
21/09/2025
বাচ্চাকে সাহসী, বিনয়ী এবং ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ধীরে ধীরে পরিবেশ, আচরণ আর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এগোতে হয়। কিছু কার্যকর কৌশল হলো শিশুকে তার আস্থার জায়গা, বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করে দেওয়ার মাধ্যমে, তাকে তার সেভ জোন নিশ্চিত করার মাধ্যমে, এগোতে হবে।
শিশুর শেখার, রোল মডেল হল তার বাবা-মা তাই শিশুকে কিছু শেখাতে হলে তাকে বলার থেকে তার সামনে মডেল হয়ে প্লে করে দেখাতে হবে, বাবা মাকে আগে সেটা শিখতে হবে তবেই শিশু শিখবে এবং আনন্দের সাথে শিখবে। শিশুরা কিন্তু বড়দের থেকেই খুব তাড়াতাড়ি কোন কিছু কপি করে ফেলে, এবং সেটাই সে নিজের মধ্যে ধারণ করে, তাই বাবা মায়ের প্রথম কাজ হচ্ছে শিশুর সামনে রোল মডেল হয়ে উঠা।
নিরাপদ ভালোবাসা ও সমর্থন দিন
বাচ্চা যেন জানে ভুল করলে তাকে বকা বা হেয় করা হবে না, বরং শেখানো হবে। যেকোন পরিস্থিতি তার বাবা মা তার পাশে আছে এটা যেন সে মনে প্রাণে ধারণ করতে পারে, এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। শিশুর মধ্যে এই আত্মবিশ্বাসের বীজ ছোট থেকে বপন করে দিতে পারলে, পরবর্তী জীবনের ওই আত্মবিশ্বাস তাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করবে।
ছোট ছোট চ্যালেঞ্জ দিন
অল্প অল্প করে বয়স উপযোগী দায়িত্ব দিন, ছোট থেকেই তাকে সব সময় তাকে ধরো না, এটা পারবে না, পড়ে যাবে, ভেঙে যাবে, এই কথাগুলো বললে শিশু নিজে থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে চেষ্টা করে , তার সরল মনে এটাই ঢুকে যায় যে বোধহয় কিছুই পারে না বা পারবে না,কাজের শেষে অবশ্যই বাচ্চাকে বাহবা দেয় আবার প্রশংসা করা,শিশুর ভাল কাজ গুলোকে তাকে প্রশংসা করুন।
নিজের মত প্রকাশে উৎসাহ দিন,সে কিছু বলতে গেলে তাকে আগে সুযোগ দিন তার কথা শান্ত হয়ে শুনুন বারবার তাকে পাল্টা প্রশ্ন করবেন না, শিশুদের ব্রেনে একটা কথা প্রসেসিং হতে সময় লাগে তাড়াতাড়ি উত্তর দিতে পারেনা তাই তাদেরকে সময় দিন, মাঝে মাঝে নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করুন তুমি কি চাও, তুমি কোনটা করতে চাও এতে তার সিদ্ধান্ নিতে সাহস হবে,,এবং এতে সে আত্মসম্মান যেমন বুঝবে তেমনি অন্যের মতামত কেউ গুরুত্ব দেওয়া শিখবে।
ভয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন
যে বিষয়গুলো বাচ্চাকে ভয় দেখায়, তা নিয়ে আলাপ করে বাস্তব তথ্য দিন, ভয় দূর হয়।বাচ্চাদের মনে ভয় ঢুকে গেলে বাচ্চারা ছোট থেকে চুপসে যায় আর যদি কাউকে প্রকাশ করতে না পারে সেটা পরবর্তীতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
ব্যর্থতাকে শেখার অংশ বানান
হেরে গেলে বা ভুল করলে বলুন—“শেখার সুযোগ হয়েছে”,এটাই তাকে বোঝান, কিছুতে হেরে গেলে অভিজ্ঞতা বাড়ে পরবর্তীতে সেটা কাজে লাগবে এটা বাচ্চাকে বোঝান ভালোভাবে —এতে ব্যর্থতাকে ভয় না পেয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
নিজে উদাহরণ হন
অভিভাবক যদি কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য, শালীনতা আর সাহস দেখান, বাচ্চাও তা শিখে নেয়।,সুন্দর আচরণ, রুচিশীলতা, ধৈর্য এবং বিনয়ি মনোভাব বাবা মার থেকেই পায়।
সামাজিক দক্ষতা শেখান
বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা, নতুন জায়গায় কথা বলা, স্পষ্ট কথা বলা, যে কোন জিনিস শেয়ার করতে দ্বিধাবোধ না করা ।
সমস্যা সমাধানের সুযোগ দিন
সবকিছু আগে থেকে করে না দিয়ে কিছু পরিস্থিতিতে তাকে নিজের সমাধান খুঁজতে দিন।, সেটা হতে পারা তার ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু, যেমন পায়ের জুতাটা নিজেকে পড়তে দেওয়া, কোন একটা জিনিস খুঁজে বের করা বা তার খেলনা গুলো গুছিয়ে রাখা এভাবেই সে আস্তে আস্তে শিখবে কাজগুলো কিভাবে গুছিয়ে করতে হয়, কাজের গুরুত্ব বুঝবে।