Prettiness By Sadia

Prettiness By Sadia "সুযোগ কখনো আপনার হাতে ধরা দেবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সেগুলো পাওয়ার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা না করবেন"

পাঁচ বছর, তিন মাস, বারো দিন পরে আমার স্বামী আবিরকে আবার দেখছি। স্বামী না বলে প্রাক্তন স্বামী বলাই মনে হয় ঠিক হবে। যদিও অ...
02/12/2025

পাঁচ বছর, তিন মাস, বারো দিন পরে আমার স্বামী আবিরকে আবার দেখছি। স্বামী না বলে প্রাক্তন স্বামী বলাই মনে হয় ঠিক হবে। যদিও অফিসিয়ালি বিবাহ বিচ্ছেদ আমাদের হয়নি।আবির এখন আমার বাসার ড্রয়িং রুমে বসে আছে। ভাবতে অবাক লাগছে, এই মানুষটাকে এক সময় পাগলের মত ভালোবাসতাম। আমার ধারণা ছিল, আমার মত এতটা না হলেও, সেও আমাকে ভালোবাসে। যদিও তার প্রকাশটা কখনো ঐভাবে দেখিনি। কিন্তু ভাবতাম, সবার প্রকাশ ক্ষমতা এক রকম হয় না।

ভালোবাসা কখনো কখনো মানুষের সর্বনাশের কারণ হয়। আমারও তাই হলো। আমার জরায়ুতে ছোট একটা টিউমার হয়েছিল । ছোট হলেও দুর্দান্ত গতিতে রক্তক্ষরণ করতো সেটা। আমার বয়স তখন চুয়াল্লিশ। ডাক্তার বললেন, জরায়ুটা ফেলে দেওয়াই ঠিক হবে। আমার একটাই মেয়ে মেঘলা, তখন ভার্সিটিতে পড়ে। বাচ্চা কাচ্চা এতদিনে যখন আর হয়নি, তখন আর হবে বলে মনেও হলো না। তাই ফেলে দেওয়া হলো জরায়ুটা।

অপারেশনের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই নতুন ধাক্কা শুরু হলো। আমার ননদ প্রায় প্রায়ই বলতে লাগলো, " আবিরের মুখের দিকে তাকানো যায় না। একটা ছেলের এত শখ ছিল ওর। " আমি জানি, আবির ছেলে খুব পছন্দ করতো। কিন্তু তার জন্য মন খারাপ করবে, এটা কখনোই ভাবিনি। ভাবলে, রক্তক্ষরণ হতে হতে মরে গেলেও আমি জরায়ু ফেলতাম না। আবিরকে জিজ্ঞাসা করলে, ও চুপ থাকতো। আস্তে আস্তে অপরাধবোধে ভুগতে থাকলাম আমি। ভালোবাসার মানুষটা এভাবে কষ্ট পাচ্ছে, সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই আমার ননদ যখন একদিন বুদ্ধি দিলো, " আবিরকে আর একটা বিয়ে দিয়ে দিই ", তখন আমার কাছে ব্যাপারটা খুব বেশি খারাপ লাগেনি। আশংকা করছিলাম, আবির রাজি হবে কিনা। কিন্তু যেহেতু সে আমার ননদের কথায় ওঠে বসে, কাজেই বোনের আদেশ পাওয়া মাত্রই রাজি হয়ে গেল।

সম্ভবত আমার ননদ আগে থেকেই মেয়ে দেখে রেখেছিল। তাই খুঁজতে একদম সময় লাগলো না। মেয়ে দেখে আমি অবাক হলাম। একেবারেই বাচ্চা মেয়ে। আমার মেঘলার থেকে বড়জোর চার পাচ বছরের বড় হবে। আবিরকে বললাম, " তোমার সাথে বয়সের ডিফারেন্স অনেক বেশি হয়ে যাবে। " আবির বললো, " সমস্যা নেই।"

মেঘলা দারুণ ক্ষেপে গেল। ওকে বোঝালাম, কিছুদিন পরে তোর বিয়ে হয়ে যাবে। আমরা একলা হয়ে যাবো। তোর বাবার এত সম্পত্তি, তার একজন যোগ্য উত্তরাধিকারও তো থাকা উচিত। তুইতো জানিস, তোর বাবাকে আমি কতটা ভালোবাসি। তার মন খারাপ, আমি সহ্য করতে পারি না। মেঘলা রাগ করে হোস্টেল থেকে বাড়িতে আসা বাদ দিলো। কিন্তু তাতে বিয়ে আটকানো গেল না। আসলে এখন বুঝতে পারি, হয়তো অবচেতন মনে আমিও বুঝেছিলাম, ঠেকানোর চেষ্টা করেও লাভ নেই।

অবাক করা ব্যাপার হলো, বিয়ের দিন আমার তেমন খারাপ লাগেনি। আমাদের ভিতরে অনেক দিন হলো, সম্পর্কটা ঠিক স্বামী স্ত্রীর মত ছিল না। সম্পর্কটা ছিল অভ্যস্ততার। তাই আমার স্বামী আমার হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে, এরকম ফিলিংস তখনও আসেনি। আমি নিজে চাকরি করি। যা বেতন পাই, তা দিয়ে রাজার হালে থাকতে পারি। কাজেই খাবো কি, পরবো কি - এই চিন্তাটাও মাথায় ছিল না। কিন্তু সমস্যা শুরু হলো, বিয়ের পরে।

না, এমন নয় যে, আবির আমার কাছে আসছে না, সেজন্য আমার কষ্ট হচ্ছিলো। সে তো বহুদিন থেকেই তেমন করে কাছে আসতো না। আমার কষ্ট হচ্ছিলো, নতুন বউ এর প্রতি তার কেয়ারিং দেখে। এই মানুষটা এত কেয়ারিং, এত রোমান্টিক হতে পারে, আমার ধারণাই ছিল না। নতুন বউ যা ই বলে, সে সেটাই শোনে। আমি যে কাজ ভয়ে জীবনেও করতে পারতাম না, সে সেটা অনায়েসে করে। এমনকি, যে ননদের ভয়ে জীবনে একটা কথাও বলতে পারতাম না, সে তার সাথে অনায়েসে ঝগড়া করে। যে আবির বলতো, আমার মা, বোনের মুখের উপর জীবনে কোন কথা বলবা না, সে দেখি নতুন বউ এর হয়ে বোনকে ধমকায় !

তিনটা মাস, তিনটা মাসেই আমি বুঝে গেলাম, আমি কত বড় গাধা ছিলাম। সারাজীবন শুধু সংসার ভেঙে যাবে, এই ভয়ে কম্প্রোমাইজ করে গেছি। কোনদিন নিজের অধিকার জোর করে আদায় করিনি। কোন দিন নিজের ভালো লাগার মূল্য দিইনি। নতুন বউকে আমার হিংসা হতো। এজন্য নয়, সে আমার স্বামীকে নিয়ে নিয়েছে। এজন্য যে, আমি কখনো তার মত করে পারিনি। আবিরের উপর রাগ হতো না, তীব্র রাগ হতো নিজের উপরে। কিভাবে আমি আমার জীবনের বাইশটা বছর নষ্ট করেছি, এই ভেবে।

যে সিদ্ধান্তটা অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল, দেরিতে হলেও সে সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললাম। অফিসিয়ালি ডিভোর্স আবিরকে দিলাম না। কারণ মনের সম্পর্কটাই যেখানে আর নেই, সেখানে কাগজের সম্পর্কে কি করবো ? কিন্তু সেপারেশন এর সিদ্ধান্ত নিলাম। মেঘলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো, তাই আমার পোস্টিং তদবির করে ঢাকাতে নিলাম। আবিরকে বলে এসেছিলাম, সে এবং তার পরিবারের কেউ যেনো কোনদিন আমার আর মেঘলার সাথে যোগাযোগ না করে। আবির এতদিন সে কথা রেখেছিল। কোনদিন যোগাযোগ করেনি। কিন্তু আজ পাঁচ বছর, তিনমাস, বারো দিন পরে হঠাৎ করেই বাসায় হাজির। সম্ভবত অফিস থেকে ঠিকানা জোগাড় করেছে।

অনেকক্ষণ হলো দুজনে চুপচাপ বসে আছি। শেষে আবিরই কথা শুরু করলো।

- কেমন আছো রেবা ?

- ভালো আছি। অনেক ভালো আছি। নিজেকে ভালোবাসতে শিখেছি। এরচেয়ে বড় পাওয়া, পৃথিবীতে আর কি থাকতে পারে ?

