Israt Jahan

Israt Jahan এ পেইজটার উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর দ্বীন মানুষের মাঝে সঠিকভাবে প্রচার করা

15/06/2025
07/11/2024

আসসালামু আলাইকুম,

"এসো আরবী শিখি "কোর্সটা অন্য একাডেমীতে করতে গেলে ১০০০/২০০০ মাসিক হাদিয়া দিতে হয়।কিন্তু এ একাডেমীতে সবচেয়ে কম হাদিয়া নেয়া হয়।তারপরও ভর্তি হচ্ছে না কেন? টাকার জন্য নাকি আগ্রহ কম ভাষার শেখার প্রতি? আর মাত্র ৮দিন বাকী।এরপর আর ভর্তি নেয়া হবে না।এরকম অফার হাতছাড়া করবেন না।স্টুডেন্টদের জন্য এটা সামর্থ্যের মধ্যে।শুধু মেয়েদের জন্য এই কোর্স,দক্ষ মেয়ে শিক্ষিকা ক্লাস নিবেন।আগ্রহীরা ইনবক্সে যোগাযোগ করুন বা কমেন্ট করুন।

বিউটি পার্লার খোলা বা তাতে কাজ করার বিধানপ্রশ্ন: স্বামীর আর্থিক অনটনের কারণে তাকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে কোন মহিলার জন্য...
09/05/2024

বিউটি পার্লার খোলা বা তাতে কাজ করার বিধান

প্রশ্ন: স্বামীর আর্থিক অনটনের কারণে তাকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে কোন মহিলার জন্য বিউটি পার্লার খোলা বা তাতে কাজ করা বৈধ কি?

উত্তর:

বিউটি পার্লারগুলোতে সাধারণত নানা ধরণের শরিয়া বিরোধী ও গুনাহের কাজ সংঘটিত হয়। এ সকল শরীয়ত বিরোধী কার্যক্রম থেকে মুক্ত হলে (শর্ত সাপেক্ষে) মহিলাদের বিউটি পার্লার খোলা বা তাতে কাজ করা জায়েজ রয়েছে।
যেমন:
১) কেবল মেয়েরাই মেয়েদের জন্য কাজ করবে। সেখানে পুরুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
২) সাজসজ্জার ক্ষেত্রে ইসলামে নারীদের জন্য যে সকল বিষয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেগুলো থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। যেমন: ভ্রু প্লাগ, মাথায় কৃত্রিম চুল সংযোজন, শরীরে উল্কি অংকন, দাঁত চিকন করা, আতর সুগন্ধি লাগানো, মাথার উপরে উঁচু করে চুলের খোপা বাধা ইত্যাদি।

৩) কৃত্রিম নখ, ভ্রূ, ও চোখে কালার লেন্স ইত্যাদি না লাগানো। কেননা একদিকে এগুলো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক অন্যদিকে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার নামান্তর।
৪) মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক বা হারাম উপাদান থেকে তৈরি কেমিক্যাল ও রং ব্যবহার না করা।
৫) মহিলাকে সাজানোর সময় তার লজ্জা স্থানের দিকে না তাকানো বা তার স্পর্শকাতর স্থান স্পর্শ না করা।
৬) কাফের-ফাসেক নায়িকা-গায়িকা বা পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে মাথার চুল খাটো না করা। (এই উদ্দেশ্য না হলে প্রয়োজনে মহিলাদের মাথার চুল ছোট করা জায়েজ রয়েছে)
৭) যে সকল মহিলা পর্দা বিহীন ভাবে চলাফেরা করে বা যারা বোরকা পরে কিন্তু মুখমণ্ডল খোলা রাখে তাদের অঙ্গসজ্জা না করা। কেননা এতে তাদেরকে এ সকল গুনাহের কাজে সহযোগিতা করা হয়- যা ইসলামে নাজায়েজ।
৮) ফেতনা থেকে মুক্ত থাকা।

উপরোক্ত শর্তাবলী সাপেক্ষে মহিলাদের জন্য বিউটি পার্লার খোলা, তাতে কাজ করা এবং এই উদ্দেশ্যে ঘর ভাড়া দেওয়া ইত্যাদিতে কোন বাধা নেই। কিন্তু এসকল শর্তাবলী লঙ্ঘন হলে অবশ্যই তা বৈধ নয়।
দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, বর্তমানে এই সকল শর্তাবলী পালন করে বিউটি পার্লার চালানো প্রায় অসম্ভব।

