ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার

ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার مفتى. نجم الإسلام

উত্তর:- সঠিক নিয়ম হলো ইফতার করার পর দোয়া পড়তে হবে,এটা আমরা অনেকেই জানি না,অধিকাংশ মানুষ ইসলামের নামে নকল ইবাদত করে থা...
02/03/2025

উত্তর:- সঠিক নিয়ম হলো ইফতার করার পর দোয়া পড়তে হবে,এটা আমরা অনেকেই জানি না,অধিকাংশ মানুষ ইসলামের নামে নকল ইবাদত করে থাকেন,দোয়ার অর্থের দিকে লক্ষ্য করলেই বুঝা যায় কখন পড়তে হবে!
ইফতারের সময় হাদীস শরীফে এ দুআ পড়ার কথা এসেছে

اللّهُمّ لَكَ صُمْتُ، وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ.

আয় আল্লাহ! আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই রোযা রেখেছি এবং আপনার রিযিক দিয়েই ইফতার করেছি। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৩৫৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯৭৪৪; কিতাবুয যুহদ, ইবনুল মুবারক, হাদীস ১৪১০, ১৪১১

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দুআও পড়তেন

ذَهَبَ الظّمَأُ وَابْتَلّتِ الْعُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ.

পিপাসা নিবারিত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল। আর আল্লাহ চাহে তো সওম-এর সওয়াব প্রাপ্তির খাতায় লিপিবদ্ধ হল। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৩৫৭; সুনানে কুবরা, নাসাঈ, হাদীস ৩৩১৫, ১০০৫৮
M***i Najmul Islam

ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার

আলহামদুলিল্লাহ বাংলাদেশের আকাশে মাহে রমাদানের চাঁদ দেখা গেছে। হে আল্লাহ! রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত মোদের নসিব করুন। আমিন1/3...
01/03/2025

আলহামদুলিল্লাহ বাংলাদেশের আকাশে মাহে রমাদানের চাঁদ দেখা গেছে।
হে আল্লাহ! রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত মোদের নসিব করুন। আমিন
1/3/25

25/02/2025

রমযান মাসের শুভাগমন উপলক্ষে জান্নাতের দরজাসমুহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানকে শৃংখলাবদ্ধ করা হয়।’ -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৯৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৭৯/১

14/02/2025

হে রাব্বে কারীম,আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন,আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন আমিন।

12/02/2025

শুক্রবার দিনের পর রাতে শবে বারাআত,এরাতে জেগে থেকে নফল নামাজ পড়া,পরদিন রোজা রাখা,এটাই শরয়ী বিধান।

09/02/2025

বর্তমান বক্তাদের উচিত মানুষ যাতে আমল ধরে এজাতীয় নসীহত করা,,ফতোয়া ও মাসায়েল না বলা।বললেও ভালো করে তাহ্কিক করে বলা।
--মুফতী নাজমুল ইসলাম

মহিলাদেরকে মাঠে-ময়দানে ডেকে এনে ওয়ায শোনানোর আয়োজনটাই শরীয়তসম্মত নয়। কেননা মহিলাদের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, ইবাদত...
04/02/2025

মহিলাদেরকে মাঠে-ময়দানে ডেকে এনে ওয়ায শোনানোর আয়োজনটাই শরীয়তসম্মত নয়। কেননা মহিলাদের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, ইবাদত-বন্দেগী থেকে শুরু করে তাদের সকল কাজ পুরুষদের থেকে আলাদা হবে। তাদের অবয়ব ও চলাফেরা পুরুষদের দৃষ্টির আড়ালে থাকবে। পুরুষের জন্য যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে এসে জামাতের সাথে আদায় করা শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ হুকুম। সেখানে নারীদেরকে গৃহাভ্যন্তরে নামায আদায় করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। মসজিদে নববীতে যেখানে এক রাকাত নামাযের ফযীলত এক হাজার রাকাত সমান। এর সাথে আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মত ইমামের পেছনে নামায পড়ার সৌভাগ্য তো রয়েছেই। তা সত্ত্বেও সে সময় নারী সাহাবীদেরকে তাদের গৃহাভ্যন্তরের সর্বাধিক নির্জন স্থানে নামায পড়াকে উত্তম বলা হয়েছে। এর উল্টো এমন একটি হাদীসও নেই, যাতে মহিলাদেরকে সম্বোধন করে মসজিদে এসে জামাতের সাথে নামায পড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বা এর দিকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত আছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سُوَيْدٍ الْأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَمّتِهِ أُمِّ حُمَيْدٍ امْرَأَةِ أَبِي حُمَيْدٍ السّاعِدِيِّ، أَنّهَا جَاءَتِ النّبِيّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنِّي أُحِبّ الصّلَاةَ مَعَكَ، قَالَ: قَدْ عَلِمْتُ أَنّكِ تُحِبِّينَ الصّلَاةَ مَعِي، وَصَلَاتُكِ فِي بَيْتِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي حُجْرَتِكِ، وَصَلَاتُكِ فِي حُجْرَتِكِ خَيْرٌ مِنْ صَلَاتِكِ فِي دَارِكِ، وَصَلَاتُكِ فِي دَارِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ، وَصَلَاتُكِ فِي مَسْجِدِ قَوْمِكِ خَيْرٌ لَكِ مِنْ صَلَاتِكِ فِي مَسْجِدِي، قَالَ: فَأَمَرَتْ فَبُنِيَ لَهَا مَسْجِدٌ فِي أَقْصَى شَيْءٍ مِنْ بَيْتِهَا وَأَظْلَمِهِ، فَكَانَتْ تُصَلِّي فِيهِ حَتّى لَقِيَتِ اللهَ عَزّ وَجَلّ.

উম্মে হুমাইদ রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার সাথে নামায পড়তে খুব পছন্দ করি। তিনি বললেন, আমি জানি তুমি আমার সাথে নামায পড়তে পছন্দ কর। কিন্তু জেনে রাখ, তোমার ঘরের ভেতরের নামায বাহিরের

কামরার নামাযের চেয়ে উত্তম। বারান্দার নামায চৌহদ্দির ভেতরের নামাযের চেয়ে উত্তম। চৌহদ্দির ভেতরের নামায তোমার এলাকার মসজিদে নামাযের চেয়ে উত্তম এবং তোমার এলাকার মসজিদের নামায আমার মসজিদের নামাযের চেয়ে উত্তম।

বর্ণনাকারী বলেন, তখন উম্মে হুমাইদ রা.-এর নির্দেশে ঘরের সবচেয়ে নিভৃতে এবং অধিক আড়ালে তার জন্য নামাযের স্থান বানানো হয়। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি সেখানেই নামায আদায় করছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৭০৯০)

সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেছেন-

إِنّمَا النِّسَاءُ عَوْرَةٌ، وَإِنّ الْمَرْأَةَ لَتَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهَا وَمَا بِهَا مِنْ بَأْسٍ، فَيَسْتَشْرِفُ لَهَا الشّيْطَانُ، فَيَقُولُ: إِنّكِ لَا تَمُرِّينَ بِأَحَدٍ إِلّا أَعْجَبْتِهِ، وَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَتَلْبَسُ ثِيَابَهَا، فَيُقَالُ: أَيْنَ تُرِيدِينَ؟ فَتَقُولُ: أَعُودُ مَرِيضًا، أَوْ أَشْهَدُ جِنَازَةً، أَوْ أُصَلِّي فِي مَسْجِدٍ، وَمَا عَبَدَتِ امْرَأَةٌ رَبّهَا مِثْلَ أَنْ تَعْبُدَهُ فِي بَيْتِهَا .

