25/08/2025
😎 আপনি যদি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন এবং Windows 10 ব্যবহার করেন, তাহলে এই পোস্টটা আপনার জন্য।
🎁 এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় বাঁচিয়ে দিতে পারে!
➡ টিপসগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হয়।
পারফর্মেন্স ও স্পিড (Performance & Speed)
ভিডিও এডিটিং এর জন্য পিসির সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স দরকার। এই টিপসগুলো আপনার পিসিকে দ্রুততর করবে।
১. আলটিমেট পারফর্মেন্স মোড (Ultimate Performance Mode):
এটি উইন্ডোজের একটি হিডেন পাওয়ার প্ল্যান যা হার্ডওয়্যারকে সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স দেওয়ার জন্য অপ্টিমাইজ করে। রেন্ডারিং বা ভারী কাজ করার সময় এটি চালু করুন।
• কীভাবে করবেন: Command Prompt (Admin) চালু করে লিখুন powercfg -duplicatescheme e9a42b02-d5df-448d-aa00-02f044ac6d27 এবং Enter চাপুন। এরপর Power Options-এ গিয়ে "Ultimate Performance" সিলেক্ট করুন।
২. গ্রাফিক্স পারফর্মেন্স অপ্টিমাইজ করুন (Optimize Graphics Performance):
আপনার ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারকে সরাসরি হাই-পারফর্মেন্স GPU ব্যবহার করার নির্দেশ দিন।
• কীভাবে করবেন: Settings > System > Display > Graphics settings-এ যান। আপনার এডিটিং সফটওয়্যারটি (যেমন Adobe Premiere Pro) ব্রাউজ করে যোগ করুন এবং Options থেকে "High performance" সিলেক্ট করুন।
৩. স্টার্টআপ অ্যাপ বন্ধ করুন (Disable Startup Apps):
পিসি চালু হওয়ার সময় অনেক অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ চালু হয়ে RAM এবং CPU নষ্ট করে।
• কীভাবে করবেন: Task Manager (Ctrl + Shift + Esc) খুলুন, Startup ট্যাবে যান এবং অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোকে Disable করুন।
৪. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ করুন (Turn off Background Apps):
অনেক অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে যা সিস্টেমকে স্লো করে।
• কীভাবে করবেন: Settings > Privacy > Background apps-এ গিয়ে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো বন্ধ করে দিন।
৫. ভিজ্যুয়াল এফেক্টস কমান (Reduce Visual Effects):
উইন্ডোজের অ্যানিমেশন এবং শ্যাডো বন্ধ করলে পারফর্মেন্স বাড়ে।
• কীভাবে করবেন: System Properties > Advanced > Performance Settings-এ যান এবং "Adjust for best performance" সিলেক্ট করুন।
ওয়ার্কফ্লো ও মাল্টিটাস্কিং (Workflow & Multitasking)
একাধিক সফটওয়্যার ও ফাইল নিয়ে কাজ করার জন্য এই টিপসগুলো অসাধারণ।
৬. ভার্চুয়াল ডেস্কটপ (Virtual Desktops):
কাজের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে একাধিক ডেস্কটপ ব্যবহার করুন। যেমন: একটি ডেস্কটপ এডিটিংয়ের জন্য, একটি স্ক্রিপ্টিং এবং আরেকটি ব্রাউজিংয়ের জন্য।
• কীভাবে করবেন: Win + Tab চেপে Task View খুলুন এবং উপরে "New desktop" এ ক্লিক করুন। ডেস্কটপ পরিবর্তন করতে Ctrl + Win + Left/Right Arrow ব্যবহার করুন।
৭. স্ন্যাপ অ্যাসিস্ট (Snap Assist):
স্ক্রিনে দুটি বা চারটি উইন্ডোকে পাশাপাশি রেখে কাজ করার জন্য এটি দারুণ। স্ক্রিপ্ট দেখার পাশাপাশি এডিটিং করার জন্য এটি খুব দরকারি।
