Prettiness By Sadia

Prettiness By Sadia "সুযোগ কখনো আপনার হাতে ধরা দেবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সেগুলো পাওয়ার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা না করবেন"

আজ ছিল আমার অনার্স জীবনের শেষ ক্লাস।শেষ দিনের ক্লাসে আমি পরেছিলাম লুঙ্গি আর সেই পুরোনো শার্টটা—ঢাকা কলেজের সামনে থেকে ২০...
19/07/2025

আজ ছিল আমার অনার্স জীবনের শেষ ক্লাস।

শেষ দিনের ক্লাসে আমি পরেছিলাম লুঙ্গি আর সেই পুরোনো শার্টটা—ঢাকা কলেজের সামনে থেকে ২০০ টাকায় কেনা, যেটা ভার্সিটিতে প্রথমদিন পরেছিলাম।
এই পোশাক ছিল আমার এক ধরণের প্রতিবাদ—বিশেষ একটা শ্রেণিপরিচিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।

ভার্সিটিতে সবচেয়ে জঘ"ন্যতম জিনিস হচ্ছে "গ্রুপিং, ব'ডি শেমিং, পোষাক নিয়ে মন্তব্য, আঞ্চলিকতা ও আধুনিকতার দম্ভ।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা চান্স পান, তাঁদের বড় একটা অংশ আসে গ্রামের সাধারণ পরিবার থেকে—অধিকাংশই নিম্নবিত্ত বা মধ্য-নিম্নবিত্ত। আসার পরে তারা এলাকার স্কুল-কলেজের মত আচরণ করবে স্বাভাবিক। তারা এসেই গণরুমে বেড়ে উঠে, নিজের টাকায় চলার জন্য লাগাতার পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে।

তারা গ্রুপিং কম বুঝে, তাদের আউটফিট নলেজ কম থাকে, তারা রুপচর্চা বলতে কি জানে না, পরিশ্রম করার সার্মথ্য অনুযায়ী পোষাক পড়ে, আঞ্চলিকতায় কথা বললে মনে শান্তি পায়, আধুনিকতাকে ভয় ও লজ্জা পায়।

কিন্তু- সো ক্লোড বড় লোক, রিয়্যাল পস কিড, প্রিটেন্ড রিচ কিড, মুই কি হ'নুরে কিড। এরা নিজেরা একটা এলিট ক্লাস গ্রুপ বানায়। যাদের টাকা-পায়সা, ভালো পোষাক, আধুনিক ভাষা, চেহারা ভালো থাকবে।

তারা বাকিদের "ক্ষেত, গাই'য়্যা, ছি, ক্রিঞ্জ" ইত্যাদি উপাধি দিয়ে তাদের গ্রুপে মজা নেয়। এইটা র‍্যাগিং ও গেস্টরুমের সমান মানসিক টর্চার।

ইভেন, এগুলো আমার সাথে প্রথমবর্ষ থেকেই অনেকবার এমন হয়েছে।কিন্তু জীবনের প্রতিধাপে কিছু বন্ধু পেয়ে যাদের পেয়ে আমি আল্লাহুর কাছে শুকুর আলহামদুলিল্লাহ।

যে গ্রামে থেকে উঠে এসে সেই গ্রামের মানুষও একসময় মনে করত না, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। সর্বোচ্চ আটো মোবাইল মিস্ত্রী বা সবজি বিক্রেতা হব। সেইখানে থেকে আজকে অনার্স শেষ করলাম।

আমার প্রত্যাশা—
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই শ্রেণিবিভাজন দূর হোক।
সব শিক্ষার্থীর ভার্সিটি জীবন হোক এমন, যেভাবে তারা ছোটবেলায় কল্পনা করেছিল।
ভিন্নতা থাকুক, কিন্তু ঘৃ'ণা না।
আল্লাহ যেন সবাইকে সেই সুযোগ দেন।
আমিন।

©আসিফ মাহমুদ,
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আমীরে জামায়াত বক্তব্য শুরু করলেন। মুহুর্তেই পড়ে গেলেন, ধপাস করে। ডাক্তাররা হাজির, সবাই চিকিৎসার জন্য তোড়জোড় করছে। উনি মা...
19/07/2025

আমীরে জামায়াত বক্তব্য শুরু করলেন। মুহুর্তেই পড়ে গেলেন, ধপাস করে। ডাক্তাররা হাজির, সবাই চিকিৎসার জন্য তোড়জোড় করছে।

উনি মানলেন না, আবারও বক্তব্য শুরু করলেন। কিন্তু এবারও— জমিনে পড়ে গেলেন।

থামলেন কী? না। বসে বসে বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন। ডাক্তার, নেতৃবৃন্দ সবাই অনুরোধ করছে, বক্তব্য না দিয়ে চিকিৎসা নিতে। তিনি মানলেন না।

বক্তব্য দিলেন ঐ অবস্থায়ই, বসে। নিজেকে শিশু-তরুণদের ভাই, বোনদের ভাই, বৃদ্ধদের সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করলেন।

কথা বললেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সবার জন্য বাংলাদেশ, নতুন বাংলাদেশের কথা বললেন। বললেন, কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির জন্য আমরা দেশ গড়ার রাজনীতির কথা বলিনা।

সভাস্থলে উপস্থিত জনতা, নেতৃবৃন্দ, ডাক্তার সবাই তাকে ঘিরে রেখেছিল, চিকিৎসা নিতে বলছিল। বক্তব্য শেষ করতে বলছিল। না জানি কিছু হয়ে যায় আমীরে জামাতের।

আমীরে জামাত বললেন— আল্লাহ যে সময় নির্ধারিত করেছেন, তার একটু আগে কিংবা একটু পরেও আমার মৃত্যু হবেনা। আল্লাহ যখন লিখে রেখেছেন, তখনই হবে।

--©

ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামি এর জাতীয় মহা সমাবেশ আজ।
19/07/2025

ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামি এর জাতীয় মহা সমাবেশ আজ।

আপনি মানুন বা না মানুন আপনার জীবনে যেকোনো মুহূর্তে ফিনান্সিয়াল ক্রাইসিস আসতে পারে। বিয়ে, জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে লোক...
18/07/2025

আপনি মানুন বা না মানুন আপনার জীবনে যেকোনো মুহূর্তে ফিনান্সিয়াল ক্রাইসিস আসতে পারে। বিয়ে, জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে লোক দেখানো বিশাল খরচ করবেন না। বহু মধ্যবিত্ত পরিবারের সঞ্চয়ের এক তৃতীয়াংশ খরচ হয়ে যায় শুধুমাত্র ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিতে গিয়ে। সন্তান জন্মের পর এক লাখ টাকাও যদি ফিক্সড করে রাখেন তার নামে, তবে সেই টাকাটা মাল্টিপ্লাই হতে হতে সন্তানের যখন বিশ বছর বয়স হবে, তখন একটা ভালো অ্যামাউন্ট পাবেন যেটা তার ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।

আপনার মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আয় করা টাকা আপনি নিজে মাল্টিপ্লাই করুন, বাচ্চাদেরকেও টাকা মাল্টিপ্লাই করতে শেখান। ছোটো থেকেই ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইস দিন। সন্তানকে প্রোডাক্টিভ আর নন-প্রোডাক্টিভ ইনভেস্ট সম্পর্কে জ্ঞান দিন। যেমন, গ্যাজেট আর ধাতুর মধ্যে ধাতু চ্যুজ করা উচিত। কারণ ধাতুর রিসেল ভ্যালু আছে। এই শিক্ষা ভবিষ্যতে আপনার এবং আপনার সন্তানের উপকারে আসবে।

আপনার সর্বস্ব খরচ করে সন্তানকে বিয়ে দেবার চেয়ে কোনোমতে বিয়ে দিয়ে সন্তানের নামে টাকাটা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিন, অসময়ে দরকার পড়বে!

