামের নাম, খতিয়ান নম্বর, স্বত্ত্বের বিবরণ, মালিকের নাম, তার পিতা ও গ্রামের নাম, দাগ নম্বর, প্রত্যেক দাগের উত্তর সীমানা, ভূমির প্রকার (যেমন: ডাঙ্গা, ধানী, ডোবা, পতিত, গর্ত, হালট ইত্যাদি), দখলকারের নাম, ভূমির ষোল আনা পরিমাণ, হিস্যা ও হিস্যা মত পরিমাণ একর লিখিত থাকে।
৫৫. জরিপ (কর নির্ধারণ): সাধারণত কর নির্ধারণ ভিত্তিতেই এই সার্ভে করা হয়ে থাকে।
৫৬. এওয়াজ সূত্র: সমপরিমাণ কোনো ভূমি বা জিনিসের বদলে সমপরিমাণ কোনো ভূমি বা জিনিস প্রাপ্ত হলে তাকে এওয়াজ সূত্রে প্রাপ্ত বলা হয়; একে বদল সূত্রও বলে।
৫৭. অছিয়তনামা: যদি কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্বে তার ওয়ারিশ বা আত্মীয়-স্বজনকে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বাটোয়ারা সম্পর্কে দলিল মূলে কোনো নির্দেশ দিয়ে যান, তবে তাকে অছিয়তনামা বলে। মৃত্যুর পর উক্ত অছিয়ত প্রবলের জন্য জেলা জজ সাহেব হতে অনুমতি নিতে হয়। হিন্দু ধর্মে একে উইল বলে।
৫৮. তফসিল (বিক্রিত জমি): বিক্রিত জমির তালিকা।
৫৯. নামজারী: অন্যান্য অংশীদার থেকে নিজের নাম খতিয়ানে খোলাকে নামজারী বলে।
৬০. অধীনস্থ স্বত্ত্ব: উপরিস্থিত স্বত্ব বা জমিদারী স্বত্বের অধীনে কোনো স্বত্ব সৃষ্টি করলে তাকে অধীনস্থ স্বত্ব বা নীচস্থ স্বত্ব বলে।
৬১. আলামত: ম্যাপের মধ্যে গাছপালা, বাড়িঘর, মন্দির, মসজিদ, গোরস্থান, জলভূমি ইত্যাদি বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত চিহ্ন।
৬২. আমলনামা: কোনো ব্যক্তি অন্যের নিকট হতে কোনো ভূমি নিলাম বা খোস-খরিদ করে ভূমিতে দখল নেওয়ার যে দলিল প্রাপ্ত হয়, তাকে আমলনামা বলে।
৬৩. আসলি: মূল ভূমি।
৬৪. আধি: উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক ভূমির মালিক, অর্ধেক প্রজায় রাখলে তাকে আধি বা বর্গ বলে।
৬৫. ইজারা: ঠিকা; নির্দিষ্ট খাজনায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তালুক বা মহলাদির বন্দোবস্ত দেওয়া বা নেওয়া।
৬৬. ইয়াদদন্ত: স্মারকলিপি।
৬৭. ইন্তেহার: ঘোষণাপত্র।
৬৮. এস্টেট: ১৭৯৩ সালে সরকার বাহাদুর যে সমস্ত মহাল স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দিয়েছেন, তাদের জমিদারী বা এস্টেট বলে।
৬৯. ওয়াকফ: ধর্মীয় কাজের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নামে উৎসর্গীকৃত সম্পত্তি।
৭০. কিত্তা: চারটি আইন দ্বারা বেষ্টিত ভূমি খন্ডকে এক একটি কিত্তা বা পট বলে।
