
01/08/2025
মাহরীন ফেরদৌসের 'জলজ লকার' পড়ে শেষ করলাম। এই মাসে বেশকিছু বই পড়ে শেষ করেছি। এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের খবর। সাধারণত আমি এক মাসে দুটো কি তিনটার বেশি পড়তে পারি না। তার ওপর গত এক দু মাস অবস্থা আরো খারাপ। কারণ, আমি এখন ব্যস্ত জীবন পাড় করছি। এত কিছুর মধ্যেও যে, বই পড়তে পারছি, এটাই আমার জন্য আনন্দের, খোসা নসিবের।
যা-ই হোক, যতটা আগ্রহ নিয়ে এই বইটা পড়া শুরু করেছিলাম তা শেষ অবধি ধরে রাখতে পারি নি। এর কয়েকটা কারণ আছে। আমার কাছে সবচেয়ে বড়ো কারণ মনে হয়েছে, এই বইয়ের পর্বগুলো। উপন্যাস সাধারণত এই টাইপের হয় কিনা আমি জানি না। অন্তত, আমি যতগুলো উপন্যাস পড়েছি, সেগুলো একটাও এই টাইপের নয়। আমি প্রথমে মনে করেছি, এটা সম্ভবত কোনো গদ্যের বই! অথচ, প্রকাশক বলছেন, উপন্যাস!
তারপর শেষ দিকে মোটামুটি বুঝলাম, এটা একটা উপন্যাসই বটে। গল্পটা শুরু হয় হাসিবের আত্মহত্যা দিয়ে। সে একজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। ক্লাসে ফার্স্ট বয়। তবে যত যাই করুক, বাংলা আর ইংরেজিতে তারার কম নাম্বার পেত। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তারা কে? তারা হলো এই উপন্যাসের ম্যান ক্যারেক্টার। আচ্ছা, গল্পে আসা যাক। হাসিবের আত্মহত্যা নিয়ে বেশ রহস্য সৃষ্টি হয় কলেজে। প্রিন্সিপালের নিকট একটা ইমেইল আসে, আর সেটার সূত্র ধরে তারাকে ডাকা হয়। অফিস রুমে। সেখানে পুলিশ এবং হাসিবের বাবা মা দুজনেই উপস্থিত থাকেন।
তারপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, এরপর সেখান থেকে সে কোনো এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ফোন কলের মাধ্যমে ছাড়াও পেয়ে যায়। কিন্তু এরপর ইমতিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ইমতি তাঁদেরই একজন ক্লাসমেট। যে কিনা সাধারণ ঘরের ছেলে। আর সেইজন্যই তাকে খেসারত দিতে হয়, জীবনের তেরটা বছর হাসিব আত্মহত্যার কারণে। অথচ তার সাথে কোনো সম্পর্কই ছিল না।
এই বইয়ের আরো এক রহস্যের নাম মারিয়া। যে কিনা নিজের নাম বদলে রেখেছেন এ্যঞ্জেল এম। তার একটা রেস্টুরেন্ট থাকে। শহরে প্রভাবশালী লোকদের সাথে তার আঁতাত। সে মানুষকে নিয়ে খেলতে ভালোবাসে। মানুষের আতংকিত চেহারা দেখে তৃপ্তি পায়। আরো একটা ব্যাপার, এই বইয়ে চরিত্রের অন্ত নেই, যেমন; তালিসমান, রাস্তি, ইমতি, রুশহাদ, আহাদ, রাফা; শশিম চাচা। আরো আছে, এখানেই শেষ না।
এই উপন্যাসে এত রহস্য যে, আমার মাথামুণ্ডু হ্যাং হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। খুব এলোমেলো মনে হয়েছে। ঐ যে বললাম, শেষের দিকে কিছুটা রহস্য উন্মোচন হতে শুরু করেছে; তা-ও পুরোপুরি নয়। সেখানেও তৈরি হয়েছে রহস্য। শুধু রহস্যের খেলা।
সবচেয়ে বিরক্তিকর লেগেছে যেটা, এই বইয়ে কোথায় কোন স্থানের সিনারি আঁকতে চেয়েছেন লেখিকা এই জিনিসটাই বুঝলাম না। একবার মনে হয় বাহিরের দৃশ্য আবার মনে হয় বাংলাদেশের। এই জিনিসটা আমাকে বেশি ভুগিয়েছে। কি যে একটা ছেড়াবেড়া অবস্থা! তারপরেও কেন এই বই শেষ করলাম আমি! কারণ, এই বইয়ের গদ্যে একটা ফ্লো আছে; যেটা আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে।
যাইহোক, অনেক কথা বলে ফেলছি। আজকের জন্য ক্ষ্যান্ত দেই।
~মাহদী হাসান
১ আগস্ট ২০২৫