আমাদের গল্প

আমাদের গল্প amaderi.com is a concern which gives you the authority to unleash your shopaholic attitude from home with quality products and world class customer support.

At amaderi.com we strive to utilize the power of internet in its highest peak to fullfil the needs of your busy life. We cover whole Bangladesh right now and still anyone from outside of Bangladesh can purchase products online providing a Bangladeshi shipping address. Be comfy to experience the best shopping experience from us. amaderi.com
Amaderi.com is an e-commerce platform which brings the lat

est local and international goods to your doorstep. We offer a wide selection of products from renowned brands in Bangladesh with a promise of fast, safe and easy online shopping experience. From electronics to fashion, there is bound to be something for everyone in Amaderi.com Bangladesh. Amaderi.com offers Nationwide shipping and FREE returns! For your convenience we have several payment options including credit/debit cards, bKash and cash on delivery.

“অন্ধকারের পরে আলো”================="আলো নিভে গেলে চেনা মুখগুলোও অচেনা হয়ে যায়।"দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ ও নিষ্ঠুর রাজ...
03/07/2025

“অন্ধকারের পরে আলো”
=================

"আলো নিভে গেলে চেনা মুখগুলোও অচেনা হয়ে যায়।"

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ ও নিষ্ঠুর রাজনৈতিক অন্ধকারে দলটি কাটিয়েছে পনেরোটি বছর। সময়ের হিসেব ছিল না, শুধু ছিল ক্ষতির হিসেব—প্রাণের ক্ষতি, বিশ্বাসের ক্ষতি, সাহসের ক্ষতি।

রাশেদ করিম যখন প্রথম জেলে গেলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩২। তিনি ছিলেন এক সময়ের উদ্যমী ছাত্রনেতা। বুকভরা স্বপ্ন, মুখভরা বক্তব্য, হাতে দলীয় পতাকা। দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে সেই পতাকা অনেকবার রক্তে ভিজেছে, নিজের রক্তে—সেই রক্ত কেউ দেখেনি।

রাত ৩টা। বৃষ্টি পড়ছে টিনের চালে। গাজীপুরের একটি পরিত্যক্ত গোডাউনে চোখ বাঁধা অবস্থায় রাশেদকে রাখা হয়েছে। তাঁকে ধরে এনেছে গোয়েন্দা বাহিনীর অজ্ঞাত একটি দল। অভিযোগ? দলীয় মিটিংয়ে অংশগ্রহণ। তারা মারছে, আবার বলছে—“আরো করবি দলীয় রাজনীতি?”

রাশেদের ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরছে, কিন্তু তাঁর চোখে ভয় নেই। তিনি শুধু বললেন,
“দেশের মালিক জনগণ, এই অন্যায়ের বিচার একদিন হবেই।”

দিনগুলো কেটেছে নির্যাতনে। কয়েকজন নেতাকে গুম করা হয়েছে। অনেকে ভয়ে আত্মগোপনে। কেউবা পাড়ি জমিয়েছে বিদেশে। দলের অফিসগুলো বন্ধ, পোস্টার ছেঁড়া, পতাকা পোড়ানো—তবু কিছু মানুষ বুক বেঁধে ছিল। তারা পরিচয় গোপন করে থেকেছে, কখনো মসজিদের খতিব, কখনো মুদি দোকানদার, কখনো টিউশনির শিক্ষক হয়ে।

রাশেদের স্ত্রী, শবনম ছেলেকে নিয়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন। প্রতিবেশীরা বলেছিল, “তোমার স্বামী পাগল! এসব করে কী হবে?”
তিনি শুধু বলতেন—
“যে ভালোবাসা মানুষ ও দেশের জন্য, তা কখনো হারায় না।”

এভাবেই চলে গেছে পনেরোটি বছর।
পথে পথে হোঁচট, রক্ত, গালি, অবমাননা, মামলা, হামলা, জেল, গুম।
তবুও কিছু মানুষ, কিছু নাম—মাটি ও মানুষের সঙ্গে গেঁথে থেকে গেছে।
তাদের জন্যই দলটির নামটুকু মুছে যায়নি।

আরেকটা দৃশ্য—ঢাকা শহরের এক পুরনো গলিতে রাশেদ মুক্তি পেয়ে হেঁটে চলেছে। চারপাশে এখনও সরকারি দলের পোস্টার। চায়ের দোকানে ফিসফিস করে কেউ বলছে,
“শুনছো? আন্দোলনে মানুষ নামতেছে।”
“আগের সরকার পালাইতেছে নাকি?”
“জানো, রাশেদ ভাই আবার ফিরে আসছে!”

কোনো একজনের কণ্ঠে ভরসা:
“সব শেষ হয় না। কিছু গল্প শুরু হয় শেষ থেকে।”

"আশা একদিন নিঃশব্দে ঘুরে দাঁড়ায়, ঠিক তখনই যখন সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত বলে মনে হয়।"

বছরের পর বছর ধরে সহ্য করা নিপীড়ন আর অবিচার এক সময় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। পনেরো বছর নিঃশব্দে সহ্য করার পর জনতার কণ্ঠে জমে থাকা ক্রোধ আগুনের মতো বের হয়ে এলো।

শুরুটা ছোট ছিল— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, কোটা আন্দোলন দিয়ে । ছাত্রীদের নির্মমভাবে পিটিয়েছে এবং এক তরুণকে বিনা কারণে গুলি করে মেরে ফেলেছিল ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার বাহিনী। ভিডিওটা ভাইরাল হলো। তাতেই কেঁপে উঠল ঘুমন্ত জনতা। ছেলেটির রক্তে ভিজে ছিল দেশের পতাকা। তার মা বলেছিলেন—

“আমার ছেলেকে মেরেছে যারা, তাদের বিচার হবে জনতার রায়ে। ভোটের দিন আসবে। সেই দিন ফিরবেই।”

এই একটি বাক্য যেন জাগিয়ে তুলল ঘুমন্ত জাতিকে।

শুরু হলো বিক্ষোভ। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে, তারপর রাজপথে। একে একে শ্রমিক, শিক্ষক, চাকরিজীবী, এমনকি ভীত-সন্ত্রস্ত ব্যবসায়ীরাও নামতে শুরু করল রাস্তায়।
পথে পথে ধ্বনি উঠল—
“দুর্নীতির সরকার চাই না!”
“ভোটাধিকার ফিরিয়ে দাও!”
“গুম-খুনের বিচার চাই!”

আরেক রাতে শাহবাগে লক্ষ জনতার মিছিল থেকে কেউ চিৎকার করে উঠল—
“রাশেদ ভাই কোথায়?”
একটি স্লোগান ছড়িয়ে পড়ল শহর থেকে শহরতলি, গ্রাম থেকে গঞ্জে— “রাশেদের মতো ত্যাগী মানুষ চাই নেতৃত্বে।”

এরপরের ঘটনা যেন ছিল টর্নেডোর মতো।
পুরনো সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের মুখে ভয়।
অনেকে পালিয়ে গেল বিদেশে।
অনেকের বাড়ি ঘেরাও হলো।
গাড়িতে আগুন, প্রাসাদসম বাড়ির সামনে গালিগালাজ,আর ভাঙা গেটের ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি জনতা।

অবশেষে তারা পালাতে বাধ্য হলো।
ক্ষমতা ছেড়ে, দুর্নীতি গিলে, একে একে সবাই দিশেহারা হয়ে বিদেশে আশ্রয় নিল।
দেশের ইতিহাসে আবার একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় সরকার গঠন করা হলো।

নতুন এই সরকার অস্থায়ী, কিন্তু চূড়ান্তভাবে নিরপেক্ষ ও কঠোর।
তাদের লক্ষ্য:
স্বচ্ছ নির্বাচন
সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ
রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা পুনরুদ্ধার

রাশেদ করিম তখন ছিলেন গাজীপুরে, এক ছোট মসজিদের পাশের ঘরে। হঠাৎ একদিন তাঁর কাছে একটি ফোন আসে।
অপর প্রান্ত থেকে কেউ বলেন—
“রাশেদ ভাই, আপনাকে দরকার।
জনতা আপনাকে ডাকে"
চিন্তার বিষয়-
"তুমি যখন অন্ধকার থেকে উঠে এসো, সেই অন্ধকার যদি তোমার ভেতরেই রয়ে যায়—তবে তুমি কাকে মুক্ত করবে?"