নারীগণ আবরণীয়। কোনো নারী যখন নিজ ঘর থেকে বের হয় অথচ তার কোনো সমস্যা নেই; তখন শয়তান তার পিছু নেয় এবং বলতে থাকে, তুমি যার সম্মুখ দিয়ে যাবে তোমাকে তার ভালো লাগবে। আর কোনো মহিলা যখন কাপড় পরিধান করে তখন ঘরের লোকজন জিজ্ঞাসা করে তুমি কোথায় যাও? সে বলে যে, অমুক অসুস্থকে দেখতে যাই বা কারো জানাযা পড়তে যাই, অথবা বলে, মসজিদে নামাযে যাই। অথচ মহিলাদের কোনো ইবাদতই এর চেয়ে উত্তম নয়, যা সে নিজ গৃহে আদায় করে। (আলমুজামুল কাবীর তাবারানী, হাদীস ৮৯১৪; মাজমাউয যাওয়াইদ, বর্ণনা ২১১৮)

এ বর্ণনাগুলো থেকে স্পষ্ট যে, মহিলাগণ শরীয়তসম্মত প্রয়োজন ছাড়া কোনো ইবাদত-বন্দেগির জন্যও ঘর থেকে বের হয়ে অন্য কোথাও যাবে না।

তাছাড়া স্পষ্টত নবীযুগের নারীরা পরবর্তী যে কোনো যুগের নারী অপেক্ষা দ্বীন শেখার প্রতি অধিক আগ্রহী ছিলেন। তারা যে পন্থায় দ্বীন শিখেছেন মূলত সেটাই আমাদের অনুসরণীয়। সহীহ বুখারী ও সহীহ ইবনে হিব্বানে বর্ণিত হয়েছে যে, একবার কিছুসংখ্যক নারী সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার মজলিসে পুরুষদের সাথে আমাদের জন্য আসা সম্ভব হয় না। আমাদের জন্য একটি দিন ধার্য করুন, যাতে সেদিনটিতে আমরা আপনার নিকট আসতে পারি। তিনি বললেন-

مَوْعِدُكُنّ بَيْتُ فُلَانَةَ

অর্থাৎ নির্ধারিত দিন অমুক মহিলার ঘরে জমায়েত হও।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে তাদেরকে ওয়ায নসীহত করলেন। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৯৪১; সহীহ বুখারী, হাদীস ১০১)

লক্ষ করার বিষয়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের ওয়ায-নসীহত করার জন্য পুরুষদের দৃষ্টির আড়ালে বাড়ির ভেতর নির্জন স্থান নির্বাচন করেছেন। তাদের আবদারের প্রেক্ষিতে প্রকাশ্য স্থান যেমন মসজিদে নববী, ঈদগাহ বা ঘরের আঙ্গীনার কথা বলেননি। তিনি তাদেরকে বলেছেন-

مَوْعِدُكُنّ بَيْتُ فُلَانَةَ

‘অমুক মহিলার ঘরে একত্রিত হও’।

উপরন্তু শরীয়ত অনুমোদিত প্রয়োজন ছাড়া বোরকা পরেও নারীদের জন্য পুরুষদের সমাগম স্থলে যাওয়া থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে, যেখানে আসা যাওয়ার পথে ও অনুষ্ঠান স্থলে পরপুরুষের সাথে মেলা-মেশার আশঙ্কা থাকে।

দ্বিতীয়ত শরীয়তের বিধান হল, স্বাভাবিক অবস্থায় মহিলাগণ পরপুরুষের দিকে তাকাবে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَقُلْ لِّلْمُؤْمِنٰتِ یَغْضُضْنَ مِنْ اَبْصَارِهِنَّ.

আর মুমিন নারীদেরও বলে দিন, তারা যেন (পরপুরুষ থেকে) তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে। [সূরা আননূর (২৪) : ৩১]

হাদীস শরীফে এসেছে, উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামা রা. বর্ণনা করেন যে, একবার তিনি ও মাইমুনা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ছিলেন। তিনি বলেন, তখন সেখানে (অন্ধ সাহাবী) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম রা. আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আমাদেরকে বললেন, তোমরা তার থেকে আড়াল হয়ে যাও। মাইমুনা রা. তখন বললেন, তিনি তো অন্ধ; আমাদেরকে দেখছেন না এবং চেনেনও না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

أَفَعَمْيَاوَانِ أَنْتُمَا؟ أَلَسْتُمَا تُبْصِرَانِهِ؟

তোমরা দু’জনও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখছ না? (জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৮)

প্রজেক্টরের মাধ্যমে মহিলাদের জন্য পুরুষ বক্তাকে দেখানোর আয়োজন কুরআন-হাদীসের এই বিধানগুলোরও খেলাফ।

প্রজেক্টরের মাধ্যমে ওয়ায দেখানোর ক্ষেত্রে বেগানা পুরুষকে দেখার বিষয়টি ছাড়াও আরো ফেতনার আশংঙ্কা রয়েছে। জানা কথা যে, বর্তমানে কোনো কোনো বক্তা নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করেন, যার কারণে তাকে সরাসরি দেখে কোনো যুবতী-নারী ফেতনায় পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মাহফিল কমিটির কর্তব্য হবে, মহিলাদের জন্য মাহফিলে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা থেকেই বিরত থাকা। কেননা এর দ্বারা মহিলাদের ব্যাপারে শরীয়তের অনেকগুলো বিধান ও নির্দেশনার লঙ্ঘণ হয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা পুরেপুরি নাজায়েযের আওতায় চলে যেতে পারে। তাই নিজেদের আবেগ ও চাহিদা অনুযায়ী আমল না করে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় এবং শরীয়তের চাহিদা অনুযায়ী আমল করাই মুসলমানদের করণীয়।

প্রকাশ থাকে যে, দ্বীনের জরুরি ইলম শিক্ষা করা নারীদের উপরও ফরয। তাদেরকে সঠিক ঈমান-আকীদা শিক্ষা দেওয়া, তালীম-তরবিয়ত করা খুবই দরকার। তবে এর পদ্ধতি হতে হবে অবশ্যই শরীয়তসম্মত। আর তা হল ঘরের পুরুষরা দ্বীন শিখে তাদের নারীদেরকে শেখাবে। এমনিভাবে বাড়িতে বাড়িতে ঘরোয়া দ্বীনী মাহফিল এবং ঘরোয়া দ্বীনী তালীমের আয়োজন করা। আর ঘর/বাসার কাছে অনাবাসিক তালীমুল বানাতের ব্যবস্থা থাকলে সেখানে গিয়ে দ্বীন শিখে আসতে পারে। এতে প্রত্যেক ঘরেই দ্বীনী তালীমের চর্চা হবে এবং ঘরে ঘরে দ্বীনী পরিবেশ কায়েম হবে- ইনশাআল্লাহ।
M***i Najmul Islam

03/02/2025

মসজিদে প্রবেশের দুআ

চারদিকে আযান হচ্ছে- আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। আযান শোনার সময় একজন মুমিনের কাজ হচ্ছে মুআযযিনের ডাকে সাড়া দেয়া। আযানের জবাব দেওয়া ও দুআ পড়া। সেই সাথে সমস্ত কাজ রেখে নামায আদায়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া এবং মসজিদে যাওয়া।

তুমি যখন মুআযযিনের ডাকে সাড়া দিয়ে মসজিদে যাবে তখন ডান পা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করবে। বিসমিল্লাহ বলবে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ ও সালাম পেশ করবে এবং মসজিদে প্রবেশের দুআ পড়বে। সবগুলো একসাথে এভাবে পড়বে-

بِسْمِ اللهِ

وَالصّلاَةُ وَالسّلاَمُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ

اَللّهمّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ.

