07/09/2025
মেনকিউ পাড়া
এই পাড়াতে প্রথম রাত। তখন কয়টা হবে? ঘড়ির কাটায় রাত প্রায় ১১টা ৩০। হঠাৎ মনটা চাইলো চা খেতে। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে বলতেও পারছিলো না—কারণ, রাত তো অনেকটা গভীর হয়ে গেছে।
তবুও কি মনে করে আমি বললাম আমাদের সেই দাদা’কে—যিনি আমাদের এই পাড়ায় নিয়ে এসেছিলেন—
“দাদা, চা খেতে ইচ্ছে করছে।”
তিনি হেসে একেবারে নিশ্চিন্ত ভঙ্গিতে বললেন,
“হবে চা।”
আমরা তখন যেনো আনন্দে উচ্ছ্বসিত। একেবারেই অপ্রত্যাশিত এক চায়ের আয়োজন!
কিছুক্ষণ পর যখন চা এলো, তখন দৃশ্যটা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। পেয়ালা ভর্তি চা! মানে, সত্যিকারের এক এক পেয়ালা! আমি অবাক হয়ে দাদাকে বললাম,
“দাদা, তাই বলে এত চা?”
দাদা হেসে এমন এক আন্তরিক ভঙ্গিতে উত্তর দিলো—
“আপনারা মেহমান আমাদের। এটা কি দোকান নাকি যে ছোট কাপে দিবো?”
কথাগুলো শুনে মনে হলো, এর চেয়ে বড়ো সম্মান আর হতে পারে না। এরপর আর কোনো কথা চলে না। সেই এক পেয়ালা চা শুধু গিললাম না—সাথে পুরো রাতের ঘুমও গিলে ফেললাম!
পরদিন যখন এই পাড়া থেকে বিদায় নিচ্ছি, তখন আরেক যন্ত্রণার মধ্যে পড়লাম। বিদায়ের আগে টাকা দিতে চাইলে তারা কোনো টাকাই নিলো না। অনেক জোর-জবরদস্তির পর কেবল ডিমের দামটা দিতে পেরেছিলাম—কারণ, আগের রাতে আমরা ডিম দিয়ে খিচুড়ি খেয়েছিলাম।
এই আন্তরিকতা—এই উষ্ণ ভালোবাসা—মনে থাকবে সবসময়।
আর হ্যাঁ, যেই দাদার কথা বলছিলাম, তার নাম ছিলো রেম্পং। তখন সে সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে অবসর সময় কাটাচ্ছিলো।
২০১৮
#বান্দরবান