সুতরাং স্বামীর আর্থিক দুর্বলতায় একান্ত জরুরি অবস্থায় তাকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে (স্বামী না থাকলে নিজের বা পরিবারের আর্থিক দুর্গতি লাঘবের উদ্দেশ্যে) একজন মহিলার অর্থ কামানোর জন্য এই পথে না গিয়ে ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে ভিন্ন বৈধ উপায় অনুসন্ধান করা উচিত। যেমন: পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে এবং ফিতনা থেকে দূরে থেকে কেবল মহিলা অঙ্গনে হালাল জব করা, বাড়িতে বা বাড়ির আশেপাশে কেবল ছাত্রীদের জন্য কোচিং করা, বাড়িতে হাঁসমুরগি বা গবাদিপশু পালন করা, অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন ধরণের হালাল ব্যবসা করা, ফ্রিল্যান্সিং করা, হস্তশিল্প, পোশাক তৈরি, কাপড় সেলাই ইত্যাদি কাজ করা। আল্লাহু আলাম
আল্লাহ সাহায্য করুন। আমীন।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব।।

29/04/2024

ফেসবুক-ইউটিউবে ​স্বামী-স্ত্রীর ভিডিও আপলোড করার বিধান
▬▬▬🔹♦🔹▬▬▬
প্রশ্ন: ফেসবুকে আজকাল দেখা যাচ্ছে, অনেক মুসলিম দম্পতি ফেসবুকে তাদের ভিডিও পোস্ট করে। সেখানে অবশ্য স্ত্রী পূর্ণ পর্দা অবস্থায় থাকে। হয়তো তারা এ জন্য যে এসব পোস্ট করে যে, মানুষ যেন বুঝতে পারে পর্দা করেও রোমান্স করা যায় এবং এ থেকে অন্যদের পর্দা করা বা নেক সঙ্গী নির্বাচন করার জন্য উৎসাহিত হয়। এখন প্রশ্ন হল, এ গুলো ভিডিও করে অনলাইনে পোস্ট করা কি বৈধ? আর যারা শেয়ার করছে তারা কি বৈধ কাজটা করছে?

উত্তর:

আল্লাহ তাআলা মহিলাদেরকে ঘরে থাকতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ
“আর তোমাদের বাড়িতে তোমরা অবস্থান করবে, আর -মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।“ (সূরা আহযাব: ৩৩)
হ্যাঁ, প্রয়োজনে একজন মহিলার জন্য পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে বাইরে যাওয়া জায়েয আছে। তাই বলে তাকে বোরকা পরিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে হাজার হাজার দর্শকের সমানে “প্রদর্শনী” বানানো জায়েয নাই। কারণ একথা স্বতঃসিদ্ধ যে, বোরকা পরলেও একজন যুবতী মহিলার দেহের গঠন, সৌন্দর্য অনেকটা উপলব্ধি করা যায়। আর একজন পুরুষ যখন তার স্ত্রীকে বোরকা পরিয়ে তাদের দুষ্টুমি ও খুনসুটির ভিডিও ফেসবুক বা ইউটিউবে পাবলিকের উদ্দেশ্য ছড়িয়ে দেয় তখন সে যেন সকল দর্শকের জন্য তার স্ত্রীকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা বা তার দেহের গঠন, সৌন্দর্য, হাসি, দুষ্টুমি ইত্যাদি মনে মনে উপভোগ করার জন্য অনুমতি দিয়ে দিলো! লা হাওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। আত্মমর্যাদা সম্পন্ন কোনো পুরুষ এমনটি করতে পারে না। এটি নিতান্ত ব্যক্তিত্বহীন ব্যক্তির দ্বারাই সম্ভব।

তাছাড়া স্বামী-স্ত্রীর খুনসুটি,দুষ্টামি, রোমান্স ইত্যাদিগুলো জনসম্মুখ প্রকাশ করার বিষয় নয়। বরং এগুলো হতে হবে নিতান্ত গোপনে-লোকচক্ষুর আড়ালে।