অর্থ : আল্লাহর নামে (প্রবেশ করছি)। দরূদ ও সালাম আল্লাহর রাসূলের উপর। হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন। -আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী, হাদীস ৮৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৭৭১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৬৪১৭; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৪১২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭১৩

মসজিদ হতে বের হওয়ার দুআ

জামাতে নামায আদায় করে যখন তুমি মসজিদ থেকে বের হবে তখন বাম পা আগে দিয়ে বের হবে। আর বের হওয়ার সময়ও বিসমিল্লাহ বলবে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ ও সালাম পেশ করবে এবং আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ প্রার্থনা করবে। কারণ তাঁর অনুগ্রহ ছ্ড়া আমরা কোনো কাজেই সফল হতে পারব না। তেমনি বের হওয়ার পর শয়তান যেন তোমাকে কোনো ধোঁকা দিতে না পারে, গুনাহে লিপ্ত করতে না পারে সেজন্য আল্লাহর আশ্রয় চাইবে-

بِسْمِ اللهِ

وَالصّلاَةُ وَالسّلاَمُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ

اللّهُمّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ

اللّهُمّ اعْصِمْنِي مِنَ الشّيْطَانِ الرّجِيمِ



অর্থ : আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি)।

দরূদ ও সালাম আল্লাহর রাসূলের উপর।

হে আল্লাহ! আমি আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি।

হে আল্লাহ! বিতাড়িত শয়তান হতে তুমি আমাকে রক্ষা কর।

-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৭৭১, ৭৭৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৬৪১৭; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৪১২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭১৩

যে জালিমের কারাগারে আলেম থেকে শুরু করে সাধারণ নিরপরাধ সাধারণ মানুষ আটক ছিলো, এই সাহসী সন্তানদের কারনে আজ সবাই জালিমের হা...
27/01/2025

যে জালিমের কারাগারে আলেম থেকে শুরু করে সাধারণ নিরপরাধ সাধারণ মানুষ আটক ছিলো, এই সাহসী সন্তানদের কারনে আজ সবাই জালিমের হাত থেকে মুক্তি পাইছে।

মিরাজের ঘটনা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সীরাতের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রতিটি মুমিনের ঈমান ও আবে...
21/01/2025

মিরাজের ঘটনা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সীরাতের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রতিটি মুমিনের ঈমান ও আবেগ জড়িয়ে আছে এর সাথে। তাই এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় আছে।

এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে করণীয় তা হচ্ছে, মেরাজের ব্যাপারে সহীহ আকীদা পোষণ করা। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক রাতে সশরীরে মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস এবং সেখান থেকে সাত আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত, জাহান্নাম ভ্রমণ করিয়েছেন; আল্লাহ তাআলা স্বীয় বড় বড় কিছু কুদরত প্রিয় হাবীবকে দেখাবেন বলে। এটা সীরাতে রাসূলের একটি বড় অধ্যায় এবং নবী জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুজিযা। এটা মুসলমানের অকাট্য মৌলিক আকীদার অংশ। অবিচ্ছিন্ন সূত্র পরম্পরায় তা স্বীকৃত ও সুসাব্যস্ত। তাই এক্ষেত্রে স্বচ্ছ বিশ্বাস রাখা জরুরি।

মিরাজ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বিশেষ মুজিযা। আর মুজিযা ওই ঘটনাকেই বলা হয়, যা সাধারণ সক্ষমতার বাইরে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষভাবে সংঘটিত হয়। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থায় প্রভাবিত হয়ে অনেকে একে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করতে চান। এটা ইসলামের এবং ইসলামের দাওয়াতের স্বভাবজাত প্রক্রিয়া নয়। কখনো কখনো এমনসব বৈজ্ঞানিক থিউরি শোনানো হয়, যা অনেকসময় হাস্যকর সাব্যস্ত হয়। তাই ইসলামের বিধিবিধান ও শাআইরগুলোকে ইসলামের স্বভাববোধ থেকে অনুধাবন করা এবং এর মাধ্যমে নিজের ঈমানী যিন্দেগী বিনির্মাণ করাই হচ্ছে প্রকৃত মুমিনের শান।

মিরাজের ঘটনা থেকে সরলদাগে যে শিক্ষাগুলো পাওয়া যায় সংক্ষেপে তা নিম্নরূপ-

ক. আল্লাহর সত্তার উপর পূর্ণ ও সঠিক বিশ্বাস রাখা। শিরক থেকে বিলকুল বেঁচে থাকা।

খ. আল্লাহর সাথে বান্দার আবদিয়াত তথা দাসত্বের সম্পর্ক মজবুত করা।

গ. নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া। কেননা এটা মিরাজে লাভ করা উম্মতের জন্য নবীজীর তোহফা। বস্তুত নামায এমন একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে রবের সাথে বান্দার সম্পর্ক সুদৃঢ় ও মধুময় হতে থাকে। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, বান্দা যখন নামায পড়ে তখন সে তার রবের সাথে নিভৃতে আলাপ করে। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৪০৫)

ঘ. সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলোর শিক্ষা ও মর্মগুলো ধারণ করা। এখানে মুমিনের ঈমানের শিরোনামগুলো সংক্ষিপ্তভাবে বলা হয়েছে।

ঙ. আল্লাহর হক ও বান্দার হকের প্রতি যত্নশীল হওয়া।

চ. গীবত ও পরনিন্দা থেকে বেঁচে থাকা। মানুষের সম্ভ্রমহানি না করা। কাউকে অপদস্থ ও লাঞ্ছিত না করা। এটা অনেক বড় কবীরা গুনাহ।

ছ. শুধু লম্বা লম্বা বক্তৃতা নয়, খেয়াল করা- মানুষকে যে নসীহত করছি, আমার মাঝে তা কতটুকু আছে।

জ. জান্নাতের ব্যাপারে আগ্রহী হওয়া।

ঝ. জাহান্নামের ব্যাপারে ভীত থাকা।

ঞ. হাউযে কাউসারের প্রত্যাশী হওয়া।

ট. হযরত ইবরাহীম আ. যে দুআর কথা বলেছেন-

سُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ لِلهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَر.

এই দুআর প্রতি মনোযোগী হওয়া।
মানুষের ও জিনের যাদুর কারনে অনেকের অনেক বয়স হয়েছে কিন্ত বিবাহ হয় না প্রস্তাব আসলেও ভেংগে যায় দেরি না করে যোগাযোগ করুন আমাদের তদবিরের মাধ্যমে ৭ দিনের মধ্যে বিবাহ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
M***i Najmul Islam

ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার

ইসরা ও মিরাজ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। মুমিনের ভক্তি ও বিশ...
21/01/2025

ইসরা ও মিরাজ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। মুমিনের ভক্তি ও বিশ্বাস এবং আবেগ ও অনুভূতির শেকড় গভীরভাবে মিশে আছে যার সঙ্গে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওহীদ ও ঈমানের দাওয়াতে নিজেকে বিলীন করে দিচ্ছেন। কাফেরদের নির্মম অত্যাচার ও অবর্ণনীয় বাক্যবাণে তিনি বিধ্বস্ত। মুষ্টিমেয় কিছু মুসলিম জুলুম-অত্যাচারে নিষ্পিষ্ট। তবুও হৃদয়ে তারা ঈমানের আলো জ্বেলে রেখেছেন। এভাবেই এগিয়ে চলছে ইসলামের প্রচার-প্রসার। আশ্রয় ও সান্ত¦নার বিরাট দুটি বৃক্ষ একে একে চলে গেছেন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে। খাজা আবু তালিব ও উম্মুল মুমিনীন খাদীজাতুল কুবরা রা.। আশা ছিল, তায়েফবাসী যদি কথাগুলো একটু মেনে নেয়! তাওহীদের দাওয়াত কবুল করে! না, তারাও সাড়া দিল না। শুধু কি তাই, নির্দয়ভাবে ক্ষতবিক্ষত করল প্রাণপ্রিয় নবীজীকে। এমন মুহূর্তে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ডেকে নিলেন প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঊর্ধ্বজগতে। রাতের এক খণ্ডে, জিবরাঈলকে পাঠিয়ে, বুরাকে চড়িয়ে। কুরআনের ভাষায়-

سُبْحٰنَ الَّذِیْۤ اَسْرٰی بِعَبْدِهٖ لَیْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَی الْمَسْجِدِ الْاَقْصَا الَّذِیْ بٰرَكْنَا حَوْلَهٗ لِنُرِیَهٗ مِنْ اٰیٰتِنَا ؕ اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیْعُ الْبَصِیْرُ.