- মেঘলা কেমন আছে ?

- আলহামদুলিল্লাহ। মেঘলা অনেক ভালো আছে। দুই বছর আগে ওকে বিয়ে দিয়েছি আমার এক কলিগের ভাইপোর সাথে। ছেলেটা অসম্ভব ভালো। ওর পরিবারের সবাইও অসম্ভব ভালো। মেয়ে আমার সারাজীবনে যে সুখ পায়নি, এখন সে সুখ পাচ্ছে। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত মাসে আমাকেও বিদেশে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল ওরা। আলহামদুলিল্লাহ। ওরা সত্যিই অনেক সুখে আছে।

- মেঘলার বিয়ে দিলে, অথচ আমাকে একটা খবর দিলে না ? বাবা হিসাবে আমারও তো কিছু দায়িত্ব ছিল ?

- দিতে চেয়েছিলাম। মেঘলা ই না বলেছে। ছেলে পক্ষও সব জানতো, তাই সমস্যা হয়নি।

আবিরের মুখটা বেদনায় ছেয়ে গেল। আমি প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে বললাম,

- তোমার ছেলে কেমন আছে ?

- আমার ছেলে?! ও আচ্ছা। না, আমার আর কোন ছেলে মেয়ে হয়নি। আসলে তুলির বয়স কম ছিল বলে বাচ্চা নিতে চাইতো না।

- এখন তো বয়স হয়েছে । এখন নিয়ে নাও।

- গত মাসে তুলি আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।

- মানে ?!!

- আসলে ও একটা ছেলেকে পছন্দ করতো। ছেলেটা তখনও ভালো চাকরি বাকরি পায়নি দেখে ওর বাবা মা জোর করে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। ব্যাপারটা আমি জানতাম না। ঐ ছেলেটা এখন ভালো চাকরি পেয়েছে। তাই তুলি আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।

খুব করুনা হচ্ছিলো আবিরকে দেখে। কিন্তু ও যখন বললো, " রেবা, তুমি আমার সাথে যাবে ? ওটাতো তোমার ই সংসার " , তখন রীতিমত ঘেন্না লাগছিল। কাজের মেয়েকে ডেকে বললাম, " এই সাহেব কফি শেষ করলে, বিদায় দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিস। "

ভিতরের ঘর থেকে উঁকি দিয়ে দেখলাম, আবির কফি না খেয়ে মাথা নিচু করে বেরিয়ে যাচ্ছে।

©ডা. সুমনা তনু শিলা*

‘আপনাদের এখানে কম দামী কি খাবার আছে?’‘মেন্যুতে সবই আছে স্যার, আপনি বলেন কোনটা খাবেন?’রফিক মেন্যু কার্ডের দিকে মনযোগ দিয়ে...
02/12/2025

‘আপনাদের এখানে কম দামী কি খাবার আছে?’
‘মেন্যুতে সবই আছে স্যার, আপনি বলেন কোনটা খাবেন?’

রফিক মেন্যু কার্ডের দিকে মনযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে। তবে লেখা কিছুই বুঝতে পারছে না, সব ইংরেজিতে লেখা।

রফিক পড়াশোনা করেছে ক্লাস এইট পর্যন্ত। তারপর বাবা মা.রা যায় আর পড়াশোনা করা হয়নি।

ওয়েটারের দিকে মৃদু হেসে বলে, ভাই আপনি যান আমরা ঠিক করি কি খাবো তারপর ডাকবো কেমন?

ওয়েটার চলে যায়। রফিক পড়াশোনা না জানলেও মিনু পড়াশোনা জানে, ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে মিনু।

রফিক মিনুকে সাথে নিয়ে ইমরান আর মারিয়াকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছে।

মিনু মেন্যু কার্ড পড়ে। সবচেয়ে কম দামে এখানে একটা বার্গারের আইটেম আছে। মিনু ওয়েটারকে ডেকে দুইশো পঞ্চাশ টাকা দামের দুটো বার্গার ওর্ডার দেয়। ইমরান বলে, মা ঠান্ডা কিছু নিবে না? রফিক মিনুর দিকে তাকিয়ে বলে, ঠান্ডা দিতেও বলো। মিনু ওয়েটারের দিকে তাকিয়ে দুই গ্লাস কোমল পানীয় দিতেও বলে।

রফিক মনে মনে একটা হিসেব করে নেয় খাবার বিল কতো আসতে পারে।

ওয়েটার ওর্ডার নিয়ে চলে যাবে তখনই রফিক বলে, ভাই বার্গার দুটো না তিনটা দিবেন, আর ড্রিংকসও তিনটা দিবেন। ওয়েটার বলে, ঠিক আছে।

মিনু বলে, তিনটা বার্গার দিতে বললে কেন? রফিক বলে, একটা তুমি খাবে। এসব খাবার আমি খাই না তুমি জানো না? আজকে খেয়েই দেখো না।

রফিকের আজকে হাজার টাকা বাজেট ছিলো ছেলেমেয়েদের জন্যে। এতবড় রেস্টুরেন্টে এর আগে রফিকের কখনো আসা হয়নি। এবারই প্রথম। ভিতরে আসতে একটু ভয় ভয় লাগছে। সে ভয় এখনো কাটেনি, মনের ভিতরে অস্থির লাগছে।

ইমরান আর মারিয়াকে কথা দিয়েছে ঈদের পরেই এই রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়াবে। ইমরান এবার ক্লাস সেভেনে পড়ে, মারিয়া ক্লাস টেনে। ইমরানের এক বন্ধু আছে স্কুলে, ছেলেটার নাম সোহান। সোহানের বাবার গাড়ি আছে, সেই গাড়িতেই স্কুলে আসে। সোহান ইমরানের সাথে প্রায়ই দিন এই রেস্টুরেন্টের কথা বলে, সোহানরা নাকি এখানে মাঝেমধ্যে রাতে খাবার খায়। ইমরান অবাক হয়ে শুনে, সোহানদের ইচ্ছে হলেই দুপুরে রাতে প্রায়ই এখানে এসে খেয়ে যায়।

ইমরানের স্কুল থেকে বাসায় যাবার পথেই রেস্টুরেন্টটা। বাবাকে বেশ কয়েকবার বলেছে। তবে রফিকের এতোবড় রেস্টুরেন্টে যেতে ভয় লাগে। আর এতো টাকাও তার কাছে নেই। এবার ঠিক করেছে ঈদের পরেই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখানে আসবে।

মিনু একটা শাড়ি পরেছে, কপালে একটা টিপ দিয়েছে। মিনু অনেকদিন পরেই সেজেছে। এখন সবসময়ই ঘরে থাকে একটু কমই সাজে। বাহিরে তেমন বের হয় না, কখনো বিয়ের দাওয়াতে গেলে মিনু সাজে। এছাড়া সাজে না৷

প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিট পরে খাবার আসে, রফিক বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত। রফিক যেসব হোটেলে খাবার খায় পাঁচ মিনিট লেইট হলেই চিৎকার দিয়ে ডাকতে পারে, মিনু বলেছে এখানে নাকি তেমন করা যায় না। এমনই অপেক্ষা করতে হয়। মিনুর কথা অবশ্য ঠিক, এই যে রফিকের পাশের টেবিলে দুজন মানুষ সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে, ফিসফিস করে কথা বলছে। এই জগৎটা অন্যরকম, রফিকের ভালোই লাগে। টাকা থাকলে এখানে ছেলেমেয়ে আর মিনুকে নিয়ে প্রায়ই আসতো, কি অদ্ভুত সুন্দর আলো এখানে, ঠান্ডা বাতাস, সাথে গান চলছে।

ওয়েটার টেবিলে খাবার দেয়, টেবিল ভর্তি খাবার। রফিক বলে, মিনু তুমি যে খাবার দিতে বলেছো এই অল্প টাকায় এতো খাবার? মিনু ইমরান আর মারিয়াকে খাবার ধরতে দেয় না, রাগী চোখে তাকিয়ে খাবারে হাত দিতে নিষেধ করে।

রফিক বলে, কি হলো মিনু ওরা খাবে না?

