ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂ Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂, Digital creator, Kashimpur, Gazipur.

যেখানে শব্দ থেমে যায়, সেখানে ছায়া কথা বলে—
“ছায়ালিপি” কেবল কবিতা নয়,
একেকটা ব্যথার প্রতিচ্ছবি।
ভালোবাসা, অভিমান আর না বলা কথা…
সব একসাথে।


পেইজটা ফলো দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

27/06/2025

সব বিদায় শব্দে হয় না, কিছু বিদায় চুপচাপ হয়ে যায়-একদিন হঠাৎ দেখা যায়, কেউ আর আগের মতো খোঁজ নেয় না, আগের মতো কথা বলে না, তবুও বলে না, "চলে যাচ্ছি।"

এই নীরব বিদায়টাই সবচেয়ে কষ্টের, কোনো ঝগড়া নেই, অভিযোগ নেই, তবুও মন বুঝে যায়-যে মানুষটা একদিন প্রাণ ছিল, সে-ই আজ নিঃশব্দে দূর হয়ে যাচ্ছে।

আর আমরা শুধু তাকিয়ে থাকি, না কিছু বলতে পারি, না থামাতে, কারণ কিছু সম্পর্ক চিৎকারে নয়, ভেঙে যায় একদম নিঃশব্দে।

Follow: ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

20/06/2025

Just hold my hand will prove not everyone leaves .🥹🍂

Follow: ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

゚viralシfypシ゚viralシalシ

17/06/2025

I have nothing but sadness to say about myself.🖤

Follow: ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

゚viralシfypシ゚viralシalシ

16/06/2025

সম্পর্কের শুরুটা কেমন সুন্দর না?
মনে হয়—এই মানুষটাই বুঝি আমার জন্য গড়া।
অচেনা মুখটায় হঠাৎ করেই কত আপনত্ব খুঁজে পাই,
মনের সব না বলা কথাগুলো, যেন সে বুঝে ফেলে চুপচাপই।

প্রতিদিন নতুন করে জন্ম নেয় হাজারো রঙিন স্মৃতি,
একসাথে দেখা হয় অগণিত স্বপ্ন,
রাগও তখন ভালোবাসারই আরেক রূপ—
একটুখানি অভিমান, আর তারপর সেই না-থাকতে-পারার টান।

তখন মনে হয়, হ্যাঁ—এটা আমার 'নিজের' মানুষ,
যে আমার সবটুকু চাওয়া বুঝে ফেলে চোখের ভাষায়।

কিন্তু… সময় যখন ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করে,
অদ্ভুত এক পরিবর্তন নামে নিঃশব্দে।
চেনা সেই মুখটাই হয়ে ওঠে অচেনা,
কথার জায়গা নেয় নীরবতা, আর ভালোবাসার জায়গায় আসে অজুহাত।

যার কণ্ঠ শুনলেই হৃদয় কেঁপে উঠতো একসময়,
সে-ই কণ্ঠ এখন অচেনা শব্দের মতো শোনায়।
এক সময় যে ছিল সবচেয়ে কাছের—
সে-ই হারিয়ে যায় দূরের কোনো অজানা ভোরে…

#ভালোবাসা_অদ্ভুত 🍀

13/06/2025

পরিক্ষার চিন্তা হচ্ছে
কিন্তু পড়তে বসি না! 😁😁

゚viralシfypシ゚viralシalシ

12/06/2025

নীল আলোয় শহর

✍️ Jahed Hossain

নতুন শহর, নতুন ঠিকানা নয়—
শুধু একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা খুঁজতে এসেছিল মাহি।
ব্যস্ত জীবনের একঘেয়ে তাল-ছন্দের বাইরে কোথাও গিয়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল সে, যেখানে কিছুক্ষণ থেমে থাকা যায়, মনটাকে একটু শোনানো যায় —
‘তুই এখনো বেঁচে আছিস’ — এমন একটা ছায়া।

শহরের প্রান্তে এক বিস্তৃত সবুজ মাঠে সন্ধ্যার আগে আগে হেঁটে আসা ছিল তার নিত্য অভ্যাসে পরিণত হতে চলেছে। আকাশটা এখানে একটু বেশি খালি থাকে, পাখিরা একটু বেশি শব্দ করে, আর বাতাসে থাকে কাঁচা মাটির ঘ্রাণ —
শুধু ঘ্রাণই নয়, থাকে স্মৃতি, ছুঁয়ে যাওয়া অনুভূতি।