ক্ষমতার দরজা এখনও খোলেনি, নির্বাচন আসেনি, তবে বাতাসে জয়ধ্বনি।
এমন এক সময়—যখন দলের সাধারণ কর্মীরা স্বপ্ন দেখছে, তখন কিছু ত্যাগী নেতাকর্মী, যারা দুঃসময়ে সামনে ছিল, এখন হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠছে।

রাশেদ করিম তখন দলের পুনর্গঠনে ব্যস্ত। জেলা-উপজেলায় সম্মেলনের পরিকল্পনা, সৎ ও শিক্ষিত কর্মীদের সংগঠনে আনার চেষ্টা। কিন্তু হঠাৎ একদিন ফোন পেলেন পুরাতন সহযোদ্ধা মাহফুজ ভাইয়ের কাছ থেকে।

“রাশেদ, মোনাওয়ার কবিরকে নিয়ে সাবধান হ।
সে এখন নিজের একটা বাহিনী বানিয়ে ফেলেছে।
চাঁদার লিস্ট করছে—কে কোথায় বসবে, কে প্রার্থী হবে, সবই ঠিক করে ফেলছে।
কে কাজ করবে, কে করবে না, সেটাও নাকি এখন সে বলে দেয়।”

মোনাওয়ার ছিল এক সময়কার ছাত্রনেতা। রাশেদের সঙ্গেই ছিল আন্দোলনে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন । জেলে না গেলেও গা ঢাকা দিয়েছিল অনেক বছর।
সেই সময় তার আচরণ ছিল অন্তর্মুখী, অল্প কথা বলত।
কিন্তু সরকার পালানোর পর যেন তার রূপ বদলে যায়।
ঢাকার মিরপুরে একটা অফিস দখল করে বসে।
পাশে কয়েকজন অস্ত্রধারী লোক।
লোকজন বলছে— “ওই অফিসে না গেলে , তাকে না মানলে গায়ে হাত তোলে।”

একদিন এক সাধারণ কর্মী—সাব্বির, গিয়ে দলের পোস্টার লাগাতে চেয়েছিল।
সে বলে,
“ভাই, পোস্টার লাগাতে চাই। এলাকার কিছু ছেলে তৈরি করছি।”
মোনাওয়ার গর্জে ওঠে—

“তোকে কে বলেছে পোস্টার লাগাতে? আমি অনুমতি দিয়েছি?”
“আমার অনুমতি ছাড়া কেউ কিছু করবে না।”

লোকজন চুপসে যায়।

এরপর শুরু হয় ভেতরের মারামারি।
এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের অফিসে হামলা করে।
প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে দলীয় পদের লোভে খুন করে মোনাওয়ারের এক কর্মী।
কেউ কিছু বলার সাহস পায় না।

রাবেয়া সুলতানা, যিনি দুঃসময়ে নারীদের নিয়ে আন্দোলন চালিয়েছিলেন, এখন ঘরে বসে কাঁদেন।
তার কথায়—

“এরা যদি এমন হয়, তবে আমরা কাদের জন্য লড়লাম?”

রাশেদ করিম বুঝতে পারেন,
বাইরের শত্রু বিদায় হয়েছে,
কিন্তু ভেতরের শত্রু এখন আরও ভয়ানক।
একদিন তিনি বলেন—"যাদের কাঁধে ভর করে ইতিহাস তৈরি হয়, অনেক সময় তাদেরকেই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়—ক্ষমতার দাম্ভিকে।"

বহু বছর ধরে দলে নিষ্ঠাভরে কাজ করা হাজার হাজার সাধারণ কর্মী যখন শুনল, ক্ষমতাসীন দল বিদায় নিয়েছে—তারা আশায় বুক বাঁধল।
তারা ভাবল, এখন তারা সম্মান পাবে, কাজের সুযোগ পাবে, দলীয় ভবিষ্যতের অংশ হবে।

কিন্তু বাস্তবতা ছিল উল্টো।
‘মাটি ও মানুষের’ কর্মীদের লাঞ্ছনা
সাব্বির হোসেন, এক সময়ের সাহসী যুবক, সাতবার জেল খেটেছেন, একবার গুলিতেও আহত হয়েছিলেন।
তিনি এলাকা থেকে দশজন নতুন কর্মীকে নিয়ে শহরের দলীয় অফিসে গেলেন।

মনে ছিল আশা—পুরনোদের মূল্যায়ন হবে।
কিন্তু গেটেই আটকে দেওয়া হয়।

এক দালালনামা নেতা তাকে দাঁড় করিয়ে বলে—

“এইসব পুরান পচা কংক্রিট লাগবে না এখন। যারা পয়সা দেবে, তারাই থাকবে। ফিরে যাও।”

সাব্বির থতমত খেয়ে বলে,

“ভাই, আমি তো দলের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম।”
লোকটা হেসে বলে—
“বেশি নাটক করিস না। সময় বদলাইছে। তুই এখন বেকার ইতিহাস!”

রাবেয়া সুলতানা, যিনি এক সময় নারী আন্দোলনের নেতা ছিলেন,
তিনিও একটি সভায় যেতে গিয়ে অপমানিত হন।

সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকটি তাকে বলে—

“আপনি তো এতোদিন মাঠে ছিলেন না। হঠাৎ এখন কিসের সভা-ভালোবাসা?”
“আপনি জানেন না, নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে?”

রাবেয়ার চোখে জল এসে পড়ে।
তিনি বোঝেন,
যে দলে তিনি মনের খাঁচা খুলে কাজ করেছিলেন, সেই দল এখন তাকে দেখে না—জানে না।

এসব ঘটনা শুধু এক-দুই জায়গায় না।
দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এমন অপমান আর অবহেলার কাহিনি।

দলীয় অফিসে সাধারণ কর্মীদের বসতে দেওয়া হয় না।
জেলা-উপজেলায় “অন্তঃপট সিন্ডিকেট” তৈরি হয়—যারা টাকার বিনিময়ে পদ দেয়।
স্লোগান বদলে যায়—
“ত্যাগ নয়, টাকা চাই।”

আর সাধারণ মানুষ?
তারা দলীয় প্রার্থীর গায়ে পচা ডিম ছোঁড়ে,
ফেসবুকে লিখে—
“আমরা এই দলকে ফিরিয়ে আনিনি, চাঁদাবাজদের রাজত্ব দিতে।”

রাশেদ করিম এসব দেখে রাতে ঘুমাতে পারেন না।
একদিন পুরনো একটি পোস্টার বের করেন—
যেখানে লেখা—
“আদর্শে গড়া সংগ্রামী দল”
সে লেখার দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন—
“এই শব্দগুলো এখন শুধু স্মৃতি। অথচ আমরা ভেবেছিলাম এগুলো ভবিষ্যৎ হবে।”

"যখন নির্দেশ আসে না ওপর থেকে, তখন নিচের হৃদয়গুলো জেগে উঠে নিজের পথ খোঁজে।"

দলের ঐতিহ্য ছিল এক কঠিন শৃঙ্খলার। একসময় নেতার এক কথায় হাজার মানুষ পথে নামত। কিন্তু এখন?