মিনু বুঝতে পারে কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। এতো খাবার তারা ওর্ডার দেয়নি। কেবল তিনটা বার্গার দিতে বলেছে, তবে এখানে কয়েকরকমের খাবার আছে। হয়তো ভুল করে অন্য টেবিলের খাবার মিনুদের টেবিলে দিয়ে গেছে।

মিনু ওয়েটারকে হাত ইশারা দিয়ে ডাক দেয়। ওয়েটার ছেলেটা পাশে এসে দাঁড়ায়। মিনু বলে, ভাই দেখেন না এই খাবার তো আমরা দিতে বলিনি, ভুল করে আপনি অন্য টেবিলের খাবার আমাদের দিয়ে গেছেন। আমাদের শুধু তিনটা বার্গার ছিলো।

ওয়েটার ছেলেটা মৃদু হেসে বলে, ম্যাম আমি ভুল করে দেইনি। আপনাদের এক শুভাকাঙ্ক্ষী এই খাবারগুলো আপনাদের জন্যে ওর্ডার করেছেন।

রফিক বলে, কে সে? ওয়েটার ছেলেটা রেস্টুরেন্টের জানালার পাশে বসে থাকা একটা লোককে দেখিয়ে দেয়। রফিক লোকটার দিকে তাকিয়ে চিনবার চেষ্টা করে, প্রথমে চিনতে একটু কষ্ট হয় পরে চিনে ফেলে।

রফিকের স্কুলের বন্ধু মাহমুদ। রফিক মাহমুদের সাথে এইট পর্যন্ত পড়েছে, এরপর আর পড়াশোনা হয়নি। মাহমুদ এসএসসি পাশ করবার পরে অন্য এলাকায় চলে যায়, দুজনের জীবন আলাদা তাই দেখাসাক্ষাৎও হতো না। একবার স্কুলে মারামারি করে মাহমুদের কপালও ফাটিয়ে দিয়েছিলো রফিক, সেবার স্যার কি মাইরটাই না দিলো, বাসায় ফিরবার পরে রফিকের মা তাকে আবার মারলো। মাহমুদ সন্ধ্যাবেলা এসে রফিকের কাছে বলে, তোরে এভাবে মারবে বুঝলে বিচার দিতাম না। রফিক ফিক করে হেসে দিয়ে বলে, আমি তো তেমন ব্যথা পাইনি, তোর মাথা কেমন আছে এখন দেখি? রফিক মাহমুদের মাথায় হাত দিতেই, উহ করে উঠে।

কতোদিন মাহমুদকে দেখেনি তারপর, কলেজে থাকতে মাহমুদ পাশের এলাকায় থাকতো। তারপর শুনেছে মাহমুদ চট্টগ্রাম বিশব্বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে, এরপর থেকে কোনো খবর ছিলো না।

রফিক টেবিল থেকে উঠে মাহমুদের পাশে যায়। মাহমুদ রফিককে আসতে দেখেই বসা থেকে উঠে জড়িয়ে ধরে। মাহমুদ তার স্ত্রী এবং মেয়ের সাথে রফিককে পরিচয় করিয়ে দেয়। মাহমুদকে পেয়ে অবশ্য রফিক একটু শব্দ করে কথা বলছে, রফিক আসলে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

মাহমুদ স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে মিনুর সাথে পরিচয় হয়। রফিকের ছেলেমেয়ের সাথে পরিচয় হয়।

মাহমুদ যাবার আগে রফিকের সাথে কোলাকুলি করতে যেয়ে কানে কানে বলে, এখানের বিল আমি দিয়ে যাচ্ছি আর নাম্বারে কল দিস কেমন? রফিক কিছু বলতে পারে না।

মাহমুদ ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছিলো তখনই রফিককে দেখে, রফিক মাহমুদকে খেয়াল করেনি। কিন্তু দেখলো রফিক সবচেয়ে কমদামি খাবারের কথা বলছে তখনই মাহমুদের খারাপ লাগে। রফিকের টেবিল থেকে ওর্ডার নিয়ে ওয়েটার যাবার পরেই মাহমুদ রফিকদের জন্যে বাড়তি কিছু খাবার দিতে বলে দেয়।

মাহমুদ চলে যায়। ইমরান আর মারিয়া মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, মা এবার কি খাবার খাবো? মিনু বলে, হ্যাঁ শুরু কর এই খাবার আমাদেরই। রফিক তাকিয়ে দেখে হাসে, ইমরান আর মারিয়ার হাসিমুখ দেখে ভালো লাগে।

রফিক ছেলেমেয়ের সাথে বসে খাবার খায়। মারিয়া ইমরান সব খাবার খেয়ে শেষ করতে পারে না। মিনু বলে একটা পার্সেল করে দিতে, ওরা বাসায় যেয়ে খাবে। বাকি থাকা খাবার পার্সেল করে দেয়৷

রফিক রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে মিনু আর ছেলেমেয়েকে নিয়ে সিএনজিতে উঠে। মিনুকে রাস্তার পাশ থেকে ফুল কিনে দেয়, মারিয়া বায়না ধরে বলে, বাবা আমারও ফুল লাগবে। রফিক মেয়েকেও ফুল কিনে দেয়। সিএনজি চলছে, ছেলে মেয়ের সুখী মুখ দেখে রফিকের ভালো লাগে, মিনুকে আজকে বেশ খুশি লাগছে, বহুদিন পরে বাহিরে একসাথে সবাই ঘুরতে বের হয়েছে। ইমরান এবার তার বন্ধুর সাথে বলতে পারবে, এই রেস্টুরেন্টেে তারাও খেয়ে এসেছে, বাবা নিয়ে গেছে, ইমরান কয় রকমের খাবার খেয়েছে সব মনে রেখে দেয়।

ঢাকা শহরে আজকে জ্যাম নেই, সিএনজি চলছে৷ মিনুর চোখে ঘুম, ইমরান আর মারিয়া চুপচাপ বসে আছে। রফিকের গায়ে হাল্কা বাতাস লাগছে, আর বুকের ভিতরটা শীতল হয়ে উঠছে মিনুকে কিনে দেওয়া জুঁই ফুলের মালার ঘ্রাণ সে বাতাসে উড়ে নাকে লাগছে। গোটা শহরে মনে হয় এখন জুঁই ফুল ফুটে আছে। সুখের ঘ্রাণ কি জুই ফুলের মতো হয়? হয় হয়তো।

শহরে জুঁই ফুল
-মুস্তাকিম বিল্লাহ....

লেখক _ Mosthakim Billa

" কয়েকদিন ধরে টিকটকে ঢুকলেই সামনে আসতো এই ভিডিও টি হয়তো অনেকেই দেখেছেন , আজ সত্যটি জানলাম " তাই সামাজিক দায়দ্ধতা থেকে আপ...
02/12/2025

" কয়েকদিন ধরে টিকটকে ঢুকলেই সামনে আসতো এই ভিডিও টি হয়তো অনেকেই দেখেছেন , আজ সত্যটি জানলাম "
তাই সামাজিক দায়দ্ধতা থেকে আপনাদের জানাচ্ছি কারন AI দিয়ে ফেই'ক নাচের ভিডিও বানিয়েও মানুষ আপলোড দিচ্ছে!

ঢাকার যাত্রাবাড়ীর এক শ্রমজীবী দম্পতি তাদের সন্তানদের নিয়ে একটু ভালো থাকার আশায় ছয় মাস আগে মৃধাপাড়ার মোল্লাবাড়ি এলাকায় একটি দোতলা ভবনে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। বাবা লোহার কারখানার শ্রমিক, মা বাসার সামনে পিঠা বিক্রি করেন- স্বপ্ন ছিল সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করবেন।

কিন্তু এক নিমেষেই সব শেষ হয়ে যায়। ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারে পু'ড়ে অঙ্গার হয়ে যায় তাদের ১৩ বছরের আদরের মেয়ে খাদিজা। একই ঘটনায় দ'গ্ধ হয় আরেক কিশোরী খাদিজার বান্ধবী মরিয়মও (১৩)। আগু/নের লেলিহান শিখায় দ/গ্ধ হয়ে ১০ দিন মৃ/ত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে যায় মরিয়ম।

দুটি তরতাজা প্রাণ ঝরে যাওয়ার এই ঘটনাটি হয়তো শুধুই বাবা-মায়ের দু:স্বপ্ন আর অপ'মৃত্যুর ফাইলে বন্দি হয়ে থাকত। কিন্তু বাস্তবতা এর চেয়েও নিষ্ঠুর। সন্তান হারানোর দগদগে ক্ষতে নুনের ছিটা হয়ে বিঁধেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি গুজব- ‘টিকটক’।

