12/08/2025
ইসলামে জিকির মুমিনের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ, যা আল্লাহর সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ দৃঢ় করে এবং মনকে শান্তি প্রদান করে। এর মধ্যে “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ জিকির, যা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত।
এই জিকিরটি মানুষের দুর্বলতা ও আল্লাহর সর্বশক্তিমান ক্ষমতার প্রতি ঈমান প্রকাশ করে। এটি কঠিন পরিস্থিতিতে, দুশ্চিন্তায় বা কোনো কাজ শুরুর আগে পড়া হয়, যা মুমিনকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে উৎসাহিত করে।
অর্থ:
“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” এর অর্থ:“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া।”
অর্থাৎ, এটি মানুষের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে যে, কোনো কিছুই মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়; সবকিছু আল্লাহর হাতে। এই কথার মাধ্যমে একজন মুমিন স্বীকার করে যে, সকল শক্তি ও সাফল্যের উৎস একমাত্র আল্লাহ।
এই জিকির মানুষকে আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে শেখায় এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করে। (তাফসির মা’আরিফুল কুরআন, মুফতি শফি উসমানী, পৃষ্ঠা: ৮/২৪৫, মাকতাবাতুল আশরাফ, ২০১০)
ফজিলত:হাদিসে এই জিকিরের গুরুত্ব ও পুরস্কার সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়ে, তা জান্নাতের ধনসম্পদের মধ্যে একটি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২০২)এই জিকিরের ফজিলতের মধ্যে রয়েছে:
গুনাহ মাফ: এটি পড়ার মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর রহমত অর্জিত হয়।
মানসিক শান্তি: কঠিন পরিস্থিতিতে এই জিকির মনের উদ্বেগ দূর করে এবং আল্লাহর উপর ভরসা বাড়ায়।
জান্নাতের পথ: হাদিস অনুযায়ী, এটি জান্নাতে প্রবেশের একটি মাধ্যম।
সুরক্ষা: এটি শয়তানের ক্ষতি ও বদ নজর থেকে রক্ষা করে। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭১)
কখন পড়তে হবে?
এই জিকিরটি যেকোনো সময় পড়া যায়, তবে নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে এটি বিশেষভাবে উপকারী:
কঠিন পরিস্থিতিতে: দুশ্চিন্তা, ভয় বা চাপের সময় এটি পড়া মানসিক শক্তি প্রদান করে।
কাজ শুরুর আগে: যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।
সকাল-সন্ধ্যার জিকির: প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত পড়া।
নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর জিকিরের অংশ হিসেবে পড়া। (ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়্যিদ সাবিক, পৃষ্ঠা: ২০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৮)
Collected from মধুদা