সবাই বলছে, “উপরে কেউ নেই। যারা আছে, তারা নিজের ভাগের জন্য ব্যস্ত। আর নিচের দিকে, আদর্শ মৃত।”

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন।
কিন্তু বিরোধী দলটির ভেতরে নেতৃত্ব নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব।

জেলা ও মহানগরের নেতারা নিজের মতো করে সভা ডাকছেন, নিজের লোক বসাচ্ছেন, নিজের নামে দল চালাচ্ছেন।

রাশেদ করিম বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় এক নেতাকে ফোন করলেন।
জিজ্ঞেস করলেন—

“ভাই, সম্মেলন হবে কবে?”
উত্তর এল—
“সম্মেলন বাদ দাও, এখন যেভাবে চলছে চলুক। সময়মতো সবাই বুঝে যাবে কে আসল নেতা।”

রাশেদ ফোন রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কারন তিনি ছিলেন আদর্শবান পিতার উরসজাত সন্তান। তার পিতা কখনোই অন্যায়ের সাথে আপোষ করে নাই। তিনিও এই দলের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন, এমপি ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন। আজ বেঁচে নাই। পিতার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে রাশেদের মধ্যে। তাইতো এত জনপ্রিয় । রাশেদ ভাবে-
“এই কথাটাই তো আমাদের শেষ করে দিচ্ছে। সবাই বুঝে যাবে মানে কেউ কিছু বলবে না, কেউ কিছু করবে না।”

কিছু সাহসী ও শিক্ষিত তরুণ কর্মী, যারা দলের নিচতলার সংগঠনে সক্রিয় ছিল, তারাই প্রশ্ন তুলতে শুরু করল।

মেহেদী হাসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, যিনি ছাত্র জীবনে রাশেদের পিতার বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়ে দলে এসেছিলেন, মেহেদী এক সভায় স্পষ্ট বললেন—
“আমরা চাই নেতৃত্বে আসুক তারা, যারা নির্যাতিত হয়েছেন, জেল খেটেছেন, ত্যাগ করেছেন।
আমরা টাকাওয়ালাদের দখলে দল দেখতে চাই না।”
সেই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
হাজার হাজার কমেন্ট—

“ঠিক কথা বলেছে।”
“এটাই তো আমরা বলতে চাই।”
“রাশেদ ভাই, ফিরে আসুন।”

দলের একাংশ এখন চিন্তা করছে,
শুধু নির্বাচন জেতাই যথেষ্ট নয়।
জিতলে যদি টেন্ডারবাজরা আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে এই ত্যাগ-তিতিক্ষা বৃথা যাবে।

রাশেদ নিজেই এক বৈঠকে বলেন—

“দল বাঁচাতে হলে চিন্তা বদলাতে হবে।
নইলে এই দলে শুধু ক্ষমতা থাকবে, আদর্শ থাকবে না।
আর আদর্শহীন ক্ষমতা শয়তানের হাতে বন্দুক।”

রাশেদ, মেহেদী, রাবেয়া এবং আরও কিছু ত্যাগী কর্মী মিলে
একটি "পুনর্গঠনের প্ল্যাটফর্ম" তৈরি করেন।

তারা বলেন—

“আমরা দল ভাঙছি না, কিন্তু দল বাঁচাতে চাই।”
তাদের উদ্দেশ্য—
সব জেলার ত্যাগীদের একত্র করা
সুস্পষ্ট নীতি ও আচরণবিধি তৈরি
দলীয় নেতৃত্বে নৈতিকতা ফেরানো

"আলো যখন ফিরে আসে, তার সঙ্গে আসে প্রতিধ্বনি—ভবিষ্যতের ডাক আর অতীতের হিসেব।”

নতুন কিছু শুরু হয়েছিল নিঃশব্দে।
রাশেদ করিম, রাবেয়া সুলতানা, মেহেদী হাসান এবং আরও কিছু নীতিবান কর্মী গড়ে তুলেছিলেন এক প্ল্যাটফর্ম—
“আদর্শ পুনর্গঠন পরিষদ”।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট:
দলীয় আদর্শ ফিরিয়ে আনা
ত্যাগীদের স্বীকৃতি দেওয়া
টাকার বদলে চরিত্রকে প্রাধান্য দেওয়া
দলকে গডফাদার-মুক্ত রাখা

তারা বলতেন—
“আমরা দল ভাঙছি না, আমরা দলকে বাঁচাচ্ছি।”

তাদের ছোট ছোট বৈঠক একসময় পরিণত হলো বড় মিছিল ও জনসভায়।
তাদের পোস্টার আলাদা ছিল—
কোনো নেতার ছবি নয়,
ছিল রক্তাক্ত দলের প্রতীক, তার নিচে লেখা—

“তোমার ত্যাগ ব্যর্থ হতে দেবে না।”

জনতা সাড়া দিল।

শহর-বন্দরে মানুষ বলল—

“এই তো আমাদের কথা।
আমাদের রক্ত-ঘাম দিয়ে গড়া দল ফেরত চাই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবার একত্রিত হলো।
শ্রমিক সংগঠন বলল—
“আমরাও আছি। এখন থেকে আদর্শ ছাড়া কাউকে মানা হবে না।”

দলের কিছু দুর্নীতিবাজ পুরনো নেতা, যারা সিন্ডিকেট চালাত,
তারা আঁতকে উঠল।

তারা ভাবল—
“রাশেদদের দমিয়ে না রাখলে, আমাদের ব্যবসা শেষ।”

তাদের চক্রান্ত শুরু হলো।
ফেসবুকে মিথ্যা প্রচার চালানো হলো—

“রাশেদ করিম সরকারপন্থী হয়ে গেছেন।”
“এই প্ল্যাটফর্ম দল ভাঙার জন্য বানানো।”

এক রাতে ঢাকায় রাশেদের গাড়িতে হামলা হয়।
তবে সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।
সেই হামলার ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
মানুষ চিৎকার করে ওঠে—

“আর না! আবার চক্রান্ত, আবার রক্ত?”
এই অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের একজন নীতিবান কর্মকর্তা,
মুরাদুল ইসলাম,
রাশেদ করিমের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করেন।

তিনি বলেন—

“জনগণ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আপনারা এগিয়ে গেলে সরকার সহায়তা করবে সুষ্ঠু নির্বাচন ও দলীয় পুনর্গঠনে।”

রাশেদ উত্তর দেন—

“আমরা চাই না কোনো পক্ষপাত।
আমরা চাই দল হোক জনগণের, পয়সাওয়ালাদের নয়।”

তখনই তারা ঘোষণা দেন—
আগামী মাসে “জাতীয় আদর্শ সম্মেলন” হবে,
যেখানে সব জেলার ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীরা আসবেন,
এবং একটি নতুন নেতৃত্ব ও শৃঙ্খলার রূপরেখা তৈরি হবে।

"যখন চারদিক ধ্বংসে ডুবে থাকে, তখন একফোঁটা আশাও পৃথিবী বদলে দিতে পারে।"

নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে এসেছে।
সারা দেশে অস্থিরতা।
পুরনো নেতারা নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত।
আর নতুনদের নিয়ে মানুষের মধ্যে জন্ম নিয়েছে এক ধরনের আশাবাদ।

“আদর্শ পুনর্গঠন পরিষদ” এখন গণজোয়ারে রূপ নিয়েছে।
বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে দলীয় কর্মীরা, যাঁরা বছর ধরে অবহেলিত ছিলেন।
সবার একটাই দাবি—
“ব্যক্তি নয়, আদর্শ হোক মূল নেতৃত্ব।”

এখন দল দাঁড়িয়ে আছে দুটো পথে:

পুরনো পন্থা:
চাঁদাবাজি, গডফাদার, টাকা, শক্তি ও দখলের রাজনীতি।

নতুন পথ:
নৈতিকতা, ত্যাগ, আদর্শ, স্বচ্ছতা ও গণভিত্তির রাজনীতি।

দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বিশেষ বৈঠক বসে।
রাশেদ করিম, মেহেদী হাসান, রাবেয়া, মোনাওয়ার কবির, এবং অন্যান্য প্রভাবশালী নেতারা উপস্থিত।

মোনাওয়ার হুঙ্কার দেয়—

“রাজনীতি কোনও আদর্শের খেলা না, এটা ক্ষমতার খেলা!
আদর্শ দিয়ে ভোট কেনা যায় না।”

রাশেদ শান্ত কণ্ঠে বলে—
“ভোট কেনা যায়, তবে মানুষের হৃদয় কেনা যায় না।
আমরা ভোট নয়, আস্থা অর্জন করতে চাই।”

বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
সম্মেলনের আগের রাতে রাশেদের প্ল্যাটফর্মের একটি মিছিলের ওপর হামলা হয়।
তিনজন আহত, একজন নিহত।
রাশেদ ঘটনাস্থলে এসে সবার সামনে দাঁড়িয়ে
“এটা আমাদের শেষ লড়াই নয়,
এটা এক নতুন শুরু।
আমরা মরে গেলে একটা আদর্শ বাঁচবে।”

এই বক্তব্য ভাইরাল হয়।
মানুষ ফুঁসে উঠে।
সারাদেশে প্রতিবাদ শুরু হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়ে দেয়—
যে দল শৃঙ্খলা ফেরাতে পারবে না, তাদের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে।
এবার কেন্দ্রে চাপ তৈরি হয়।

জনতার চাপ, আন্তর্জাতিক চাপ, ও দলীয় কর্মীদের দাবিতে
দলীয় পুনর্গঠন প্ল্যাটফর্মের রাশেদ করিমকে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

মোনাওয়ার ও তার গ্যাং একপাশে সরে যেতে বাধ্য হয়।

রাশেদ ঘোষণা দেন—

“এই নির্বাচন হবে জনগণের।
আমরা এমন প্রার্থীদের দিচ্ছি যারা জেল খেটেছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে একটিও দুর্নীতির অভিযোগ নেই।
আমাদের প্রতিশ্রুতি—সততার ওপর দাঁড়িয়ে নতুন পথ গড়ব।”

নির্বাচনের দিন।
ভোরবেলা রাশেদ করিম মসজিদের বারান্দায় বসে আছেন।

এক বৃদ্ধ ভোটার এসে বলেন—
“বাবা, তোর বাবার মতো চোখ তোর।
তোর বাবা আমার সঙ্গে একসময় আন্দোলনে ছিল।
ভোট দেবো তোর আদর্শকে।”

রাশেদ কাঁপা গলায় বলেন—
“ভোট আমাকে নয়, দিও এক নতুন সম্ভাবনাকে।
কারণ আমাদের প্রয়োজন একজন নেতা নয়—একটা ভবিষ্যৎ।”

সমাপ্ত।
লেখক -
অধ্যাপক জাহিদুল ইসলামের ।

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (শেষ পর্ব)[[[[][[[[[[[]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]তাহসান এক মুহূর্ত তাকিয়ে রইল। তারপর বল...
28/06/2025

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (শেষ পর্ব)
[[[[][[[[[[[]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]
তাহসান এক মুহূর্ত তাকিয়ে রইল। তারপর বলল,
— "ভেবেছিলাম বহুবার। কিন্তু ফিরে গেলেও হয়তো আমরা আবার এই একই জায়গায় এসে পড়তাম। কারণ আমরা কখনো ঠিক করে বলিনি, আমরা কী চাই। শুধু মেনে নিয়েছি।"

তাদের মাঝে এক দীর্ঘ নীরবতা। তারপর তাহসান জিজ্ঞেস করল,
— "তুমি কি যেতে চাও কোথাও?"

রুমি তাকাল জানালার বাইরে। বাইরে পূর্ণিমার আলোয় ছায়া পড়ে আছে মেঝেতে। সে বলল,
— "আমি যেতে চাইনি কখনো। আমি শুধু চাই, একদিন যেন কেউ আমার পাশে দাঁড়িয়ে সত্যি করে বলে—তোমাকে বুঝি।"

তাহসান কিছু বলল না। সে শুধু ধীরে রুমির পাশে এসে বসল। কোনো স্পর্শ, কোনো প্রতিশ্রুতি নয়। শুধু নীরব এক সাথ থাকা।

তাদের জীবন বদলাল না, সম্পর্কও না। কিন্তু সেই রাতে, তারা দুজনেই প্রথমবার সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠল—ভানহীন, আবেগপূর্ণ, এবং খানিকটা মুক্ত।
একদিন তাহসান পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যায়। তারপর রুমির জীবন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে লাগল। নিজের উপর বড্ড ঘিন্না হচ্ছে। কেন নিজেকে সংশোধন করতে পারেনি। আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। মহাপাপ- তাই সম্ভব হয় নি।

ও চলে গিয়েছে। বিজয়ী হয়েছে। আমাকে যন্ত্রণার প্রহর গুনতে হচ্ছে। আরাম কেদারায় বসে বসে এমনটিই ভাবছে । দৃষ্টি অনেক দূরে চলে গিয়েছে, ফিরাব ইচ্ছা নেই।

#ছাদেরনিচেদুটিছায়া #অব্যক্তভালোবাসা #সাইলেন্টসম্পর্ক #একছাদেরনিচে #সাইলেন্টডিভোর্স #বাংলাগল্প #ভালোবাসাহীনসম্পর্ক

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (পর্ব-৩) # # # # # # # # # # # # # # # #রুমির ডায়েরিতে পাতাগুলো যেন ধুলো জমে থাকা অনুভূতির প্রতিচ্...
28/06/2025

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (পর্ব-৩)
# # # # # # # # # # # # # # # #

রুমির ডায়েরিতে পাতাগুলো যেন ধুলো জমে থাকা অনুভূতির প্রতিচ্ছবি। দীর্ঘদিন ধরে সে এই জীবন বেছে নেয়নি, শুধু মেনে নিয়েছে। শুরুতে ভাবত—সময়ই সব ঠিক করে দেবে। কিন্তু সময় শুধু ক্ষত শুকায়, সম্পর্ক জোড়া লাগায় না।

তাহসান বিয়ের পর প্রথম কয়েক বছর চেষ্টা করেছিল। রুমি‌ও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কখন যেন তাদের হাসির ফাঁক দিয়ে জমতে থাকে অভিমান, কথা কমে আসে, স্পর্শে থাকে না উষ্ণতা।

একটা সময় তারা সিদ্ধান্ত নেয়—তাদের জীবন থাকবে একটা ছকে, কিন্তু তার ভেতরে থাকবে না কোনো দাবি, কোনো প্রত্যাশা।

মেয়েরা মাঝে মাঝ হাসিমুখে মাকে জড়িয়ে ধরে, কিন্তু তারপরেই তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে যায়। বাবার সঙ্গে সেলফি তোলে, কিন্তু রুমির সঙ্গে কথা বলে কম। এই বাড়ি যেন এক নিঃশব্দ যাদুঘর, যেখানে স্মৃতি আছে, অথচ অনুভূতির স্পন্দন নেই।

একদিন রুমি পুরনো আলমারি খুলে পুরনো কিছু চিঠি খুঁজে পেল। তাহসানের লেখা—তখন তারা প্রেম করত। “তোমার মুখ না দেখলে দিন কাটে না…”
চিঠির কালি ম্লান, কিন্তু শব্দগুলো এখনও জীবিত।

সেদিন রাতে রুমি তাহসানের দিকে তাকিয়ে প্রথমবার বলল,
— "তুমি কি কখনো ফিরে যেতে চাও? শুরুতে?"