সন্তানের পো/ড়া লা'শের গন্ধে যখন বাতাস ভারী, তখন ফেসবুকে ভাইরাল হলো একটি ভিডিও। আগুনের লেলিহান শিখায় দুই কিশোরী পুড়/ছে আর ভিডিওর ক্যাপশনে কেউ একজন লিখে দিল- “ছাদে টিকটক করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই কিশোরীর মৃ/ত্যু।”

অল্প কয়েকদিনের মধ্যে দাবা/নলের মতো ছড়িয়ে পড়ল এই মিথ্যা। হাজার হাজার শেয়ার, লাখ লাখ ভিউ। আর কমেন্ট বক্সে উপচে পড়ল ঘৃ/ণা , বিদ্বে/ষ আর উপহাস।
কেউ লিখলেন, “উচিত শিক্ষা হয়েছে”, কেউবা দিলেন বদদোয়া। অথচ তারা জানলেন না, পর্দার ওপারে সত্যটা কতটা করুণ।

অসহায় দুই বাবা-মায়ের শোকের সময়টুকুও কেড়ে নিল এই সাইবার গুজব। সন্তান হারানোর বেদনার চেয়েও এখন তাদের বড় যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে সমাজের মানুষের বাঁকা কথার জবাব দেওয়া। আত্মীয়-স্বজনরা জানাজায় এসে সান্ত্বনা দেওয়ার বদলে জানতে চাইছেন, ‘মেয়েরা কি সত্যিই ভিডিও বানাচ্ছিল?’

সেদিন বিকেলে আসলে যা ঘটেছিল :

৭ নভেম্বর বিকেলে ওই ভবনের দোতলায় ছাদের এক কোণায় থাকা পানির ট্যাংকির পাইপ বন্ধ করতে ছাদে যায় খাদিজা ও মরিয়ম। ওই ভবনের পাশে মাত্র দেড় থেকে দুই ফুট দূরত্বে রয়েছে উচ্চ ভল্টেজের এইচটি লাইনের খোলা তার। যেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আগুনে পুড়ে অকালে প্রাণ হারায় দুই কিশোরী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পরিবার এবং স্থানীয়দের বয়ানে উঠে এসেছে সেই বিকেলের প্রকৃত চিত্র। খাদিজার বাবা ফারুক গাজী তখন মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। মা লিপি বাসার নিচে পিঠার দোকান সামলাচ্ছিলেন। খাদিজা বিকেলের দিকে গোসল সারে। তার দীর্ঘ ভেজা চুল। গোসল শেষে মা ও ভাইয়ের কাজে সাহায্য করে সে। মায়ের পিঠার দোকানের হাড়ি-পাতিল নামিয়ে দিয়ে আসে।

লিপি বেগম অশ্রুভেজা চোখে বলেন, গোসলের পর ও আমার কাছে ফোনটা চাইছিল, আমি দেই নাই। একটু পর নিচে আইসা বলে, ‘আম্মু, ট্যাংকি দিয়া পানি পড়তাসে, আমি বন্ধ কইরা দেই?’ আমি না করছিলাম। কিন্তু ও মরিয়মরে নিয়া উপরে যায় পানি বন্ধ করতে। বাড়ির মালিকের অসচেতনতায় পানির ট্যাংকিতে কোনো অটো-স্টপ ব্যবস্থা ছিল না। ট্যাংক ভরে গেলে পানি উপচে পড়ত, আর সেই পানি বন্ধ করতে পাইপ ঘুরিয়ে দিতে হতো।

তিনি বলেন, ‘এর কিছুক্ষণ পরে একডা শব্দ হইল। দৌড়াইয়া গিয়া দেখি ছাদের অপর দাউ দাউ করে আ'গুন জ্ব'লতেছে। আমার মেয়ে ঝুলতাসে আর পুড়'তাসে। আমার কলিজাটা পুইড়া যাইতাছিল। আমি মা হইয়া কিছু করতে পারলাম না। কেউ গিয়া ধরল না। একটা বাঁশ দিয়া একটু ঠেলা দিলেও পইরা যাইতো, কিন্তু কেউ গেল না, আমারেও যাইতে দিল না। আমি এখন কারে নিয়া বাঁচমু? ঘরে এখনও ওর বই-গাইড পইরা আছে। এগুলা দেখলে বুক ফাইটা যায়।’

লিপি বলেন, আমার ফোনে টিকটক করা যাইতো না। ওই ফোন আমি কখনই ওরে দিতাম না। মাঝে মাঝে সাজুগুজু কইরা ছবি তুলতো-এইটুকুই। কিন্তু ঘটনার দিন আমার টাচ ফোন আর বাটন ফোন দুইটাই চুরি হইয়া গেছে। ওই ফোনে আমার খাদিজার ছবি আছিল। এখন আমার কাছে কোনো স্মৃতিও নাই মেয়ের।

তথ্যসূত্র :

আসলে এই দায়ভার কার?
এই অনিরাপদ অপরিকল্পিত নগরায়নে নিছক দূর্ঘ/টনা বলে চালিয়ে দেয়া হবে এভাবেই.....?

কি ভয়া/নক কষ্টের মৃ/ত্যু!!!
ছোট প্রান দুইটির আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
আমিন

©

⚠️ জরুরি: অনুগ্রহ করে পশ্চিম শান্তিবাগ জামে মসজিদ এলাকার কাছে শান্তিবাগে সতর্ক থাকুন ⚠️দুই দিন আগে, মানে শুক্রবার ভোর ৪:...
02/12/2025

⚠️ জরুরি: অনুগ্রহ করে পশ্চিম শান্তিবাগ জামে মসজিদ এলাকার কাছে শান্তিবাগে সতর্ক থাকুন ⚠️

দুই দিন আগে, মানে শুক্রবার ভোর ৪:৫০ মিনিটে, আমি শান্তিবাগে থাকা এক বন্ধুকে নামিয়ে দিচ্ছিলাম। তাকে নামিয়ে আমরা যখন এলাকা থেকে বের হচ্ছিলাম, তার বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচটি বিল্ডিং দূরে এসে একটি সংকীর্ণ তিন-মুখী মোড়ে পৌঁছাই—যা আমরা প্রতিবারই অতিক্রম করি।

ওই মোড়ে তিনজন লোক একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ তাদের একজন সরাসরি আমাদের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়, আর বাকি দু’জন তাকে অনুসরণ করে। প্রথমে আমরা বিভ্রান্ত হয়েছিলাম—এত রাতে তারা কী করছে? কিন্তু সামনে থাকা লোকটির দিকে তাকাতেই দেখি, তার হাতে বাম হাতে একটি চাপাতি এবং ডান হাতে একটি ইট। বাকি দু’জনের হাতেও অস্ত্র ছিল, কিন্তু তারা সেগুলো লুকানোর চেষ্টা করছিল।

পরিস্থিতি বুঝে আমরা ধীরে ধীরে গাড়ি রিভার্স করতে শুরু করি, কারণ রাস্তা খুবই সরু ছিল। ঠিক তখনই সামনে থাকা লোকটি চাপাতি তুলে আমাদের উইন্ডশিল্ডের দিকে ইশারা করে, আর তারা একটি ইট ছুঁড়ে মারে। সৌভাগ্যক্রমে আমরা শান্ত ছিলাম এবং ধীরে ধীরে রিভার্স করে নিরাপদ দূরত্বে চলে যাই।

কিন্তু এখানেই ঘটনা শেষ হয়নি। নিরাপদ জায়গায় গিয়ে গাড়ি থামিয়ে আমরা পিছনে তাকাই—তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, আমরাও তাদের দিকে। প্রায় ১০–১৫ সেকেন্ড এইভাবে তাকিয়ে থাকা চলে। এরপর তারা দেখে যে আমরা এলাকা ছাড়ছি না, তখন তিনজনই হঠাৎ দৌড়ে আমাদের গাড়ির দিকে আসতে শুরু করে। তখনই আমরা দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে আসি।

পরে স্থানীয় কিছু মানুষের সাথে কথা বলে জানতে পারি, গত সাত দিন ধরে এই ধরনের ছিনতাই চেষ্টা চলছে। যেদিন তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করতে চেয়েছিল, সেই রাতেই তারা আরও দুইজনকে নাকি লুট করেছে। আমরা ছিলাম তাদের শেষ টার্গেট।গাড়িতে প্রথমে আমরা পাঁচজন ছিলাম, আর বন্ধুকে নামিয়ে দেওয়ার পরও চারজন ছিলাম। তবুও তারা একটুও ভয় পায়নি বা পালানোর চেষ্টা করেনি। এত লোক দেখে তারা নির্ভীকভাবেই দাঁড়িয়ে ছিল—যা সত্যিই খুব উদ্বেগজনক।