একদিন বিকেলে, সূর্য অস্তমিত হওয়ার আগ মুহূর্তে মাহি হাঁটছিল মাঠের এক প্রান্ত ধরে। তার চোখ হঠাৎ আটকে যায়—
একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাঠের কোণে,
চুলগুলো উড়ছে বাতাসে, গায়ে পড়ছে শেষ রোদ্দুরের রং।

মেয়েটির চোখে ছিল গভীর, ছায়াময় এক অন্যমনস্কতা।
সে যেন কিছু ভাবছে, কিছু খুঁজছে... কিংবা অপেক্ষা করছে কারও।

মেয়েটির নাম— মেলিনা।

মাহি তখনও জানত না, এই দেখা একটা গল্পের শুরু—
না বলা, না শোনা এক অধ্যায়ের পাতায় সে পা রেখেছে।

পরের দিন, আবার দেখা হয়।

তার পরের দিনও।

মেলিনা কথা খুব একটা বলে না।
শুধু পাশে পাশে হাঁটে, ঘাসে পা ছুঁয়ে এগিয়ে যায় ধীরে ধীরে।
মাঝে মাঝে তাকায় মাহির দিকে, হালকা একটা হাসি ছুঁয়ে যায় ঠোঁটের কোণে—
যেন সে চোখ দিয়েই বলে যাচ্ছে অজস্র শব্দ।

মাহির মনে হয়, এই মেয়েটা যেন বাতাসের মধ্যে লুকানো কোনো গল্পের মত—
ধরা যায় না, তবু ছুঁয়ে যায়।

দিন পেরিয়ে যায়।

এক বিকেলে সাহস করে মাহির পথ আটকিয়ে মেলিনা কথা বলার সাহসটুকু ভেঙ্গে ফেলে। তারপর মাহি জিজ্ঞেস করে তুমি কি আমাকে কিছু বলতে চাও?

মেলিনা মৃদু হেসে উত্তর দেয়, — “তুমি জানো মাহি… আমি তোমাকে দেখার পর থেকে তোমাকে অনুভব করতাম"

মাহি অবাক হয়ে বলে, — “মানে?”

— “আমি প্রতিদিন এই মাঠে আসি। এই জায়গাটা আমার নিজের মতো— চুপচাপ, ধুলো-মাখা, কিন্তু গভীর।

এখানে দাঁড়িয়ে ভাবি, কেউ একজন আসবে… একজন নিঃসঙ্গ মানুষ, যার ভেতরে আমার মতোই একাকীত্ব বাজে।

তাকে আমি চিনতে পারব,
যদিও সে আমাকে চিনবে না প্রথমে।

তোমাকে দেখে আমি বুঝেছিলাম— তুমি ঠিক সেই মানুষ।”

মাহির ভেতরটা অদ্ভুত কাঁপতে থাকে।
সে কিছু বলতে চায়, হয়তো কিছু ছুঁয়ে দিতে চায় মেলিনাকে...
কিন্তু তার আগেই মেয়েটি বলে ওঠে—

— “কিন্তু একটা কথা বলি… আমি সবার মতো না।”

মাহি জিজ্ঞেস করে, — “মানে?”

— “আমি এই শহরের কেউ না।
আমি এই মাঠের মানুষ।

আমার ঘর হয়তো এই আকাশের নিচে,
কিন্তু আমার অস্তিত্ব...
তোমার চোখে দেখা দুনিয়ার বাইরে কোথাও।

আমি বাতাসের মতো, তুমি টের পাবে— তবু ধরতে পারবে না ঠিক করে।”

মাহি তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
চোখজোড়া গভীর, নীলচে ছায়ায় ঢাকা।
তাতে ছিল অদ্ভুত এক মায়া।

তবুও মাহি সাহস করে বলে, — “বাস্তব হোক কিংবা অবাস্তব, তুমি এখনো আমার সামনে দাঁড়িয়ে। এই অনুভবটাই আমার সত্য।”

মেলিনা এগিয়ে এসে মাহির হাত ধরে।
প্রথমবারের মতো।

তার হাত ঠান্ডা, কিন্তু কোমল...
মেঘ ছুঁয়ে যাওয়ার মতো।

মৃদু কণ্ঠে বলে ওঠে— — “তুমি জানো না, আমি কতদিন এই স্পর্শের জন্য অপেক্ষা করেছি…”