• কীভাবে করবেন: একটি উইন্ডোকে স্ক্রিনের ডানে বা বামে টেনে ধরুন অথবা Win + Left/Right Arrow ব্যবহার করুন।
৮. ক্লিপবোর্ড হিস্ট্রি (Clipboard History):
একাধিক টেক্সট, লিঙ্ক বা ছবি কপি করে রাখুন এবং পরে প্রয়োজনমতো পেস্ট করুন।
• কীভাবে করবেন: Settings > System > Clipboard-এ গিয়ে "Clipboard history" চালু করুন। এরপর Win + V চেপে ক্লিপবোর্ড হিস্ট্রি দেখুন।
৯. ফোকাস অ্যাসিস্ট (Focus Assist):
গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা রেন্ডারিংয়ের সময় নোটিফিকেশন বন্ধ রেখে মনোযোগ ধরে রাখুন।
• কীভাবে করবেন: Action Center (স্ক্রিনের ডানদিকের কোণায়) থেকে Focus Assist টাইলটিতে ক্লিক করুন অথবা Settings > System > Focus Assist থেকে সেট করুন।
১০. টাইমলাইন (Timeline):
আগের দিনে বা সপ্তাহে কোন কোন ফাইল বা ওয়েবসাইট খুলেছিলেন তা দেখতে এবং খুলতে পারবেন।
• কীভাবে করবেন: Win + Tab চাপুন, Task View-এর নিচে আপনার রিসেন্ট অ্যাক্টিভিটি দেখতে পাবেন।
ফাইল ম্যানেজমেন্ট ও অর্গানাইজেশন (File Management & Organization)
বড় বড় ভিডিও ফাইল ও প্রজেক্ট ম্যানেজ করার জন্য এই টিপসগুলো আবশ্যক।
১১. কুইক অ্যাক্সেস পিন করুন (Pin to Quick Access):
আপনার প্রজেক্ট ফোল্ডার, ফুটেজ, অ্যাসেট এবং রেন্ডার ফোল্ডারগুলোকে File Explorer-এর Quick Access-এ পিন করে রাখুন।
• কীভাবে করবেন: ফোল্ডারের উপর রাইট-ক্লিক করে "Pin to Quick Access" সিলেক্ট করুন।
১২. প্রিভিউ প্যান (Preview Pane):
File Explorer-এ ভিডিও বা ছবির থাম্বনেইল বড় করে দেখুন, ফাইল না খুলেই।
• কীভাবে করবেন: File Explorer-এ View ট্যাবে ক্লিক করে "Preview pane" চালু করুন।
১৩. স্টোরেজ সেন্স (Storage Sense):
ড্রাইভের জায়গা খালি রাখতে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেম্পোরারি ফাইল এবং রিসাইকেল বিন খালি করে।
• কীভাবে করবেন: Settings > System > Storage-এ গিয়ে Storage Sense চালু করুন।
১৪. লাইব্রেরি তৈরি করুন (Create Libraries):
একাধিক ড্রাইভ বা ফোল্ডারে থাকা ফুটেজ বা মিউজিক ফাইলকে একটি ভার্চুয়াল "লাইব্রেরি"-তে একত্রিত করুন।
• কীভাবে করবেন: File Explorer-এ বাম দিকে Libraries ফোল্ডারের উপর রাইট-ক্লিক করে New > Library তৈরি করুন।
১৫. ফাইল রিনেম করার দ্রুত পদ্ধতি (Quick File Renaming):
একাধিক ফাইলকে দ্রুত রিনেম করতে একটি ফাইল সিলেক্ট করে F2 চাপুন, নাম দিন, তারপর Tab চেপে পরবর্তী ফাইলে যান।
বিল্ট-ইন টুলস ও শর্টকাট (Built-in Tools & Shortcuts)
উইন্ডোজের কিছু লুকানো টুলস ও শর্টকাট আপনার জীবন সহজ করে দেবে।
১৬. অ্যাডভান্সড স্ক্রিনশট (Advanced Screenshot):
স্ক্রিনের নির্দিষ্ট অংশ দ্রুত ক্যাপচার করার জন্য এটি সেরা।
• কীভাবে করবেন: Win + Shift + S চাপুন। স্ক্রিনটি ডার্ক হয়ে যাবে এবং আপনি 원하는 অংশ সিলেক্ট করতে পারবেন।
১৭. স্ক্রিন রেকর্ডিং (Xbox Game Bar):
ছোটখাটো টিউটোরিয়াল বা স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি রেকর্ড করার জন্য কোনো থার্ড-পার্টি সফটওয়্যার ছাড়াই কাজ চালানো যায়।
• কীভাবে করবেন: Win + G চেপে Game Bar খুলুন এবং রেকর্ড বাটন চাপুন।
১৮. ইমোজি কিবোর্ড (Emoji Keyboard):
ভিডিওর টাইটেল, ডেসক্রিপশন বা থাম্বনেইলের টেক্সটে ইমোজি ব্যবহার করতে পারবেন।