আমি নিচে ড্যাশ-ক্যামের ভিডিও এবং তিনজন ছিনতাইকারীর ছবি শেয়ার করছি, যাতে সবাই সতর্ক থাকতে পারেন।

এটা অবশ্যই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

আমি আন্তরিকভাবে পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করছি—দয়া করে বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে দেখুন।সকলকে অনুরোধ, রাতে চলাফেরা করার সময় খুব সতর্ক থাকবেন।(আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ ভাবতে পারেন আমরা কেন সামনের দিকে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যাইনি। কিন্তু আমাদের যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তিনি আগে কখনো এই এলাকায় আসেননি। তিনি রাস্তাগুলো চিনতেন না—সোজা গেলে নিরাপদ নাকি ডানে গেলে নিরাপদ, কিছুই জানতেন না। তাই আমাদের খুব সতর্কভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।

- সাদমান ট্যুরস

তোমার রিজিক লেখা হয়ে গেছে, তুমি তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরের জিনিস নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করো আয়, সঙ্গী, সাফল্য এবং সুখ, স...
01/12/2025

তোমার রিজিক লেখা হয়ে গেছে, তুমি তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরের জিনিস নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করো আয়, সঙ্গী, সাফল্য এবং সুখ, সবকিছুই প্রায় এসে যাবে। তুমি তোমার দোয়ায় আত্মবিশ্বাসী হও!🖤

একাত্তর সালের অক্টোবর মাসের ঘটনা৷ খালের ওপাশে ভেড়ামারি গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প। একদিন তারা আবিষ্কার করল ১৪-১৫ ...
01/12/2025

একাত্তর সালের অক্টোবর মাসের ঘটনা৷ খালের ওপাশে ভেড়ামারি গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প। একদিন তারা আবিষ্কার করল ১৪-১৫ বছরের এক পঙ্গু ও পাগল কিশোরীকে। যার সারা গায়ে গোবর ও কাদা, মাথায় চুলের জট, কাপড়-চোপড় ছেঁড়া। অপ্রকৃতস্থ কিশোরী গোবর কুড়াচ্ছে ক্যাম্পের পাশে। পাকিস্তানীরা তাকে নিয়ে মজা নিতে লাগল, গালাগাল করল, এটা-ওটা বলে ক্ষেপিয়ে তুলল। কিশোরীও ইচ্ছেমতো গাল দিলো ওদের, কিছুক্ষণ ক্যাম্পের আশপাশ ঘুরে বেড়ালো, গোবর কুড়ালো, তারপর চলে গেল।

রাত্তিরে খালের এপাশে থালিয়াভাঙ্গায় ক্যাম্প করে লুকিয়ে থাকা মুক্তিবাহিনীর নিখুঁত আক্রমণে পাকিস্তানি ক্যাম্প উড়ে গেল। পাকিস্তানিদের জানা হলো কিনা কে জানে- সকালবেলা যে অপ্রকৃতস্থ কিশোরী গোবর কুড়াতে এসে গালাগাল করে গেল ওদের, ওই কিশোরী অপ্রকৃস্থ নয়, তিনি ক্যাম্পের সৈন্যসংখ্যা ও অস্ত্রশস্ত্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে এসেছিলেন। তিনি পাগল নন, তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের তিনজন বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ নারী মুক্তিযোদ্ধার একজন। তার নাম, তারামন বিবি। প্রকৃত নাম, তারাবানু।

যুদ্ধের পর এই অসীম সাহসী নারী আড়ালে চলে যান। বাইশ বছর পর তার সন্ধান মেলে। ততদিনে তিনি বিয়ে করে সংসার করছেন। সংসারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। এত বছর সংসার করা তার স্বামীও জানেন না, তার স্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তারাবানু কখনো বলেন নাই।

যুদ্ধশেষে তারামন ফিরে গিয়েছিলেন তারাবানুতে। যিনি আগেও ছিলেন তারাবানু, পরেও তারাবানু; মাঝখানে নয়মাসের জন্য ধারণ করেছিলেন তারামন, ধারণ করেছিলেন রণাঙ্গন, মা যেমন ধারণ করে তার সন্তান; আর বুকে মাইন বেঁধে মাতৃভূমির জন্য ছিনিয়ে এনেছিলেন টকটকে লাল সূর্য।

আজ তারামন বিবির সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী। জননী, তোমারে সালাম।

লেখাঃ Shakhawat Hossen

৮/১০ লাখ টাকা গোপনে জমিয়ে রাখার পরও কিছু মানুষের মুখে শুনবেন এদের তারকারী রান্না করার মত পেঁয়াজ-মরিচ নাই,গোসল করার মত সা...
01/12/2025

৮/১০ লাখ টাকা গোপনে জমিয়ে রাখার পরও কিছু মানুষের মুখে শুনবেন এদের তারকারী রান্না করার মত পেঁয়াজ-মরিচ নাই,গোসল করার মত সাবান নাই।

রুই মাছের পেটি দিয়ে ভাত খেয়ে উঠেও বলবে পুঁইশাকের পাতলা ঝোল দিয়ে ভাত খেয়েছে।

সকাল ১০ টায় বলবে টাকার অভাবে বাজার থেকে ১ কেজি আলু আর ২ লিটার সয়াবিন তৈল কিনতে পারেনি,কিন্তু দুপুর ২ টায় শুনবেন ৫ লাখ টাকায় ২ শতক জমি কিনে দলিল করে ফেলছে।

এইদিকে শুনবেন কমদামী গজ কাপড় কিনে পোশাক তৈরী করে শরীরে দেয়ার ক্ষমতা নেই অথচ ঠিকই ৯০ হাজার টাকার স্বর্ণের চুড়ি বানিয়ে চালের ড্রামে কাপড় পেঁচিয়ে চালের নীচে রেখে দিয়েছে।

যাঁরা সহায় হয়েও অসহায়ের ভান করে এদের চেয়ে ভয়ংকর কিছু নেই।

©-Mafroja Mili

চেয়ারম্যান সাব, সালাম নেন। আমি উত্তর পাড়ার রমজান ব্যাপারীর পোলা কুদ্দুস ব্যাপারী। আপনার শরীর কেমন? আমি প্রচণ্ড বিরক্তি ন...
01/12/2025

চেয়ারম্যান সাব, সালাম নেন। আমি উত্তর পাড়ার রমজান ব্যাপারীর পোলা কুদ্দুস ব্যাপারী। আপনার শরীর কেমন?

আমি প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে প্রতিবার উত্তর দেই ভাই এটা আপনাদের চেয়ারম্যান সাবের মোবাইল নাম্বার না। এটা অতি সাধারণ আমার মোবাইল নাম্বার। তারপরেও আপনি সালাম দিয়েছেন। আমি সালাম নিয়েছি। এইবার সঠিক নাম্বারে ফোন দেন।

কিন্তু আজকের ঘটনা ভিন্ন। যখন সে বললো

চেয়ারম্যান সাব আপনার জন্য আমার স্ত্রী রসের দুধ পুলি পিঠা বানাইছে। তার সঙ্গে আরো বানাইছে পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, ক্ষীর পুলি, নকশী পিঠা। আরো কত পিঠা যে বানাইছে। আপনি কইলেই আমি নিয়া আসুম।

আমার জিভ দিয়ে জল পড়ছে। আমি আর লোভ সামলাতে পারলাম না

শুন। আমারতো ডায়াবেটিস। তুই এক কাজ কর। এইসব পিঠা ঢাকায় আমার ভাইয়ের বাসায় পাঠিয়ে দে।

চেয়ারম্যান সাব আপনার লাইগা বউ শখ কইরা বানাইছে।

আরে আমার ভাইয়ের খাওয়ন আর আমার খাওয়ন একেই কথা। শুন ওর হাসের মাংস, আর ছিট পিঠাও পছন্দ। দেখ সেগুলো পাঠাইতে পারিস নাকি?

