02/08/2025
মানুষ নিজের কোন অঙ্গ দিয়ে সর্বপ্রথম গুনাহ করে বলতে পারেন? হ্যাঁ, সেটা হলো চোখ। চোখের মাধ্যমেই সবার আগে মানুষ গুনাহের রাজ্যে প্রবেশ করে।
চোখ দিয়ে শুরুতে দেখে। দৃষ্টির বদৌলতে সেটা চলে যায় মানুষের মস্তিষ্কে। সেখানে নানান ক্রিয়া আর বিক্রিয়ায়, বিভিন্ন হরমোন নিঃসরণের কারণে তার ভেতরে একটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং ওই মুহূর্তে সে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার বাসনায় অস্থির হয়ে উঠে। সেই অস্থিরতা মুহূর্তকালের জন্য তাকে বিস্মৃত করে ফেলে ঈমান আর তাকওয়া থেকে।
এটা কিন্তু আমার কথা নয়, এটা স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কথা৷ সুরা আন নুরে তিনি মুমিন পুরুষদের আদেশ করতে গিয়ে বলেছেন—‘(হে রাসুল, আপনি) মুমিন পুরুষদের বলে দিন যে, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক কল্যাণের। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত।’ (আন নুর, ৩০)
এই আয়াতে লজ্জাস্থানের হিফাযত করার পূর্বে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা দৃষ্টিকে সংযত করার আদেশ করেছেন৷
কথাগুলো আজকের দুনিয়াতে এসে যেন আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক। দৃষ্টিকে অশালীন, অযাচিত আর অনর্থক বিষয়াদি থেকে সংযত করা যেন আজকের যুগে যুদ্ধজয়ের চাইতেও অনেকবেশি কঠিন। সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করতে গিয়ে কতো কতো অনভিপ্রেত, অশালীন, অযাচিত ছবি আর ভিডিওতে আমাদের নজর পড়ে তার কি সঠিক কোনো পরিসংখ্যান আছে কোথাও? একদম নেই৷ প্রতিদিন কতো বেগানা নারী, বেগানা পুরুষ আর কতো আজেবাজে দৃশ্য আমাদের সামনে চলে আসছে। স্কিপ করার অপশন খুঁজে পাওয়ার আগেই সেগুলো মস্তিষ্কের নিউরণে চলে যাচ্ছে অবাধে।
সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং, নিউজ সাইট থেকে সংবাদ পড়া—এগুলো আমাদের নিত্যকার অভ্যাস এখন৷ চাইলেও এসব থেকে সম্পূর্ণরূপে ফিরে আসার সুযোগ আমাদের সামনে নেই। আমাদের জীবন এসবকে ঘিরে আবর্তিত হয় এখন।
কিন্তু, আমাদের হাতে কি সত্যিই কিছু করার নেই?
অবশ্যই আছে। আমাদের সামনে আসা অশালীন, অযাচিত, অনভিপ্রেত এইসব জিনিসগুলোকে আমরা আটকানোর চেষ্টা করতে পারি।
ভাবছেন, কীভাবে সেটা করা যায়, তাই তো?
ঠিক এমন ভাবনা থেকেই, Kahf থেকে আমরা তৈরি করেছি এমন একটা ব্রাউজার, যে ব্রাউজার থেকে আপনি কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করলে, সেখানে থাকা যাবতীয় অশালীন ছবিগুলো অটোম্যাটিক্যালি ব্লার হয়ে যাবে। যে ছবি বা দৃশ্যগুলো দেখা হারামের পর্যায়ে পড়ে, সেসবের কোনোটাই আপনার সামনে উন্মুক্ত থাকবে না। অর্থাৎ, নিউজটা আপনি ঠিকঠাকভাবে পড়তে পারবেন, তবে সেই নিউজের সাথে জুড়ে থাকা যে অশালীন ছবিটা আপনার দৃষ্টিকে অন্যদিকে নিয়ে যেত, যে ছবিটা দেখার ফলে আপনার আমলনামায় গুনাহ লেখা হতো, সেই ছবিটাই কেবল আপনার সামনে উন্মুক্ত থাকবে না।
আমাদের সেই ব্রাউজারের নাম—Kahf Browser