মাঠ জুড়ে তখন নীলচে-বেগুনি আলো।
পাখিরা ফিরছে বাসায়।

আর দুইটি মানুষ—
যার একজন আমাদের দুনিয়ার,
আর অন্যজন হয়তো অন্য কোথাও থেকে এসেছিল—
দাঁড়িয়ে আছে দিগন্তের মাঝে,
একটা অলৌকিক সন্ধ্যার সাক্ষী হয়ে।

শেষ বিকেলের আলোয়, সেদিনই, মেলিনা আবার বলে—

— “আমি সবসময় থাকবো তোমার পাশে।
হয়তো তোমার চোখে না,
তবে তোমার হৃদয়ের ঠিক পাশটায়।

যখনই তুমি এই মাঠে আসবে...
বাতাসে আমায় খুঁজে পাবে।

তুমি হয়তো আমাকে আর দেখবে না, তবে অনুভব করবে... প্রতিবার।
তোমার নিঃশ্বাসে আমি থাকবো।”

মাহি কিছু বলতে চায়,
কিন্তু তখনই সে দেখে—
মেলিনার শরীর ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসছে।
তার পায়ের নিচে আর ছায়া নেই।

চুলগুলো বাতাসে মিশে যাচ্ছে,
হাতটা আলতো করে ফসকে যাচ্ছে হাত থেকে।

শেষবারের মতো মেলিনা হাসে—
একটা চিরন্তন, নিঃশব্দ হাসি।

তারপর...

সে হাওয়ার সঙ্গে মিশে যায়।
নীরব, ধুলোমাখা, অথচ অপূর্ব এক শান্তির মধ্যে হারিয়ে যায়।

কিন্তু তার হাসি থেকে যায়।

তার ভালোবাসা থেকে যায়।

আর মাহি?

সে এখনো প্রতিদিন সেই মাঠে আসে বিকেলে।

চুপচাপ হাঁটে মাঠের মাঝখানে,
বাতাসে খোঁজে মেলিনাকে—
আর যখন হালকা হাওয়া তার গাল ছুঁয়ে যায়,
তখন সে চোখ বন্ধ করে বলে—

"তুমি এসেছো, মেলিনা।"

[সমাপ্ত]

11/06/2025

"মেসেঞ্জারের সবুজ বাতি"

✍🏻 Jahed Hossain

আজ একমাস হল তাকে মেসেঞ্জারে এ্যাক্টিভ দেখি না।

ইতোমধ্যে আমি চল্লিশটা বার্তা ইনবক্স করেছি। এবং সব বার্তা দেখা হয়েছে কিনা তা জানার জন্য দিনকে দিন ফেইসবুক লগইন করে বসে থাকি, এবং মেসেঞ্জারে এসে ঘুরতে থাকি। কিন্তু সব বার্তা অদেখা রয়ে গেছে। আর ভেতরে ভেতরে আমি মুষড়ে যাচ্ছি। আমার সবকিছুতে এখন ভালো না-লাগার বাতাস বইতে শুরু করেছে। যেমন কাল রাতে না-খেয়ে ঘুমাতে গেলাম, গতপরশু খুব করে কাঁদলাম। এখন মনে হয় আমাদের নিজস্ব পৃথিবী বলতে কিছু নেই। কেউ একজন হৃদয়ে ঢুকে বসবাস শুরু করলে তখন পৃথিবীটা তৈরি হয়। আর আমার সেই তৈরি হওয়া পৃথিবীটা আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে, সূর্য যেভাবে অস্ত যাওয়ার জন্য মাথার উপর থেকে সরে যায় ঠিক তেমন। আমি এখন নিজেকে সামলাতে পারি না। কাউকে বিষয়টা জানিয়ে কিছুটা আনুকূল্য নিজের করে নেব, তাও ইচ্ছে করে না। আবার মেয়েটিকেও ভুলতে পারছি না। একটি ভার্চুয়াল আইডির আড়ালের মেয়েটিকে এত ভালোবাসব, তা কোনোভাবেই কোনোকালেও হিসেবের মধ্যেই ছিল না আমার। মেয়েটিকে হয়ত আমিই প্রথম ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম কিংবা হয়ত মেয়েটি। এখন তা আমার স্পষ্ট মনে নেই।অনেক আগে থেকে ইনবক্সে 'হাই, হ্যালো' করতে করতে একদিন বলেছিলাম, ‘কবিতা শুনবেন?'