নেতা এটা আপনি কি কইলেন। সেটা পারবো না মানে। এখনি আমি রাজহাঁস এবং ছিট পিঠার ব্যবস্থা করতেছি। চেয়ারম্যান সাহেব খালি একটু আমার দিকে নেক নজর রাইখেন। সুলতানপুর বাজারের ইজারাটা আমারে দিয়েন।

এটা কোন ব্যাপার না। তুই চিন্তা করিস না। আমি ভাবতেছি বাজারের নাম পরিবর্তন করে তোর নামে বাজার কইরা দিমু। কুদ্দুস ব্যাপারীর ছিট বাজার।

নেতা ছিট বাজার মানে?

আরে তুই আমার ভাইরে ছিট পিঠে খাওয়াচ্ছিস না। তার জন্য বাজারের নাম ছিট বাজার। দেখবি ছিট বাজার হবে হিট বাজার। বাজারে সন্ধ্যায় পুতুল নাচের ব্যবস্থা করবি।

উস্তাদ আপনার পায়ের ধুলা নিমু।

শুন তাড়াহুড়া করিস না। হাসের মাংস আমার ভাইরে পাঠা দেখি হে কি কয়। দেখি তোর ছিট পিঠা ঠিক আছে কিনা তারপরে ছিট বাজার তোর। আমি তোরে আমার ভাইয়ের এড্রেস ম্যাসেজ করতেছি।

তারপরের দিনই আমার বাসায় নানান ধরনের পিঠা আর হাসের মাংস উইথ ছিট পিঠা উপস্থিত। নীলার চক্ষু চড়কগাছ। এগুলো কে পাঠিয়েছে? তোমার কোন পুরাতন প্রেমিকা?

কি যে সব বলো না। জীবনে তুমি ছাড়া কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকালামই না আবার পাঠাবে আমাকে পিঠে। এসব আমার ভক্ত পাঠিয়েছে। তুমি আমার গল্পের দাম দাও না। কিন্তু দেশ জুড়ে আমার গল্পের অনেক দাম।

কিন্তু লিখেছে চেয়ারম্যান সাবকে ভালবাসা।

আরে বোকা মেয়ে এটা হচ্ছে হৃদয়ের চেয়ারম্যান। ভক্তদের ভালবাসা তুমি বুঝবে না।

দিনগুলো ভালোই চলছে।

চেয়ারম্যান সাব মনে করে অনেকেই আমাকে ফোন দেয়। তাকেই কিছু না কিছু কাজ ধরিয়ে দেই।

চেয়ারম্যান সাব শরীর ভালা? আমি রশীদ ভূঁইয়া। ভূঁইয়া সেনেটারির মালিক।

হুম কেমন আছিস? সেনেটারি ব্যবসাতো ভালোই চলছে।

আপনার দোয়ায়। আপনার একটু খেদমত করবার চাই চেয়ারম্যান সাহেব।

খেদমত। আমার খেদমত লাগতো না। শুন আমার ভাই থাকে ঢাকায়। তার অনেকদিনের শখ পুকুরের তাজা মাছ খাইবো। ঢাকায় তাজা জিনিস পায় না। নদীর ইলিশ খুব পছন্দ।

চেয়ারম্যান সাব কোন চিন্তা করবেন না। কালকেই পুকুরের তাজা মাছ এবং নদীর ইলিশ পাঠাইতেছি। আমারে কিন্তু এইবার বিশ্ব সুন্দরী মহিলা কলেজের সভাপতি বানান লাগবো।

এটা কোন ব্যাপার না। তুই হবি বিশ্ব সুন্দরী কলেজের সভাপতি বিশ্ব সুন্দর। দেখি তোর একটা ছবি হোয়াটস আপে পাঠা।

ছবি দেখে আমি আঁতকে উঠি। ছোটবেলায় আলিফ লায়ালার সেই দৈত্যটার মত লাগছে।

চেয়ারম্যান সাব ছোটবেলায় আমার মা আমার মাথায় কালো টিপ লাগিয়ে দিতো যেন নজর না লাগে।

তোর মা উচিত কাজ করছে। তোর যদি আরো নজর লাগতো তাইলে তোরে ডাইনোসর প্রজাতি থেকে আলাদা করা যাইতো না। শুন তোরে কলজের সভাপতি বানাই দিমু। কিন্তু একটা রিকোয়েস্ট। তুই মাস্ক পইড়া কলেজ যাবি। যেন সুন্দরীরা তোরে নিয়ে টানাটানি না করে।

উস্তাদ এটা ভাল কইছেন। সুন্দরী কলেজের সভাপতি হইলেও আমারে নিয়ে ছুদুর ভুদূর চলতো না। আমি খালি একটা মাইয়ারে বিয়া করতে চাই। আমার এখনো শাদী হয় নাই।

শুন বিয়ে করলি মোটা চশমার মেয়ে বিয়ে করবি। যেন চশমা খুললে কিছু না দেখে।

নেতা বুঝলাম না মোটা চশমার মেয়ে বিয়ে কইরা কি হবে।

আরে বোকা মোটা চশমার মেয়েরা লক্ষ্মী বউ হয়। শাস্ত্রে আছে

মোটা চশমা তবং
ভালো বউ হবং

নেতার জয় হউক।

কিন্তু ঘটনা প্যাচ খেয়েছে অন্য জায়গায়। এক মহিলা ফোন করে আমাকে জিজ্ঞেস করছে

চেয়ারম্যান সাব।

হ!!!

আমি রুখসানা। কেমন আছেন?

হুম ভালা আছি। কোন রুখসানা?

আরে আমারে ভুইলা গেছেন। আমি উত্তর পাড়ার রুখসানা। যারে আপনি দেখতে আসতেন। আমার নাচ দেইখা কইতেন মাধুরীর নাচতেছে। ঐ যে আপনার পছন্দের গান।

চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়
চুনারি কা নীচে কেয়া হ্যায়
কুক কুক কুক কুক

বাহ বাহ বেশ বেশ। কুক কুক করতে করতে মুরগী রান্না করে ফেলো রুখসানা। দেখবো তোমার মুরগী রান্নার হাত কেমন।

বদের হাড্ডি চেয়ারম্যান। আমি তোর বউ টিয়া। আমি আগেই সন্দেহ করছিলাম তুই অন্য নাম্বার দিয়ে রুখসানার লগে চালাস। রুখসানার হাতে মুরগি খাবি। আমার লোকজন আমারে ঠিক তথ্যই দিয়েছে। ঢাকায় তোর আরেক বউ আছে। যার জন্য তুই পিঠা, হাসের মাংস, মাছ পাঠাস। রুখসানা মনে হয় ঐ বাসায়। দাড়া আমি কালকেই ঢাকায় আসতেছি।

তোর

চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়
আর চুনারি কি নীচে কেয়া হ্যায় বের করতেছি।

আমার গলা শুকিয়ে কাঠ। নীলাকে ডাক দিলাম। জামা কাপড় গোছাও।

নীলা অবাক হয়ে

কেন কি ব্যাপার?

আমরা কক্সবাজারে কয়েকদিন গিয়ে লুকিয়ে থাকবো।

মানে কি?

আরে মানে হচ্ছে এই যে পৃথিবীর এত সমস্যা, এত জটিলতা। এত সমস্যাকে দূরে ঠেলে আমরা কিছুদিনের জন্য দ্বীপান্তরি হবো । আমরা হবো দুজন শুধু দুজনার। যেখানে থাকবে না আর কেউ।

হঠাৎ কেন?

