23/07/2025
মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর হাতে এই বিশ্বাস আমাদের সকলের অবশ্যই আছে, কিন্ত যখন কোন দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যায় ঠিক তখন আমরা বলে থাকি সবই আল্লাহর হুকুম ৷ আল্লাহর হুকুম এটাই সত্যি, এটা আমাদেরকে মানতে হবে নয়তো ঈমান থাকবেনা ৷ কিন্ত আমরা নিজেরা নিজেদেরকে কতটা গাইড করছি, কতটা খেয়াল রাখছি নিজের ৷ সেদিকে কি কারো লক্ষ্য আছে? যদি থাকতো তাহলে প্রশিক্ষন বিমানটি বিকল হয়ে উত্তরা দিয়াবাড়ি মাইলষ্টোন স্কুলের উপর বিধ্বস্ত হয়ে পড়তনা ৷ এতগুলো মাছুম বাচ্ছা মারা যেতনা ৷ আচ্ছা এটাকেও কি বলবেন আল্লাহর হুকুম? আমরা সাধারনত এটাই বলবো ৷ কিন্ত নিজেদের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কথা শিকার করবো না ৷ যদি প্রশ্ন করা হয় বিমানটি উড্ডয়নের ফিটনেস ছিলোনা, তাহলে এর যথাযোগ্য উত্তরটা কে দিবেন? শুধু বিমান নয়, সাধারন রাস্তায় বাস, ট্রাক, সিন,এন,জি ইত্যাদি প্রতিনিয়ত রাস্তায় এ্যাকসিডেন্ট করে বৎসরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাচ্ছে, এটার প্রধান কারন হলো অনেক গাড়ীরই ফিটনেস নেই ৷ যার ফলে এসব গাড়ী এ্যাকসিডেন্ট করে মানুষ হত্যা করছে ৷ যদি প্রশ্ন করা হয় এর দায়ভার কার? সঠিক উত্তরটা কে দিবে? জনগন, নাকি সরকার? আমরা সঠিক উত্তর না পেয়ে বলে থাকি এটাও আল্লাহর হুকুম ৷ অথচ আল্লাহ নির্দোষ ৷ দোষী হলাম আমরা ৷ রাস্তায় যত বড় বড় এ্যাকসিডেন্ট বা দুর্ঘটনা সবই আমাদের তৈরি করা ৷ লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন কোন নিয়ম শৃংখলা নেই, প্রপার ট্রাফিক আইন বা সিগনাল নেই ৷ সেখানেও গাফিলতি এবং দুর্নীতি ৷ তাই গাড়ী চালকেরা ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানোর সাহস পায় ৷ আর তাই যত্রতত্র এ্যাকসিডেন্ট হয় এবং অনেক তাজা প্রান অকালে ঝরে যায় ৷ কিন্ত আমি ব্যক্তিগতভাবে এর জন্য নিম্নস্তরকে দোষারোপ করিনা, আমি দোষারোপ করি উপর মহলকে ৷ কারন উপর মহলের চরম গাফিলতি এখানে আছে ৷ উপর মহল যদি ঠিক থাকে তাহলে এ ধরনের বিকল যানবাহন কখনো রাস্তায় নামতে পারেনা ৷ আমাদের দেশের উপর মহলেরা শুধু পদ পদবী পাবার আগে জনগনের কাছে নাকিকান্না কেঁদে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ আদায় করে ৷ স্বার্থ আদায় করার পর জনগনের আবদারগুলোকে পাগলের প্রলাপ বলছে এটা মনে করে থাকেন ৷ একটা সত্যি কথা হলো যে উপর মহলের চাইতে এদেশের নিচু মহলের লোক এবং সাধারন জনগন খুবই সচেতন ৷ কিন্ত উপর মহলের দুর্নীতি এবং চতুরতার জন্য সেটা প্রকাশ পায়না ৷ আমাকে ক্ষমা করে দিবেন, এত কথা কেন বলছি আজ? বলছি এ জন্য যে যার ব্যথা সে বোঝে ৷ যার গেছে সে বুঝে ৷ শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভাবে এতগুলো মাছুম বাচ্চাসহ আরো অনেকের প্রান গেছে ৷ তা দেখে আপনি আমি একটু সমবেদনা শান্তনা জানিয়ে দায়িত্ব পালন করে ফেললাম এটা ভাবছেন? কিন্ত নিহতের পরিবারের জন্য এটা সারাজীবনের কান্না ৷ তাই সবাইকে আহবান করছি, নাকিকান্না অভিনয় বা কোন গাফিলতি নয় ৷ বাস্তবে সাধারন মানুষকে স্বস্তি দিন, অকাল মৃত্যু থেকে মানুষকে বাঁচান ৷ ফিটনেস ছাড়া কোন গাড়ী যেন রাস্তায় না নামে ৷ নামলে কঠোর জরিমানার বিধান চালু করুন, কারন জরিমানা সঠিকভাবে আদায় করলে সব ঠিক হয়ে যাবে, আর সেখানেও যদি দুর্নীতি থাকে তাহলে হবেনা, একদম নীট এন্ড ক্লীন থাকতে হবে, তারপর দেখুন ৷ কারন মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় শাস্তি হলো মৃত্যু, আর দ্বিতীয় স্তরের শাস্তি হলো জরিমানা ৷ এটা চালু করলে সবাই আলিফের মত সোজা হয়ে যাবে ৷ নিজেরা দুর্নীতিমুক্ত হয়ে এ বিধান চালু রাখলে শুধু যানবাহনের ক্ষেত্রে নয়, দেশের সর্বস্তরে এবং সবগুলো সেক্টরে এটা খুবই ফলপ্রসু হবে ৷ তবে আগে নিজেকে ঠিক হতে হবে ৷ তাই আসুন কথা না বাড়িয়ে মাইলষ্টোন স্কুলের সকল শিশুদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করুন এবং সকলের দায় আপনাদের নিতেই হবে, তাদের পরিবারবর্গকে ক্ষতিপুরন দিয়ে কিছুটা হলেও শান্তনা দিন, যদিও এতে তারা শান্তি পাবেনা, কারন এর চেয়ে বড় সম্পদ তাদের হারিয়ে গেছে, তাদের বুকের মানিক, আদরের সোনামনিরা ৷ আজ আপনাদের প্রতি সবাই তাকিয়ে আছে, আপনারা উপর মহল এর দায়ভার কতটুকু নিতে পারেন?