পবিত্র সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতের একটি অংশে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি, তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন। -সূরা ইসরা (১৭) : ১

বস্তুত ইসরা হচ্ছে, মক্কা মুকাররমা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণের সেই পর্বটুকু, যা রাতের একটি অংশে সংঘটিত হয়েছিল। আর মিরাজ হচ্ছে সেখান থেকে ঊর্ধ্বজগৎ পরিভ্রমণের সেই বিস্তৃত অধ্যায়।

আল্লাহ তাআলা সূরা নাজমে আরো বলেন-

وَ لَقَدْ رَاٰهُ نَزْلَةً اُخْرٰی، عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهٰی، عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَاْوٰی، اِذْ یَغْشَی السِّدْرَةَ مَا یَغْشٰی،مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَ مَا طَغٰی، لَقَدْ رَاٰی مِنْ اٰیٰتِ رَبِّهِ الْكُبْرٰی.

বস্তুত সে তাকে (হযরত জিবরাঈল আ.-কে) আরও একবার দেখেছে। সিদরাতুল মুনতাহা (সীমান্তবতীর্ কুলগাছ)-এর কাছে। তারই কাছে অবস্থিত জান্নাতুল মা’ওয়া। তখন সেই কুল গাছটিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল সেই জিনিস, যা তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। (রাসূলের) চোখ বিভ্রান্ত হয়নি এবং সীমালংঘনও করেনি। (অর্থাৎ দেখার ব্যাপারে চোখ ধেঁাকায় পড়েনি এবং আল্লাহ তাআলা তার জন্য যে সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন, তিনি তা লংঘনও করেননি যে, তার সামনে কী আছে তা দেখতে যাবে।) বাস্তবিকপক্ষে, সে তার প্রতিপালকের বড়-বড় নিদর্শনের মধ্য হতে বহু কিছু দেখেছে। -সূরা নাজম (৫৩) : ১৩-১৮

ইসরা ও মিরাজের ব্যাপারে কুরআনের বর্ণনায় সংক্ষেপে এতটুকুই বলা হয়েছে। আর বিস্তারিত এসেছে হাদীসের পাঠগুলোতে। সীরাত, সুন্নাহ এবং তারীখের নির্ভরযোগ্য সূত্রে রয়েছে এর বিশদ বিবরণ। পবিত্র কালামুল্লাহর এই আলোচনা থেকে যে বিষয়গুলো সামনে আসে তা হচ্ছে-

ক. আল্লাহ তাআলা পবিত্র সত্তা। মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি বিবেকের সীমাবদ্ধ গণ্ডি পেরিয়ে তাঁর শক্তি ও সক্ষমতা। তিনি তার বান্দাকে রাতে পরিভ্রমণ করিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি সর্ব প্রকার সংশয় ও দুর্বলতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।

খ. ইসরা ও মিরাজ রাতে সংঘটিত হয়েছিল।

গ. মক্কা মুকাররমা থেকে নবীজীকে প্রথমে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নবীজী ঊর্ধ্বজগতে আরোহিত হন।

ঘ. বাইতুল মুকাদ্দাস ও তার চারপাশের এলাকা বরকতময়।

ঙ. আল্লাহ তাআলা তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিরাজের নিআমত দান করেছেন তিনি তার বড় বড় কুদরত ও নিশানা দেখাবেন বলে।

চ. মিরাজের বিষয়টি এমন, যা সাধারণ বোধগম্য বিষয় নয়। এটা কেবলই মহান রবের কুদরতের কারিশমা। মাখলুকের সীমাবদ্ধ হিসাব-নিকাশ সে পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম নয়... ইত্যাদি।

এ তো গেল কুরআন কারীমের বিবরণ প্রসঙ্গ। সেখানে ইসরা ও মেরাজের বিবরণ এসেছে সংক্ষেপে। বিস্তারিত বিবরণ এসেছে হাদীস শরীফে। কিছু দীর্ঘ হাদীসে মেরাজের মোটামুটি বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। আর কিছু হাদীসের বিভিন্ন পাঠ থেকে মিরাজের টুকরো টুকরো বর্ণনা পাওয়া যায়। সে হাদীসগুলো সামনে রেখে মিরাজের ঘটনা নিম্নরূপ-

হিজরতের পূর্বের কথা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একরাতে শুয়ে ছিলেন। তন্দ্রাচ্ছন্ন। চোখদুটো মুদে এসেছে বটে, তবে দিল ছিল জাগ্রত। এরই মাঝে আগমন করলেন হযরত জিবরাঈল আ.। তিনি নবীজীকে উঠিয়ে নিয়ে গেলেন যমযমের নিকট। একটি স্বর্ণের পেয়ালা আনা হল। তা ছিল ঈমান ও হিকমতে পূর্ণ। তাতে যমযমের পানি। জিবরাঈল আ. নবীজীর বক্ষ মোবারক বিদীর্ণ করলেন। বের করে আনলেন নবীজীর হৃদয়। যমযমের পানি দিয়ে তা ধুয়ে আবার প্রতিস্থাপন করে দিলেন জায়গামত। ঈমান ও হিকমতে পূর্ণ করে দেওয়া হল নবীজীর কলব।

এরপর আনা হল নবীজীকে বহন করার জন্য সওয়ারী। প্রাণীটি গাধার চেয়ে বড়, ঘোড়া থেকে ছোট। নাম বুরাক। রং সাদা। এটা এতটাই ক্ষিপ্রগতির যার একেকটি কদম পড়ে দৃষ্টির শেষ সীমায় গিয়ে।

এভাবে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহূর্তেই পৌঁছে গেলেন বাইতুল মুকাদ্দাসে। বুরাক বেঁধে রাখা হল পাথর ছিদ্র করে। যে পাথরে অপরাপর নবীগণ নিজেদের বাহন বেঁধে রাখতেন। নবীজী সেখানে দুই রাকাত নামায আদায় করলেন। নামায পড়ে বের হওয়ার সময় জিবরাঈল আ. নবীজীর সামনে দুটি পেয়ালা পেশ করলেন। একটি দুধের অপরটি শরাবের। নবীজী দুধের পেয়ালা গ্রহণ করলেন। জিবরাঈল আ. বললেন, আপনি (দ্বীনের) স্বভাবসিদ্ধ বিষয়টি নির্বাচন করেছেন।

নবীজী মদের পেয়ালা নেওয়ার পরিবর্তে দুধের পেয়ালা গ্রহণ করায় জিবরীল আ. বলেন, আপনি যদি মদের পেয়ালা নিতেন তাহলে আপনার উম্মত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ত। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৯৪)

এরপর শুরু হল ঊর্ধ্বজগতের সফর। জিবরাঈল নবীজীকে নিয়ে চললেন। প্রথম আসমানে গিয়ে দস্তক দিলেন। জিজ্ঞাসা করা হল, কে? বললেন, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সাথে কে? বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞাসা করা হল, তার কাছে কি আপনাকে পাঠানো হয়েছে? বললেন, হাঁ। এরপর নবীজীকে সম্ভাষণ জানানো হল- মারহাবা, উত্তম আগমনকারীর আগমন ঘটেছে! খুলে দেওয়া হল নবীজীর জন্য আসমানের দরজা।

নবীজী প্রথম আসমানে গেলেন। সেখানে ছিলেন হযরত আদম আ.। জিবরাঈল পরিচয় করিয়ে দিলেন। নবীজী হযরত আদমকে সালাম বললেন। বাবা আদম জবাব দিলেন। নবীজীকে সাদর অভিবাদন জানালেন- মারহাবা, নেককার পুত্র ও নেককার নবী। হযরত আদম আ. নবীজীর জন্য দুআ করলেন।

এরপর নবীজী উঠতে থাকলেন দ্বিতীয় আসমানের দিকে। সেখানেও দরজা খুলতে প্রথম আসমানের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। এরপর নবীজীকে ইস্তেকবাল করা হল। নবীজী সেখানে দেখতে পেলেন দুই খালাত ভাই হযরত ঈসা আ. ও হযরত ইয়াহইয়া আ.-কে। তাদের সাথে নবীজীর সালাম বিনিময় হল। তারা নবীজীকে স্বাগত জানালেন- মারহাবা, আমাদের পুণ্যবান ভাই এবং সজ্জন নবী। তারা নবীজীর জন্য দুআ করলেন।

এরপর নবীজীকে তৃতীয় আসমানের দিকে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানেও দুই আসমানের মতো জিজ্ঞাসাবাদ হল এবং নবীজীকে স্বাগত জানানো হল। সেখানে গিয়ে দেখলেন হযরত ইউসুফ আ.। হযরত ইউসুফের সাথে নবীজীর সালাম ও কুশল বিনিময় হল। নবীজী বলেন, হযরত ইউসুফকে যেন দুনিয়ার অর্ধেক সৌন্দর্য ঢেলে দেওয়া হয়েছে!