গুগল ক্রোম আমাদের প্রায় প্রত্যেকের ফোনে, পিসিতে রয়েছে। আমরা যখন গুগল ক্রোমে কোনোকিছু সার্চ দিই, তারা আমাদের সামনে দুনিয়ার যাবতীয় বিজ্ঞাপন নিয়ে হাজির হয়। কতো অশালীন ছবি, ভিডিও যে সামনে চলে আসে তা বলাই বাহুল্য।
তবে, আপনি যদি গুগল ক্রোম বাদ দিয়ে Kahf Browser থেকে সার্চ দেন, গুগল ক্রোম আপনাকে যে রেজাল্ট এনে দিতো, কাহাফ ব্রাউজারেও আপনি সেই একই রেজাল্ট পাবেন। যে বাড়তি সুবিধাটা কাহাফ ব্রাউজার আপনাকে দিবে তা হলো—অশালীন ছবিগুলো ঢেকে যাবে, কাহাফ ব্রাউজার থেকে কোনো এডাল্ট কী-ওয়ার্ড দিয়ে কিছু সার্চ দেওয়া যাবে না, কোনো এডাল্ট কন্টেন্ট বা সাইটে ভিজিট করা যাবে না, সেসকল এড বা বিজ্ঞাপনে হারামের উপাদান থাকবে, সেগুলো অটোম্যাটিক্যালি ব্লক হয়ে যাবে।
শুধু তাই নয়, কাহাফ ব্রাউজার ৫৫ লক্ষেরও বেশি ওয়েবসাইটকে ব্লকের আওতায় রেখেছে যার মধ্যে আছে—পর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল সাইটসমূহ, ম্যালওয়্যার ও র্যানসমওয়্যার, স্ক্যাম ও ফিশিং, জুয়া/গ্যাম্বলিং ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের প্রসার, ইসলামবিদ্বেষী প্ল্যাটফর্ম, ইসলামকে মিথ্যা ও ভ্রান্তভাবে প্রচার করে এমন ওয়েবসাইট, প্রক্সি ওয়েবসাইট সহ আরও অনেক। তাছাড়াও, আমরা যেসকল ওয়েবসাইট ভিজিট করি, গুগল সেগুলো ট্র্যাক করে ক্রোমের মাধ্যমে। কাহাফ ব্রাউজার আপনাকে এই ধরণের প্রাইভেসি ইস্যুতে দিবে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা।
কাহাফ ব্রাউজার শুধু আমাকেই নিরাপদ সার্চ রেজাল্ট দিবে তা নয়, এটি আমাদের পরিবারের প্রত্যেকের জন্য হয়ে উঠতে পারে একটি অত্যন্ত দরকারি ব্রাউজার যা আমাদের বাঁচাবে অনলাইনের হারাম জিনিস দেখা থেকে।
আরও জানিয়ে রাখি, Kahf Browser থেকে ইউটিউব ব্রাউজ করলে সেখানকার অশালীন বা হারাম ভিডিও ব্লার করে দেওয়ার ফিচারও শীঘ্রই আসতে যাচ্ছে, ইন শা আল্লাহ। আর এইসমস্তটাই হচ্ছে কাহাফের নিজস্ব এআই ইনোভেশন প্রযুক্তি দিয়েই, আলহামদুলিল্লাহ।
Kahf Browser এ দুইভাবে সার্চ রেজাল্ট আসে। একটা হলো কোনো মহিলার ছবি হলে চেহারা ব্যতীত সম্পূর্ণটাই ব্লার করে দেয়। আবার, সেটিংস থেকে ইচ্ছা করলে চেহারা সহ ব্লার করে দেওয়ার অপশনও অন করে দেওয়া যায়। তখন পুরো ছবিই ঢেকে যাবে।
( পোস্টে থাকা ছবি দ্রষ্টব্য। ফিচারের পার্থক্যটা বোঝানোর জন্যেই ছবিটা এভাবে কোলাজ করা। আর কিছু নয়।)
দৃষ্টির হিফাযত করা ফরয। আর সেই ফরয কাজে যদি আমাদের কোনো উদ্যোগ কাউকে সামান্যতমও সাহায্য করে—সেটাই আমাদের বড় পাওনা। আল্লাহর রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহিওা সাল্লাম বলেছেন, 'নিশ্চয় সকল কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।'
আপনার এবং আপনার পরিবারের ছোট-বড় সদস্যদের ফোন বা পিসি থেকে গুগল ক্রোম ব্রাউজার বাদ দিয়ে, Kahf Browser ইন্সটল করে, সেটাকে ডিফল্ট ব্রাউজার করে নেওয়ার সম্ভবত এখনই সময়। আমাদের ইন্টারনেট দুনিয়া হোক নিরাপদ আর গুনাহমুক্ত।
( ডাউনলোড লিঙ্ক প্রথম কমেন্টে)