সে বলেছিল, 'না।'

আমি কিছুটা বিব্রত ও অবাক হয়েছিলাম। আমি এতদিন ভাবতাম কবিতার প্রতি মেয়েদের আলাদা ভালো লাগা আছে, নিজস্ব দুর্বলতা আছে। কিন্তু মেয়েটির মধ্যে তেমন কিছু দেখলাম না বলে হতাশ হলাম।

এর কয়েকদিন পর কথায় কথায় সে বলল, 'কেন কবিতা শুনতেচাই না, তা জানতে চাইলেন না যে?'

আমি কিছুটা স্বাভাবিক মেজাজ ধরে রেখে বললাম, 'আপনি হয়ত কবিতা অপছন্দ করেন, তাই।"

‘না, মোটেও তেমন নয়। আমি কবিতা খুব পছন্দ করি।”

"তাহলে?"

"তাহলে কিছুই না। বিষয়টা বলি, কবিতা একধরনের আশ্রয় আমার কাছে। আর কেউ খুব আপন নাহলে আমি তার কাছে সেই আশ্রয় খুঁজতে যাই না।"

'তার মানে আপনি বলতে চাইছেন, আমি আপনার আপন কেউ না।' 'যে দন্ত-ন এর বেড়া ডিঙাতে পারে না, সে কীভাবে আপন হয়?

"মানে?"

'মানেটা খুব সহজ। আমরা এখনো 'আপনি'র বেড়া ডিঙাতে

পারিনি।

“তাই?'

'হুম, তাই।'

*আপনি-তে কি আপন হওয়া যায় না?'

‘যায় হয়ত-বা, তবে আপনি-তে আমি আপন হই না।' তার এমন আচরণে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। সত্যিইতো, বন্ধুতা মানে কোনো দেয়াল তুলে দেওয়া নয়, বরং দেয়াল ভেঙে দেওয়া কিংবা দেয়াল ডিঙিয়ে ওই পাশে চলে যাওয়া।

সে বলেছিল, 'এই দেয়ালটাই হচ্ছে 'আপনি'।' তারপর আমি খুব সহজেই ‘আপনি’র বেড়া ডিঙালাম। এরপর ইনবক্সে যত কথা হয়েছে মেয়েটিকে 'তুমি' করে বলেছি। আমার মনে হয়েছিল কাউকে 'তুমি' বলতে পারার মধ্যে গৌরব আছে। মনে হতে লাগল 'তুমি' বলতে না-পারলে ট্রেন মিস হয়ে যায়, চোখে ঠিক করে স্বপ্ন ওঠে না, রাতে ঘুম আসে না ইত্যাদি ইত্যাদি। ধীরে ধীরে সে ও আমি খুব আপন হয়ে গেলাম। আমরা ঘুরতে লাগলাম আকাশের ছায়া ধরে ধরে, জোছনার ভেতর দিয়ে। ফিসফিস শব্দে, কানে কানে আমরা ইনবক্স আলাপ চালিয়ে যেতে লাগলাম।

এভাবে কীভাবে যে একটি বছর কেটে গেল আমরা টের পাইনি। এই একবছরে কত-কিছুই-না হয়ে গেছে আমাদের। একবার সে আমাকে আচার খাওয়াল, আমি মেঘ থেকে পেড়ে বৃষ্টি খাওয়ালাম। আমার প্রিয় ছিল মেঘ, তার বৃষ্টি। প্রতিদিন ফেইসবুক লগইন করে সে আমাকে বৃষ্টিতে ভাসিয়ে দিত। আমি ভিজতাম শৈশবের মতো। এভাবে আমরা একে অপরকে শৈশবের গল্প শুনাতে লাগলাম। আমার শৈশব সাদা-কালো, তার হাজার রঙে রঙিন।

সে বলত আমার সাদা শৈশবে সে প্রেম হয়ে ঢুকে পড়বে। আমি বলতাম, 'তুমিতো আমার হৃদয়ে ঢুকে পড়েছ সেই কবে!' আমার প্রতিটি কথার প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস আমাকে মুগ্ধ করত। আমি বুঝতে শিখেছিলাম, এই নারীদের যেদিন বিশ্বাস উঠে যাবে সেদিন পৃথিবী অনেক ডিগ্রি দূরে সরে যাবে। কিন্তু আমাদের দুজনার পৃথিবী মোটেও সরে যায়নি।

