28/05/2025
একজন স্বনামধন্য লেখককে মোবাইল উপহার দিয়েছিলাম শুনে ফারাবী আমার কাছে একটা মোবাইল ফোন চেয়েছিল। ব্লগে, ফেসবুকে তথ্যসমৃদ্ধ অনেক বড় বড় ইসলামিক আর্টিকেল লিখতো ফারাবী। একটা স্মার্টফোন হলে লেখালেখিতে সুবিধা হবে, এই আবদার নিয়ে সে আমার কাছে এসেছিল। সে সময়ে অনেকের কাছেই একটা ফোনের জন্য ম্যাসেজ পাঠাতো। একদিকে ব্লগার নীলসালু লাগাতার ফারাবী বিরোধী পোস্ট লিখতো দেখতাম।
অন্যদিকে নাস্তিকপাড়ায় ফারাবী বিরোধী মিমস, জোকস, কিচ্ছাকাহিনী প্রতিনিয়ত চোখে পড়তো। Theist VS Atheist গ্রুপে নাস্তিকরা একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতো, আর ফারাবী নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে বসে বসে সেটার ব্যাখ্যা দিতো।
আমি একবার নিষেধও করেছিলাম এসব আজাইরা কাজে সময় নষ্ট করা নিস্প্রয়োজন।
অভিজিৎ রায় হত্যায় তার সম্পৃক্ততা নেই। শুধুমাত্র উস্কানীমূলক লেখাকে কেন্দ্র করে তাকেও এই মামলায় আসামী করা হয়। অত্যন্ত নিরীহ একটা ছেলে। তৎকালীন তার সমালোচকদের প্রশ্ন করলেও তারা নি:সংকোচে বলবে ছেলেটার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
ফারাবীকে আমি একটা মোবাইল কিনে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মাঝে আমার সাথে কিছুদিন যোগাযোগ ছিল না। হঠাৎ শুনি র্যাবের হাতে বন্দি। সেই সময়ে সন্দেহভাজন অনেকের নামই এসেছিল। ভাবলাম জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়তো ছেড়ে দেবে।
কিন্ত আর ছাড়লোনা। জেলের অন্ধকারে কখন মাথার চুল পেকে ঝরে গেলো, দাঁড়ি সব সাদা হয়ে গেলো, চেহারার স্নিগ্ধতা নষ্ট হয়ে গেলো!
ফারাবীর সর্বশেষ ছবি দেখে রীতিমতো অবাক হলাম।
আজ যদি আদালতে প্রমাণিত হয় শাফিউর রহমান ফারাবী নির্দোষ ছিল, থাবা বাবা কিংবা অভিজিৎ রায়ের মার্ডারের সাথে তার কোনোই সম্পৃক্ততা নেই।
বেকসুর খালাস পেয়ে বেরিয়ে আসবে ফারাবী। তার হারানো যৌবন, জেলখানায় হারানো জীবনের মূল্যবান সময়গুলো তাকে কীভাবে ফেরত দেবে!
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ফৌজদারী আইনে গ্রেফতারকৃত কত আসামী হাসতে হাসতে জেল থেকে বেরিয়ে এলো। গত সপ্তাহে একজন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মুক্তি পেলো।
অথচ নিরীহ, নির্দোষ এই ছেলেটার মুক্তির ব্যাপারে কোনো উদ্যেগ নেয়া হচ্ছেনা।
অনলাইনে অফলাইনে কত সফল আন্দোলনইতো আমরা করলাম। আসুন না সমস্বরে একবার আওয়াজ তুলি, ফারাবীর মুক্তি চাই...
Copy অচিকীর্ষু লৌকিক