এরপর চললেন চতুর্থ আসমানের দিকে। সেখানেও পূর্বের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। স্বাগত-সম্মান জানানো হল। সেখানে হযরত ইদরীস আ.-এর সাথে সাক্ষাৎ হল। সালাম ও কুশল বিনিময় হল। হযরত ইদরীস আ. নবীজীর জন্য দুআ করলেন।

এরপর চললেন পঞ্চম আসমানের দিকে। সেখানে হযরত হারূন আ.-এর সাথে সাক্ষাৎ হল।

এরপর চললেন ষষ্ঠ আসমানের দিকে। সেখানেও পূর্বের পর্বগুলোর মতো জিজ্ঞাসা করা হল। নবীজীকে অভিনন্দন জানানো হল। সেখানে দেখা হল হযরত মূসা আ.-এর সাথে। হযরত মূসা আ. নবীজীকে খুব ইস্তেকবাল করলেন।

এরপর নবীজী সপ্তম আসমানের দিকে উঠতে থাকেন। সেখানে দেখা হল হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে। জিবরাঈল আ. পরিচয় করিয়ে দিলেন- ইনি আপনার পিতা, সালাম করুন। নবীজী হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে সালাম বিনিময় করলেন।
নবীজী বলেন, হযরত ইবরাহীম আ. তখন বাইতুল মামুরে হেলান দিয়ে ছিলেন। বাইতুল মামুর, যেখানে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসে। এরপর এই সত্তর হাজার আর ফিরে আসে না। এভাবে প্রতিদিন সত্তর হাজার করে ফেরেশতাদের নতুন নতুন কাফেলা আসতে থাকে।

এরপর নবীজীকে নিয়ে যাওয়া হল সিদরাতুল মুনতাহার দিকে। সেই কুল বৃক্ষের একেকটি পাতা হাতির কানের মতো। আর একেকটি ফল মটকার মতো বড় বড়। যখন ওটাকে আল্লাহর বিধান আচ্ছন্ন করে নিল তা পরিবর্তিত হয়ে গেল। সৃষ্টির কারো সাধ্য নেই তার সৌন্দর্যের বিবরণ দেবার। জিবরাঈল বললেন, এটা সিদরাতুল মুনতাহা। এখানে চারটি নহর। দুটি অদৃশ্য আর দুটি দৃশ্যমান। নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, দৃশ্যমান নদীদুটি কোনগুলো? জিবরাঈল বললেন, অদৃশ্যমান দুটি জান্নাতে। আর দৃশ্যমান দুটি হল নীল নদ ও ফুরাত নদী।

এরপর আল্লাহ তাআলা নবীজীর প্রতি যে ওহী পাঠানোর পাঠালেন। দিনরাতে উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয করে দিলেন। নবীজী আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাতের এ হাদিয়া নিয়ে ফেরত আসছিলেন; এর মধ্যে দেখা হযরত মূসা আ.-এর সাথে। হযরত মূসা আ. জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ আপনার উম্মতের জন্য কী দিয়েছেন? নবীজী বললেন, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায। হযরত মূসা বললেন, আপনার উম্মত রাত-দিনে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায পড়তে পারবে না। আপনার আগে আমি উম্মত চালিয়ে এসেছি। আপনি আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে আনেন। নবীজী সে মতে আল্লাহর কাছে গিয়ে কম করে দেওয়ার দরখাস্ত করলেন। আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলেন। নবীজী তা নিয়ে ফেরত আসছিলেন। আবার হযরত মূসা আ.-এর সাথে দেখা হল। বললেন, আপনার উম্মত তা পারবে না। আপনি আরো কমিয়ে আনুন। নবীজী আবার আল্লাহর কাছে গিয়ে আগের মতো দরখাস্ত করে আরো পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে আনলেন। নবীজী বলেন, এভাবে আমি আল্লাহ ও মূসার মাঝে আসা-যাওয়া করতে থাকি। শেষবার আল্লাহ বলেন, মুহাম্মদ! এই হল দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায। প্রত্যেক নামাযের বিনিময়ে দশ নামাযের সাওয়াব। এভাবে বান্দা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের সওয়াব পাবে। কেউ কোনো ভালো কাজের ইচ্ছা করবে কিন্তু করতে পারবে না, তার জন্যও নেকী রয়েছে। এক নেকী। আর যদি ভালো কাজটি করে তাহলে তার জন্য দশ নেকী। আর কেউ কোনো মন্দ কাজের ইচ্ছা করলে কোনো গুনাহ লেখা হবে না। তবে তা করে বসলে একটি গুনাহ লেখা হবে।

নবীজী এ সওগাত নিয়ে ফেরত আসছিলেন। হযরত মূসার সাথে দেখা হল। মূসা আ. এবার শুনে বললেন, আপনি যান, আরো কমিয়ে আনুন। আপনার উম্মত পারবে না। বনী ইসরাঈলের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা আছে। নবীজী বললেন, আমার আর কিছু বলতে লজ্জা হচ্ছে!

(দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮৮৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬২, ১৬৪)

নবীজীকে যখন বুরাকে তোলা হচ্ছিল তখন বুরাক ঔদ্ধত্য দেখাল। তখন জিবরাঈল আ. বললেন, মুহাম্মাদের ক্ষেত্রে এরকম করছিস! তোর উপর তো এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ কোনোদিন চড়েনি। এ শুনে বুরাক ঘর্মাক্ত হয়ে গেল। (দ্রষ্টব্য : জামে তিরমিযী, হাদীস ৩১৩১)

আল্লাহ তাআলা নবীজীর জন্য যে বিশেষ উপহার হাউযে কাউসার রেখেছেন প্রথম আসমানে নবীজীকে তা দেখানো হয়। নবীজী সেই কাউসারের বিবরণও দিয়েছেন। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৫১৭)

নবীজী যখন প্রথম আসমানে যান দেখেন এক ব্যক্তি, তার ডান পাশে কিছু রূহ আর বাম পাশে কিছু রূহের কাফেলা। তিনি ডানদিকে তাকালে হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন। তিনি নবীজীকে সম্ভাষণ জানালেন। নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল! ইনি কে? জিবরাঈল বললেন, ইনি আদম আ.। আর তার দুই পাশে তার সন্তানদের রূহ। ডানদিকেরগুলো জান্নাতী আর বামদিকেরগুলো জাহান্নামী। এজন্য তিনি ডানদিকে তাকিয়ে হাসেন আর বামদিকে তাকিয়ে কাঁদেন। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৪২)
এ সফরে নবীজীকে জান্নাত-জাহান্নামের ভ্রমণও করানো হয়। নবীজী বলেন, জান্নাতের প্রাসাদগুলো মুক্তার তৈরি আর তার মাটি হল মেশকের। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৫১৭)

নবীজী এ সফরে একদল লোককে দেখলেন, তাদের নখগুলো তামার। নিজেদের নখ দিয়ে তারা নিজের গাল ও বুকে অঁাচড় কাটছে। জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল, এরা কারা?

বললেন, এরা ওই সমস্ত লোক, যারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের সম্ভ্রমে আঘাত হানত। অর্থাৎ গীবত করত এবং মানুষকে লাঞ্ছিত করত। (দ্রষ্টব্য : মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩৩৪০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৮৭৮)

নবীজী এ সফরে হযরত মূসা আ. ও হযরত ঈসা আ.-এর শারীরিক গড়নেরও বিবরণ দেন। নবীজী বলেন, আমি ইবরাহীমের আকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৯৪)

হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে মুলাকাত হলে তিনি নবীজীকে বলেন, আপনি আপনার উম্মতের কাছে আমার সালাম পৌঁছাবেন। আর তাদেরকে বলবেন, জান্নাতের মাটি পবিত্র ও সুঘ্রাণযুক্ত, এর পানি সুমিষ্ট এবং এর ভূমি উর্বর ও সমতল। আর এর বৃক্ষ হচ্ছে-

سُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ لِلهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَر.