সুতরাং এভাবে স্বামী-স্ত্রীর দুষ্টামি, হাসাহাসি, দৌড়াদৌড়ি, দোলনায় উঠা, একসাথে আইসক্রিম আর ফুচকা খাওয়ার ভিডিও আপলোড করা বা শেয়ার করা কোনটাই আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তির জন্য শোভনীয় নয়। এসব ভিডিওর ফলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে ফেতনায় পড়ে তাদের সুখের সংসার নষ্ট হতে পারে। তারা শিকার হতে পারে হিংসা, বদ নজর ও নানা ফেতনার।।
আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন।
▬▬▬🔹♦🔹▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
fb/AbdullaahilHadi
দাঈ জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

23/02/2024

কথিত শবে বরাতে মহান আল্লাহর ক্ষমা ঘোষণা এবং একটি ভুল বিশ্বাসের অপনোদন:
(আশা করি, এ লেখাটি শবে বরাত সম্পর্কে আপনার ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিবে)
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

সুপ্রিয় দীনী ভাই ও বোনেরা, প্রথমেই মহান আল্লাহর নিকট দুআ করি, তিনি যেন আমাদের সকলকে তাঁর অবারিত নেয়ামত, মাগফিরাত ও রহমতের বারিধারায় সিক্ত করে জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে কবুল করে নেন। আমীন।

প্রিয় বন্ধুগণ, অর্ধ শাবান বা কথিত শবে বরাত সম্পর্কে আমাদের সমাজে নানামুখী কথাবার্তায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ আজ মহাবিপাকে আছে। চলছে পক্ষে ও বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক। এ প্রেক্ষাপটে আমি আপনাদের সামনে কয়েকটি বিষয় আলোচনা করার চেষ্টা করব। আশা করি, এর মাধ্যমে আমরা কিছু বিষয়ে সচেতন হব আর অপনোদন হবে কিছু ভুল বিশ্বাসের ইনশাআল্লাহ।

❑ আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার ঘোষণা কেবল অর্ধ শাবানের রাতে নির্দিষ্ট নয় বরং এ ঘোষণা আসে প্রতি সপ্তাহে দুবার করে:
▬▬▬▬▬▬▬▬▬
হে সত্যান্বেষী মুক্তিকামী ভাই, আপনি শবে বরাতের রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। কারণ আপনি আল্লাহর ক্ষমা অর্জন করতে চান এবং চান আল্লাহ যেন আপনার দুআ কবুল করেন। মূলত: এটি প্রতিটি মুমিনেরই ঐকান্তিক প্রত্যাশা। তাই না?

কিন্তু আপনি জানেন কি আল্লাহর পক্ষ থেকে সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রতি ক্ষমার ঘোষণা কেবল অর্ধ শাবানের রাতে নির্দিষ্ট নয় বরং তা আসে প্রতি সপ্তাহে দুবার করে। তবে শর্ত হল, শিরক ও বিদআত থেকে মুক্ত থাকতে হবে এবং কারো প্রতি অন্তরে বিদ্বেষ রাখা যাবে না।
অনুরূপভাবে আল্লাহ তাআলা কেবল প্রতি বছরে একবার তথা অর্ধ শাবানের রাতেই পৃথিবী বাসীর প্রতি উঁকি দেন না বরং তিনি প্রতি রাতেই নিচের আসমানে নেমে এসে বান্দাদেরকে ক্ষমার জন্য আহ্বান করতে থাকেন! আল্লাহু আকবার!!

অবাক হচ্ছেন? তাহলে পড়ুন নিন্মোক্ত হাদিস দুটি:

➤ ১) আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

« تُفْتَحُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ , فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا , إِلاَّ رَجُلاً كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ , فَيُقَالُ : أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا , أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا , أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا » . ( رواه مسلم ) .

“সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, অতঃপর এমন প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়, যে আল্লাহর সাথে কোনও কিছুকে শরীক করে নি; তবে ঐ ব্যক্তি ক্ষমার বাইরে থাকে, যে ব্যক্তি ও তার ভাইয়ের মধ্যে বিদ্বেষ বা শত্রুতা রয়েছে; অতঃপর (ফেরেশতাদেরকে) বলা হয়: তোমরা এই দু’জনকে পরস্পরের মধ্যে মিলমিশ হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও, তোমরা এই দু’জনকে পরস্পরের মধ্যে মিলমিশ হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও, তোমরা এই দু’জনকে পরস্পরের মধ্যে মিলমিশ হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও।”

ইবনে আবাদাহ এর বর্ণনায় إِلاَّ الْمُتَهَاجِرَيْنِ আছে। আর কুতায়বা, (রহঃ) বলেছেন, إِلاَّ الْمُهْتَجِرَيْنِ (তবে সম্পর্ক পরিত্যাগকারী দুজনকে ক্ষমা করা হবে না)।
{সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ৪৭/ সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার (كتاب البر والصلة والآداب) পরিচ্ছদ: শত্রুতা ও সম্পর্ক ত্যাগ করার নিষেধাজ্ঞা, হাদিস নম্বর: [6312]}

➤ খ) আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নিচের আসমানে নেমে এসে বান্দাদেরকে ক্ষমার জন্য ডাকতে থাকেন। পড়ুন হাদিসটি:

প্রখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِيْنَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ فَيَقُوْلُ مَن يَّدْعُوْنِي فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ، مَنْ يَّسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَن يَّسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ، مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ- وَفِىْ رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ عَنْهُ: فَلاَ يَزَالُ كَذَالِكَ حَتَّى يُضِيْئَ الْفَجْرُ-
‘আমাদের পালনকর্তা মহান আল্লাহ প্রতি রাতের তৃতীয় প্রহরে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, কে আছ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব? কে আছ আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করব? কে আছ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব? এভাবে তিনি ফজর স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত আহবান করেন’। [মুত্তাফাক্বুন ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২২৩, ‘সালাত’ অধ্যায়-৪, ‘রাত্রি জাগরণে উৎসাহ দান’ অনুচ্ছেদ-৩৩; মুসলিম হা/১৭৭৩]

❑ হাদিস দ্বয়ের শিক্ষা:
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
সুতরাং আমরা উক্ত হাদিস দ্বয় থেকে কী শিক্ষা পেলাম?

✪ ক. ১ম হাদিসের একটি শিক্ষা হল, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই শিরক থেকে মুক্ত হওয়া অপরিহার্য। এর কোন বিকল্প নাই।
যে ব্যক্তি আল্লাহর নাম, গুণাবলী ও ইবাদতে অন্যকে অংশীদার করবে তাকে মুশরিক বলা হয়।
- সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া কোন অলি-আউলিয়া, পীর-ফকীর, জিন-ফেরেশতা বা কোন অদৃশ্য শক্তির কাছে ক্ষমতা বহির্ভূত বিষয়ে বিপদ-মুসিবত থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা জানাবে সে শিরক করবে।
- যে ব্যক্তি তাবিজ, কবজ, রিং, সুতা,ইত্যাদি ব্যবহার করবে বা গাছ, মাছ, পাথর ইত্যাদির নিকট মানত করবে বা সন্তান পাওয়া, রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ ইত্যাদি সমস্যার জন্য এগুলোর কাছে ধর্না দিবে সে শিরক করবে।
- যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু জবেহ করবে বা মান্নত করবে সে শিরক করবে।
আল্লাহ তায়ালা শিরক কারীকে ক্ষমা করবেন না বলে কুরআন ও সহীহ হাদিসে বিভিন্ন স্থানে স্পষ্টভাবে সর্তক করেছেন।
সুতরাং আমাদেরকে অবশ্যই সকল প্রকার শিরক থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য এর কোন বিকল্প রাস্তা নাই।

✪ খ. ২য় শিক্ষা হল, বিদআত থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি আমাদের অন্তরকে পরস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করতে হবে।
ইমাম আওযাঈ রহ. বলেন, হাদিসে 'বিদ্বেষ পোষণকারী’ বলতে সে সকল বিদআত পন্থীকে বুঝানো হয়েছে, যারা দ্বন্দ্ব-কলহ করে মুসলমানদের জামাআত থেকে বের হয়ে যায়।

