04/09/2025
২০২৫ সালের কর্পোরেট জবে টিকে থাকার ১০টি জরুরি স্কিল
বাংলাদেশের কর্পোরেট জগতে টিকে থাকতে এখন শুধু একটি ভালো ডিগ্রি যথেষ্ট নয়। প্রতিযোগিতা এতটাই তীব্র যে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন বিশেষ দক্ষতা বা 'স্কিল'। ২০২৫ সাল হবে 'Survival of the Skilled'—অর্থাৎ যার দক্ষতা ভালো, সেই এগিয়ে থাকবে।
আজ থেকে কয়েক দশক আগে টাইপরাইটার ছিল অফিসের অপরিহার্য অংশ। কিন্তু যখন কম্পিউটার এলো, তখন যারা টাইপরাইটার ছেড়ে কম্পিউটার চালানো শিখেছিলেন, তারাই টিকে রইলেন। বাকিরা পিছিয়ে পড়লেন। একইভাবে, এখন যারা নিজেদের দক্ষতাকে নতুন করে সাজাবে, তারাই ভবিষ্যতের কর্পোরেট জগতের নেতৃত্ব দেবে।
চলুন দেখে নিই ২০২৫ সালে কর্পোরেট জবে টিকে থাকার জন্য ১০টি অপরিহার্য স্কিল:
১. ডিজিটাল লিটারেসি ও টেক অ্যাডাপশন: শুধু ইমেইল পাঠানো বা ওয়ার্ডে ডকুমেন্ট লেখা যথেষ্ট নয়। এখন আপনাকে জানতে হবে কীভাবে AI টুল, ডেটা অ্যানালাইসিস সফটওয়্যার এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার এই দক্ষতা আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে।
২. সেলস ও নেগোসিয়েশন স্কিল: শুধু কাজ জানলেই হবে না, সেই কাজকে 'বিক্রি' করতেও জানতে হবে। নিজের আইডিয়া, প্রজেক্ট বা পণ্যকে কীভাবে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করবেন, তা জানা এখন একটি জরুরি দক্ষতা।
৩. কার্যকরী যোগাযোগ: বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই পরিষ্কারভাবে কথা বলতে ও লিখতে পারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বস, ক্লায়েন্ট বা সহকর্মীর কাছে আপনার কথা স্পষ্ট হলে কাজের ভুল বোঝাবুঝি কমে যায়।
৪. ক্রিটিকাল থিঙ্কিং ও প্রবলেম সলভিং: শুধুমাত্র সমস্যা চিহ্নিত করাই যথেষ্ট নয়। কর্পোরেট জগতে তারাই সফল, যারা সমস্যার সমাধান দিতে পারে। তাই সবসময় একটি 'সমাধানদাতা'র মানসিকতা রাখুন।
৫. লিডারশিপ ও টিম ম্যানেজমেন্ট: শুধু নিজের কাজ নয়, একটি দলকে পরিচালনা করার ক্ষমতাও থাকা চাই। সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারলে প্রমোশন এবং দ্রুত ক্যারিয়ার গ্রোথ নিশ্চিত হবে।
৬. ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স (EI): অফিসের চাপ, টার্গেটের বোঝা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সামলাতে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স আপনাকে কঠিন পরিস্থিতিতেও শান্ত থাকতে সাহায্য করবে।
৭. নিরন্তর শেখার মানসিকতা: "আমি তো সব শিখে ফেলেছি"—এমন ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন। নতুন সফটওয়্যার, নতুন মার্কেট ট্রেন্ড বা নতুন স্কিল—সবকিছু শেখার জন্য সবসময় আগ্রহী থাকুন। কর্পোরেট জগতে শেখার কোনো শেষ নেই।
৮. টাইম ম্যানেজমেন্ট ও অগ্রাধিকার দেওয়া: সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানো এবং কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করতে পারা একটি মূল্যবান দক্ষতা। যারা এটি জানে, তারা সবসময় নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করতে পারে এবং অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকে।
৯. নেটওয়ার্কিং ও সম্পর্ক তৈরি: শুধু নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে হবে না। শক্তিশালী পেশাদার নেটওয়ার্ক থাকলে নতুন চাকরি, প্রমোশন বা নতুন কোনো সুযোগ সহজে আসে।
১০. পেশাদার ব্র্যান্ডিং: লিঙ্কডইন বা ফেসবুকে নিজের একটি পেশাদার পরিচয় তৈরি করুন। কর্পোরেট জগতে এখন আপনার 'পারসোনাল ব্র্যান্ড' আপনার ক্যারিয়ার গ্রোথের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৫ সালের কর্পোরেট জগতে শুধু একটি ভালো ডিগ্রি নয়, আপনার দক্ষতাই হবে আসল সম্পদ। তাই আজই নিজের স্কিল আপগ্রেড করা শুরু করুন। তা না হলে হয়তো আগামীকাল আপনার চাকরিটাই ঝুঁকির মুখে পড়বে।