জমির চেয়ে বাড়ির ভ্যালু বেশি করবেন না। আবার বাড়ি বা ফার্নিচারের ভ্যালুর চেয়ে ব্যাংকের লকারে সোনা ও ব্যাংকে লিকুইড মানি বেশি রাখবেন, কারণ আপনার দুঃসময়ে ঘরের একটা টুকরাও আপনি সেল করতে পারবেন না, কিন্ত গহনা অথবা টাকা দিয়ে দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে পারবেন। খারাপ সময় বলে কয়ে আসে না। এই দুনিয়ার কোন কিছুরই গ্যারান্টি নেই, আপনার শরীরেরও না!

যোগ্যতাপূর্ণ চাকরিতেও ফিনান্সিয়াল সিকিউরিটি থাকে না। তাই ছেলেমেয়েকে বহু খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করতে শেখান। কোনো কাজ ছোটো নয় এই বোধ তৈরি করুন তার মধ্যে।

সন্তানকে বইয়ের বাইরের বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্ন কাজ শেখান, কারণ পেটে শিক্ষা আছে মানেই ক্যারিয়ার সাকসেসফুল হবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই।

কিছু টাকা জমিয়ে রাখুন। যতটুকু বাড়ি করলে স্বচ্ছন্দে থাকা যায় ততটুকুই বাড়ি করুন। অন্তত ওই পরিমাণ টাকা MIS (Monthly Income Scheme) করে রাখুন যাতে ঠেকে গেলে অন্তত ডাল ভাত খেয়ে মাস কাটে। আগামী দিন কতটা ক্রাইসিস আসবে আমরা কেউ জানি না। চাকরি, ব্যবসা বাণিজ্য কোনো কিছুরই আসলে কোনো নিশ্চয়তা নেই। চাকরিতে পেনশনেরও একশো ভাগ গ্যারান্টি নেই!

স্ট্যাটাস মেনটেন করার জন্য সরকারি চাকরির দিকে সন্তানকে ফোর্স করবেন না। সরকারি, বেসরকারি, ব্যবসা কোনোটাতেই যেখানে হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিকিউরিটি নেই, তাই যার যে দিকে ইচ্ছে সেদিকে খাটুক।

বিভিন্ন দিকে উপার্জনের মনোভাব রাখতে হবে। মনে রাখবেন, উপার্জনটাই বড়। আপনার টাকা এবং সন্তানের মেধা ব্যালেন্স করে তাকে পড়ান। অযথা উচ্চশিক্ষা বা ডিগ্রির পিছনে ছুটলে সময় এবং টাকা দুই-ই ব্যয় হবে, তাই সন্তান স্কুলের গণ্ডি পেরোলেই সুনির্দিষ্ট গোল সেট করে নিন। সন্তান যতই মেধাবী হোক না কেন তাকে এমন কিছু এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজ শেখান যেটা ভবিষ্যতে তাকে টাকা এনে দেবে।

হাতে কলমে কাজ, কারিগরি জ্ঞান, ছোটো ব্যবসা, পার্ট টাইম জব এই সবকিছুতেই তাকে অভ্যস্ত করান পড়াশোনার পাশাপাশি, কারণ জীবনের পঁচিশ ত্রিশ বছর যদি বই পড়ে পার করে দেয় তবে অফিস ওয়ার্ক ছাড়া অন্য কিছুতে ততটা এলিজিবল সে নাও থাকতে পারে ।

মোদ্দা কথা, সবকিছুকেই বিজনেস মাইন্ডে দেখতে হবে। এছাড়া কোনো অপশন নেই। অন্তত একটা বিনিয়োগ ডুবে গেলে যেন আর একটা ভেসে থাকে!

©

সুনেত্রা -----অভিনেত্রী ৮০ ও ৯০ দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এক ঝলকেই দর্শকদের হৃদয় জয় করে নেওয়া এই অভ...
18/07/2025

সুনেত্রা -----
অভিনেত্রী ৮০ ও ৯০ দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এক ঝলকেই দর্শকদের হৃদয় জয় করে নেওয়া এই অভিনেত্রীর জীবন ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ, বর্ণাঢ্য।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন -----
সুনেত্রার প্রকৃত নাম রীনা সুনেত্রা কুমার। ১৯৭০ সালের ৭ জুলাই ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পড়াশোনায়ও ছিলেন বেশ মেধাবী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

চলচ্চিত্রে যাত্রা -----
মাত্র ১৫ বছর বয়সে, ১৯৮৫ সালে ঢাকাই চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। তার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘উসিলা,যেখানে তিনি অভিনয় করেন তৎকালীন জনপ্রিয় নায়ক জাফর ইকবালের বিপরীতে। এরপর ধীরে ধীরে নিজের অভিনয় দক্ষতা ও রূপ দিয়ে জায়গা করে নেন দর্শকের মনে।

জনপ্রিয়তা ও ক্যারিয়ার -----
সুনেত্রা মূলত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ১৯৯০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি "পালকী" এর মাধ্যমে। এই ছবির পরপরই তার একাধিক ছবি মুক্তি পেতে থাকে এবং তিনি একে একে ঢালিউড,টলিউড,এমনকি পাকিস্তানি ও উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। তিনি যে কেবল একজন অভিনেত্রী ছিলেন তা নয়,ছিলেন একাধারে নৃত্যশিল্পী,গায়িকা এবং মডেলও।

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র -----
উসিলা_পালকী_শিমুল পারুল_ভাই আমার ভাই_
দুঃখিনী মা_লায়লা আমার লায়লা_স্ত্রীর স্বপ্ন_বাদশা ভাই_বোনের মতো বোন_ভাবীর সংসার। ইত্যাদি বহু ছবি দর্শকমনে স্থায়ী ছাপ ফেলেছে।

মৃত্যু ও স্মৃতিচারণ -----
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন সুনেত্রা। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখে কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর। তার মৃত্যু সংবাদটি সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশের ঢেউ তোলে।

অভিনেত্রী সুনেত্রা ছিলেন এমন একজন শিল্পী,যিনি শুধু অভিনয়ের জন্য নয়,তার ব্যক্তিত্ব,রূপ ও সৌন্দর্যের জন্যও দর্শকের মনে আজও অম্লান। তিনি চলে গেছেন,
কিন্তু রেখে গেছেন অসংখ্য স্মৃতি আর ভালোবাসার ছবি। বাংলা চলচ্চিত্র তাকে চিরকাল স্মরণে রাখবে শ্রদ্ধাভরে।।

----- সূত্র : নায়ক আলমগীর ফ্যানস্ ক্লাব ✒️📷__

মহিলার বয়স মাত্র ২৯ বছর। সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেয়ার কয়েকদিন পর  গাইনী ডিপার্টমেন্টে চিকিৎসকের শরণাপন্...
18/07/2025

মহিলার বয়স মাত্র ২৯ বছর। সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেয়ার কয়েকদিন পর গাইনী ডিপার্টমেন্টে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন জ্বর নিয়ে এবং এর সাথে তখনই/পরবর্তীতে Diarrhoea দেখা দেয়।

ঐ সময় জ্বরের কারণ হিসেবে underlying Infection চিন্তা করে পেশেন্ট কে হসপিটালে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়। সেলাইয়ের জায়গার একটা অংশ কিছুটা আদ্র থাকায় সেখানে ইনফেকশন চিন্তা করা হয়। প্রথমে এম্পেরিয়াল এন্টিবায়োটিক শুরু করা হয় কিন্তু রোগীর তেমন উন্নতি নেই। বরং শরীরের গলার নিচে-বুকে-পিঠে বিভিন্ন জায়গায় Rash দেখা। গাইনোকলজিস্ট Antibiotic এর Drug Reaction চিন্তা করে Antibiotic বন্ধ করেন।