=========চলমান

#ছাদেরনিচেদুটিছায়া #অব্যক্তভালোবাসা #সাইলেন্টসম্পর্ক #একছাদেরনিচে #সাইলেন্টডিভোর্স #বাংলাগল্প #ভালোবাসাহীনসম্পর্ক

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (পর্ব-২)====================দুইজন মেয়ে ছিল। তারা এখন স্বামীর সংসার নিয়ে ব্যস্ত । মাঝে মাঝে ভেড়া...
28/06/2025

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (পর্ব-২)
====================
দুইজন মেয়ে ছিল। তারা এখন স্বামীর সংসার নিয়ে ব্যস্ত । মাঝে মাঝে ভেড়াতে আসে। কিন্তু খুব কম। রাগ থেকেই আসে না। তারা কেউ এ ব্যাপারে কখনোই কিছু বলেনি। সমাজ ও মেয়েদের জন্য বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে নাই।
তারা এক ছাদের নিচে থাকে, এক বিছানায় ঘুমায়, কিন্তু আলাদা জগতে বাস করে।
তাহসান ঘুমানোর আগে মোবাইলে খবর পড়ে, রুমি বই পড়ে।
তাহসান ছুটিতে বন্ধুর বাসায় যায়, রুমি মায়ের বাসায়।

তাদের কথা হয় দরকারে, সৌজন্যবশে।
"ভাত থাকবে?"
"তোমার শার্ট রেডি করে দিছি।"

কখনো একে অপরের চোখে তাকালেও, সেখানে প্রেম নয়, আছে শান্ত, নিরব সম্মতি।

তারা কারো সঙ্গে ঝগড়া করে না।
তারা সমাজে সুখী দম্পতির মুখোশ পরে।
কিন্তু তারা দুজনেই আলাদা, নিঃসঙ্গ, কিন্তু অভ্যস্ত।

রুমি একদিন ডায়েরিতে লিখল—
“তাহসান আমার ক্ষতি করেনি, আমিও করি না।
কিন্তু সে আমার পাশে থেকেও নেই।
আমরা যেন দুইটা ছায়া—এক বাড়িতে হেঁটে বেড়াই, কিন্তু কারো গায়ে আলোর স্পর্শ লাগে না।”

#ছাদেরনিচেদুটিছায়া #অব্যক্তভালোবাসা #সাইলেন্টসম্পর্ক #একছাদেরনিচে #সাইলেন্টডিভোর্স #বাংলাগল্প #ভালোবাসাহীনসম্পর্ক

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (প্রথম পর্ব)===============বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে পড়তে গিয়ে পরিচয়, তারপর প্রেম, তারপর পরিবারের না চ...
27/06/2025

ছাদের নিচে দুটি ছায়া (প্রথম পর্ব)
===============
বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে পড়তে গিয়ে পরিচয়, তারপর প্রেম, তারপর পরিবারের না চাওয়াতেও ভালোবাসার জোরে বিয়ে।
দুজনেই উচ্চশিক্ষিত, ভদ্র, প্রগতিশীল।

বিয়ের শুরুটা ছিল রঙিন – একসাথে সিনেমা দেখা, মাঝরাতে এক কাপ চা ভাগ করে খাওয়া, ঈদের শপিং করা, বাসা সাজানো…
সব ছিল।
কিন্তু ধীরে ধীরে... কোথায় যেন ফাঁক তৈরি হতে থাকলো।
কথা কমতে লাগল, হাসি শুকিয়ে গেল, চোখের চাহনিও বদলে গেল।

তাহসান কর্মজীবনে ব্যস্ত, ঘরে ফিরলে ক্লান্ত, আর রুমি গৃহিণী হয়ে একাকীত্বে ডুবে থাকে।
তাদের মাঝে কোনো ঝগড়া নেই, কিন্তু ভালোবাসাও নেই।
==========চলমান

#ছাদেরনিচেদুটিছায়া #সাইলেন্টডিভোর্স #বাংলাগল্প #ভালোবাসাহীনসম্পর্ক

বাঁকের বিপরীতে (শেষ পর্ব)============দিলারা বেগমের সকালটা শুরু হয় ফজরের নামাজ দিয়ে, তারপর তসবি হাতে বারান্দায় বসে সূর...
26/06/2025

বাঁকের বিপরীতে (শেষ পর্ব)
============
দিলারা বেগমের সকালটা শুরু হয় ফজরের নামাজ দিয়ে, তারপর তসবি হাতে বারান্দায় বসে সূর্য ওঠার দৃশ্য দেখেন। আগে তার ব্যস্ততা ছিল—উচ্চ পদস্থ সরকারি অফিসার, ফাইলের পাহাড়, সভা-সেমিনার, শত মানুষের কণ্ঠে তার নাম। কিন্তু এখন তিনি এক নিঃশব্দ জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।

দিলারার প্রতিদিনের সঙ্গী এখন মসজিদের খতিবের বয়ান, কোরআনের তর্জমা আর ছোট ছোট বাচ্চাদের কোরআন শেখানো ক্লাস। সময় পেলে তিনি যান রকিবের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে। ছোটদের পড়াতে ভালো লাগে তার, বিশেষ করে যখন রকিবের স্মৃতি ভেসে ওঠে।

রকিব—তাঁর স্বামী, সঙ্গী, আর হৃদয়ের অভ্যন্তরের সবচেয়ে নরম কোণ।

রকিব ছিলেন অনেকটাই ছোট। তাই অনেকেই ঠাট্টা করত, “দিলারা আগে চলে যাবে, রকিব একা থাকবে।” এমন কথা শুনে দিলারা মাঝেমধ্যে নিজেই ভাবতেন, "এই মানুষটিকে একা ফেলে আমি চলে গেলে কেমন থাকবে!" সেই ভয়ই যেন বেঁচে থাকাকে অনেকদিন কঠিন করে তুলেছিল তার জন্য।

কিন্তু সেই ভয়টাকেই নির্মমভাবে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে, হঠাৎ একদিন রকিব করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। হাসপাতালের বিছানায় কিছুদিন যন্ত্রণাময় যুদ্ধের পর তিনি চিরতরে চলে যান।

দিলারার জীবনের সূর্য যেন সেই দিনই অস্ত যায়।

প্রথম প্রথম তিনি শুধু চুপ থাকতেন। কোন শব্দ, কোন আলো, কোন মানুষের মুখ—তাকে স্পর্শ করত না। রকিবের ব্যবহৃত চশমা, প্রিয় মগ, কোরআন শরিফ—সবই রেখে দিয়েছিলেন আগের জায়গায়। প্রতিদিন নামাজের পর মোনাজাতে ফুঁপিয়ে কাঁদতেন। রাত্রে ঘুম আসত না, ঘরের দেয়ালগুলো রকিবের কণ্ঠে কথা বলতো যেন।

এই শোকের ভিতর দিয়ে ধীরে ধীরে একটা শক্ত ভিত তৈরি হয় তার আত্মার ভিতর। তিনি ভাবলেন, “রকিব চলে গেছে, কিন্তু তার কাজ তো বাকি আছে।” সেই স্কুল, সেই শিশুরা—যাদের রকিব ভালোবাসতেন।

তিনি স্কুলে সময় দিতে শুরু করলেন। “আশা” রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছে। বড় ঘাড়ে বিয়ে হয়েছে তার। ছোট ভাই জনি একটি প্রাইভেট কোম্পানির একাউন্টেড। তার জন্য মেয়ে খুঁজছেন। শীঘ্রই বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। দিলারা শরীরের অবস্থা ভাল না। ছেলের বউ দেখে যাওয়ার খুব ইচ্ছা। আশা পূরণ হলো না।
একদিন বিকেলে স্কুলের বারান্দায় বসে ছোট ছেলেমেয়েদের খেলতে দেখছিলেন। হঠাৎ মৃদু হাওয়া বয়ে গেল। মনে হলো, কেউ যেন কানে কানে বলছে—
“তুমি একা নও দিলারা, আমি আছি… সবসময়…”

দিলারা চোখ বন্ধ করে মাথা ঝুঁকিয়ে রাখলেন। এবার আর চোখে জল নেই, বুকভরা শান্তি। কারণ তিনি জানেন—ভালোবাসা মরেনা, শুধু রূপ বদলায়।

#বাকেঁর_বিপরীতে #আমাদের #গল্প #আমাদের_গল্প #বাকেঁর_বিপরিতে

বাঁকের বিপরীতে (পর্ব-২)============রকিব চমকে উঠলেও চোখ নামিয়ে বলল,“আপনি চাইলে আমি সবকিছু ছেড়ে আপনার হইয়ে যাবো।”তারপর  বি...
26/06/2025

বাঁকের বিপরীতে (পর্ব-২)
============
রকিব চমকে উঠলেও চোখ নামিয়ে বলল,
“আপনি চাইলে আমি সবকিছু ছেড়ে আপনার হইয়ে যাবো।”

