22/10/2025
তুলসী কাঠে দ্বীপ দেখানোর মাহাত্ম্য 🪔
ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রদীপ নিবেদনের অনন্ত মহিমা অসংখ্য শাস্ত্রে উল্লিখিত রয়েছে। তুলা, ঘি, তিল, কর্পূর এবং অন্যান্য শস্যদানার তৈল দ্বারা প্রদীপ নিবেদন ভগবানের অত্যন্ত প্রিয়। কিন্তু তুলসীকাষ্ঠ দ্বারা নিবেদিত প্রদীপ ভগবানের অত্যন্ত প্রিয়, কেননা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সব থেকে প্রিয় উপকরণ হচ্ছেন কৃষ্ণপ্রিয়া তুলসী।
শাস্ত্রে কি নির্দেশনা রয়েছে?
পদ্মপুরাণে বর্ণনা করা হয়েছে, যদি কেউ শুষ্ক তুলসী কাষ্ঠের মাধ্যমে ভগবানকে শ্রীকৃষ্ণকে প্রদীপ নিবেদন করে, তাহলে সাধারণ প্রদীপ নিবেদনের চেয়ে ভগবান এক্ষেত্রে লক্ষগুণ বেশি সন্তুষ্ট হন। প্রহ্লাদসংহিতায় উল্লেখ আছে,
তুলসীপাবকেনৈব দীপং যঃ কুরুতে হরেঃ।
দীপলক্ষসহস্রাণাং পুণ্যং স্তবতি দৈত্যজ॥
অর্থাৎ, হে দৈত্যকুমার প্রহ্লাদ, যিনি তুলসীকাষ্ঠের প্রদীপ দ্বারা শ্রীহরিকে আরতি নিবেদন করেন, তার একটি দীপ দানেই শ্রী হরি এক সহস্র লক্ষ (১০ কোটি) প্রদীপ নিবেদনের সমান সন্তুষ্ট হন।
অর্থাৎ সহস্র লক্ষ দীপ নিবেদন করলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যতটা সন্তুষ্ট হন, একটি তুলসীকাঠের প্রদীপ নিবেদন করলে তার থেকেও অধিক সন্তুষ্ট হন।
কেন করা উচিত?
শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে, সকাম, নিষ্কাশন, মোক্ষকামী সকলেরই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা উচিত। অতএব কোনো ফল লাভের আশায় হোক, অথবা নিষ্কামভাবে কেবল কৃষ্ণের সন্তুষ্টির জন্য হোক, কৃষ্ণের আদেশে সকলেরই তুলসীকাষ্ঠ দ্বারা প্রদীপ নিবেদন করা উচিত।
কে বা কারা করতে পারে?
তুলসীকাঠের প্রদীপ নিবেদন করা ভগবানকে তুলসী নিবেদনেরই মতো। অগস্ত্য সংহিতায় বলা হয়েছে,
ন তস্য নরকক্লেশো যোঽর্চ্চয়েত্তুলসীদলৈঃ।
পাপিষ্ঠো বা অপাপিষ্ঠঃ সত্যং সত্যং না সংশয়॥
অর্থাৎ, মহা পাপাত্মা ব্যক্তিও শ্রীহরিকে তুলসী নিবেদন করলে তাঁকে আর নরকযাতনা লাভ করতে হয় না। শ্রীহরির কৃপায় সে ধীরে ধীরে ধর্মাত্মায় পরিণত হয়।
অতএব, যেকোনো ব্যক্তি, সে আমিষাহারী, অশৌচ হোক, অস্নাত হোক, যবন হোক বা অন্যান্য পাপাচারে রত থাকুক, সেও ভগবানকে তুলসী নিবেদনের অধিকারী। তাই সকলেই তুলসীপত্র, তুলসী মঞ্জরী, তুলসীকাঠের প্রদীপ নিবেদন করার অধিকারী।
সারাবছরই প্রদীপ নিবেদন মঙ্গলময়। দামোদর মাস, পুরুষোত্তম মাস, বৈশাখ মাস, মাঘ মাসে অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আর বিশেষত এই সব মাসে সকলেরই বেশি বেশি কৃষ্ণ সেবা করা উচিত। তাই সকলেই এই মাসে তুলসী কাঠের প্রদীপ নিবেদন করতে পারবেন।
হরে কৃষ্ণ 🙏🏻🙏🏻