পরবর্তীতে আদ্র জায়গা থেকে Swab নিয়ে কালচারের জন্য পাঠানো হয় কিন্তু কালচারে কোন গ্রোথ ছিল না। পরবর্তীতে কয়েক দফায় এন্টাবায়োটিক পরিবর্তন করা হয়। এর পাশাপাশি ব্লাড কালচার করা হয় সেখানেও কোনো গ্রোথ পাওয়া যায় নি। এছাড়া জ্বরের কারণ খোঁজার জন্য টিবি সহ সম্ভাব্য অন্যান্য পরীক্ষাও করা হয় কিন্তু কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি।

যেহেতু ডেঙ্গু সিজন চলছে ডেঙ্গু টেস্টও করা হয়েছিল ডেঙ্গু টেস্ট নেগেটিভ, Platelet count নরমাল।

এর মধ্যে মেডিসিন ডিপার্টমেন্টে কল দেয়া হয় মেডিসিনের সিনিয়র ডাক্তার এসেও কোনো ক্লোজ খুঁজে পাচ্ছেন না।
এন্টিবায়োটিক পরিবর্তন করা হল কিন্তু উন্নতি নেই।

এর মধ্যে রোগীর CBC পরীক্ষায় দেখা যায় যে wbc কাউন্ট দিন দিন কমে যাচ্ছে। জন্ডিস দেখা দিয়েছে, বিলিরুবিন বেশি। এলবুমিন ও কমে যাচ্ছে।

Procalcitonin level, HBsAg, Anti HCV সহ অনেক টেস্ট করা হয়েছিল সব নরমাল। এদিকে Albumin দিয়েও Albumin লেভেল নরমালে রাখা যাচ্ছে না বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ট্রাই করেও রোগীর কোন উন্নতি হচ্ছে না
কিন্তু কেন এমন হলো তার কোন ব্যাখ্যা ও দিতে পারছেন না ডাক্তাররা।

সবশেষে উনারা বলেন যে, Septicemia থেকে Multiorgan failure এর দিকে যাচ্ছে পেশেন্ট।

ঐ মুহূর্তে ডা. খাইরুল ভাইয়ার ডাক পড়ে। ভাইয়া ওয়ার্ডে গিয়ে পেশেন্ট কে দেখেন। একেবারে শুরু থেকে হিস্ট্রি নেন এবং প্রশ্ন করে পাওয়া একটা ক্লু থেকে ডায়াগনোসিস করেন। সেই মুহূর্তে ভাইয়া মোবাইলে থাকা পেশেন্টের Rash এর ছবি টা আমাকে দেখান।

পেশেন্টের হিস্ট্রি + Rash এর ছবি টা দেখে আমার মনে পড়ে যায় ১/২ বছর আগে বিশিষ্ট হেমাটোলজিস্ট Prof. Dr. Akhil Ranjon Biswas স্যারের শেয়ার করা দুটি কেইস হিস্ট্রি পড়েছিলাম Haematology Society of Bangladesh এর ওয়েবসাইটে। এবং এই পেশেন্টের Rash ও স্যারের শেয়ার করা পেশেন্টের Rash এর ছবির সাথে মিলে যাচ্ছে।

তখন ভাই কে জিজ্ঞেস করলাম, উনার ডায়াগনোসিস কি Blood Transfusion Associated GVHD(Graft Versus Host Disease)?

তখন ভাই জানালেন যে পেশেন্টের সিজারের সময় ব্লাড ডোনেট করে তার আপন ভাই। কেউ আসলে সেই হিস্ট্রি টা নেন নি। সবাই আসলে সিজার পরবর্তী জ্বরের কারণ হিসেবে Infective cause চিন্তা করছিলেন। তাই কোনো কনক্লুসনে আসতে পারছিলেন না কেইস টি নিয়ে। যেহেতু অনেক টেস্ট অলরেডি করা হয়ে গেছে এবং ভাইয়াও অতীতে এমন কেইস দেখেছেন তাই উনি আগ বাড়িয়ে ব্লাড ট্রান্সফিউসন হিস্ট্রি নিয়েছেন এবং ডায়াগনোসিস করতে পেরেছিলেন। আর বাইরে থেকে এলবুমিন দেয়া সত্ত্বেও পেশেন্টের এলবুমিন লেভেল কমে যাচ্ছিল তার কারণ হিসেবে ভাইয়া বললেন এক্ষেত্রে Protein loosing Enteropathy হয়।

কিন্তু GVHD এর মর্টালিটি রেইট যেহেতু অনেক বেশি, এই পেশেন্ট আসলে সার্ভাইভ করার সম্ভাবনা খুব কম ছিল। (আমি পূর্বে যে দুটো কেইস পড়েছিলাম সেই দুজনই মারা যান। একজনের ক্ষেত্রে ব্লাড ডোনার ছিলেন আপন ভাই, আরেকজনের ক্ষেত্রে আপন ছেলে।)

এই মহিলার শেষ CBC তে WBC count ছিল মাত্র ২৩০/মাইক্রো লিটার (!!!)। Neutrophil 08%, Lymphocyte 90%. ESR= 45.

পরবর্তীতে তাকে হেমোটলজি ওয়ার্ডে ট্রান্সফার করা হয়। ভাইয়া আমাকে নিয়ে যান হেমোটলজি ওয়ার্ডে ভর্তি এই পেশেন্ট দেখানোর জন্য এবং ঐ সময় অধ্যাপক ডা. আখিল রন্জন বিশ্বাস স্যারও ওয়ার্ডে রাউন্ড দিচ্ছিলেন। কিন্তু এই পেশেন্টের বেডে গিয়ে পেশেন্ট কে পাওয়া যায় নি। কারণ উনিও GVHD এর মত একটি Grievous condition এর নিকট হার মেনে মৃত্যুবরণ করেছেন।

আল্লাহ মেহেরবানী করে রোগী কে বেশেহত নসীব করুন।
ডা. খাইরুল ভাইয়া কে অসংখ্য ধন্যবাদ কেইস টি শেয়ার করার জন্য। এর আগে TA-GVHD এর সেইম আরেকটি কেইস ভাইয়া ডায়াগনোসিস করেন যেখানে Open Heart Surgery এর পর পেশেন্টের জ্বর এবং Rash দেখা দেয়। সার্জারীর সময় নিকটাত্মীয় থেকে রক্ত নেন ঐ পেশেন্ট এবং কয়েকদিনের মধ্যেই মরণঘাতী এই রোগে মৃত্যুবরণ করেন।

Take_Home_Message:
নিকটাত্মীয় থেকে রক্ত নেয়া থেকে বিরত থাকুন। নিকটাত্মীয়ের রক্ত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সাধারনত Blood Transfusion এর ২ দিন থেকে ৩০ দিন পর এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। Immunocompromised গ্রহীতার ক্ষেত্রে রিস্ক সবচেয়ে বেশি থাকে, তবে দৃশ্যত সুস্থ গ্রহীতার ক্ষেত্রেও Rarely এমনটা ঘটে থাকে।