তারপর বিয়ে হলো , সমাজের নিয়মে নয়। কাজী অফিসে।
তারা চুপিচুপি একসাথে থাকতে শুরু করল। দিলারা তাকে লেখাপড়ায় উৎসাহ দিলেন, পোশাকে আনলেন পরিবর্তন, শিখিয়ে দিলেন কীভাবে একজন সঙ্গী হয়।

সমাজ প্রশ্ন তো করবেই, করেছিল।
কিন্তু দিলারা কেবল একবার বলেছিলেন—
“সুখ কোথা থেকে আসবে, সেটা সমাজ ঠিক করে না। আমরা করি।”
দিলারা আর রকিব এখনো একসাথে আছেন। সম্পর্কটা প্রেম না স্বার্থ—এই প্রশ্ন যারা তোলে, তারা কখনো ভালোবাসার গভীরতা বোঝে না।
রকিব এখন পড়তে শিখেছে। সকালবেলা সে বই হাতে বসে থাকে বারান্দায়। দিলারা অফিসে যান, আর সন্ধ্যায় ফিরে রকিবের সঙ্গে এক কাপ চা খেতে খেতে গল্প করেন। রকিব যতটা না প্রেমিক, তার চেয়েও বেশি শ্রদ্ধাশীল একজন সঙ্গী হয়ে উঠেছে।

একদিন দিলারা বললেন,
“তুমি কি কখনো নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবেছ?”
রকিব একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে বলল,
“ সবসময় ভাবতাম—যদি আমার ঘরে একটা শিশু হাসে...”

দিলারা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলেন, "তুমি ঠিক বলেছ, আমরা সন্তান চাই।”

দুই বছর পর তাদের ঘর আলোকিত করে এক কন্যা সন্তান জন্ম নিল। নাম রাখা হলো “আশা।”
রকিব তাকে কোলে নিয়ে ঘোরে বেড়ায়, দুধ গরম করে, রাত জেগে গল্প পড়ে শোনায়।
দিলারা তখনো কর্মজীবী, কিন্তু হৃদয়ের সিংহাসন ভাগ করে নিয়েছেন—একটিতে রকিব, আরেকটিতে ছোট্ট আশাকে বসিয়ে।

প্রতিবেশীরা ফিসফিস করে—
“ওই যে মিস বেগম, নিজের চাকরকে বিয়ে করেছে। এখন আবার সন্তানও!”
দিলারা একদিন গাড়ি থেকে নেমে শুনে ফেললেন কথাটা। তবু মাথা নিচু করলেন না। শুধু বললেন,
“আমার সিদ্ধান্ত, আমার জীবন। সমাজ কী ভাববে, তা নিয়ে আমি ব্যস্ত নই।”

দিলারার উচ্চপদস্থ চাকরি এক সময় রাজনৈতিক টানাপোড়নের শিকার হলো। প্রতিপক্ষ বলল—“অসম সম্পর্ক নিয়ে তার মতো একজন অফিসার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না।”

অভিযোগ জমা পড়লো বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে।

কিন্তু রকিব তখন একটি NGO তে চাকরি শুরু করেছে। সে সংবাদপত্রে নিজের লেখা দিয়ে বুঝিয়ে দিল—দিলারা তার পৃষ্ঠপোষক নন, সঙ্গী।
সমাজের একটা অংশ এবার বলল—“হয়তো ভিন্ন, কিন্তু সম্মানজনক সম্পর্ক।”

সময় থেমে নেই। বছরের পর বছর চলে যায় -
রকিব একটি ছোট পাঠশালা খুলেছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য।
দিলারা অবসরে গেছেন। তিনি এখন রকিবের সঙ্গে স্কুলে সময় দেন আর ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। নামাজ - রোজায় এতটাই মশগুল যে দুনিয়ার সব কিছু প্রায়ই ভুলতেই বসেছে।
আর “আশা”? সে এখন অনেক বড় হয়েছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করছে, তার ১২ বছরের এক ভাইও আছে। সে মা-বাবাকে ঠাট্টা করে বলে-
“তোমাদের গল্প নিয়ে একদিন সিনেমা বানাবো।”
দিলারা হাসেন। দীর্ঘদিন পর বুকভরে হাসেন। সেদিন তিনি বুঝতে পারেন—বয়স নয়, সমাজ নয়, সম্পর্ক গড়ে ওঠে বোঝাপড়া আর ভালবাসায়।

জীবন সব সময় আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে না। কখনো কখনো জীবনের বাঁকে বিপরীত দিকের মানুষটাই হয়ে ওঠে আত্মার সবচেয়ে কাছের।
===============চলমান

#বাকেঁর_বিপরীতে #আমাদের #গল্প #আমাদের_গল্প

বাঁকের বিপরীতে============দিলারা বেগম একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বয়স ৪০। নিজে শিক্ষিত, আত্মনির্ভরশীল, দৃঢ়চেতা—তবে ...
26/06/2025

বাঁকের বিপরীতে
============
দিলারা বেগম একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বয়স ৪০। নিজে শিক্ষিত, আত্মনির্ভরশীল, দৃঢ়চেতা—তবে পুরুষ বিদ্বেষী। জীবনের অনেকটা সময়ই তিনি কাটিয়েছেন একা। সংসার, সন্তান—এসব তার কাছে কেবল সময়ের অপচয় মনে হতো।
একজন নারী একাই যথেষ্ট। তাই তিনি বিয়ে করেননি। তার নিজের ফ্ল্যাট, গাড়ি, পদমর্যাদা—সবই আছে। কিন্তু এক সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত শরীরে যখন একাকী চা খাচ্ছিলেন, হঠাৎ এক ছোট্ট শিশুর কান্নার আওয়াজ পাশের বাসা থেকে ভেসে এলো। তার মনে হলো, "আমার জীবনে তো কেউ নেই, কেবল ক্ষমতা আর নীরবতা।"
উল্টো মোড় নিল। একদিন, অফিস থেকে ফিরে একাকী ডাইনিং টেবিলে বসে তিনি অনুভব করলেন—তার জীবনে কিছুর ঘাটতি আছে। নিঃসঙ্গতা যেন দেয়াল গা ঘেঁষে দাড়িয়ে শ্বাস ফেলছে।

সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলেন—এভাবে আর চলবে না।
পরদিনই ছুটির দিন, দিলারা বেগম তাঁর গোপন পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, এক প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়েই দেখেন—হাসিখুশি, পরিশ্রমী, দেখতে সুদর্শন কিন্তু একেবারেই অশিক্ষিত এক যুবক। ধূলিমাখা দুপুরে, ধানক্ষেতে কাজ করছে। রোদে পুড়া মুখ, কিন্তু চোখে অদ্ভুত এক সততা।

“তোমার নাম কী?”
“রকিব, রকিব উদ্দিন,” ছেলেটি মাথা নিচু করে বলল।

“আমার বাড়িতে কেয়ারটেকার দরকার। থাকবে? মাসে পনের হাজার টাকা বেতন,থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা তোমাকেই করতে হবে, যদি আমি করি তবে বেতন থেকে পাঁচ হাজার কর্তন করা হবে” দিলারা প্রস্তাব দিলেন।
রকিব কিছুটা হতবাক, কিছুটা খুশি। এমন চাকরি তার জীবনে কখনো আসেনি। বলল - আমি রাজি, তবে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আপনাকেই করতে হবে- শহরের কোথাও চিনি না।
রকিবের সহজ সরল উত্তরে দিলারা খুশি হয়েছে। এমন দায়িত্বই নিতে চেয়ে ছিল। তিনি বিয়ে করতে চান , তাই এমন একজন সঙ্গী খুঁজে নিতে হবে যাকে সে নিজে গড়ে তুলতে পারবেন, যিনি তাকে ভালোবাসবে নিজের সীমাহীন সরলতায়।

দিলারা বুঝলেন, ছেলেটির বয়স বাইশের বেশি না। সে লেখা-পড়া জানে সামান্য, কিন্তু চরিত্রে পরিষ্কার, চেহারায় নিষ্পাপ সৌন্দর্য।
রকিব আসলো শহরে। প্রথমে শুধু কাজ করতো, কথা কম বলতো। কিন্তু দিলারা ধীরে ধীরে তার দিকে আকৃষ্ট হতে লাগলেন। তার সারল্য, আনুগত্য, খুশি হয়ে থাকার অভ্যাস—সবই দিলারা জমাটবাঁধা হৃদয় গলিয়ে দিল।

