03/07/2025
“ও বাঁচলেই আমার বাঁচা’…” — কিডনি দান করে স্বামীর প্রাণ বাঁচালেন স্ত্রী, ঝিনাইদহের হার না মানা ভালোবাসার এক নিঃশব্দ কাব্য…
ছবির এই মুখ দুটি শুধু এক দম্পতির নয়, এ যেন দুটি আত্মার একতান।
এই প্রেমে নেই কোনো শাড়ি-সুট, নেই কোনো ফিল্টার, নেই কোনো লোকদেখানো প্রতিজ্ঞা।
এই প্রেম জীবনের মতই কাঁচা, রক্তের মতোই গভীর — মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে জীবনকে ফিরিয়ে আনার এক অকুণ্ঠ সাহসের নাম।
ঘটনাস্থল: হরিশপুর, হরিণাকুণ্ড, ঝিনাইদহ।
সাধারণ এক দম্পতি — রাশিদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী।
অর্থ নেই, ঐশ্বর্য নেই, কিন্তু ছিল অটুট একটি জিনিস—ভালোবাসা।
হঠাৎ করেই ছায়া নামে জীবনে।
রাশিদুল জানতে পারেন, উভয় কিডনি বিকল।
বাঁচতে হলে কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় নেই।
কিন্তু কিডনি কেনার সামর্থ্য? সেটা তো বহু দূরের স্বপ্ন।
ডাক্তার জানালেন — স্ত্রীর কিডনির সঙ্গে মিল রয়েছে।
বাঁচাতে পারবেন তিনি… তবে দিতে হবে নিজের একটা কিডনি।
এখানেই শুরু হয় এক নারীর জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত —
নিজের অঙ্গ দিয়ে জীবন ফিরিয়ে দেওয়া, নিজের প্রিয় মানুষটিকে।
তিনি থামেননি, ভয় পাননি, পিছু হটেননি।
হাসিমুখে এগিয়ে এসেছেন, শুধু একটি প্রার্থনা মনে —
"ও বাঁচুক, আমি আর কিছু চাই না।”
অপারেশন সফল।
স্বামীর চোখে জল — স্ত্রীর মুখে শান্তির হাসি।
সেই হাসিটাই যেন বলে দিল —
“আমি বাঁচাতে পেরেছি, আমি সত্যিই ভালোবাসি।”
আজ, যখন সমাজে একটু মতের অমিলেই ভেঙে পড়ে সংসার,
একটু ঝগড়াতেই উঠে যায় তালাকের প্রশ্ন,
তখন রাশিদুলের স্ত্রী হয়ে ওঠেন সময়ের এক নতুন সংজ্ঞা —
ভালোবাসার এক জীবন্ত উদাহরণ।
আজ তাঁরা দু’জনই সুস্থ আছেন। কিন্তু তাঁদের গল্পটি শুধুই তাঁদের নয়।
এটি এক বার্তা —
ভালোবাসা মানে শুধু ‘একসাথে থাকা’ নয়,
ভালোবাসা মানে ‘একজনের জন্য নিজের অঙ্গটুকুও হাসিমুখে দিয়ে দেওয়া।’
এই প্রেম সিনেমার পর্দায় নয়, বাস্তবের মাটিতে জন্ম নেয়।
এই ভালোবাসা দেখলে, চোখ ভিজে ওঠে, বুকটা হিম হয়ে যায়।
এই সম্পর্কেই লুকিয়ে থাকে আসল ‘সাথ’ আর ‘প্রাণের টান’।
স্যালুট আপনাকে বোন। আপনি শুধু একজন স্ত্রী নন, আপনি আশীর্বাদ।
রাশিদুলের জীবনে আপনি কিডনি নয়, ‘নতুন জীবন’ দিয়েছেন।
শুভ কামনা রইল এই অনন্য দম্পতির জন্য।
আপনাদের ভালোবাসা হোক আগামী প্রজন্মের প্রেরণা।