এর বিস্তারিত ব্যাখা দিতে গিলে অনেক বড় হয়ে যাবে লেখা। সংক্ষেপে বললে, নিকটাত্মীয়ের সাথে আপনার HLA matching থাকায় আপনার রক্তে থাকা T cell(প্রতিরক্ষা কোষ) ডোনারের রক্তে থাকা T cell কে নিজের/Self হিসেবে মনে করবে, তাই তাকে কিছু করবে না। কিন্তু ডোনারের T cell আপনার শরীরে প্রবেশের পর আপনার দেহ কোষগুলো কে Non self/Foreign হিসেবে মনে করবে এবং বিভিন্ন অঙ্গের কোষ গুলো ধ্বংস করতে শুরু করবে। যাতে মৃত্যুর সম্ভাবনা উন্নত বিশ্বেই ৯০% এর বেশি। তবে মাত্র ১% এরও কম কেইসে এটা ঘটে থাকে, অর্থাৎ খুব রেয়ার। কিন্তু হলে যেহেতু রক্ষা নেই, তাই নিকটাত্মীয়ের রক্ত এভয়েড করাই যুক্তিযুক্ত।

বোঝার সুবিধার্থে সাধারন ভাষায় বললে,
বাইরের রাষ্ট্রের কেউ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে গেলে বিজিবি তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু ধরুন বাংলাদেশ বিজিবির পোশাক পরে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সৈনিকরা এদেশে প্রবেশ করল এবং বাংলাদেশ বিজিবি ঐ সকল সৈনিক কে নিজেদের লোক মনে করে কিছুই করল না। এই সুযোগে ঐ সৈনিকরা এদেশে বংশবৃদ্ধি করলো এবং বাংলাদেশের সাধারন মানুষ দের মারতে থাকলো। ঠিক এটাই ঘটে TA-GVHD তে।
*বিজিবি= গ্রহীতার রক্তের T cell(প্রতিরক্ষা কোষ)
*সৈনিক= দাতার রক্তের T cell(প্রতিরক্ষা কোষ)

♦বিশেষ করে আপন ভাই/বোন, বাবা /মা, ছেলে/ মেয়ে, ভাতিজা/ভাতিজি, ভাগিনা/ভাগিনী থেকে রক্ত নেয়া থেকে বিরত থাকুন। আপন ভাতিজা থেকে রক্ত নিয়ে TA-GVHD হয়ে মারা গেছেন এমন কেইসও আছে।

এফসিপিএস মেডিসিনে গোল্ড মেডেল পাওয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক Dr. Khairul Islam (MBBS,MCPS,FCPS) ভাই। ভাই শুধু ডিগ্রীধারী বিশেষজ্ঞই নন, ক্লিনিসিয়ান হিসেবেও খুবই ভালো। একাডেমিক ও মানবিক একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। ভাইয়ের সাথে দেখা হলে সবসময় বিভিন্ন কেইস নিয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। কেইস নিয়ে কৌতুহল থাকায় শুনতে/জানতে ভালো লাগে এবং থিংকিং ক্যাপাবিলিটি বাড়ানোর চেষ্টা করি। সেদিন ভাইয়া একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

বি: দ্র: ইংরেজিতে একটা কথা আছে,, Knowledge increases by Sharing, not by Saving! এই সিরিজের সবগুলো লিখাই একাডেমিক আলোচনার জন্য। প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্য/অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাইলে করতে পারেন।
Dr. Fahim Uddin
Khulna Medical College
Session: 2012-2013

♣যদি ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে কোনো ডোনার খুঁজে না পাওয়া যায় তখন নিকটাত্মীয় থেকেও বাধ্য হয়ে ব্লাড নিতে হয়, তবে সেক্ষেত্রে ডোনারের ব্লাড Irradiation করে গ্রহীতার শরীরে দেওয়া হয়।

পড়াশেষে Done লিখুন এবং জনস্বার্থে শেয়ার করুন।

আমি তখন সবেমাত্র অনার্স ভর্তি হয়েছি। ফার্স্ট ইয়ার। হাতখরচ চালানোর জন্য টিউশনি শুরু করলাম। ক্লাস টেনের একটা মেয়েকে ইংরেজি...
18/07/2025