তুমি না বলো আমি জীবনে তোমাকে সারপ্রাইজ দেই না। এই যে এখন সারপ্রাইজ দিচ্ছি। এখন তোমার এত প্রশ্ন। তাড়াতাড়ি তৈরি হও। নাহয় এর চাইতে বড় সারপ্রাইজ কাল এসে উপস্থিত হবে।

©আমিনুলের গল্প সমগ্র*

পিচ্চি ট্রেনের ট্যাঙ্কিতে প্রসাব করছে।বিষয়টা খুব অদ্ভুত — যা এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশনে চাক্ষুষ দেখতে পাই। এ নিয়ে বিস্...
30/11/2025

পিচ্চি ট্রেনের ট্যাঙ্কিতে প্রসাব করছে।
বিষয়টা খুব অদ্ভুত — যা এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশনে চাক্ষুষ দেখতে পাই। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার। যখন এই দৃশ্যটা দেখি, তখন খুব হতবাক হয়ে পাশে থাকা বন্ধুকে জানাই। অবাক করার মতো বিষয়টা দেখে প্রথমে দু’জনেই হেসে ফেলি। ততক্ষণে মনে হলো, একটা ছবি তোলার দরকার আছে। কিন্তু তখনই তার মূত্রত্যাগ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল।

হতবাক হয়েছি কারণ — ট্রেনের পানি দিয়ে আমরা কত কিছুই করি! কেউ টয়লেটে ব্যবহার করে, কেউ ফ্রেশ হওয়ার জন্য, অনেকেই তো অজু পর্যন্ত করে।

তাহলে কেন এমনটা করে?
আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এই নিম্নশ্রেণীর অসহায় মানুষগুলো (এক্ষেত্রে শিশু) আমাদের পুঁজিবাদী সমাজের প্রতি ক্ষুব্ধ। আমাদের উচ্চাভিলাষী জীবনযাপনই তাদের টোকাই শ্রেণীতে নামিয়ে এনেছে।

---

মূল ঘটনা:

২ অক্টোবর ২০২৫।
ঢাকা থেকে রংপুরে আসার জন্য “রংপুর এক্সপ্রেস” ট্রেনের অপেক্ষায় আছি। ট্রেন তার সিডিউল বারবার পরিবর্তন করছে। সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রেনটি দুপুর দেড়টায় বিমানবন্দর স্টেশনে আসে।

৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের আশেপাশে আমি ও হৃদয় খুবই বিরক্তিকর সময় পার করছি। ৯টা থেকে ১০টা ৩০ পর্যন্ত ট্রেন আসার নাম নেই, অথচ অন্যান্য ট্রেন ঠিকঠাকভাবে আসছে। এর মধ্যে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। দিনটা সব মিলিয়ে খুবই শান্তশিষ্ট — রোদ নেই, জোরে বৃষ্টি নেই, বাতাসও প্রায় নেই। অলস সময় পার করার জন্য যেন একেবারে উপযুক্ত দিন।

আশেপাশের অনেকেই তাদের ট্রেনে উঠে চলে যাচ্ছে। আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছি, কিন্তু ট্রেন আসার কোনো নাম নেই। ৯টা পেরিয়ে ১০টা ৩০, তারপর ১১টা — ততক্ষণে একটু রোদ উঠেছে। এমন সময়কার রোদে চোখ খোলা রাখা যায় না, বিরক্ত লাগে। তাছাড়া এমন রোদে আমার গা চুলকায়।

সে যাই হোক, প্রায় ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে একটা ট্রেন এলো — কিন্তু সেটা আমাদের “রংপুর এক্সপ্রেস” নয়।

দীর্ঘ অপেক্ষায় বিরক্ত লাগছে। তাই সদ্য আসা ট্রেনটির দৈর্ঘ্য বরাবর হাঁটাহাঁটি করছি। এমন সময় হঠাৎ দেখি, ট্রেনের ছাদে এক ছেলে হাঁটছে।

তার হাঁটার ভঙ্গি এতটাই স্বাভাবিক যে দেখে মনে হয়, কোনো উচ্ছ্বল জমিদার শ্রেণির লোক শখ করে বাগানবাড়িতে হাঁটছে।
জীর্ণ চেহারা, ময়লা শার্টের সাথে ম্যাচিং করে পরেছে অনেক পকেটওয়ালা প্যান্ট — । এলোমেলো চুলগুলো সে বারবার হাত দিয়ে নাড়ছিল। দেখে আমার নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ল।

তবে ছেলেটার পায়ে স্যান্ডেল নেই দেখে অবাক লাগল — গরম ট্রেনের ছাদে সে কিভাবে নির্দ্বিধায় হাঁটছে? আমার ধারণা, ট্রেনের ছাদ স্টিলের হয়। জানি না, হয়তো এক ঘণ্টার রোদে এতটা গরম হয়নি, অথবা ছাদের নিচে পানির ট্যাঙ্কি থাকার কারণে অতটা উত্তপ্ত হয় না।

আমার ব্যক্তিগতভাবে এখনো কখনো ট্রেনের ছাদে ওঠার অভিজ্ঞতা নেই।

ছেলেটার হাঁটাচলা আমি নিবিড় মনোযোগ দিয়ে দেখছিলাম। সে হয়তো কল্পনাও করতে পারবে না, কেউ একজন এত আগ্রহ নিয়ে তাকে দেখছে।

হঠাৎ দেখি, সে হাঁটতে হাঁটতে এক জায়গায় থেমে গেল। এমন অবলীলায় চলা ছেলেটা হঠাৎ থমকে দাঁড়ালো — দেখে কৌতূহল আরও বাড়ল। কিন্তু “বেশি আশা, আল্লা গোশা” — ঠিক তাই হলো!

সে আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে প্যান্টের হুক খুলে দিল! কিছুই আন্দাজ করতে পারছি না — ভাবলাম হয়তো প্যান্ট ঠিক করছে। পরক্ষণেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল, এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গোপনাঙ্গ বের করে ফেলল।

আমি হতবাক! ভাবছি — এটা কি আমাকে দেখানোর জন্য করছে নাকি? কিন্তু আমি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, সেখান থেকে ওর পক্ষে আমাকে দেখা সম্ভব নয়। তাছাড়া এতো মানুষের ভিড়ে সেটা একেবারেই অসম্ভব।

উত্তর অবশ্য সে নিজেই দিল — মূত্র বিসর্জন করে।

অস্পষ্টভাবে খেয়াল করলাম, নানা ভঙ্গিতে ওর গোপনাঙ্গ এদিকে-সেদিকে দোলাচ্ছে, আর ঠিক ছাদের ট্যাঙ্কির মুখ বরাবর ওয়াটার গানের মতো তাক করে প্রস্রাব করছে!

হতবাক হয়ে হৃদয়কে ডাকলাম। ওর চোখে সমস্যা — দূরের জিনিস কম দেখে। তখন মনে হলো ক্যামেরা থেকে জুম করে ছবি তুলি।
একটাই ছবি তোলা হয়েছে। ছবি তোলা শেষ হতেই তার মূত্রত্যাগও শেষ। পরক্ষণেই সে দৌড়ে কোথায় গেল, কে জানে!

ওই দিন থেকে আজ পর্যন্ত বিষয়টা মাথায় ঘুরছে। তাই ফেসবুকে ঝেড়ে ফেললাম।

---

অবশেষে আমাদের ট্রেন এলো।
ট্রেনে উঠে দেখি, আমার সিটে এক হুজুর বসে ঘুমাচ্ছেন।
কাউকে ঘুমাতে দেখলে আমার খুব মায়া লাগে। যেন অর্ধমৃত কোন এক জীবন্ত লাশের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করি। কিন্তু অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর এখন বসাটা খুব প্রয়োজন। তাই হুজুরকে ডেকে তুললাম।

ঘুম থেকে উঠে তিনি বড় বড় লালচে চোখে আমাদের দিকে তাকাচ্ছিলেন — যেন হঠাৎ মদিনা থেকে বাংলাদেশের ট্রেনে নেমে পড়েছেন!

হৃদয় বলল, “ওটা আমাদের সিট, ছাড়তে হবে।”
পরক্ষণেই তিনি ফোন খুঁজতে শুরু করলেন। ট্রেনের সকেটে তার চার্জার প্লাগ ইন করা, কিন্তু ফোন নেই।

তিনি প্রথমবার কথা বললেন —
“আমার ফোন কই? চার্জারে লাগানো ছিল তো!”

তার মুখ থেকে ভারি জর্দার গন্ধে মাথা ঘুরছে আমার।
ওদিকে হৃদয় বিরক্ত হয়ে তাকে উঠিয়ে দিয়ে নিজে বসে পড়ল।

আমি আমার ফোন থেকে কল দিলাম। প্রথমে রিং হলো উনার বাটন ফোনে, কিন্তু হারিয়েছে স্মার্টফোনটা।

তিনি বললেন, তিনি একজন প্রতিবন্ধী, টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠেছেন — এখন ফোনটা পাওয়ার উপায় কী?
তার অসহায় কথাগুলো যতটা খারাপ লাগছে, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি খারাপ লাগছে জর্দা মেশানো পান খাওয়ার দুর্গন্ধটা।

অবশেষে বুদ্ধি দিলাম — রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। তিনি করেছেন কিনা জানি না, তবে আবার এসে আমার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে ভ্যানভ্যান করতে শুরু করলেন।

এক পর্যায়ে আমি নিজেই ট্রেন পুলিশকে জানালাম —
“এই ভদ্রলোক যেন আমার মাথার উপর এভাবে না দাঁড়ান!”

