17/06/2023
আলহাদুলিল্লাহ! বিশ্ব সেরা, ক্বারী সাইদুল ইসলাম আসাদ এর পিছে জুম্মার নামাজ আদায় করলাম-16.06.2023.
দৃষ্টি কাড়ছে শ্রীপুরের হাজী আব্দুস সাত্তার মসজিদ!!!
শিল্পনগরী খ্যাত গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার ভাংনাহাটি গ্রামে সবুজের বুকে নির্মাণ করা হয়েছে হাজী আব্দুস সাত্তার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। ৫ একর জায়গা জুড়ে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশাল এ কমপ্লেক্সেটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে রয়েছে হাজী আব্দুস সাত্তার কওমী মাদ্রাসা। দৃষ্টি নন্দন এই হাজী আব্দুস সাত্তার দারুল উলুম শ্রীপুর মসজিদটি ব্যবসায়ী হাজী আব্দুস সাত্তারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
২০১০ সালে ভারতের প্রকৌশলী দিয়ে মসজিদটির নকশা করানো হয়। পরে ভারত থেকে মার্বেল পাথর এনে এ মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শেষে রমজান মাসে মসজিদটির উদ্ধোধন করা হয়েছে। একটি আধুনিক স্থাপত্তের ব্যতিক্রমধর্মী ও আন্তর্জাতিক মানের অলংকরণ শোভিত মসজিদ এটি। দেশি বিদেশি প্রসিদ্ধ প্রকৌশলীদের নিয়ে গড়া দল মসজিদের প্রতিটি ইঞ্চিতে রেখেছে নিখুঁত নির্মাণ ও আভিজাত্যের ছোয়া। বিশাল প্রান্তর ও বাগানে ঘেরা মসজিদটি দৃষ্টি কাড়বে সবার।
মসজিদটিতে রয়েছে ১১০ফুট উচু পাশাপাশি দুটো মিনার। এবং সুউচ্চ মিনারে বসানো মাইকে দেয়া আযানের আওয়াজ ছড়িয়ে যায় আশপাশের কয়েকটি গ্রামে। মসজিদের মূল ভবনে রয়েছে ৪টি বিশাল আকৃতির গম্বুজ। নীল টাইলসে মোড়ানো গম্বুজগুলোর ভেতর থেকেও করা হয়েছে কারুকার্য। পুরো মসজিদের মেজে এবং ভেতর-বাইরের দেয়াল করা হয়েছে মূল্যবান মার্বেল পাথর দিয়ে। মসজিদের মূল অংশটি দু-তলা বিশিষ্ট। মসজিদের করিডোর ঘেরা প্রাঙ্গণ ও সংলগ্ন প্রাঙ্গন মিলিয়ে একসাথে ৫হাজার মুসুল্লী নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদটি আরবী ক্যালিগ্রাফি ও ইসলামী নকশা দিয়ে সাজানো হয়েছে। মসজিদের বিভিন্ন অংশে ৩শতাধিক আরবী ক্যালিগ্রাফী স্থান পেয়েছে। ভেতরে মার্বেল পাথরে খচিত সুরা বাকারার শেষ তিন আয়াত লেখা রয়েছে। বলা যায় মসজিদ স্থাপত্তে ক্যালিগ্রাফী ও অলংকরণে আন্তর্জাতিক মানের সর্বোচ্চ প্রয়োগ এটি। মিহরাব, আর্চ, সিলিং, কলাম, ভিম ও দেয়াল ফুল-লতা-পাতার ইসলামী নকশা ও মহান আল্লাহর গুণবাচক নামের (আসমাউল হুসনা) ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে শোভিত করা হয়েছে।
মসজিদটির চারপাশ খোলা থাকায় আলো বাতাস থাকায় দিনের বেলায় মসজিদের অভ্যন্তর থাকে শীতল। অত্যাধুনিক লাইট ও সাউন্ড সিস্টেম মসজিদটিকে করেছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মসজিদে আসা মুসুল্লীদের জন্য রয়েছে আলাদা অজুখানা যেখানে রয়েছে নিরবিচ্ছিন্ন বিশুদ্ধ পানি। মসজিদটির আরেকটি বৈশিষ্ট হলো এই মসজিদে প্রতি জুমার নামাজের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় দেশের প্রখ্যাত আলেমদের। তারা নামাজের আগে ইসলামের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান রাখেন। দৃষ্টিনন্দন ও সৌন্দর্যমণ্ডিত মসজিদটি দেখতে ও নামাজ পড়তে প্রতিদিন গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত মানুষ আসেন। তবে শুক্রবার জুমআ নামাজ পড়তে এ মসজিদে বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা ভিড় জমান। মসজিদের পাশেই একটি মাদ্রাসা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও দেখাশুনার জন্য ৩৩ জন লোক রয়েছে। দুই তলাবিশিষ্ট এই মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ করতে পুরো ৬ বছর সময় লাগে। সব সময় বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা চালু রাখতে রয়েছে নিজস্ব জেনারেটর।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এ মসজিদে বিশাল উঁচু দুইটি মিনার ও চারটি গম্বুজ রয়েছে। সামনে রয়েছে দু’টি দৃষ্টিনন্দন বিশাল মিনার। পুরো মসজিদটি মার্বেল পাথরের তৈরি। মসজিদটির সামনে বিশাল একটি গেট। গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই বড় একটি দরজা। এর ডান ও বাম পাশে রয়েছে আরও দু’টি ছোট দরজা। ভেতরে অসংখ্য বৈদ্যুতিক পাখা।
মসজিদের দুই পাশে সবুজ ঘাসের মাঠ এবং নারিকেল, আম ও লিচু বাগান। সামনের অংশের ডান পাশে রয়েছে বিশাল অজুখানা।
নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মসজিদে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। রয়েছে বিশাল সীমানা প্রাচীর। এছাড়াও মূল ফটকে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী।
ওই এলাকার বাসিন্দা সুমন আহমেদ বলেন, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর লোকজন আসে কেউ নামাজ পড়তে কেউ মসজিদটি দেখতে। শুনেছি মসজিদটি নির্মাণ করতে প্রচুর টাকা ব্যয় হয়েছে।
মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা রহমত উল্লাহ জানান, প্রথমে ভারত থেকে প্রকৌশলী এনে মসজিদের নকশা করানো হয়। পরে বাংলাদেশের প্রকৌশলী এর কাজ করেন। প্রতিদিন এ মসজিদের নামাজ পড়তে পাশের মাদ্রাসা ও আশপাশের লোকজন আসে। এছাড়া প্রত্যেক শুক্রবার নামাজ পড়তে গাজীপুর ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসে।
হাজী আব্দুস সাত্তার দারুল উলুম শ্রীপুর এর প্রধান শিক্ষক মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, মসজিদের পাশাপাশি এখানে রয়েছে একটি আধুনিক কওমি মাদ্রাসা। এখানে কয়েকশো শিক্ষার্থী স্বল্প খরচে হিফজ ও নাজেরা বিভাগে পড়াশোনা করছেন। মসজিদ কমপ্লেক্সের অধীনে দারুল উলুম আব্দুস সাত্তার কওমি মাদরাসায় বর্তমানে তিন’শ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।
#ক্বারীসাইদুলইসলামআসাদ #জুম্মামোবারক