আমি তখন সবেমাত্র অনার্স ভর্তি হয়েছি। ফার্স্ট ইয়ার। হাতখরচ চালানোর জন্য টিউশনি শুরু করলাম। ক্লাস টেনের একটা মেয়েকে ইংরেজি পড়াতাম। বড়লোকের মেয়ে। ওর বাবার দশটা মত ট্রাক আছে। বাজারে রড সিমেন্টের দুইটা দোকান। টাইলসের দোকান একটা। মেয়ে তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। আমি শুরুতে ভাবতাম একটা মেয়ে কেন? দশ টাকার চিপসের মধ্যের স্ক্রাচ কার্ডেও লেখা থাকে, আবার চেষ্টা করুন। আর এই দম্পতি এক বাচ্চা নিয়েই সন্তষ্ট? আরেকবার চেষ্টা করে দেখলো না? এতো টাকাপয়সা খাবে কে। আঙ্কেলের বিশাল ধৈর্য আছে মাশাল্লাহ। আন্টিকে দেখলে আমারই মাথা ঠিক থাকে না। যেরকম সুন্দরী, সেইরকম ফিগার। আমি এই মহিলার বর হলে আমার ছেলেমেয়েরা বাসার ছাদেই দুই দলে ভাগ হয়ে ফুটবল খেলতে পারতো। বাইরে থেকে কোনো ফ্রেন্ড ডেকে আনার দরকার পড়তো না।
যাই হোক, আমাদের আজকের কাহিনী ঐ মহিলাকে নিয়ে না৷ উনার একমাত্র মেয়ে অর্থ্যাৎ আমার ছাত্রীকে নিয়ে৷ মেয়ের নাম অরনী। মায়ের থেকেও তিনগুন বেশি সুন্দরী। কতটা সুন্দরী উদাহরণ দেই৷ টিউশন মাস্টাররা লুচ্চা হলে নাকি ছাত্রীর বুকের দিকে তাকায়। কিন্তু আমি যথেষ্ট লু&%চ্চা হয়েও কখনো অরনীর বুকের দিকে তাকাইনি। ওর চেহারা এতো সুন্দর যে মুখের দিক থেকে চোখই সরাতে পারিনা। অন্যদিকে তাকাবো কিভাবে৷ টিউশন শুরু করার পর থেকে জাস্ট ওকে দেখার জন্যই একটা দিন অফ দেইনি। একঘন্টা পড়ানোর কথা থাকলেও দেড় ঘন্টা পড়াই। শুক্রবারে গিয়ে বলি, 'আন্টি আজকে একটা পরীক্ষা নিব ওর। সারা সপ্তায় যা পড়াইছি তার ওপরে।'
আন্টি আঙ্কেলের কাছে আমি বিশাল প্রশংসা পাওয়া শুরু করলাম। এতো ভালো আর সিরিয়াস টিচার নাকি আজকাল পাওয়াই যায় না। উনার বোনের ছেলের টিউশন মাস্টার নাকি সপ্তায় দুইদিন আসে তো চারদিন আসে না। নানান বাহানা দেয়৷ আধাঘন্টা পড়ায়েই চলে যায়।
আমি আর বললাম না যে এর আগে ঠিকমতো না যাওয়ার জন্য আমার দুইটা টিউশনি চলে গেছে। দুইটাই ছেলে ছিলো। আর আপনার মেয়ে অরণী মানুষ না, চুম্বক। আমার চশমার ফ্রেমের লোহাকে আকর্ষণ করে সে।
তারপর ঠিক একমাস পর একটা ঘটনা ঘটলো। আমাকে মাস শেষে বেতনের যে খাম দেয়া হলো সেই খাম খুলে দেখি টাকার সাথে সাথে একটা চিরকুট৷ তাতে লেখা, 'এই যে সোহাইল সাহেব, আই লাভ ইউ। ডু ইউ লাভ মি?'
আমার হার্টবিট মিস হলো। মাথা ঘুরতে লাগলো। তার থেকেও বেশি যেটা হলো সেটা কনফিউশান। আমাকে প্রপোজ কে করেছে? অরণী নাকি অরণীর মা?
কনফিউশনের কারণ খামটা আমার হাতে দিয়েছে স্বয়ং অরণীর বাবা। কিন্তু আমি যতদূর দেখেছি সেটা ভেতরের ঘরে গিয়ে এনে দিছে অরণীর মায়ের থেকে। তাহলে কি আন্টি? হতেও পারে। আঙ্কেল তো সারাদিনই ব্যবসা নিয়ে বিজি থাকে৷ অথচ আন্টির বয়স সর্বোচ্চ পঁয়ত্রিশ হবে। এই বয়সে কত শখ আল্লাদ থাকে মানুষের৷
কিন্তু আন্টিকে কিভাবে জিজ্ঞেস করি? একদিন সুযোগ আসলো। আন্টি নাস্তা দিতে এসে প্রতিদিনই বসেন দুই তিন মিনিট। এদিন আন্টি আসার পর অরণী ভেতরে গেলো পানি খেতে৷ আমার অভিজ্ঞতা বলে অরণীর পানি খেতে অন্তত সাত আট মিনিট লাগে৷ কারণ সে পানি খাওয়ার কথা বললেও যায় আসলে হি*সু করতে।
এখন আন্টিকে সরাসরি তো বলতে পারি না৷ হিন্টস দিলাম৷ বললাম, 'আন্টি আপনি খুব সুন্দর।'
আন্টি হেসে দিয়ে বললো, 'তাই নাকি? তোমার আমাকে ভালো লাগে?'
আমিও হাসলাম, 'আপনাকে কারো খারাপ লাগতে পারে? যেকোনো ছেলের জন্যই আপনি স্বপ্নের মত!'
- আহা, তোমার জন্যেও?
- আমিও তো ছেলেই।
- অথচ দেখ, তোমার আঙ্কেল ফিরেও দেখেনা আমার দিকে। সারাদিন কাজ নিয়ে বিজি।
- আমি আঙ্কেলের জায়গায় থাকলে কোথাও যাইতাম না। সারাদিন ঘরে থাকতাম আপনার কাছে।
আন্টি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো, 'আসলে এই লাইফ আমারো আর ভাল্লাগছেনা৷ আর তাছাড়া?'
- তাছাড়া কি?
- তুমি ছেলে হিসাবে খারাপ না। আসলে কিভাবে যে বলি।
- বলেন আন্টি, কোনো সমস্যা নাই৷ অবশ্য আমি টের পেয়েগেছি দেখেই?
- সত্যি টের পেয়েছ?
আরো কিছু বলতে যাব তার আগেই অরণী চলে আসলো। আন্টি কিছু না বলে লাজুক মুখে চলে গেলেন।
এর পরদিন থেকে আন্টি আমাকে একটু বেশিই যত্ন নেয়া শুরু করলেন। নাস্তায় দামী দামী খাবার আসতে লাগলো। আমি যখন প্রায় শিওর যে ঐ প্রপোজ আন্টিরই ছিলো তখনই একটা ঘটনা ঘটলো। অরণী অংক করতে করতে হুট করে বললো, 'স্যার আমি কি দেখতে খারাপ?'
- না তো, তুমি অনেক সুন্দরী।
- তাহলে আপনার চোখে সমস্যা?
- তা হবে কেন? এসব কি বলতেছ?
- আপনি কিছুই বুঝেন না স্যার?
- কি বুঝবো?
- আপনি আসলেই গাধা।
- তোমার মাথা ঠিক আছে? যা বলার খুলে বলো।
- আমি কি বলব? আমার কিছুই বলার নাই। আর ভাগ্যই খারাপ।
- ভাগ্য খারাপ হবে কেন?
- আমার সব বান্ধবীরই বয়ফ্রেন্ড আছে৷ আর আমার নাই। এমনকি আমার যাকে ভালোলাগে সে কিছুই বুঝেনা। আস্ত একটা গা&%ধা৷
আমি বুঝলাম অরণী কি বলতে চাচ্ছে। কিন্তু বুঝেও এমন ভান করলাম যে বুঝিনি৷ তাহলে কি ঐ চিরকুট অরণীর ছিলো? অরণী আমাকে ভালোবাসে? আমি আবারো কনফিউশানে পড়ে গেলাম।
কনফিশান দূর করার একটাই উপায়। পরের মাসের বেতনের খাম৷
খাম হাতে পেয়ে যেন তর সইছে না। দ্রুত ওদের বাসা থেকে বের হয়েই খুলে ফেললাম। হ্যা, চিরকুট আছে৷ সেখানে লেখা, 'গত খামে দেয়া প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যা হয় তবে আগামী শুক্রবার সকালে আমি বাসায় অপেক্ষা করবো। ঐদিন আমি ছাড়া কেউ থাকবে না বাড়িতে।'
ইয়েস, শুক্রবারেই বোঝা যাবে ওটা কে? অরণী নাকি অরণীর মা। আমি মুচকি হাসলাম। যেই হোক, আমার দিক থেকে কোনো সমস্যা নাই। .
শুক্রবার সকাল সকাল রেডি হয়ে ভালো জামাকাপড় পরে চলে গেলাম অরণীদের বাসায়। কলিংবেল টিপতেই দরজা খুলে গেল। একটা হাত আমাকে টেনে ঘরে ঢুকিয়েই দরজা বন্ধ করে দিলো।
আমার হার্ট এটা&%ক হচ্ছিলো আরেকটু হলে। কোনোমতে বললাম, 'আ আঙ্কেল, আপনি?'
- হ্যা আমিই। অরণী ওর আম্মুর সাথে খালার বাসায় গেছে। আজকেই সুযোগ।
- হোয়াট? কিসের সুযোগ?
- তোমাকে তো বলেছিই। আমার মেয়ে মানুষ ভালোলাগে না। বাসা থেকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিছিলো। একটা বাচ্চাও হইছে। কিন্তু অরণীর আম্মুর প্রতি আমার কোনো আগ্রহ নাই৷ তোমাকে ভালো লেগেছে। এজন্য আই লাভ ইউ বলে দিছি৷ ভাবিনাই তুমি রাজি হবা।
- ইয়ে মানে।
- লজ্জা পাওয়ার দরকার নাই৷ বেডরুমে আসো।
- এক মিনিট।
- আবার কি হলো? আঙ্কেলের কণ্ঠে অধৈর্য।
- বাইক লক করে আসতে ভুলে গেছি৷ এখনি আসতেছি।
সেদিন পালিয়ে আসার পর বহুবার অরণী কল দিয়ে যেতে বলেছে৷ কান্নাকাটিও করেছে। আন্টি মেসেজ দিছে, 'তুমি শুধু একবার বাসায় আসো। শুধু একবার।'
কিন্তু আমি যাইনি। প্রেম ভালোবাসা একটা গেলে আরেকটা পাওয়া যাবে। কিন্তু ইজ্জত খুবই দামী জিনিস। একবার হারালে আর কোনোদিন পাওয়া যায় না।

[ কার্টেসী - সোহেইল রহমান ]

©

সবাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করি...
18/07/2025

সবাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করি...