(দ্রষ্টব্য : জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৬২)

এ সফরে নবীজীকে তিনটি উপহার দেওয়া হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামায, সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো এবং এই উম্মতের যারা শিরক থেকে বেঁচে থেকে মৃৃত্যুবরণ করবে তাদের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়ার ঘোষণা। (দ্রষ্টব্য : সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭৩)

এ সফরে নবীজীর সাথে পূর্ববর্তী নবীগণের সাক্ষাৎ হয়। তখন তিনি নামাযে সকলের ইমামতি করেন। (দ্রষ্টব্য : সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭২)

এ সফরে নবীজী দেখলেন, একদল লোকের ঠেঁাট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কারা?

জিবরাঈল বললেন, এরা বক্তৃতা করত বটে, কিন্তু নিজেরা আমল করত না। (দ্রষ্টব্য : মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২২১১, ১২৮৫৬)

মিরাজ থেকে ফিরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতীমে বসা। মুশরিকরা ইসরা ও মেরাজের ঘটনা শুনে উপহাস ও কটাক্ষ করতে লাগল। বিভিন্নভাবে নবীজীর দিকে প্রশ্নের তীর ছুড়তে লাগল। তারা চাইল, বাইতুল মুকাদ্দাসের পূর্ণ বিবরণ শুনবে। নবীজী এমন প্রশ্নে খুবই বিব্রত হয়ে ওঠেন। এত রাতে কি বাইতুল মুকাদ্দাসকে ওরকম নিখঁুতভাবে দেখতে গিয়েছেন নাকি! নবীজী বলেন, এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আমি আগে পড়িনি। আল্লাহ তাআলা প্রিয় বন্ধুকে সাহায্য করলেন। নবীজীর চোখের সামনে মেলে ধরলেন বাইতুল মুকাদ্দাসের দৃশ্য। নবীজী দেখে দেখে তাদের প্রত্যেকটি জিজ্ঞাসার বিস্তারিত জবাব দিলেন। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭২)

ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার

بسم الله الرحمن الرحيمভূমিকানারী পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদী নানা বিষয়ে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি প...
13/01/2025

بسم الله الرحمن الرحيم

ভূমিকা

নারী পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদী নানা বিষয়ে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি পার্থক্য রয়েছে ইবাদতসহ শরীয়তের অনেক বিষয়ে। যেমন-

১-পুরুষ ও মহিলা উভয়ের উপরই হজ্ব ফরয। কিন্তু মহিলাদের জন্য পথ খরচ ছাড়াও হজ্বের সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষের উপস্থিতি শর্ত।

২-ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য মাথা ঢাকা নিষেধ। অথচ মহিলাদের জন্য ইহরাম অবস্থায় মাথা ঢেকে রাখা ফরয।

৩-ইহরাম খোলার সময় পুরুষ মাথা মুন্ডায়। কিন্তু মহিলাদের মাথা মুন্ডানো নিষেধ।

৪-হজ্ব পালনকালে পুরুষ উচ্চ আওয়াজে তালবীয়া পাঠ করে, পক্ষান্তরে মহিলাদের জন্য নিম্ন আওয়াজে পড়া জরুরী।

৫-পুরুষের উপর জুমআ পড়া ফরয, মহিলাদের উপর নয়।

৬-নামাযে সতর্ক করার মত কোন ঘটনা ঘটলে সতর্ক করার জন্য পুরুষের তাসবীহ পড়ার হুকুম করা হয়েছে। কিন্তু মহিলাদের তাসফীক করা তথা হাতে শব্দ করার বিধান।

৭-ইমাম ও খতীব শুধু পুরুষই হতে পারে, কোন নারী হতে পারেনা।

৮-আজান শুধু পুরুষই দিবে, কোন নারীকে মুয়াজ্জিন বানানো জায়েজ নয়।

৯-পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামায পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। আর মহিলাদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম বলা হয়েছে।

১০-সতর। পুরুষের সতর হল নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত। আর পরপুরুষের সামনে নারীদের সতর হল প্রায় পুরো শারীরই ঢেকে রাখা ফরয।

নারী-পুরুষের মাঝে এরকম পার্থক্যসম্বলিত ইবাদত সমূহের অন্যতম হল নামায। তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো, হাত বাঁধা, রুকু, সেজদা, প্রথম ও শেষ বৈঠক ইত্যাদী ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমাণ যেহেতো বেশি তাই যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে ক্ষেত্রগুলিতে। মুসলিম উম্মাহর প্রায় দেড় হাজার বছরের অবিচ্ছন্ন আমলের ধারা তাই প্রমাণ করে। বিষয়টি প্রমাণিত রাসূলে কারীম সাঃ এর হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের ফতোয়া ও আছারের মাধ্যমে।

প্রথমে আমরা সহীহ হাদিস, তারপর পর্যায়ক্রমে সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেয়ীদের ফতোয়া ও আছার উল্লেখ করছি।
হাদিস

১.

3016 – أخبرناه أبو بكر محمد بن محمد أنبأ أبو الحسين الفسوي ثنا أبو علي اللؤلؤي ثنا أبو داود ثنا سليمان بن داود أنبأ بن وهب أنبأ حيوة بن شريح عن سالم بن غيلان عن يزيد بن أبي حبيب : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم مر على امرأتين تصليان فقال إذا سجدتما فضما بعض اللحم إلى الأرض فإن المرأة ليست في ذلك كالرجل (سنن الكبرى للبيهقى، كتاب الحيض، باب ما يستحب للمرأة من ترك التجافي في الركوع والسجود، رقم الحديث-3016)

তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব রহ. বলেন-একবার রাসূল সা. দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন-“যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়। (সুনানুল বায়হাকী, হাদিস নং-৩০১৬, কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫, হাদিস নং-৮০)

প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “আওনুল বারী” (১/৫২০) তে লিখেছেন-“উল্লেখিত হাদিসটি সকল ইমামদের উসুল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করায় যোগ্য”।

মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী “সুবুলুস সালাম” শরহু বুলুগিল মারাম” গ্রন্থে (১/৩৫১-৩৫২) এই হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে পুরুষ ও মহিলার সেজদার পার্থক্য করেছেন।

২.

وَالآخَرُ حَدِيثُ أَبِى مُطِيعٍ : الْحَكَمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْبَلْخِىِّ عَنْ عُمَرَ بْنِ ذَرٍّ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :« إِذَا جَلَسْتِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا (السنن الكبرى، كتاب الصلاة، باب مَا يُسْتَحَبُّ لِلْمَرْأَةِ مِنْ تَرْكِ التَّجَافِى فِى الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ، رقم الحديث-3324)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছন-“মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তায়ালা তাকে দেখে বলেন-ওহে আমার ফেরেস্তারা! তোমরা সাক্ষী থাক। আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে বায়হাকী-২/২২৩, হাদিস নং-৩৩২৪)

এই হাদিসটি হাসান।

৩.