সুতরাং আমরা যদি আল্লাহর ক্ষমা লাভ করতে চাই তাহলে আমাদের অন্তরকে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করতে হবে। সেই সাথে বিদআত পরিহার করে মুসলিম জামাআতের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে জীবনযাপন করতে হবে। কোনভাবেই বিদআতে লিপ্ত হয়ে মুসলিমদের জামাআত থেকে দুরে সরা যাবে না।

✪ গ. উক্ত হাদিসে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারে বিশেষ কোন আমল প্রমাণিত হয় না রোযা ছাড়া। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দু দিন রোযা ছাড়া অন্য বিশেষ কোন আমল করেছেন বলে প্রমাণিত নয়। তাই কেউ যদি এ উপলক্ষে বিশেষ কোন ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত হয় তাহলে তা বিদআত হিসেবে পরিগণিত হবে। আল্লাহু আলাম।

❑ অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ঘোষণার হাদিসটির অবস্থা কি?
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
এবার দেখি, যে সকল ভাই অর্ধ শাবানের রাতে বিশেষ কিছু ইবাদত-বন্দেগীর জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছেন তাদের দলীলটি সম্পর্কে।

শবে বরাত পালনের পক্ষে নিম্নোক্ত হাদিসটি দলীল হিসেবে পেশ করা হয় (এটি হল, এ মতের লোকদের সবচেয়ে শক্তিশালী দলীল)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
((إن الله ليطلع في ليلة النصف من شعبان ، فيغفر لجميع خلقه ، إلا لمشرك أو مشاحن))
“আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (পৃথিবীর) দিকে উঁকি দিয়ে দেখে মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তি ছাড়া সমস্ত সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন।”
[ইবনে মাজাহ, সুনান ইবনে মাজাহ, অধ্যায়: ইকামতে সালাত, হা/১৩৯০]

❖ হাদিসটির পর্যালোচনা:

উক্ত হাদিস সহীহ নাকি জঈফ এ ব্যাপারে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। তবে আল্লামা আলবানী রহ. সহ একদল মুহাদ্দিস হাদিসটিকে বিভিন্ন সনদের সমন্বয়ে হাসান/সহীহ বলেছেন। পক্ষান্তরে অন্য একদল মুহাদ্দিস এটিকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ইমাম বূসীরী রহ. তাঁর যাওয়াযেদ ইবনে মাজাহ গ্রন্থে (২/১০) বলেন: আবু মুসার সনদে বর্ণিত উক্ত হাদিসটি জঈফ। কারণ এর সনদে দুটি সমস্যা রয়েছে:

- ক) আব্দুল্লাহ বিন লাহীআহ একজন সুপ্রসিদ্ধ জঈফ বর্ণনাকারী।
- খ) ওলীদ বিন মুসা তাদলীস করেছেন। (তাদলীস হাদিস জঈফ হওয়ার একটি
অন্যতম কারণ। বিস্তারিত: মুস্তালাহুল হাদিসের গ্রন্থাদি দ্রষ্টব্য)
উক্ত বর্ণনাটিকে আল্লামা আলবানী রহ.ও জঈফ বলেছেন। কিন্তু এ মর্মে বর্ণিত একাধিক হাদিসের সমন্বয়ে শেষ পর্যন্ত হাসান/সহীহ বলে সাব্যস্ত করেছেন। [দেখুন, সিলসিলা সহীহাহ মুখতাসারাহ: হাদিস নং ১৫৬৩]।

❖ হাদিসের শিক্ষা:

উক্ত হাদিস থেকেও আমরা শিক্ষা পাই যে, আমরা যদি মহান রবের ক্ষমা লাভে ধন্য হতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে শিরক-বিদআত মুক্ত জীবন এবং মুসলিম জামাআতের সাথে বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। হাদিসের মূল বক্তব্য এটাই।

তবে এখান থেকে কোনভাবেই অর্ধ শাবানে বিশেষ কোন ইবাদত প্রমাণিত হয় না। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামও এ রাতে বিশেষ কোন এবাদত করেন নি বা করতে বলেন নি। এ উপলক্ষে দিনে রোযা রাখা, কবর যিয়ারত করা বা রাতে ১০০ রাকআত নামায আদায় করা ইত্যাদি সম্পর্কে যে সকল হাদীস পেশ করা হয় সেগুলো একটিও সহীহ নয়। কোনটি জঈফ আর কোনটি জাল। (আমার অন্য একটি লেখায় উক্ত হাদিসগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা রয়েছে)