৭১. কিস্তোয়ার জরিপ: গ্রামের অন্তর্গত জমিগুলো কিত্তা কিত্তা করে জরিপ করার নাম কিস্তোয়ার।
৭২. কিস্তি: নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার বা ব্যবস্থা।
৭৩. কায়েম স্বত্ত্ব: চিরস্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া ভূমিকে কায়েম স্বত্ত্ব বলে।
৭৪. কবুলিয়ত: মালিকের বরাবরে স্বীকারোক্তি করে কোনো দলিল দিলে তাকে কবুলিয়ত বলে। কবুলিয়াত নানা প্রকার: যেমন- রায়তি, দর রায়তি, কোর্ফা ও আদি বর্গা কবুলিয়াত।
৭৫. কটকোবালা: সুদের পরিবর্তে মহাজনের দখলে জমি দিয়ে টাকা কর্জ করে যে দলিল দেওয়া হয়, তাকে কটকোবালা বলে।
৭৬. কান্দা: উচ্চ ভূমি; গ্রামের সন্নিকটস্থ ভূমিকেও কান্দা বলে।
৭৭. কিসমত: মৌজার অংশ।
৭৮. কোলা ভূমি: বসত বাড়ীর সংলগ্ন নাল জমি।
৭৯. কোল: নদীর কোনো ছোট অংশ তার প্রধান স্রোতের সাথে বা হতে সংযুক্ত হয়ে গেলে তাকে কোল বলে।
৮০. খানাপুরী: প্রাথমিক স্বত্ব লিপি; এটি রেকর্ড অব রাইটস তৈরির ধাপ। খসড়া ও খতিয়ানের কলাম বা ঘর পূরণ করাই এর কাজ।
৮১. খামার: ভূম্যধিকারী খাস দখলীয় ভূমিকে খামার, খাস-খামার, নিজ জোত বা কমত বলে।
৮২. খাইখন্দক: ডোবাগর্ত, খাল, নালা ইত্যাদি চাষের অযোগ্য ভূমি।
৮৩. খিরাজ: কর, খাজনা।
৮৪. খানে খোদা: মসজিদ।
৮৫. খসড়া: জমির মোটামুটি বর্ণনা।
৮৬. গর বন্দোবস্তি: যে জমির কোনো বন্দোবস্ত দেওয়া হয় নাই।
৮৭. গরলায়েক পতিত: খাল, নালা, তীরচর, ঝাড়, জঙ্গল ইত্যাদি অনাবাদি ভূমি।
৮৮. গির্বি: বন্ধক।
৮৯. চক: বসত ম্যাপের এক একটি পট।
৯০. জমা বন্দী: খাজনার তালিকা।
৯১. চাকরাণ: জমিদার বাড়ীর কাজ-কর্ম নির্বাহ করার জন্য ভোগ-দখল করার নিমিত্তে যে জমি দেওয়া হয়।
৯২. চাঁদা: জরিপ কার্যে নির্দিষ্ট করা স্টেশন।
৯৩. চটান: বাড়ীর সন্নিকটস্থ উচ্চ পতিত স্থান।
৯৪. চালা: উচ্চ আবাদি ভূমি (পুকুরের পাড় ইত্যাদি)।
৯৫. চর: পলিমাটি গঠিত ভূমি।
৯৬. জবর-দখল: জোরপূর্বক দখল।
৯৭. জমা: এক বা একাধিক ভূমির জন্য একত্রে যে খাজনা দেওয়া হয়, তাকে এক একটি জমা বলে।
৯৮. জোত: এক প্রকার প্রজাস্বত্ত্ব।
৯৯. জজিরা: নাব্য নদীতে যে দ্বীপ গঠিত হয়।
১০০. জায়সুদী: হস্তান্তরকরণ ক্ষমতা ব্যতীত কিয়ৎকালের জন্য বন্ধক; অর্থাৎ মহাজনের নিকট বন্ধক দিয়ে যদি এই মর্মে টাকা কর্জ করা যায়, যে যতদিন পর্যন্ত আসল টাকা পরিশোধ না হবে ততদিন পর্যন্ত মহাজন উক্ত জমি ভোগ-দখল করতে থাকবেন, তবে তাকে জায়সুরি বলে।
১০১. জালি: এক প্রকার ধান যা জলাভূমিতে জন্মে।
