27/03/2025
লাইলাতুল কদর (শবে কদর) ইসলামের একটি অত্যন্ত মহিমান্বিত ও গুরুত্বপূর্ণ রাত। এটি রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটি, বিশেষত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাতে হতে পারে। তবে সাধারণভাবে ২৭তম রাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও গুরুত্ব:
১. পবিত্র কুরআনে উল্লেখ:
আল্লাহ তাআলা সূরা আল-কদরে বলেছেন—
"নিশ্চয়ই আমি এটি (কুরআন) কদরের রাতে অবতীর্ণ করেছি। কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।" (সূরা আল-কদর: ১-৩)
২. হাজার মাসের চেয়ে উত্তম:
এক রাতের ইবাদত ৮৩ বছর ৪ মাসের ইবাদতের সমান সওয়াব দেয়।
গুনাহ মাফ ও দোয়া কবুলের সুযোগ:
এই রাতে যারা ইবাদত করে, আল্লাহ তাদের গুনাহ ক্ষমা করেন।
হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) বলেন—
"যে ব্যক্তি ইমান ও নেক নিয়তে লাইলাতুল কদরে ইবাদত করে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।" (বুখারি, মুসলিম)
এই রাতে করণীয় ইবাদত:
নফল নামাজ পড়া
কুরআন তিলাওয়াত করা
দোয়া ও জিকির করা
তওবা ও ইস্তিগফার করা
দরুদ শরীফ পাঠ করা
গরিব-দুঃখীদের দান-সদকা করা
লাইলাতুল কদরের বিশেষ দোয়া:
নবী (সা.) শেখানো দোয়া:
اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি।
অর্থ: “হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসো, তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও।” (তিরমিজি)
লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত এত বেশি যে, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এই রাতকে যথাযথভাবে ইবাদতের মাধ্যমে কাটানো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই রাতের পূর্ণ ফজিলত অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন!
লাইলাতুল কদরের বিশেষ নামাজের নিয়ম
লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম একটি রাত। এ রাতে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করা উচিত। তবে এই রাতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো নামাজের সংখ্যা কুরআন-হাদিসে উল্লেখ নেই। তবে আলেমরা কিছু নফল নামাজ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
১. ১২ রাকাত নফল নামাজ (২ রাকাত করে ৬ বার)
নিয়ত:
"আমি দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার নিয়ত করছি আল্লাহর জন্য মুখ করে কিবলার দিকে।"
প্রত্যেক রাকাতে:
সুরা ফাতিহা (আলহামদু…)
যেকোনো সুরা (যেমন সুরা ইখলাস ৩ বার)
সাধারণ নামাজের মতো রুকু, সেজদা ও অন্যান্য আমল সম্পন্ন করা
ফজিলত:
আল্লাহ তায়ালা গুনাহ মাফ করে দেবেন।
অসংখ্য সওয়াব লাভ হবে।
২. ৪ রাকাত নফল নামাজ (২+২ করে পড়া যায়)
প্রথম রাকাতে:
সুরা ফাতিহা
সুরা কদর (১ বার)
সুরা ইখলাস (৩ বার)
দ্বিতীয় রাকাতে:
সুরা ফাতিহা
সুরা কদর (১ বার)
সুরা ফালাক ও নাস (১ বার করে)
ফজিলত:
কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবেন।
দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
৩. ১০০ রাকাত নফল নামাজ (২ রাকাত করে)