লেখা ও ছবি সংগৃহীত।

আমাদের বাঙালি সমাজে একটা অলিখিত নিয়ম আছে—কাউকে সম্মান জানাতে হলে তাকে খাওয়াতে হবে, এবং সেই খাওয়ানোটা হতে হবে রাজকীয়। টেব...
30/11/2025

আমাদের বাঙালি সমাজে একটা অলিখিত নিয়ম আছে—কাউকে সম্মান জানাতে হলে তাকে খাওয়াতে হবে, এবং সেই খাওয়ানোটা হতে হবে রাজকীয়। টেবিলে যদি খাবারের পদের সংখ্যা গোনার মতো অবস্থায় থাকে, তবে ধরে নেওয়া হয় মেহমানদারিতে ঘাটতি রয়ে গেল।

ছোটবেলার একটা দৃশ্য আমাদের সবার খুব চেনা। বাড়িতে মেহমান এসেছে মানেই রান্নাঘরে হুলুস্থুল কাণ্ড। মা-চাচিরা ঘর্মাক্ত শরীরে আগুনের তাপে দাঁড়িয়ে একের পর এক পদ রান্না করছেন। মেহমানের প্লেটে জোর করে আরেক চামচ মাংস তুলে দেওয়াতেই যেন সব তৃপ্তি। আমরা বড় হয়েছি এই বিশ্বাস নিয়ে যে—"কাউকে খাওয়ানোই হলো ভালোবাসার চূড়ান্ত প্রকাশ।"

কিন্তু রিসেন্ট একটা বিষয় দেখে একটু ভাবতে বাধ্য হলাম। আমার খুব পরিচিত ট্রেইসি ফ্লিন, পেশায় নার্স ভদ্র মহিলা। বেশ ব্যস্ত এবং ধনী। প্রতি ঘন্টায় তার পারিশ্রমিক ৮০ ডলার, আর ওভারটাইমে ১২০ ডলার করে। কদিন আগে তাঁর বোনের ছেলে (Nephew) বেড়াতে এলো তাঁর কাছে বয়স ১২-১৩। আমি আশা করছিলাম, টেবিলে হয়তো খাবারের মেলা বসবে। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম, তিনি রান্নাবান্নায় খুব একটা সময় নষ্ট করলেন না। খাবারের মেন্যু ছিল ক্যান ফুড একবেলা, কোন বেলায় ভুট্টা সিদ্ধ বা মিষ্টি কুমড়া বেইকড বা বেইকড মুরগী। খাবার দেখে অজান্তে জাজ করলাম, কেমন খালা সে হতাশ হলাম, আর একটু বিরক্তও হলাম।

কিন্তু যেটা লক্ষ্য করলাম, তিনি সেই ছেলেটাকে নিয়ে লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ছেন, তাকে নিয়ে বাইরে ক্যাম্পিং-এ যাচ্ছেন, তাকে শেখাচ্ছেন কীভাবে মানুষের সাথে সুন্দর করে কথা বলতে হয়, কীভাবে নিজের কাজ নিজে করতে হয়। তিনি তাকে 'খাবার' দিলেন না, দিলেন তার জীবনের সবচেয়ে দামী সম্পদ—'সময়'।

এই ঘটনাটি আমাকে আমাদের সমাজ, অর্থনীতি এবং মনস্তত্ত্ব নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করল।

কেন আমরা খাবারকে এত গুরুত্ব দিই? এর পেছনে একটা ঐতিহাসিক এবং অর্থনৈতিক কারণ আছে আমার ধারনা। আজকে থেকে ৬০-৮০ বছর বা আমাদের দাদী-নানীদের যুগে ফিরে তাকালে দেখব, তখন এই অঞ্চলে খাবারের অভাব ছিল প্রকট। যখন কোনো জিনিস সমাজে কম থাকে, তখন সেটাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে দামী উপহার। সেই অভাবের দিনে মেহমানকে নিজের ভাগের খাবারটুকু দিয়ে আপ্যায়ন করাটাই ছিল ভালোবাসার চূড়ান্ত নিদর্শন। আমাদের ডিএনএ-তে সেই স্মৃতি গেঁথে আছে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে—যাদের অভাব নেই, সেই বিত্তবানরাও কেন ভুরিভোজের আয়োজন করেন? আমরা প্রায়ই দেখি, সমাজের ধনী ব্যক্তিরা বা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিতরা মেহমান এলে টেবিল ভাসিয়ে দেন। তাদের তো আর অভাব নেই। তাহলে তারা কেন এটা করেন?
এখানেই আমার দ্বিতীয় হাইপোথিসিস। এই স্তরে এসে খাবার আর 'খাদ্য' থাকে না, এটা হয়ে যায় 'স্ট্যাটাস' বা 'সম্মান'-এর প্রতীক। একজন ধনী ব্যক্তি যখন আপনাকে ২০ পদের খাবার পরিবেশন করেন, তিনি অবচেতনভাবে দুটি বার্তা দেন: ১. আমার সামর্থ্য আছে (Status)। ২. আপনি আমার কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনার জন্য আমি এই বিশাল আয়োজন করেছি (Importance)।

অর্থাৎ, আমরা "মানুষের গুরুত্বকে" (Importance of a person) "খাবারের পরিমাণের" সাথে জুড়ে দিয়েছি। আমরা ভাবি, মেহমানকে যত বেশি খাওয়াব, তাকে তত বেশি সম্মান জানানো হবে। খাবার এখানে পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য নয়, বরং সামাজিক অবস্থান জাহির করার এবং সম্মান দেখানোর একটা টুল হিসেবে কাজ করে।

কিন্তু আসল পরিবর্তনটা কোথায় দরকার? আমরা যে যুগে বাস করছি, সেখানে অনেকের কাছেই এখন খাবার সহজলভ্য। কিন্তু এখন আমাদের সমাজে সবচেয়ে বড় অভাব বা Scarcity কিসের জানেন? সেটা হলো 'সময়' এবং 'মানবিক সংযোগ' (Human Interaction)।

আমার সেই পরিচিত আপা এই সত্যটা ধরতে পেরেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন, তাঁর নেফউকে দামী পোলাও-কোর্মা খাওয়ালে হয়তো সাময়িক তৃপ্তি হবে, বা লোকে বলবে "ইশ, কত খাওয়াল!"। কিন্তু তাতে শিশুটার মানসিক বা বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো বিকাশ হবে না।

এর বদলে তিনি যখন তাকে নিয়ে বই পড়েন, জীবনের গল্প বলেন, প্রকৃতির কাছে নিয়ে যান—তখন তিনি তাকে এমন কিছু দেন যা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। তিনি তাকে তৈরি করছেন একজন ভালো মানুষ হিসেবে। তিনি 'খাবার' নামক সহজলভ্য বস্তু দিয়ে নয়, বরং নিজের 'সময়' নামক দুষ্প্রাপ্য সম্পদ দিয়ে তাকে সম্মান জানাচ্ছেন।

সভ্যতার সাথে সাথে 'দামী' জিনিসের সংজ্ঞা বদলায়। একসময় যা ছিল এক থালা ভাত, আজকের যান্ত্রিক যুগে তা হলো—কারো চোখের দিকে তাকিয়ে নিবিড়ভাবে দুটো কথা বলা।

তাই বলে কি অতিথিকে খাওয়াব না? অবশ্যই খাওয়াব। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, অতিথিকে কেবল দামী খাবার দিয়ে পেট ভরানোই আতিথেয়তা নয়। বরং রান্নার ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে এসে, ড্রইংরুমে বসে তার সুখ-দুঃখের খবর নেওয়া, তাকে কিছুটা কোয়ালিটি সময় দেওয়া—এটাই হয়তো আজকের দিনের আধুনিক এবং শ্রেষ্ঠ আতিথেয়তা।

দিনশেষে, আপনি মানুষকে কী খাওয়ালে তা হয়তো সে ভুলে যাবে, কিন্তু আপনি তাকে কেমন অনুভব করালেন—সেটা সে মনে রাখবে। আর কাউকে 'স্পেশাল' অনুভব করানোর জন্য এক টেবিল খাবারের চেয়ে, এক বিকেলে আন্তরিক সঙ্গ অনেক বেশি শক্তিশালী।

©~ Rubayet Rahman Rongon

Address

Lalbagh Dhaka
Fulbaria

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Prettiness By Sadia posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Prettiness By Sadia:

Share

Category