১০২. টেক: নদী ভগ্নস্থান ভরাট হয়ে যে পয়স্তি উৎপন্ন হয়, তাকে টেক বলে।
১০৩. টাভার্স: ঘের জরিপ।
১০৪. ঠিকা রায়ত: নির্দিষ্ট মেয়াদে সাময়িকভাবে দখলকার অথবা যে রায়তের কোনো দখলি স্বত্ত্ব নেই।
১০৫. ঢোল সহরত: কোনো ক্রোক, নিলাম ইস্তেহার বা দখলি পরওয়ানা সরজমিনে ঢোল পিটিয়ে জারি করা।
১০৬. তামিল: আদেশ মোতাবেক রেকর্ড সংশোধন করা।
১০৭. তামাদি: খাজনা আদায় করার নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হলে তাকে তামাদি বলে।
১০৮. তুদাবন্দী: সীমানা নির্দেশ।
১০৯. তহশিল: খাজনাদি আয়ের নিমিত্ত নির্দিষ্ট এলাকা।
১১০. তলবানা: সমন জারির সময় পিয়নকে প্রদত্ত ফিস।
১১১. তলববাকী: বকেয়া খাজনা আদায়ের কিস্তি।
১১২. তালুক: নিম্নস্থ স্বত্ত্ব।
১১৩. তরমিম: শুদ্ধকরণ।
১১৪. তরতিব: শৃঙ্খলা।
১১৫. তৌজি: ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তীয় ভূমির জন্য কালেক্টরীতে যে রেজিস্ট্রী বই থাকে, তাকে তৌজি বলে। প্রত্যেক তৌজির ক্রমিক নম্বর থাকে। জমিদারের অধীন প্রজার জোতকেও তৌজি বলা হয়।
১১৬. দিয়ারা: পলিমাটি দ্বারা গঠিত চর।
১১৭. দর পত্তনী: পত্তনীর অধীন।
১১৮. দখলী স্বত্ত্ব বিশিষ্ট প্রজা: দখলদার হিসেবে যে প্রজার স্বত্ত্ব আছে।
১১৯. দশসালা বন্দোবস্ত: দশ বৎসরের মেয়াদে বন্দোবস্ত দেওয়া।
১২০. দাগ নম্বর: মৌজা নকশায় প্রত্যেক প্লটের যে সিরিয়াল নম্বর বসানো হয়।
১২১. দরবস্ত: সমুদয়।
১২২. নথি: রেকর্ড।
১২৩. দেবোত্তর: দেবতাদিগকে প্রদত্ত নিষ্কর ভূমি।
১২৪. দেবিচর: যে সকল বালুচর সাধারণ জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়।
১২৫. দিঘলি: নির্দিষ্ট পরিমাণ খাজনা আদায়কারী একপ্রকার প্রজা।
১২৬. নক্সা ভাওড়ন/রিলেইং বাউন্ডারীজ: পূর্ব জরিপ অনুসারে গ্রামের সীমাগুলো এখন আর ঠিক মতো পাওয়া যায় না। ফলে সীমানা নিয়ে প্রায়ই জমিদারের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। পূর্বের ফিল্ডবুক অনুসারে প্রত্যেক লাইনের মাপ ও বিয়ারিং নিয়ে, লাইনটি প্রথমে যেখানে যেভাবে ছিল, তা চিহ্নিত করে, কোন জমি কোন মৌজার অন্তর্গত, তা ঠিক করার নামই নক্সা ভাওড়ান বা রিলেইং বাউন্ডারীজ।
১২৭. নাম খারিজ বা জমা খারিজ: ১৬ আনা জোতের মোট জমা হতে নামজারীকৃত ওয়ারিশ বা খরিদ্দারের দখলীয় জমির জমা ১৬ আনা জোতের জমার হার অনুসারে জাম ভাগ করে দিয়ে পৃথক জমা সৃষ্টি করাকে নাম খারিজ বা জাম খারিজ বলে।
আশা করি এই তালিকাটি আপনার জন্য সহায়ক হবে।
#দলিল #বুঝা #হাতে_লিখা_দলিল