28/05/2025
একজন প্রধান শিক্ষকের মুখোশ: ছাত্রীর অপহরণ ও সমাজের নীরবতা
একজন প্রধান শিক্ষক – যিনি হবেন শিক্ষার বাতিঘর, যিনি হবেন আদর্শবান, চরিত্রবান এবং নৈতিকতার পথপ্রদর্শক – সেই মানুষটিই যদি একদিন আমাদের সন্তানদের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তাহলে আমরা কি আর নিশ্চিন্তে সন্তানদের হাতে বই তুলে দিতে পারি?
সম্প্রতি একটি মর্মান্তিক ঘটনা নওগাঁর, আমাদের সমাজে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিজের স্কুলের এক না-বা-লিকা ছাত্রীকে অ/পহ/রণ করে জো/রপূর্বক বিবাহ করেন। ছাত্রীর বাবা প্রতিবাদ করে আইনের দ্বারস্থ হলেও, মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই অভিযুক্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সেই ছাত্রীকে জো/রপূর্বক তুলে নিয়ে যান। এই ঘটনায় কেবল একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের বিবেক ঝাঁ/কুনি খেয়েছে।
আমরা যদি প্রশ্ন করি, কীভাবে একজন শিক্ষক, এইধরনের অ-পক-র্মের সাথে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা দেখতে পাবো – ক্ষ-মতা, প্রভাব এবং সামাজিক প্রশ্রয়ের ভ/য়া/নক জাল।
কেন সমাজ চু-প থাকে?
সমাজের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি যখন অপ-রাধীর পাশে দাঁড়ায়, তখন ন্যা/য়বি/চার প্রশ্নের মুখে পড়ে।
অনেকেই মনে করে “এটা তাদের পারিবারিক ব্যাপার” – কিন্তু অপ/হরণ ও ধর্ষ/ণের মতো বিষয় কখনোই ব্যক্তিগত হতে পারে না।
দু-র্নী-তি-গ্রস্ত কিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যখন নি-র্যা-তি-তার পাশে না দাঁড়িয়ে প্রভাবশালীর পক্ষে কাজ করে, তখন সাধারণ মানুষের আস্থা ভে/ঙে পড়ে।
এই ধরনের অপ/রাধের ভয়াবহ প্রভাব কী?
একজন নাবালিকা মেয়ের শৈশব, শিক্ষা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের চিরতরে ক্ষ-তি হয়।
অন্য ছাত্রীরা স্কুলে নিরা/পত্তা/হীনতায় ভোগে, যা শিক্ষার পরিবেশকে ধ্বংস করে।
সমাজে একটি ভয়/ঙ্কর বার্তা ছড়িয়ে পড়ে – প্রভাবশালীরা অপ/রাধ করেও পার পেয়ে যায়।
আমাদের করণীয় কী?
১. দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ: সমাজের প্রতিটি সচেতন নাগরিককে এই ঘটনার বি-রু-দ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সামাজিক আ-ন্দো-লনের মাধ্যমে অপ/রাধীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
2. আইন সংস্কার ও প্রয়োগ: নাবালিকা অপ/হরণ ও জোরপূর্বক বি-বা-হের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও, সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। জামিনের অপব্যবহার রোধে বিচার বিভাগকে আরও সজাগ হতে হবে।
3. স্কুলে নজরদারি ও সুরক্ষা: প্রধান শিক্ষকের মতো পদে কোনো ব্যক্তির অতীত ও আচরণ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। স্কুলকে হতে হবে নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন, কোনো নির্যা/তনের কেন্দ্র নয়।
4. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: গ্রামে, শহরে, মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়ে আলোচনা ছড়িয়ে দিতে হবে। নাবালিকাদের অধিকার, আইন ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
শেষ কথা:
একটি সমাজ তখনই টিকে থাকে, যখন সে তার দুর্ব/লদের রক্ষা করে। এক শিশুর ওপর নি/র্যাতন মানে পুরো সমাজের ব্যর্থতা। আজ আমরা যদি চুপ থাকি, কাল আমাদের সন্তানরাও নিরাপদ থাকবে না।
এই শিক্ষকের মুখোশ আমাদের খুলে ফেলতে হবে। তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং একে উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে – যে সমাজ কখনো অ/ন্যায়ের সঙ্গে আপস করে না।