আমার অসুখ হলে তার যে কষ্ট হত তা আমি অনেক দূর থেকেও বুঝতে পারতাম। আমার বুকের ভেতর এর আগে কখনো কোনো নারীকে এভাবে বিচরণ করতে দেখিনি। সেও বলত তার চোখের স্বপ্ন হয়ে, ঘুম হয়ে আমি তার ভেতর বাস করতে শুরু করেছি। আমাদের এই বসবাস অজান্তে আমাদেরকে নিয়ে গেছে ভালোবাসার দিকে। যদিও এই একবছরে কেউ কাউকে বলিনি 'ভালোবাসি'। আমি বলতাম ভালোবাসা বলার বিষয় নয়, বুঝতে পারার বিষয়। আমি বুঝতে পারতাম, হয়ত-বা সেও। এভাবে আমরা যে বন্ধনে জড়িয়ে গেলাম তার নামই প্রেম, তার নামই ভালোবাসা। আমি তাকে বলতাম মানুষ এভাবেই ভালোবাসে। আর যারা পারে না, তারা আমাদের মতো মানুষ না। হ্যাঁ, আমরা মানুষ ছিলাম বটে! এই একবছরে আমরা কেউ কারও সেলফোন নাম্বার পর্যন্ত চাইনি! দেখা করার কথাও ভাবিনি একটিবার। সে বলত আমার জন্য সে বেঁচে থাকবে। আমি বুঝতে পারতাম না কেউ যদি আমার জন্য বেঁচে থাকে তাহলে তার জন্য কী করা উচিত। আমার খারাপ লাগত এই ভেবে যে, হয়ত আমি তার প্রাপ্য দিতে পারছি না। হয়ত আমি তাকে ঠিক সেভাবে সম্মান কিংবা শ্রদ্ধা করতে পারছি না। আমি তাকে প্রায়ই বলতাম, 'ক্ষমা কর।' সে অবাক হয়ে বিস্ময়ে প্রশ্নের সুরে বলত, 'কেনো মিছেমিছি ক্ষমা চাইছ?' আমি আমার সন্দেহের কথা জানাতাম, বলতাম ততটা তোমায় ভালোবাসি না
যতটা তুমি মনে কর। সে হাসত আর অবাক হত। আমি সেই হাসির কোনো মানে এখনো খুঁজে পাইনি, পাব না কোনোদিন।

ফেইসবুকে ও মেসেঞ্জারে সকালে একটি ঠান্ডা মৌসুম আছে। তার এই মৌসুম খুব ভালো লাগত। এ সময়টায় মানুষের উৎপাত তেমন একটা থাকত না। মেসেজের বন্যায় কম্পিউটার/মোবাইল হ্যাং হত না। তাই আমরা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সেই সময়ে স্বপ্ন পোহাতাম।

সে বলত, 'এইবার একগ্লাস জল খেয়ে নাও, তারপর এককাপ চা। আমি যে আন্তরিকতার জল খেয়ে বড় হচ্ছি, তা তাকে বলতাম না। আমি লজ্জা পেতাম। আমার মনে হত ভালোবাসলেই কেবল মানুষ লজ্জা পায়। হয়ত এই লজ্জার জন্য কোনোদিন সেলফোন নাম্বার পর্যন্ত চাইতে পারিনি, দেখা করে ঘেমে যাব তা হয়ে ওঠেনি। তবুও সে আমার কাছে অনন্যা হয়ে ওঠেছিল। আমি ভাবতাম, হয়ত এভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়। কিংবা মানুষ এভাবেই ভালোবাসা পেতে চায়।

আমাকে কল্পনায় সে প্রতিদিন একটি নদীতে নিয়ে যেত, তারপর আমরা নদীর পাড়ে ভিড়ে থাকা একটি নৌকায় ওঠতাম। সে বৈঠা হাতে ওপাড়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। কিন্তু পরাজিত হত প্রতিবার। তখন কেনো জানি মনে হত, তার বসবাস হয়ত ওপাড়ে। হয়ত বা কিছুদিনের জন্য সে এপাড়ে বেড়াতে এসেছে, কিংবা ভালোবাসতে এসেছে আমাকে। আমি বলতাম, 'কেনো নদী এত ভালো লাগে?”