সুতরাং উক্ত হাদিসকে কেন্দ্র করে শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিনে রোযা রাখা, রাতে একশ রাকাত নামায পড়া, মিলাদের আয়োজন করা, সম্মিলিত দুআ অনুষ্ঠান করা বা অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি পালন করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না যেভাবে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারে কেবল রোযা ছাড়া অন্য কোন ইবাদত প্রমাণিত হয় না।

❑ সিদ্ধান্ত: কথিত শবে বরাত বা অর্ধ শাবানের রাতের চেয়ে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার অধিক গুরুত্বপূর্ণ:
▬▬▬▬▬▬▬▬▬
উপরোক্ত আলোচনা থেকে অর্ধ শাবানের রাতের চেয়ে প্রতি প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও ফযিলত পূর্ণ প্রমাণিত হল। কারণ সমূহ নিন্মরূপ:

❖ ১. প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবারে আল্লাহর পক্ষ থেকে মুশরিক ও বিদ্বেষী ব্যক্তি ছাড়া দুনিয়ার সকল মুসলিমের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এ মর্মে হাদিসটি সহীহ মুসলিমের বিশুদ্ধ হাদিস। পক্ষান্তরে অর্ধ শাবানের রাতের ক্ষমার হাদিসটি সহীহ হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট দ্বিমত রয়েছে।

❖ ২. এ দু দিন জান্নাতের দরজা সমূহ খোলা হয়। (যেমন উপরোল্লিখিত হাদিসটি) অথচ অর্ধ শাবানের ব্যাপারে এমন কোন হাদিসে বর্ণিত হয় নি।

❖ ৩. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দু দিন নফল রোজা রাখতেন এবং রোযা রাখার জন্য তার উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। পক্ষান্তরে অর্ধ শাবানের ১৪ তারিখ দিনে রোযা রাখা এবং রাতে ইবাদত করার হাদিসটি জঈফ।
❖ ৪. সোমবারের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছেন।

❖ ৫. এই দিনেই তার উপর সর্বপ্রথম ওহী অবতীর্ণ হয়েছে।
যেমন নিম্নোক্ত হাদিস:

عَنْ أَبِي قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيِّ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ الِاثْنَيْنِ؟ فَقَالَ: «فِيهِ وُلِدْتُ وَفِيهِ أُنْزِلَ عَلَيَّ»

আবু কাতাদা আল আনসারী রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সোমবারে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি জবাবে বলেন, এই দিনে আমি জন্ম গ্রহণ করেছি এবং এই দিনেই আমার উপর ওহী এসেছে। মুসলিম-২/৮২০, হাদিস-১১৬২।

❖ ৬. সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে মানুষের আমলনামা পেশ করা হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
«تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَالخَمِيسِ، فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ»:
“(মহান আল্লাহর নিকট) সোমবার ও বৃহস্পতিবারে আমল সমূহ পেশ করা হয় আর আমি এটি ভালবাসি যে, আমার আমল সমূহ মহান আল্লাহ নিকট এমন অবস্থায় পেশ করা হবে, যে অবস্থায় আমি রোজাদার।” [তিরমিযী-৩/১১৩, হাদিস-৭৪৭, সহীহ-শাইখ আলবানী]

পক্ষান্তরে শাবান মাসে আল্লাহর নিকট বান্দার বার্ষিক আমল পেশ করা হয়। কিন্তু নির্দিষ্টভাবে অর্ধ শাবানের ব্যাপারে এমন কোন কথা আসে নি।

মোটকথা: আমরা যদি মহান আল্লাহর ঘোষিত ক্ষমা অর্জন করতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে শিরক, বিদআত মুক্ত ইবাদত এবং হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত সামাজিক জীবন গঠনে ব্রতী হবে। এটাই হোক আমাদের সকলের প্রত্যয় এবং প্রচেষ্টা। আল্লাহ সকলকে তাওফিক দান করুন। আমীন।
●●●●●●●●●●●●
লেখক:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

Address

Feni

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Israt Jahan posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category