
10/07/2025
পোল্ট্রি ফার্মিং এখন এক বৈধ জু*য়ার নাম — যেখানে হার নিশ্চিত, আর বাঁচা কাকতালীয়।
এটা আর কৃষি উদ্যোগ নয়। এটা এখন এক বৈধ জু*য়া। নাম তার পোল্ট্রি ফার্মিং।
যেখানে একজন উদ্যোক্তা জানেন না — আগামী মাসে তার লাভ হবে, না নিঃস্ব হয়ে আবার ধারকর্জ করে ঘুরতে হবে।
একজন প্রান্তিক উদ্যোক্তা তার সীমিত পুঁজির সবটুকু ঢেলে দেন এই খাতে। বাচ্চা কেনেন, খাবার কেনেন, ঔষধ দেন, শ্রমিকের বেতন দেন, ঘুমহীন রাত কাটান।
একটাও দিন নেই, যেদিন তিনি তার খামার নিয়ে না ভাবেন।
কিন্তু মাস শেষে?
লাভ তো দূরের কথা — খরচই উঠে আসে না।
তখন প্রশ্ন জাগে মনে —
"এটা ব্যবসা, নাকি বৈধ জু*য়া?"
অন্ধকারে পা বাড়ানো এক মরণখেলা:
পোল্ট্রি খামার এখন এমন এক অন্ধ গলির নাম, যেখানে ঢোকার আগে কেউ জানে না সামনে কী আছে।
এক মাস আগে যে বাচ্চা কেনা হয়েছিল ৫০ টাকায়, সেই মুরগি বড় হয়ে বাজারে বিক্রি হয় ১২০ টাকায় — অথচ খরচ পড়ে ১৩৫ টাকা।
খামারির হিসাব মেলে না, চোখের পানি ছাড়া আর কিছু থাকে না।
এক খামারি বলেন,
“জু*য়াতে যেমন একবার কেউ নামলে হারিয়ে যায়, নিঃস্ব হয় পরিবার — ঠিক তেমন অবস্থা এখন আমাদের। পার্থক্য শুধু, এটা অবৈধ নয় — বৈধ জু*য়া।”
শ্রম আছে, ঘাম আছে, শুধু নেই নিশ্চয়তা:
পোল্ট্রি উদ্যোক্তা প্রতিদিন ভোরে খামারে যান। মুরগির ওষুধ, খাবার, তাপমাত্রা, গন্ধ, সব কিছু নজরে রাখেন।
একটা ভুল মানেই হাজার হাজার টাকার ক্ষতি।
তবু সব সঠিক রেখেও মুনাফা নেই — কারণ বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করেন না তিনি।
দাম কে ঠিক করে? কোম্পানি।
ওষুধের দাম, ফিডের দাম, বাচ্চার দাম — সবই তাদের হাতে।
খামারির হাতে শুধু "অজানা ভবিষ্যৎ"।
হারানোর গল্প প্রতিটি গ্রামে
প্রতিটি গ্রামে এখন একজন না একজন খামারি আছেন যিনি একসময় পোল্ট্রি খামার করতেন। এখন তিনি ঋণে জর্জরিত।
কেউ জমি বিক্রি করেছেন, কেউ স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখেছেন।
কেউবা আরেকটা খামার চালু করতে আবার ধার করেছেন — ভেবে, "এইবার বুঝি ঘুরে দাঁড়াবো"।
কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয় না এই বৈধ জু*য়ার খেলা।
এখানে একবার হার মানেই — পারিবারিক ভাঙন, মানসিক বিপর্যয়, নিঃস্বতা।
এই খেলায় জেতেন শুধু গুটি কয়েকজন:
যারা ফিড বানায়, বাচ্চা দেয়, ওষুধ দেয়, দাম ঠিক করে — তারা সব সময় লাভে।
তারা জানে, হাজারো খামারি খেলায় থাকবে — হারুক বা জিতুক, তারা বিক্রি করতেই পারবে।
এই খেলায় জেতার নিয়ম শুধু একদিকেই।
আর খামারিরা?
তারা শুধু কষ্ট করে খেলে, ঘাম ঝরায়, সংসার হারায়,
আর শেষমেশ প্রশ্ন করে —
“আমরা কি কৃষি উদ্যোক্তা? না এক বৈধ জু*য়ার খেলোয়াড়?”
এই বাস্তবতা যদি কেউ না দেখে, না বোঝে, তাহলে পোল্ট্রি খামারিদের ক্ষয় ধরা বন্ধ হবে না। আর একদিন হয়তো পুরো খাতটাই হারিয়ে যাবে — যেমন এক এক করে নিঃশেষ হয় জু*য়ার আসরের হারে যাওয়া খেলোয়াড়রা।
#পোল্ট্রি_ম্যানেজার #পোলট্রি