সে বলত, ‘আমি নদী হয়েই জন্মেছি। তাই মূলত নিজেকেই এত্তো ভালো লাগে আমার।'

আমার গর্বে বুক ফুলে ওঠত। আমি ভাবতাম আমি একটি নদীকে ভালোবাসি যে নদী শান্ত হতে জানে, যে ভালোবাসার ঢেউ তুলতে জানে হৃদয়ে। সেই নদীটিকেই আমি ভালোবাসি যেখানে ভেসে থাকা যায় জনম জনম। এভাবে আমি আরও দুর্বল হয়ে গেলাম তার কাছে, আমার নদীর কাছে, একটি নারীর কাছে কিংবা জ্বলে উঠা একটি মেসেঞ্জারের সবুজ বাতির কাছে।

আগেই বলেছি আজ একমাস তার নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলে না। আদতে আজ একমাস আমি অসুখে ভুগছি। আমার এই অসুখ পৃথিবীর কেউ টের পায় না। আমি চুপি চুপি ফেসবুকে লগইন করে তার প্রোফাইলে গিয়ে বসে থাকি। এবাউট মি-তে ক্লিক করে তার সম্পর্কে পড়ি। আসলে ওখানে কিছু লেখা নেই। তার সবটাই শূন্য। আমার ভেতরটা কেমন জানি মোছড় দিয়ে ওঠে।

তাহলে কি এটি ফেইক আইডি? যার সামনে এতবার দাঁড়িয়েছি, বাক্যের পর বাক্য বিনিময় করেছি, সে আদতে আসল কেউ না? আমি শঙ্কায় ভুগলেও ঠিক এভাবে তাকে ভাবতে পারিনি। সে আমার ভেতরের সত্তা। যতদিন আমি সত্য হব ঠিক ততদিন সেও সত্য হবে। তাকে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। আমি বিশ্বাস করি সে একদিন-না-একদিন মেসেঞ্জারের এই নীল ছায়ার ভেতর এসে দাঁড়াবে। তারপর 'হ্যালো, এই শোনছ' বলে আমাকে ডাকবে। -

আমি শান্ত পুকুরের মতো তার সামনে গিয়ে বলব, 'এতদিনে মনে পড়ল বুঝি?' আমার সমস্ত অভিমান ঝরে পড়বে তার উপর। এভাবে ভেবে ভেবে আমার আরও একটি সপ্তাহ কেটে গেল। আমিখুব কষ্ট পেতে লাগলাম। এতদিন যাবৎ যত কথা হল তা একে একে পড়তে লাগলাম। আর খুব করে কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল মুছে নিলাম।
সে যা বলেছিল ইনবক্সে তার কয়েকটা চুম্বক অংশ ঠিক এ রকমই—

'শোন, আমি পাথর হয়ে গেলে আমাকে কীভাবে ফেরাবে বল?” 'আমি সাঁতার জানি না। তবুও তোমার কাছে নৌকা নিয়ে ছুটে আসি। যদি কখনো ডুবি তুমি কি শুনতে পাবে?”
"আমি আকাশকন্যা, তুমি ছায়ামানুষ।'
'আমাকে তোমার করে তোল; নচেৎ হারিয়ে যাব।'

আমি আর পড়তে পারছিলাম না। আমার চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছিল। হৃদয়ের খুব কাছে তখন একটি কষ্টের ঘণ্টা শুনতে পেলাম। পেন্ডুলামের দোল খেয়ে ওঠল মন। আমি নিজের ভেতর হাঁটতে লাগলাম। ভাবলাম হাঁটতে হাঁটতে আমি ঠিক পেয়ে যাব আমার আকাশকন্যাকে। যে ভালোবাসা আমি দিতে পারিনি এতদিন তার সবটুকুন উজাড় করে দেব তাকে। এখন আমার নিঃস্ব হওয়া দরকার। আমি এই ভালোবাসার ভার আর বইতে পারছি না। আমাকে উদ্ধার কর খোদা। এভাবে আমি প্রার্থনায় মশগুল হলাম। কাঁদতে কাঁদতে জায়নামাজ ভিজিয়ে ফেললাম।

তারপরঘুম থেকে উঠে রাত দুইটায় ফেইসবুকে লগইন করলাম, তারপর মেসেঞ্জারে গেলাম। আমি অবাক হয়ে দেখলাম একটি সবুজ বাতি জ্বলে আলো ছড়াচ্ছে নীল বারান্দায়। দেখলাম আমার সবগুলো বার্তা ইতোমধ্যে দেখা হয়েছে।

আমি আর দেরি করলাম না। ইনবক্সে টোকা দিয়ে বললাম, “যদি মরে যেতাম তুমিতো জানতেও না, তাই নয় কি?'

এরপর আরও আধঘণ্টা চলে গেল। কোনো উত্তর নেই দেখে আমি ফের অবাক হলাম। ভাবছিলাম সে কি আমাকে ভুলে গেছে, আমাকে এড়িয়ে চলছে ইত্যাদি। খুব ভোরে আবার ঘুম থেকে উঠে ফেইসবুকেই লগইন করলাম এবং মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখলাম, একটি বার্তা এসেছে গোপনে। আমি পড়তে শুরু করলাম...