আমার যখন তিন দিন বয়স তখন বাবা আমার মাকে একা রেখে চলে যায়। আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহ, বাড়ির চারপাশে পানি। বাজারের দিকে যেতে গ...
18/07/2025

আমার যখন তিন দিন বয়স তখন বাবা আমার মাকে একা রেখে চলে যায়। আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহ, বাড়ির চারপাশে পানি। বাজারের দিকে যেতে গেলে কলাগাছের ভেলায় করে যেতে হয়। রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে আছে।

সেই দুর্দিনে মা তার দুই মেয়েকে নিয়ে একা হয়ে যায়। মাকে ছেড়ে বাবার পালিয়ে যাওয়ার একটা কারণ আছে। আমার জন্মের একমাস আগেই মধ্যরাতে বাবা মাকে বলে, দেখো এবার যদি মেয়ে হয় তবে কিন্তু তোমাকে রাখবো না। মা বাবার গায়ে হাত রেখে বলে, কি বলো এসব তুমি? মায়ের ছলছল করা চোখে বাবার মন একটুও গলে না।

আমার জন্মের পরে বাবার মন খারাপ হয়। মা ভেবেছিলো বাবা ঠিক হয়ে যাবে। মেয়েকে কোলে তুলে নিবে। তবে বাবা তিনদিন পরেই পালিয়ে গেলেন। এক সপ্তাহ পরে খবর আসে বাবা আবার বিয়ে করেছেন। নদীর ওইপাড়ের শহরে নতুন বউ নিয়ে থাকে। লোকের কাছে খবর পাঠিয়েছে মা যেনো তার দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।

মায়ের অবশ্য কোথাও যাওয়ার নেই। আমার নানাবাড়িতে কেউ নেই, ভিটেমাটি নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে৷

মায়ের পাশে দাদা ভাই আর বড় চাচা দাঁড়ালেন। বাবার কাছে দাদু খবর পাঠালেন, সে যেনো আর কোনোদিন এই বাড়িতে না আসে আর যদি চিন্তা করে নতুন বউ নিয়ে এখানে আসবে তাহলে তাকে বড় দা দিয়ে কোপানো হবে৷

দাদু ছিলেন রাগী মানুষ, বাড়ির সবাই তাকে ভয় পেতো। বাবা তাই আর হয়তো বাড়ি আসবার সাহস করেনি।

মা দুই মেয়েকে নিয়ে এখানে থেকে যায়। দাদু বয়স্ক মানুষ, বয়সের ভারে এখন শরীর চলে না, কাজ করতে পারে না।

আমার বাবা চাচাদের আয়ের একমাত্র উৎস একটা মাছ ধরার নৌকা। এই নৌকাটা দাদু কিনেছে তেরোশো টাকায়, তারপর প্রতিবছর মেরামত করে চলে। সমুদ্রে যায় এই নৌকা নিয়ে।

আমরা দুই বোন তখন ছোটো সেই থেকে মা চাচা আর দাদুর সাথে নৌকায় মাছ ধরতে নদীতে চলে যেতো। দাদু কোনো কাজ করতে পারতো না নৌকায় বসে থাকতো, মা আর চাচা জাল তুলতো সেই জাল গুছিয়ে রাখতো। মাছ ছাড়িয়ে রাখতো, নদীর কোনদিকে গেলে মাছ পাওয়া যাবে, কোথায় স্রোত কম বেশি দাদু সেইসব বুঝিয়ে বলতেন।

বড় আপা বড় হওয়ার পরে মা আর চাচার সাথে নদীতে চলে যেতেন। আমি যেতে চাইতাম তবে আমাকে নিতো না, হয়তো ছোটো মানুষ বলেই নেওয়া হতো না। তবু একবার চাচাকে অনুরোধ করলে আমাকে নিয়ে যায়, নদীতে সেবার নৌকায় বসে আমার বমি আসে। এরপর আর কখনো যাওয়া হয়নি।

মা বড় আপা চাচা নদীতে যেতো, সাথে চাচা আরেকজন লোক নিতো কিংবা মাঝেমধ্যে দাদু যেতো। দাদুর বয়স বেড়েছে, শরীরে শক্তি পায় না আগের মতো তাই এখন নিয়মিত যেতে পারে না।

নদীতে সবসময় মাছ পাওয়া যেতো না, কিছু সময় আবার অবরোধ থাকে। পেট তো আর অবরোধ মানে না, নয় জনের পরিবার, নয়টা পেটে খাবার দিতে হয়। সেই সময়টায় বড় চাচা মাটি কাটা দলের সাথে কাজে যেতেন। চাচার একার আয়ে পরিবারে খাবার মিটানো হিমশিম হয়ে যেতো, কাছাকাছি মাটির কাজ থাকলে মা চাচার সাথে চলে যেতেন মাটি কাটার দলের সাথে।

আমার বয়স যখন তেরো বছর তখন নৌকায় চাচা আর মায়ের সাথে যাই। বড় আপার বিয়ে হয়েছে, সে থাকে শ্বশুরবাড়ি। আপার বিয়েতে বেশকিছু টাকা ধার করতে হয়েছে সেই টাকা মাছ বিক্রি করে পরিশোধ করতে হবে।

বিকালবেলা নদী থেকে মাছ নিয়ে আসলে সন্ধ্যায় বড় বাজারে চলে যেতাম একটা হ্যারিকেন নিয়ে। মা আর আমিই যেতাম। বাজারের এক কোনায় বসে মাছ বিক্রি করতাম, সব মাছ বিক্রি করতে করতে অনেক রাত হয়ে যেতো। মায়ের সাথে বাড়িতে ফিরতাম, হাঁটু সমান কাদা ভেঙে, কখনো বৃষ্টিতে পেয়ে যেতো। মা কলাগাছ থেকে পাতা ছিঁড়ে মাথার উপর দিতো, সেই কলাপাতায় কোনোরকমে মাথা রক্ষা করে বাড়িতে ফিরতাম।

আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। এলাকার সবাই আমার বিয়ের কথা বলছে। মা চাইছেন বিয়ে দিয়ে দিতে। তবে তেমন ভালো ছেলে পায় না। মেয়ের মা মাছ ধরে, মাটি কাটে এসব শুনে পাত্রপক্ষ বিয়ে ভেঙে দেয়। মা মাছ ধরা নৌকায় তার মেয়ে আর কি সংসারী হবে এমনও কথা শুনতে হয়েছে।

চাচা মায়ের সাথে এক রাতে বলেন, আমি বলি কি মুনিয়াকে আরো পরে বিয়ে দাও। পড়াশোনা করুক। মুনিয়ার স্যারের সাথে বড় বাজারে দেখা হলো, মুনিয়া আমার ভাইয়ের মেয়ে শুনে ওর বেশ সুনাম করলো। মুনিয়ার হাতের লেখা নাকি খুব সুন্দর। স্যার বললো ওরে পড়াইলে একদিন ভালো চাকরি করবে। বংশের ভিতরে এমনিতেও পড়াশোনা জানা মানুষ নেই, মেয়েটা যখন পড়াশোনায় ভালো পড়ুক।

মা বলে, ভাইজান পড়াশোনা করানো তো টাকার বিষয়। এতো টাকা কই পাবো?

