28/10/2025
বাচ্চার দুষ্টুমিতে এলোমেলো হয়ে যাওয়া ঘর দেখে আজ কি বিরক্ত হচ্ছেন? খেলনা ছড়িয়ে আছে, দেওয়ালে রঙের দাগ, প্রতিটি কোণজুড়ে ছোট্ট পায়ের দৌড়ঝাঁপ… সব যেন অগোছালো!
কিন্তু জানেন কি? এই এলোমেলো ঘর একদিন ঠিকই সাজানো-গোছানো, পরিপাটি হয়ে যাবে।
তবে সেই ঘরে থাকবে না খিলখিল করে হেসে ওঠা শিশুর কণ্ঠস্বর, থাকবে না ছোট্ট পায়ের টুপটাপ শব্দ, খেলনার টুংটাং আওয়াজ কিংবা ঠোঁট ফুলিয়ে কান্নার সুর।
হয়তো তখন আপনার ঘর থাকবে, কিন্তু আপনার সোনামণি তার শৈশব পেরিয়ে বড় হয়ে গেছে। তার একটি নিজস্ব জগৎ তৈরি হয়েছে, যেখানে "আম্মু", "আব্বু" বলে আপনাকে বারবার ডাক দেয়ার সময় নেই।
সে এখন আপনাকে আর বিরক্ত করে না, খাবার নিয়ে পেছনে ছুটতে হয় না, অসুখে আর রাত জাগতে হয় না।
শুধু পড়ে থাকে কিছু মধুর স্মৃতি, শৈশবের কোমলতায় গড়া কিছু মুহূর্ত।
সন্তান—আল্লাহর দেওয়া সবচেয়ে বড় নেয়ামত।
বিশ্বাস না হলে, একবার তাকান সেই মানুষটির দিকে যার কোল খালি। বুঝে যাবেন, আজ আপনার কাছে যা বিরক্তিকর মনে হচ্ছে, তা কারো কাছে অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা।
তাই বলছি, আপনার শিশু সন্তানের দুষ্টুমিগুলোকে বিরক্তির নয়, বরং আনন্দের চোখে দেখুন। পারলে তার সঙ্গে খেলায় যোগ দিন, একসাথে মজা করুন। কারণ সময় একদিন পেরিয়ে যাবে—থেকে যাবে শুধু স্মৃতি।
আরেকটা কথা মনে রাখবেন—
শিশুদের সান্নিধ্য পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশান্তিদায়ক অনুভূতি।
আপনি যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, সন্তানকে কাছে পেলে অন্তর নরম হয়ে যায়, একটা স্বস্তি কাজ করে—যা আপনি দূর থেকে কখনোই পাবেন না।
আজ রিজিকের খোঁজে অনেকে সন্তানদের থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন। মনে রাখুন, রিজিক তো আল্লাহই দেন। কাছ থেকে পরিশ্রম করলেও বরকত পাওয়া যায়। আর সন্তানরাও তখন ভালোভাবে মানুষ হয়ে ওঠে। তাদের মূল্যবোধ, আদব-কায়দা, চরিত্র—সবকিছু গড়ে ওঠে আপনার সান্নিধ্যে।
অন্যথায়, যদি আপনি দায়িত্ব ফেলে দূরে থাকেন, সন্তান মানুষ না হলে একদিন তার জন্য আপনাকেই সারাজীবন ভুগতে হবে।
তাই বলছি, কষ্ট হলেও সন্তানের পাশে থাকুন। সময় দিন, শিক্ষা দিন, ভালোবাসা দিন। এই সময় আর কখনো ফিরে আসবে না।
লিখেছেন- Ismail Hurain