حدثنا محمد بن عبد الله الحضرمي قال حدثتني ميمونة بنت عبد الجبار بن وائل بن حجر عن أبيها عبد الجبار عن علقمة عمها عن وائل بن حجر قال : جئت النبي صلى الله عليه و سلم ………….فقال لي رسول الله صلى الله عليه و سلم : يا وائل بن حجر إذا صليت فاجعل يديك حذاء أذنيك والمرأة تجعل يديها حذاء ثدييها (المعجم الكبير، باب الواو، وائل بن حجر الحضرمي القيل، رقم الحديث-28)

হযরত ওয়াইল বিন হুজর রা. বলেন। আমি নবীজী সা. এর দরবারে হাজির হলাম। তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার সাথে একথাও) বলেছিলেন যে, হে ওয়াইল বিন হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে তখন কান বরাবর হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আল মুজামুল কাবীর, হাদিস নং-২৮)

এই হাদিসটিও হাসান।

উল্লেখিত হাদিসগুলি থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কিছু কিছু হুকুমের ক্ষেত্রে মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতি পুরুষের নামায আদায়ের পদ্ধতি থেকে ভিন্ন। বিশেষত ২ নং হাদিসটি দ্বারা একথাও বুঝা গেল যে, মহিলার নামায আদায়ের শরীয়ত নির্ধারিত ভিন্ন এই পদ্ধতির মধ্যে ওই দিকটিই বিবেচনায় রাখা হয়েছে যা তার সতরও পর্দার পক্ষে সর্বাধিক উপপোযী।

উল্লেখ্য যে, এই সব হাদিসের সমর্থনে মহিলাদের নামায আদায়ের পদ্ধতির পার্থক্য ও ভিন্নতাকে নির্দেশ করে এমন আরো কিছু হাদিস আছে। পক্ষান্তরে এগুলির সাথে বিরোধপূর্ণ একটি হাদীসও কোথাও পাওয়া যাবেনা। যাতে বলা হয়েছে যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য নেই। বরং উভয়ের নামাযই এক ও অভিন্ন। একথার পক্ষে একটি হাদীসও নেই।৬.

2795- حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِِ ، عَنْ مُغِيرَةَ ، عَنْ إبْرَاهِيمَ ، قَالَ : إذَا سَجَدَتِ الْمَرْأَةُ فَلْتَضُمَّ فَخِذَيْهَا ، وَلْتَضَعْ بَطْنَهَا عَلَيْهِمَا.(مصنف ابن ابى شيبة، كتاب الصلاة، في المرأة كَيْفَ تَجْلِسُ فِي الصَّلاَةِ، رقم الحديث-2795)

হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহ. বলেন-মহিলা যখন সেজদা করবে তখন যেন সে উভয় উরু মিলিয়ে রাখে এবং পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৭৯৫)

৭.

5071 – عبد الرزاق عن معمر والثوري عن منصور عن إبراهيم قال كانت تؤمر المرأة أن تضع ذراعها وبطنها على فخذيها إذا سجدت ولا تتجافى كما يتجافى الرجل لكي لا ترفع عجيزتها

হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহ. আরো বলেন-“মহিলাদের আদেশ করা হত তারা যেন সেজদা অবস্থায় হাত ও পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। পুরুষের মত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা না রাখে। যাতে কোমড় উঁচু হয়ে না থাকে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৭, হাদিস নং-৫০৭১)

৮.

2799- حَدَّثَنَا إسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ ، عَنْ زُرْعَةَ بْنْ إِبْرَاهِيمَ ، عَن خَالِدِ بْنِ اللَّجْلاَجِ ، قَالَ : كُنَّ النِّسَاءُ يُؤْمَرْنَ أَنْ يَتَرَبَّعْنَ إذَا جَلَسْنَ فِي الصَّلاَةِ ، وَلاَ يَجْلِسْنَ جُلُوسَ الرِّجَالِ عَلَى أَوْرَاكِهِنَّ ، يُتَّقي ذَلِكَ عَلَى الْمَرْأَةِ ، مَخَافَةَ أَنْ يَكُونَ مِنْهَا الشَّيءُ.

হযরত খালেদ বিন লাজ্জাজ রহ. বলেন-“মহিলাদেরকে আদেশ করা হত যেন নামাযে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের উপর বসে। পুরুষদের মত না বসে। আবরণযোগ্য কোন কিছু প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশংকায় মহিলাদেরকে এমনি করতে হয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০৩, হাদিস নং-২৭৯৯)

উল্লেখিত বর্ণনাগুলি ছাড়াও আয়িম্মায়ে তাবেয়ীনের আরো কিছু বর্ণনা এমন আছে যা মহিলা-পুরুষের নামাযের পার্থক্য নির্দেশ করে। পক্ষান্তরে একজন তাবেয়ী থেকেও এর বিপরীত বক্তব্য প্রমাণিত নয় قول طاوس ولأن من شرع في حقه التكبير شرع في حقه الرفع كالرجل فعلى هذا ترفع قليلا قال أحمد رفع دون الرفع والثانية لا يشرع لأنه في معنى التجافي ولا يشرع ذلك لها بل تجع نفسها في الركوع والسجود وسائر صلاتها

তাকবীরের সময় মহিলারা হাত উঠাবে কি উঠাবে না? এ বিষয়ে কাজী [আবু ইয়াজ] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ থেকে দু’টি মত উল্লেখ করেছেন। প্রথম মত হল হাত উঠাবে। কেননা খাল্লাল হযরত উম্মে দারদা এবং হযরত হাফসা বিন সীরীন থেকে সনদসহ বর্ণনা করেন যে, তারা হাত উঠাতেন। ইমাম তাউসের বক্তব্যও তাই। উপরন্তু যার ব্যাপারে তাকবীর বলার নির্দেশ রয়েছে তার ব্যাপারে হাত উঠানোরও নির্দেশ রয়েছে। যেমন পুরুষ করে থাকে। এ হিসেবে মহিলারাও হাত উঠাবে। তবে সামান্য। আহমাদ রহঃ বলেন-“তুলনামূলক কম উঠাবে”।

দ্বিতীয় মত হল-“মহিলাদের জন্য হাত উঠানোরই হুকুম নাই। কেননা হাত উঠালে কোন অঙ্গকে ফাঁক করতেই হয়, অথচ মহিলাদের জন্য এর বিধান দেওয়া হয়নি। বরং তাদের জন্য নিয়ম হল রুকু সেজদাসহ পুরো নামাযে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবে। {আল মুগনী-২/১৩৯}

আলোচনার এই পর্যায়ে হাদীস, আসারে সাহাবা, তাবেয়ীন ও চার মাযহাবের ইমামদের ঐক্যমত্যের প্রমাণ পেশ করার পর আমরা দেখব আমাদের যে গায়রে মুকাল্লিদ ভাইয়েরা মহিলাদের নামাযের ভিন্ন বিষয়টিকে উপেক্ষা করেন এবং পুরুষ ও মহিলার নামাযের অভিন্ন পদ্ধতির পক্ষে কথা বলেন, তাদের আলেমগণ এ বিষয়ে কি বলেন? তারা কি ফাতওয়া দিয়েছেন?গায়রে মুকাল্লিদ আলেমগণের ফাতওয়া

মহিলাদের নামাযের পদ্ধতিতে ইতোপূর্বে যা কিছু উল্লেখ করা হল তথা হাদিস, আসারে সাহাবা, তাবেয়ীনদের ইজমা, এবং চার ইমামের ঐক্যমত্বের আলোকে যুগ যুগ ধরে অবিচ্ছন্ন সূত্র পরম্পরায় যেই পার্থক্যের আমল চলে আসছে, সেটাকে গায়রে মুকাল্লিদদের নেতৃস্থানীয় আলেমগণও স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং সেই আলোকে ফাতওয়া দিয়েছেন।

# মাওলানা মুহাম্মদ দাউদ গযনবী রঃ এর পিতা আল্লামা আব্দুল জাব্বার গযনবী রহঃ কে যখন জিজ্ঞেস করা হল-“মহিলাদের নামাযে জড়সড় হয়ে থাকা কি উচিত?” জবাবে তিনি একটি হাদিস উল্লেখ করার পর লেখেন-“এর উপরই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের চার মাযহাব ও অন্যান্যের মাঝে আমল চলে আসছে”।