চাচা বলেন, হয়ে যাবে টাকা। আর আমি স্যারদের কাছে যেয়ে অনুরোধ করবো, আমরা তো গরিব মানুষ বলবো কিছু কম রাখতে।

আমার বড় চাচা নিজের নাম লিখতে পারে না, টিপ সই দেন। সেই চাচার পড়াশোনার প্রতি টানেই ক্লাস এইটে আমাকে বিয়ে করতে হয় না।

স্কুল থেকে পরীক্ষায় সবার প্রথম হই। তবে কলেজ আমাদের এলাকা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে, পুরো রাস্তা কাচামাটির। হেঁটে যেতে হবে, তারপর রাস্তার পাশে জঙ্গল।

ঠিক হয় সপ্তাহে তিনদিন আমি ক্লাস করবো, সেই তিনদিন নদীপথেই চাচা দিয়ে আসবে। যেহেতু আমাদের নৌকা আছে।

চাচা তিনদিন নৌকায় করে দিয়ে আসতো, বিকাল পর্যন্ত কলেজের পাশে বাজারে কাজ করতো। ট্রলারে জিনিসপত্র তুলে দিতো। কখনো কাজ শেষ হতে সন্ধ্যা হয়ে যেতো, সন্ধ্যায় নৌকায় চাচার সাথে বাড়িতে ফিরতাম।

সপ্তাহে দুদিন মা আর চাচার সাথে নদীতে নৌকায় চলে যেতাম। জাল টানতাম, কখনো নৌকার বৈঠা ধরে বসে থাকতাম। চাচার একটা রেডিও ছিলো, সেই রেডিওতো বাংলা ছবির গান চলতো। গান শুনতে শুনতে নদী থেকে জাল টেনে তুলতেন।

কলেজে পরীক্ষার রেজাল্ট দেখতে চাচার সাথেই আসি। আমাকে কলেজের রহমান স্যার খুব পছন্দ করতেন, স্যারের মেয়ে রুমা আমার সাথেই পড়তো।

কলেজের বারান্দায় আমাকে দেখে লাইব্রেরিতে ডেকে নেয়। আমার বুক কাঁপতে থাকে। চাচার দিকে তাকিয়ে বলেন, বুঝলা সোবহান তোমার ভাতিজী তো সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে এই দেখো। যদিও চাচা কিছুই বুঝে না, তবু স্যারের মুখে ভালো রেজাল্টের কথা শুনে তার মুখটা উজ্জ্বল হয়ে যায়।

কলেজ থেকে বের হয়ে বাজার থেকে এক কেজি জিলাপি কিনেন। আমাকে দোকানে বসিয়ে জিলাপি খাওয়ান। বাড়িতে ফিরে সবাইকে জিলাপি দিয়ে জানায় আমার ভালো রেজাল্টের কথা।

গ্রামের সবাই বললো আর পড়াশোনার দরকার নেই, এবার যেনো আমাকে বিয়ে দেওয়া হয়। তবে চাচা বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। আমাকে নিয়ে রহমান স্যারের সাথে কথা বলেন। কিভাবে শহরে ভর্তি করানো যায়, কেমন খরচ হবে, কোথায় থাকবো সেসব নিয়ে কথা বলেন।

চাচা রহমান স্যারকে অনুরোধ করে বলেন, আমি তো আর এসব চিনি না। আপনি একটু যাবেন মুনিয়াকে নিয়ে? রহমান স্যার বলে যাবো। চাচা বলেন, খরচাপাতি যা লাগে আমি দিয়ে দিবো চিন্তা করবেন না।

রহমান স্যারকে নিয়েই চাচার সাথে আমি প্রথমবার শহরে আসি। স্যারের এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় থাকবার সুযোগ করে দেয়। তাদের ছেলেমেয়েকে পড়াতে হবে, আর এখানেই এই বাসার দুই মেয়ের সাথে এক বিছানায় আমি থাকবো।

চাচা আর রহমান স্যার পরদিন ভোরে বাড়ির দিকে চলে যায় আমাকে শহরে রেখে। চাচা যাবার সময় মাথায় হাত রেখে বলেন, মা আমি আবার আসবো একমাস পরেই। আর চিঠি দিবো, রহমান স্যারকে দিয়ে লেখাবো।

চাচা মাথায় হাত রাখতেই চোখে পানি এসে যায়। চাচার চোখেও পানি দেখি।

আমি যার বাসাতে থাকি সেই ভদ্রলোক পুলিশে চাকরি করেন। বাড়ির বাইরেই থাকেন বেশিরভাগ সময়। বাড়ির সবাই ভালো মানুষ। একমাস পরেই আমাকে একটা জামা কিনে দেয়। শানু এবং শিউলীকে আমি পড়াই, শানুর মাকে ডাকতাম ফুপু। ফুপু সেবার আমাকে একটা জামা কিনে দেয়, সেই একটা জামা পরেই আমি ভার্সিটিতে যেতাম।

চাচা প্রথমে একমাস পরে একবার আসেন। তারপর বছরে দুবার আসতেন, আমি চাচার সাথে বছরে একবার বাড়িতে যেতাম, দশদিন সেখানে থাকতাম। তারপর শহরে কোনো লোক আসলে তার সাথে আবার শহরে আসতাম।

দেখতে দেখতে বহুবছর চলে যায়। আমাদের নৌকাটা কয়েকদিন পর পর ঝামেলা করে, মেরামত করতে হয়। চাচার ইচ্ছে একদিন বড় একটা নৌকা কিনবে সেই নৌকায় লোক রাখবে দুজন, তারা মাছ ধরবে। তবে চাচার ইচ্ছে ইচ্ছেই থেকে যায় নতুন নৌকা কেনা হয় না, পুরাতন নৌকা মেরামত করেই চলতে হয়।

আমাদের ভার্সিটির একজন শিক্ষক ছিলেন পত্রিকায় লিখতেন। পত্রিকায় স্যারের অনেক লেখা পড়িছি। একবার সাহস করে স্যারকে আমার কিছু লেখা দেই। স্যার আশ্বাস দেয় আমার লেখা পত্রিকায় ছাপা হবে।

সত্যি সত্যি একদিন পত্রিকায় আমার লেখা একটা ছোটোগল্প ছাপা হয় ‘নদীর জীবন’ শিরোনামে , যদিও স্যার কিছু সম্পাদনা করেন। যে গল্পে নদীর পাশের ঘর থাকা একটা পরিবারের কথা লেখা থাকে। এরপর স্যার আমার কাছে গল্প কবিতা চায়, প্রতিমাসে কিছু টাকা দিতো।

পড়াশোনা শেষে সেই পত্রিকায় তিনমাস চাকরি করি। চাচাকে নৌকা মেরামত করতে কিছু টাকা দেই, দাদুর কিছু ওষুধ কিনে দেই।

পত্রিকায় কাজের আটমাস চলে যায়, একটা কলেজে চাকরির কথা চলছে। তবে কোনো আশার বানী দেখতে পাইনি। বেশকিছু চাকরির পরীক্ষা দিয়ে রাখা আছে।

সেদিন বাইরে ঝুম বৃষ্টি। ঢাকা শহর একেবারে ফাঁকা, দুই একটা গাড়ি দেখা যায়। রিক্সা আসে থেমে থেমে। সেই বৃষ্টির ভিতরেই ছাতা নিয়ে বের হয়ে যাই।

ভার্সিটির কাছে আসতেই দেখি আমার বান্ধবী জয়িতা দাঁড়িয়ে আছে। জয়িতাকে নিয়ে আলতাফ স্যারের বাসাতে যাই। আজকে বিসিএসের রেজাল্ট দিবে দুপুরের দিকে, আলতাফ স্যারই আমাদের ভার্সিটির স্টুডেন্টদের রেজাল্ট দেখেন।

স্যার ভার্সিটির ভিতরেই কোয়ার্টারে থাকে। আমাদের দেখে সামনের ঘরে বসতে দেয়। জয়িতা আর আমি দুজনেই অপেক্ষা করতে থাকি। স্যারের স্ত্রী চা বিস্কুট দিয়েছে, তবে গলা দিয়ে কোনো খবার নামছে না।

স্যার কিছুসময় পরে তার ঘরের ভিতরে ডাকে, কম্পিউটারে রেজাল্ট দেখেন।

স্যার আমার দিকে তাকায়, হেসে বলে মুনিয়া মিষ্টির দোকানে যাও এক দৌড়ে। তোমার তো চাকরি হয়ে গেছে।