যেমনটা লিখা ছিল............
“ভাইয়া! আমি জান্নাত বলছি। আপির কাছে আপনার অনেক গল্প শোনেছি। আমি জানি আপনি আপিকে অনেক পছন্দ করেন, হয়ত- বা অনেক ভালোবাসেন। আপি দুঃখ করে বলত, আপনাকে সে কিছুই দিতে পারেনি। আপনি নাকি বলতেন, আপনার বন্ধু আয়না। তাই একটি আয়না রেখে গেছে। একটি স্নেহের রুমাল রেখে গেছে। খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মানুষের ঘ্রাণ রেখে যেতে পারেনি। একবার এসে নিয়ে যাবেন। আপনি কষ্ট পাবেন তাই কোনোদিন আপনাকে বলেনি; আপনিও হয়ত জানেন না; আপি অনেক করে নিষেধ করেছিল যেন সত্যটা না বলি। সে বলতে বলেছিল, আপনাকে ছেড়ে সে নতুন সংসার পেতেছে। আদতে এমন কিছুই নয়। জানি এই সত্য বলাতে ভীষণ কষ্ট পাবেন আপনি। তবু বলছি। আপি দীর্ঘ একবছর ক্যান্সারের সাথে সংসার করে কিছুদিন আগে গত হয়েছেন। সর্বশেষ কেমোথেরাপি দিতে গিয়ে সব চুল হারিয়েছিল বলে আপনার সামনে দাঁড়ায়নি। জানতে চেয়েছে, এখন কয়গ্লাস জল হলে আপনি সেরে ওঠেন মন খারাপের অসুখ থেকে। সময় হলে আসবেন। ঠিকানা জানিয়ে দেব।
ভালো থাকবেন।'

#সমাপ্ত

10/06/2025

"মেলিনার চোখে বৃষ্টি ছিল"

চৈত্রের শেষ বিকেল।
আকাশটা ছিল দ্বিধান্বিত—আধা রোদ, আধা মেঘ। বাতাসে হালকা গন্ধ, যেন কাঁচা মাটির সঙ্গে কোনো অদেখা বিষাদের গন্ধ মিশে আছে। ঠিক যেমন মেলিনার চোখ, যার গভীরে ছিল কোনো অপ্রকাশিত গল্পের দীর্ঘশ্বাস।

আমার নাম মাহি।
আমি শব্দে কথা বলি না। আমার ভাষা নিঃশব্দ। আমি অনুভব করি, অনুভবের মধ্য দিয়ে বোঝাতে চাই যা বলা সম্ভব নয়। আমার কথা যেন বাতাসে হারিয়ে যাওয়া পাতা—নীরব, কিন্তু নড়াচড়ায় ভরপুর।

আমার সাথে মেলিনার প্রথম দেখা একটা পুরনো লাইব্রেরিতে।
সেই লাইব্রেরি যেন এক অচেনা শহরের ধূলিধূসরিত কোণ। চারপাশে থরে থরে সাজানো বই, বাতিল হয়ে যাওয়া শব্দ আর ধুলোর গন্ধে ভরপুর একটা ছোট্ট জানালার পাশে বসে ছিল সে। একটা বইয়ের পেছনের পাতায় কিছু লিখছিল।

আমি চুপচাপ তাকিয়ে দেখছিলাম।
সে হয়তো টের পায়নি, কিংবা পেয়েও পাত্তা দেয়নি।

হঠাৎ সে বইটা রেখে উঠে দাঁড়াল, আর আমি দৃষ্টি রাখলাম বইয়ের শেষ পাতায়। সেখানে লেখা:

"তুমি যদি কোনোদিন ফিরে আসো, আমি এখানেই থাকবো।"

আমি বললাম, “কার জন্য লিখছো?”