এরপর তিনি চার মাযহাবের কিতাবের উদ্ধৃতি প্রদান করার পর লিখেন-“মোটকথা মহিলাদের জড়সড় হয়ে নামায পড়ার বিষয়টি হাদীস ও চার মাযহাবের ইমামগণ ও অন্যান্যের সর্বসম্মত আমলের আলোকে প্রমাণিত। এর অস্বিকারকারী হাদীসের কিতাবসমূহ ও উম্মতে মুসলিমার সর্বসম্মত আমল সম্পর্কে বেখবর ও অজ্ঞ”। (ফাতওয়ায়ে গযনবীয়্যা-২৭-২৮, ফাতওয়ায়ে ওলামায়ে আহলে হাদিস—৩/১৪৮-১৪৯, মাযমুয়ায়ে রাসায়েল-মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর-১-৩১০-৩১১)

মাওলানা আলী মুহাম্মদ সাঈদ সাহেব “ফাতওয়ায়ে ওলামায়ে আহলে হাদিস” এ এই পার্থক্যের কথা স্বীকার করেছেন। (মাজমুয়ায়ে রাসায়েল-১/৩০৫)

আলবানী সাহেবের অসার বক্তব্য

আশ্চর্যের কথা হল, উপরোল্লিখিত দলীলসমূহ এবং উম্মতের মাঝে নববী যুগ থেকে পর্যায়ক্রমে চলে আসা এই সর্বসম্মত আমলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আলবানী সাহেব তাঁর “সিফাতুস সালাতে” ঘোষণা দিয়ে দিলেন যে, “পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতি এক”।

কিন্তু এই দাবির পক্ষে তিনি না কোন আয়াত পেশ করেছেন, না কোন হাদিস। আর কোন সাহাবী বা তাবেয়ীর ফাতওয়া। এহেন বক্তব্যের ভিত্তি তিনি শুধু এটাকেই বানিয়েছেন যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্যের ব্যাপারে কোন সহীহ হাদিস নাই। অথচ তার এই দাবি প্রমাণ করার জন্য উচিত ছিল উপরোল্লিখিত দলিল সমূহ বিশ্লেষণ করা। কিন্তু তিনি তা না করে কেবল পার্থক্য সম্বলিত একটি হাদীসকে {যা বক্ষ্যমান নিবন্ধে উল্লেখিত হয়েছে} শুধু এ কথা বলে যয়ীফ বলে আখ্যা দিয়েছেন যে, হাদীসটি ‘মুরসাল’। আর মুরসাল হওয়ায় এটি দুর্বল। এ ছাড়া অন্য কোন আলোচনাই তিনি দলীল সম্পর্কে করেননি।

কিন্তু তার এই কথাটি এক গুয়েমি ছাড়া কিছু নয়। কারণ মুহাদ্দীসীনে কিরামের নিকট হাদিস মুরসাল হলেই তা অগ্রহণীয় হয়ে যায়না। কেননা প্রথমত আয়িম্মায়ে দ্বীনের অধিকাংশের মতে বিশেষত স্বর্ণযুগের ইমামগণের নিকট যদি প্রয়োজনীয় শর্তাবলী উপস্থিত থাকে। তাহলে মুরসাল হাদিসও সহীহ হাদিসের মত গ্রহণযোগ্য।

দ্বিতীয়ত: যে ইমামগণের নিকট ‘মুরসাল” হাদীসকে সহীহ বলার ব্যাপারে দ্বিধা রয়েছে তারাও মূলত কিছু শর্তের সাথে মুরসাল হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করার উপযোগী মনে করেন। প্রবন্ধের শুরুতে বর্ণিত মুরসাল বর্ণনাটিতেও সেসব শর্ত বিদ্যমান রয়েছে। যার কারণে গায়রে মুকাল্লিদদের বিখ্যাত আলেম ও মুহাদ্দিস নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান “আউনুল বারী”-(১/৫২০ দারুর রাশীদ, হালাব সিরিয়া) তে লিখেছেন-“এই মুরসাল হাদীসটি সকল ইমামের উসূল ও মূলনীতি অনুযায়ী দলীল হওয়ার যোগ্য”। তার পূর্ণ বক্তব্যটি দেখুন আওনুল বারী-২/১৫৯,

পুরুষ মহিলার নামাযের পার্থক্য নেই প্রমাণ করতে আলবানী দ্বিতীয় যে কাজটি করেছেন তা খুবই গর্হিত। সেটা হল তিনি ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ নাকি বলেছেন-“মহিলা পুরুষের মতই নামায আদায় করবে”। এই কথাটি নাকি মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাতে আছে। অথচ সেই কিতাবের কোথাও এই উক্তিটি নাই। আল্লাহই ভাল জানেন তিনি কি করে এই কথা বলতে পারলেন!!

অথচ ইতোপূর্বে মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার একাধিক বর্ণনা সহীহ সনদে ইবরাহীম নাখয়ী থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। যেখানে ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ স্পষ্টই মহিলা পুরুষের নামাযের পার্থক্যের কথা বলেছেন।


আলবানী সাহেব তার নিজের দাবী প্রমাণ করার জন্য তৃতীয় আরেকটি কাজ করেছেন। সেটা হল-ইমাম বুখারী রহঃ এর রিজালশাস্ত্রেরে একটি কিতাব “তারীখে সগীর” থেকে নিম্নোক্ত বর্ণনাটি পেশ করেছেন-

عن ام الدرداء انها كانت تجلس فى الصلاة جلسة الرجل-

“উম্মে দারদা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি নামাযে পুরুষের মত বসতেন”।

আলবানী সাহেব খেয়াল করতে পারেননি যে, এই বর্ণনাটি দ্বারা নামাযে পুরুষ ও মহিলার বসার ভিন্নতাই প্রমাণ হয়। এক হওয়া নয়। যদি উভয় বসার পদ্ধতি এক হত, তাহলে “পুরুষের মত বসা” কথাটির কোন অর্থ থাকেনা। তাই এই কথা থেকে এটি বুঝা যায় যে, সেই যমানায় পুরুষদের মত মহিলারা বসতনা। কিন্তু তিনি যেহেতো ভিন্নভাবে বসতেন তাই এটি ইতিহাসের বর্ণনায় চলে এসেছে।

আরেকটি মজার ব্যাপার হল। উম্মে দারদা হলেন একজন তাবেয়ী। তিনি ৮০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। তাবেয়ীর বক্তব্য দ্বারা আলবানী সাহেব দলীল পেশ করলেন। অথচ তিনিই আমাদের বর্ণিত প্রথম হাদিসটি মুরসাল বলে প্রত্যাখ্যান করলেন। আশ্চর্য ব্যাপার!!

সুতরাং যদি নামাযের পদ্ধতি বর্ণনার ক্ষেত্রে তাবেয়ীর আমল দলীল হয়ে থাকে (আসলে কথা এটাই, অর্থাৎ তাবেয়ীর কথা দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য) তাহলে ইতোপূর্বে বিখ্যাত একাধিক তাবেয়ী ইমামগণের উদ্ধৃতিতে মহিলাদের নামাযের পদ্ধতির ভিন্নতার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা গেছে। এবং একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, আয়িম্মায়ে তাবেয়ীদের তালীম ও শিক্ষা অনুযায়ী রুকু সেজদা, ও বৈঠকসহ অনেক ক্ষেত্রে মহিলাদের নামায পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন ছিল। এক্ষেত্রে শুধু একজন তাবেয়ী মহিলার ব্যক্তিগত আমলকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করাটা কিছুতেই যুক্তিযুক্ত হতে পারেনা। বিশেষ করে যখন যখন ঠিক এই বর্ণনাটির মাঝেই সুষ্পষ্ট একথার ইংগিত রয়েছে যে, এ ক্ষেত্রে এ মহিলা অন্য সাহাবী ও তাবেয়ী মহিলা থেকে সম্পুর্ণ ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিলেন।

সুতরাং বুঝা গেল নামাযের মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে মহিলারা পুরুষদের থেকে আলাদা এটাই দলীল দ্বারা প্রমাণিত। গায়রে মুকাল্লিদ ভাইদের বক্তব্যটির কোন দলিল নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সত্যকে সত্য হিসেবে মেনে নেবার তৌফিক দান করুন। আমীন
والله أعلم بالصواب
M***i Najmul Islam
ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার
ফিক্বহে হানাফী বোর্ড বাংলাদেশ

Address

Fulbaria

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার:

Share