• কীভাবে করবেন: Win + . (ফুলস্টপ) বা Win + ; (সেমিকোলন) চাপুন।
১৯. নাইট লাইট (Night Light):
দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার সময় চোখের ওপর চাপ কমাতে স্ক্রিনের ব্লু লাইট ফিল্টার করুন।
• কীভাবে করবেন: Settings > System > Display-এ গিয়ে Night Light চালু করুন।
২০. ফাইল হিস্ট্রি (File History):
আপনার প্রজেক্ট ফাইলগুলোর একটি অটোমেটিক ব্যাকআপ রাখার জন্য এটি একটি সহজ উপায়। একটি এক্সটার্নাল ড্রাইভ লাগিয়ে এটি সেট করুন।
• কীভাবে করবেন: Settings > Update & Security > Backup > Add a drive-এ যান।
২১. গড মোড (God Mode):
উইন্ডোজের সমস্ত কন্ট্রোল প্যানেল সেটিংস একটি ফোল্ডারে অ্যাক্সেস করার জন্য এটি একটি দারুণ ট্রিক।
• কীভাবে করবেন: ডেস্কটপে একটি নতুন ফোল্ডার তৈরি করুন এবং এর নাম দিন GodMode.{ED7BA470-8E54-465E-825C-99712043E01C}।
২২. দ্রুত সেটিংস অ্যাক্সেস (Quick Settings Access):
Win + I চেপে সরাসরি সেটিংস খুলুন।
২৩. দ্রুত ফাইল এক্সপ্লোরার (Quick File Explorer):
Win + E চেপে সরাসরি ফাইল এক্সপ্লোরার খুলুন।
২৪. দ্রুত ডেস্কটপ দেখুন (Show Desktop Quickly):
Win + D চেপে সমস্ত উইন্ডো মিনিমাইজ করে ডেস্কটপ দেখুন।
২৫. উইন্ডো ম্যাক্সিমাইজ করুন (Maximize Window):
Win + Up Arrow চেপে বর্তমান উইন্ডোটি ম্যাক্সিমাইজ করুন।
সিস্টেম মেইনটেন্যান্স ও স্ট্যাবিলিটি (System Maintenance & Stability)
আপনার সিস্টেমকে স্থিতিশীল রাখা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে রেন্ডারিংয়ের সময়।
২৬. উইন্ডোজ আপডেট পজ করুন (Pause Windows Updates):
গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাঝে উইন্ডোজ যাতে অটোমেটিক রিস্টার্ট না নেয়, তার জন্য আপডেট ৭ দিনের জন্য পজ করে রাখতে পারেন।
• কীভাবে করবেন: Settings > Update & Security > Windows Update > Advanced options-এ গিয়ে "Pause updates" সেট করুন।
২৭. সিস্টেম রিস্টোর পয়েন্ট তৈরি করুন (Create a Restore Point):
নতুন কোনো ড্রাইভার বা সফটওয়্যার ইনস্টল করার আগে একটি রিস্টোর পয়েন্ট তৈরি করুন। সিস্টেমে কোনো সমস্যা হলে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবেন।
• কীভাবে করবেন: সার্চ বারে "Create a restore point" লিখে সার্চ করুন।
২৮. ডিস্ক ক্লিনআপ (Disk Cleanup):
সিস্টেম ড্রাইভ (C:) থেকে অপ্রয়োজনীয় ফাইল ডিলিট করে জায়গা খালি করুন এবং সিস্টেমের গতি বাড়ান।
• কীভাবে করবেন: সার্চ বারে "Disk Cleanup" লিখে সার্চ করুন।
২৯. টাস্ক ম্যানেজারে প্রসেস প্রায়োরিটি সেট করুন (Set Process Priority):
রেন্ডারিংয়ের সময় আপনার এডিটিং সফটওয়্যারের প্রায়োরিটি "High" করে দিন। এতে সিপিইউ ওই সফটওয়্যারকে বেশি গুরুত্ব দেবে।
• কীভাবে করবেন: Task Manager (Ctrl + Shift + Esc) > Details ট্যাবে যান > সফটওয়্যারের .exe ফাইলের উপর রাইট-ক্লিক করে Set priority > High সিলেক্ট করুন।
৩০. সিস্টেম ফাইল চেক করুন (Check System Files):
সিস্টেম ক্র্যাশ বা স্লো হয়ে গেলে করাপ্ট সিস্টেম ফাইল আছে কি না তা চেক করুন।
• কীভাবে করবেন: Command Prompt (Admin) চালু করে লিখুন sfc /scannow এবং Enter চাপুন।
আশা করি এই ৩০টি টিপস আপনার ভিডিও কনটেন্ট তৈরির কাজকে আরও সহজ, দ্রুত এবং আনন্দদায়ক করে তুলবে।