সে একটুও চমকাল না। খুব শান্তভাবে বলল—
“যে আসবে না, কিন্তু মন চায় সে আসুক।”

এই কথাটা আমার বুকের ভেতর কোথাও ধাক্কা দিল।
কে যেন নিঃশব্দে বলে উঠল, "এই মেয়েটা... অন্যরকম।"

তারপর দিন যেতে লাগল।
আমি প্রতিদিন সেই লাইব্রেরিতে যেতাম। কোনো বইয়ের জন্য না, শুধু তাকে একবার দেখার জন্য।
মেলিনা আসত, বসত, বই পড়ত। কখনো কপালে হাত দিয়ে ভাবনায় হারিয়ে যেত, কখনো জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকত—যেন দূরের কোনো শহরের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।

তার চোখে আমি এক শহর দেখতাম—যেটার কোনো মানচিত্র নেই, কোনো রাস্তা নেই, কেবল অনুভবের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল সে শহর।

আর আমি?
আমি মেলিনাকে ভালোবেসে ফেলি। ধীরে ধীরে। চুপিচুপি।
কোনো দাবি ছাড়াই, কোনো স্বপ্ন ছাড়াই—শুধু তার পাশে বসে থাকার জন্য।

একদিন সাহস করে জিজ্ঞেস করলাম,
“তুমি কি আমাকে ভালোবাসো, মেলিনা?”

সে হেসে বলল,
“তুমি খুব দেরি করে এসেছো, মাহি।
আমার হৃদয়টা তখনই জমে গিয়েছিল,
যখন কেউ তা ছুঁয়ে না বলেই চলে গিয়েছিল।”

আমি কিছু বলিনি। শুধু তাকিয়ে ছিলাম তার চোখের দিকে—যেখানে সেই ছায়াময় মানুষটা এখনও বাস করছিল।

সে আবার বলল—
“তবে যদি তুমি চাও, পাশে বসে থাকতে পারো।
কারণ কিছুকে ভালোবাসতে হয় না, শুধু বুঝে নিতে হয়।”

আমরা প্রেম করিনি।
কোনো ‘তুমি-আমি’র গল্প লিখিনি।
তবু প্রতিদিন সন্ধ্যায় লাইব্রেরির সেই কর্নারে বসে দু’জন আলাদা বই পড়তাম। মাঝেমাঝে আমাদের আঙুল ছুঁয়ে যেত একই পাতায়—সেখানেই আমাদের নীরব সেতু তৈরি হতো।

একটা নীরব ভালোবাসা—
যার কোনো নাম নেই, দাবি নেই, প্রতিশ্রুতিও নেই।
শুধু উপস্থিতির গন্ধ ছিল।

একদিন হঠাৎ মেলিনা আর এল না।

আমি অপেক্ষা করলাম—একদিন, দুইদিন, এক সপ্তাহ…
তারপর লাইব্রেরির সেই পুরনো টেবিলের ওপরে একটা ছোট চিরকুট পেলাম।

লিখা ছিল:

"যে আসবে না, তার জন্য সারা জীবন অপেক্ষা করা যায় না।
কিন্তু যে চুপচাপ পাশে বসে থেকেছে — তাকেই হৃদয় রেখে যেতে হয়।"

সেই দিন আমার বুকের ভেতর অদ্ভুত এক শূন্যতা তৈরি হলো।
আমি জানতাম, মেলিনা আর আসবে না।
তবু আমি প্রতিদিন যেতাম, বসতাম সেই চেয়ারে, যেখানে একদিন তার ছায়া ছিল।

আজও চৈত্রের শেষ বিকেলে, যখন আকাশ হঠাৎ মেঘ করে আসে,
আমি বইয়ের পাতায় তার গন্ধ পাই।

বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটায় যেন মেলিনার চোখের জল খুঁজে পাই।

আমাদের ভালোবাসা কাগজে লেখা হয়নি, কারো মুখে উচ্চারিত হয়নি,
তবু সে ভালোবাসা আজও বেঁচে আছে এক পুরনো লাইব্রেরির কর্নারে।

মেলিনাকে আমি কখনো ছুঁতে পারিনি।
তবে আমি জানি, তার গন্ধ আজও আমার হৃদয়ে রয়ে গেছে।

নিঃশব্দ ভালোবাসার এক নাম — মেলিনা।

Follow: ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

03/06/2025

প্রকৃতি কখনোই কাউকে ছে'ড়ে দেয় না
বিশ্বাস হচ্ছে না? অপেক্ষা করুন!
সময় হলেই উপলব্ধি করতে পারবেন
সৃষ্টিকর্তা কোনো হিসাব অ'সম্পূর্ণ রাখেন না।

Follow: ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

22/05/2025

একদিন প্রচন্ড জ্বর আসুক,
সে জ্বরের তাপে জ্বলে পুড়ে যাক তোমার সকল অবহেলা।

Follow: ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂

Address

Kashimpur
Gazipur
1634

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ᴄʜᴀʏᴀʟɪᴘɪ - ꧁ছায়ালিপি꧂ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share