এক রাতে, বারান্দায় দাঁড়িয়ে দিলারা হঠাৎ বললেন,
“তুমি কি ভাবতে পারো, আমার পাশে সারাজীবন থাকবে?”
============চলমান

#গল্প #আমাদের #বাকেঁর_বিপরিতে #আমাদের_গল্প

25/07/2023

সরকারী কর্ম কমিশন
======================================
কমিশন-প্রতিষ্ঠা
===========
১৩৭। আইনের দ্বারা বাংলাদেশের জন্য এক বা একাধিক সরকারী কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান করা যাইবে এবং একজন সভাপতিকে ও আইনের দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ অন্যান্য সদস্যকে লইয়া প্রত্যেক কমিশন গঠিত হইবে।

সদস্য-নিয়োগ
==========
১৩৮। (১) প্রত্যেক সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক কমিশনের যতদূর সম্ভব অর্ধেক (তবে অর্ধেকের কম নহে) সংখ্যক সদস্য এমন ব্যক্তিগণ হইবেন, যাঁহারা কুড়ি বৎসর বা ততোধিককাল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যে কোন সময়ে কার্যরত কোন সরকারের কর্মে কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
(২) সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইন-সাপেক্ষে কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যের কর্মের শর্তাবলী রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ হইবে।

পদের মেয়াদ
==========
১৩৯। (১) এই অনুচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য তাঁহার দায়িত্বগ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর বা তাঁহার 1[পয়ষট্টি] বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া ইহার মধ্যে যাহা অগ্রে ঘটে, সেই কাল পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।
(২) সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারক যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য অপসারিত হইবেন না।
(৩) কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।
(৪) কর্মাবসানের পর কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে পুনরায় নিযুক্ত হইবার যোগ্য থাকিবেন না, তবে এই অনুচ্ছেদের (১) দফা-সাপেক্ষে
(ক) কর্মাবসানের পর কোন সভাপতি এক মেয়াদের জন্য পুনর্নিয়োগ-লাভের যোগ্য থাকিবেন; এবং
(খ) কর্মাবসানের পর কোন সদস্য (সভাপতি ব্যতীত) এক মেয়াদের জন্য কিংবা কোন সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতিরূপে নিয়োগ-লাভের যোগ্য থাকিবেন।

কমিশনের দায়িত্ব
=============
১৪০। (১) কোন সরকারী কর্ম কমিশনের দায়িত্ব হইবে
(ক) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদিগকে মনোনয়নের উদ্দেশ্যে যাচাই ও পরীক্ষা-পরিচালনা;
(খ) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কোন বিষয় সম্পর্কে কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হইলে কিংবা কমিশনের দায়িত্ব-সংক্রান্ত কোন বিষয় কমিশনের নিকট প্রেরণ করা হইলে সেই সম্বন্ধে রাষ্ট্রপতিকে উপদেশদান; এবং
(গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্বপালন।
(২) সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোন আইন এবং কোন কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত কোন প্রবিধানের (যাহা অনুরূপ আইনের সহিত অসমঞ্জস নহে) বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রসমূহে কোন কমিশনের সহিত পরামর্শ করিবেন:
(ক) প্রজাতন্ত্রের কর্মের জন্য যোগ্যতা ও তাহাতে নিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কিত বিষয়াদি;
(খ) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদান, উক্ত কর্মের এক শাখা হইতে অন্য শাখায় পদোন্নতিদান ও বদলিকরণ এবং অনুরূপ নিয়োগদান, পদোন্নতিদান বা বদলিকরণের জন্য প্রার্থীর উপযোগিতা-নির্ণয় সম্পর্কে অনুসরণীয় নীতিসমূহ;
(গ) অবসর-ভাতার অধিকারসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মের শর্তাবলীকে প্রভাবিত করে, এইরূপ বিষয়াদি; এবং
(ঘ) প্রজাতন্ত্রের কর্মের শৃঙ্খলামূলক বিষয়াদি।

বার্ষিক রিপোর্ট
==========
১৪১। (১) প্রত্যেক কমিশন প্রতি বৎসর মার্চ মাসের প্রথম দিবসে বা তাহার পূর্বে পূর্ববর্তী একত্রিশে ডিসেম্বরে সমাপ্ত এক বৎসরে স্বীয় কার্যাবলী সম্বন্ধে রিপোর্ট প্রস্তুত করিবেন এবং তাহা রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবেন।
(২) রিপোর্টের সহিত একটি স্মারকলিপি থাকিবে, যাহাতে
(ক) কোন ক্ষেত্রে কমিশনের কোন পরামর্শ গৃহীত না হইয়া থাকিলে সেই ক্ষেত্র এবং পরামর্শ গৃহীত না হইবার কারণ; এবং
(খ) যে সকল ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত পরামর্শ করা উচিত ছিল অথচ পরামর্শ করা হয় নাই, সেই সকল ক্ষেত্র এবং পরামর্শ না করিবার কারণ;

সম্বন্ধে কমিশন যতদূর অবগত, ততদূর লিপিবদ্ধ করিবেন।

(৩) যে বৎসর রিপোর্ট পেশ করা হইয়াছে, সেই বৎসর একত্রিশে মার্চের পর অনুষ্ঠিত সংসদের প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতি উক্ত রিপোর্ট ও স্মারকলিপি সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবেন।

08/11/2022
05/11/2022

স্বাধীনতার ৫০ বছর: সরকার প্রধানেরা যেভাবে ক্ষমতায় এলেন ও গেলেন
২১ ডিসেম্বর ২০২১
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হচ্ছে ২০২১ সালে
ছবির উৎস,আবুল কালাম আজাদ
ছবির ক্যাপশান,
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হচ্ছে ২০২১ সালে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে গত পঞ্চাশ বছরে যারা সরকার প্রধান ছিলেন তাদের মধ্যে কেউ রাষ্ট্রপতি, কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ প্রধান উপদেষ্টা আবার কেউ সামরিক শাসন জারি করে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দেশ শাসন করেছেন।

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার করে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। আবার ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পুন:প্রবর্তন করে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।

তবে একক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ এবং দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো প্রায় তের বছর আর প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রথমে সামরিক আইন প্রশাসক ও পরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রায় নয় বছর দেশ শাসন করেছেন।

কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরে সরকার প্রধানরা কিভাবে ক্ষমতায় এলেন আর কিভাবে বিদায় নিলেন?

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
যে বৈষম্যের কারণে বাঙালিরা পাকিস্তান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়

বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে যত চ্যালেঞ্জ

ভাষা আন্দোলন কীভাবে সৃষ্টি করেছিল বাঙালির জাতীয় চেতনা

যে চার নেতা বদলে দিলেন ১৯৪৭-পরবর্তী পূর্ব বাংলার রাজনীতি

পঞ্চাশ বছরে সরকার প্রধান হিসেবে দেশ শাসন করেছেন অনেকেই
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
পঞ্চাশ বছরে সরকার প্রধান হিসেবে দেশ শাসন করেছেন অনেকেই

শেখ মুজিবুর রহমান
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের কারাগারে আটক ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনিই ছিলেন তখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।

পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও দিল্লি হয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি হিসেবেই শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরেন ১০ই জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে।

কিন্তু ১২ই জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ।

কারণ এগারই জানুয়ারি তাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মন্ত্রীসভার বৈঠকে সংসদীয় ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্তের পর শেখ মুজিবুর রহমান কিছু সাংবিধানিক নির্দেশ জারি করেন এবং সে অনুযায়ী সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

আর নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। বিচারপতি চৌধুরীর পর তখনকার স্পীকার মুহম্মদুল্লাহ্ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।

পরে ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে বাকশাল গঠনের পর আবারো রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন শেখ মুজিবুর রহমান।