আমি কথা বলতে পারিনা, দুই চোখে পানিতে ভর্তি হয়ে যায়। জয়িতাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকি।

জয়িতা বড়লোক বাবার মেয়ে, ওর বাবার নিজস্ব গাড়ি আছে। স্যারের বাসা থেকে বের হয়ে ওর গাড়িতে করেই ঢাকা শহর ঘুরায়। আমি কাঁদতে থাকি গাড়িতে বসে, বাইরে তখন ঝুম বৃষ্টি।

চাচাকে চিঠি লিখতে বসে যাই। তবে কান্নায় কাগজ ভিজে যায় কিছুই লিখতে পারি না। শুধু লিখে জানাই চাচা আমার চাকরি হয়েছে, অনেক বড় চাকরি। আমার কলেজের শিক্ষক রহমান স্যারের কাছে একটা চিঠি লিখি। স্যারকে বলি চাচাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলতে।

একবছর পরে চাচাকে একটা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার কিনে দেই। চাচা এখন ট্রলার দিয়ে মাছ ধরে, অবশ্য দুজন লোক রেখেছেন। শুধু ট্রলারে বসে থাকে তার রেডিও নিয়ে, নদীতে বসে গান শুনতে তার ভালো লাগে।

চাচা দুই বছরের ভিতরে মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে আরো দুটো ট্রলার কিনেন, একটা মাছের আরত দেয়। চাচাকে এখন এক নামে সবাই চিনে। বাড়িতে নতুন ঘর তুলেছেন। আমার বেতনের টাকায় সাথে চাচার ব্যবসার টাকায় বেশ ভালোই জীবন কাটে।

এর ভিতরে একদিন খবর আসে আমার বাবার সে নদীর ওইপাড়ে আছে। তার বউ ছেলেমেয়েরা হাসপাতালে ফেলে রেখে গেছে অসুস্থ অবস্থায়। দুদিন পরে সেখানেই মা রা গেছে, শেষ সময়ে কেউ পাশে ছিলো না তার। বড় চাচা লোক পাঠিয়ে লা শ বাড়িতে নিয়ে আসে।

আমার জীবন শুধু বড় চাচা মা আর দাদুকে নিয়ে। দাদু এখনো বেঁচে আছেন, লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটতে পারেন।

বড় চাচা যখন রেডিওতে খবর কিংবা গান শুনেন তখন তাকে ভীষণ সুন্দর লাগে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে মানুষটাকে দেখি৷

প্রিয় পাঠক এই লেখাটা একজনের বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া৷ জীবন কখনো একরকম থাকে না, বদলায় এবং রহস্য ঘেরা।

বড় চাচার রেডিও এবং জীবনের গান

©-মুস্তাকিম বিল্লাহ

© Mosthakim Billa লিখা।

গোপন রহস্য উম্মোচন৩২০ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩২০ জনই এ প্লাস পাওয়ার পেছনের গোপন  রহস্য!পেছনে আছে হাজারো স্টুডেন্ট ও অভিভাবকের...
18/07/2025

গোপন রহস্য উম্মোচন

৩২০ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩২০ জনই এ প্লাস পাওয়ার পেছনের গোপন রহস্য!

পেছনে আছে হাজারো স্টুডেন্ট ও অভিভাবকের বুকফাটা কষ্ট।

নিচের পুরো লেখাটা পড়লে আপনার নিজেকে নিজের বিশ্বাস হবে না।

হয়তো এ ঘটনা মিলে যেতে পারে আপনার সাথে, আপনার সন্তানের সাথে অথবা আপনার পরিচিত কারো সাথে।

আপনি হয়তো ভাবছেন সকল পরীক্ষার্থী এ প্লাস পাওয়া এই স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দিতে পারলেই আপনার সন্তানের এ প্লাস নিশ্চিত? তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

পরীক্ষার আগে আপনি খোঁজ নিন, এই ধরনের ভালো ফলাফল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কতজন স্টুডেন্ট টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো? যদি ২০০০ স্টুডেন্ট টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে, তাহলে সেখান থেকে বেছে বেছে ৪ ভাগের ৩ ভাগ স্টুডেন্টকেই টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখিয়ে ফরম ফিলাপ করতে দেওয়া হয় না।

কেবলমাত্র যেই স্টুডেন্টের ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে, ওমুক স্টুডেন্ট এ প্লাস পাবে, শুধুমাত্র তাকেই ফরম ফিলাপ করিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়। আর বাকি স্টুডেন্ট এবং তাদের অভিভাবকদের জীবনে নেমে আসে অভাবনীয় হতাশা এবং দুর্ভোগ!

সন্তানের জীবন থেকে চলে যায় মূল্যবান শিক্ষাবর্ষ। তখন ওই সকল অভিভাবক ছুটোছুটি করে নিম্নমানের নাম সর্বস্ব কোন স্কুল থেকে সন্তানকে ফরম ফিলাপ করিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো হয়? তখন সুযোগ সন্ধানী অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই সব অভিভাবকের কাছ থেকে মোটা অংকের ডোনেশন নিয়ে ঐ ছাত্রকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়।

এবং পরবর্তীতে দেখা যায় ঐ নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টেষ্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য স্টুডেন্টটি দুর্বল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়ে এ প্লাস না পেলেও ন্যূনতম A হলেও পায়।

অথচ যেই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ আট দশ বছর পড়াশোনা করেছে, এ প্লাস না পাওয়ার আশঙ্কায় তারা এই স্টুডেন্টকে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখিয়ে স্কুল থেকে টিসি ধরিয়ে দেয়। যে সকল অভিভাবক এত কষ্ট এবং অর্থ ব্যয় করে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পড়াশোনা করিয়ে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রিয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়, তাদের বুকফাটা আর্তনাদ কেউ দেখেনা। এবং উক্ত স্টুডেন্টদের হতাশা দেখার কেউ নাই। শুধু তাই নয় ওই স্টুডেন্ট বাবা-মায়ের কাছ থেকে শুধু বোকা নয় মারও খেতে হয়, বন্ধু বান্ধব আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশীদের কাছে হতে হয় অপমানিত। লজ্জায় ঘৃণা এবং হতাশায় এই কোমলমতি অনেক শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষা জীবন এখানেই শেষ হয়ে যায়। আমার জীবনে আমি এরকম বহু ঘটনা দেখেছি। শুধু ঢাকায় নয়, দেশের প্রতিটি এলাকায় প্রতিটি অঞ্চলে অনেক নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্টদের ও তাদের অভিভাবক কে এরকম পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।


এই পোস্ট যারা পড়ছেন তাদের মধ্য থেকে নিজে অথবা আপনার চেনাজানা কারো মধ্য থেকে এই ধরনের পরওস্থিতির শিকার হয়ে থাকলে নিচে কমেন্ট করে এই পোস্ট শেয়ার করে এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল হোন।

আমার বিশ্বাস প্রতিবাদ না করলে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতা ক্রমাগত বেড়েই চলবে। কারণ এই বছর যে প্রতিষ্ঠানটি ৩২০ জনের মধ্যে ৩২০ জনই A প্লাস পেয়েছে, এটা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কানাঘুষা শুরু হয়ে গেছে। এবং আমার মনে হয় আগামীতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের সকল স্টুডেন্ট কে এ প্লাস পাওয়া নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখানো সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে। যেই স্টুডেন্টটি এ প্লাস পাবেনা বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধারণা হবে, তাকেই পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা থেকে বিরত রাখবে। এবং এভাবেই লক্ষ লক্ষ স্টুডেন্টের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলবে।

লেখা : আহসান আলমগীর।

Address

Fulbaria

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Prettiness By Sadia posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Prettiness By Sadia:

Share

Category