কিন্তু এর কয়েক মাস পর অগাস্টের ১৫ তারিখে একদল সামরিক কর্মকর্তার হাতে শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন।

শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দেবার সময় তোলা ছবি।
ছবির ক্যাপশান,
শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাৎকার দেবার সময় তোলা ছবি।

খন্দকার মোশতাক আহমাদ
পনেরোই অগাস্ট শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পর বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা, খন্দকার মোশতাক আহমাদকে রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত করেন। একই দিন মি. আহমাদ দেশে সামরিক আইন জারী করেন।

তবে বাংলাদেশের রাজনীতির সেই ভয়ংকর অস্থির সময়ে সামরিক অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানের জের ধরে পঁচাত্তরের ৬ই নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।

তেসরা নভেম্বর এক সামরিক অভ্যুত্থান মি. আহমাদের পতন ডেকে আনে। সেদিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক একজন প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি ও দু'জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সহ চারজন শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করে সেনা বাহিনীর কয়েকজন অফিসার।

তিন দিন পর খন্দকার মোশতাক আহমাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাচ্যুত হন।

আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম
তেসরা নভেম্বরের অভ্যুত্থানে সেনা প্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান পদচ্যুত হন। অভ্যুত্থানের নেতা ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ নিজেকে সেনা প্রধান ঘোষণা করেন এবং ছয়ই নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করেন।

পরের দিন বদলে যায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। সিপাহী বিদ্রোহতে নিহত হন তেসরা নভেম্বরের অভ্যুত্থানের নায়ক খালেদ মোশাররফ, সেনা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ আবার চলে যায় জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাতে।

তবে বিচারপতি সায়েম ১৯৭৭ সালের একুশে এপ্রিল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে বহাল ছিলেন, যদিও ক্ষমতার চাবি-কাঠি ছিল জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাতে।

জিয়াউর রহমান
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
জিয়াউর রহমান

জিয়াউর রহমান
সামরিক অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের জের ধরে ১৯৭৫ সালের সাতই নভেম্বর রাজনীতির কেন্দ্রে চলে আসেন জিয়াউর রহমান।

তাকে চিফ অফ আর্মি স্টাফ এবং উপ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম।

এরপর ১৯৭৭ সালের একুশে এপ্রিল প্রেসিডেন্ট সায়েমকে সরিয়ে নিজেই রাষ্ট্রপতি হন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ।

এক বছর পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আয়োজন করেন জেনারেল রহমান, এবং ১৯৭৮ সালের তেসরা জুন তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। একই বছর পহেলা সেপ্টেম্বরে নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠন করেন জিয়াউর রহমান, যার নামকরণ হয় বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি।

উনিশ'শএকাশি সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমান।

আব্দুস সাত্তার ও আবুল ফজল মোহাম্মদ আহ্সান উদ্দীন চৌধুরী
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর প্রথমে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও পরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার।

উনিশ'শ বিরাশি সালের ২৪শে মার্চ তৎকালীন সেনা প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান তিনি ও রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি আবুল ফজল মোহাম্মদ আহ্সান উদ্দীন চৌধুরী।

কিন্তু ২৭শে মার্চ ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব শুরু করে ১৯৮৩ সালের এগারই ডিসেম্বর ক্ষমতা থেকে সরে যান তিনি।

জেনারেল এরশাদ
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
জেনারেল এরশাদ

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

উনিশ'শ বিরাশি সালের ২৪শে মার্চ বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো সামরিক শাসন জারি করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

রেডিও টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে সেদিন তিনি বলেছিলেন, "জনগণের ডাকে সাড়া দিতে হইয়াছে, ইহা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিলোনা"।

এরপর ১৯৮৬ সালে নির্বাচনের আয়োজন করে আবারো রাষ্ট্রপতি হন তিনি এবং শেষে প্রবল গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর।

শপথ নিচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন আহমেদ
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ (ডানে)।

সাহাবুদ্দিন আহমদ
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ। সকল বিরোধী দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ একটি 'নিরপেক্ষ নির্দলীয় কেয়ারটেকার' সরকার গঠন করেন, যার একমাত্র দায়িত্ব ছিল তিন মাসের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।

তার শাসনামলে ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় আসেন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি।

প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় খালেদা জিয়া
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া
উনিশ'শ একানব্বই সালের অগাস্টে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী পাশ হলে সতের বছর পর আবার সংসদীয় সরকার পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ওই বছরের ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে জয়ী বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার প্রধান হন।

একই বছর অক্টোবরে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ বিদায় নেয়ার পরে রাষ্ট্রপতি হন আব্দুর রহমান বিশ্বাস।

খালেদা জিয়ার সরকারের শেষ দিকে বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে।

ওই আন্দোলনের মধ্যেই ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচন হলেও তা বর্জন করে আওয়ামী লীগসহ তখন অধিকাংশ বিরোধী দল।

ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিরোধ আরও জটিল হয়ে ওঠে।

নির্বাচনে জিতলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য সংবিধান সংশোধনের পর বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি তিনি।

ত্রিশে মার্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেন খালেদা জিয়া।

১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা
বিচারপতি হাবিবুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

তার শাসনামলে আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়াদের পর রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ।

পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে ২০০১ সালের ১৫ই জুলাই সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি।

মিস্টার রহমানের অধীনে ২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।

ইয়াজউদ্দিন আহমেদ
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
দু'হাজার ছয় সালের ২৯শে অক্টোবর প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের জন্য শপথ নেন প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহমেদ।

আবার খালেদা জিয়া
দু'হাজার এক সালের অক্টোবরে দুই তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তার এই মেয়াদের শেষ দিকে এসে সংবিধানের একটি সংশোধনীকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলগুলো আবারো আন্দোলন গড়ে তোলে।

এ মেয়াদে নতুন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন অধ্যাপক ড: ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ।

শেষ পর্যন্ত তীব্র আন্দোলনের মুখেও পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করে মিস্টার আহম্মেদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন খালেদা জিয়া।

কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপক সহিংসতা রূপ নিলে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যার নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমদ।

ফখরুদ্দিন
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
ড. ফখরুদ্দীন আহমেদ।

ফখরুদ্দীন আহমদ
দু'হাজার সাত সালের ১২ই জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক একজন গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমদ।

সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে প্রায় দু বছর সরকার প্রধান ক্ষমতায় ছিলেন তিনি, যদিও তার পদবী ছিলো প্রধান উপদেষ্টা।

তার সরকারের সময়ে ২০০৮ সালের উনত্রিশে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেয়ে আবারো ক্ষমতায় আসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

তার হাতেই ২০০৯ সালের ৬ই জানুয়ারি ক্ষমতা হস্তান্তর করেন মিস্টার আহমদ।

আবারো শেখ হাসিনা
মূলত শেখ হাসিনাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘতম সময়ের সরকার প্রধান। দু'হাজার নয় সালের ৬ই জানুয়ারি দ্বিতীয় বারের মতো, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি তৃতীয় বার এবং ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চতুর্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে এখনো সরকার প্রধান হিসেবে দেশ শাসন করছেন তিনি।

তবে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলেও এর পরের নির্বাচনগুলো শেখ হাসিনা সরকারের অধীনেই হয়েছে।

এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলো বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে।

আবার ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের মেয়াদ শেষে ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মোঃ জিল্লুর রহমান।

দু'হাজার তের সালের ২০শে মার্চ তার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
এরশাদ: কবিখ্যাতির জন্য ব্যাকুল এক সেনাশাসক

জেনারেল থেকে রাজনীতিক এরশাদের উত্থান যেভাবে

খালেদা জিয়া: রাজনৈতিক যত সফলতা এবং ভুল

শেখ হাসিনা যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতা হলেন

যেভাবে কেটেছিল দিল্লিতে শেখ হাসিনার সেই দিনগুলো

Address

Porabari Road
Gazipur
1703

Telephone

+8801914881012

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আমাদের গল্প posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share