24/08/2024
‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য নির্বাচিত সরকারই উত্তম’ কথাটা শুনতে ভালো লাগলেও বাস্তবতা ভীন্ন। যারাই এ দেশের ক্ষমতায় এসেছে, দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়েছে। ‘নির্বাচিত সরকার’ কথাটা শুনলেই আমার ভয় করে। যে দলই ক্ষমতায় আসে, সেটি কেবল একটা দলের সরকার হয়ে ওঠে। সাধারণ জনগণের সরকার হয়ে উঠে না। দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। যদিও শেখ হাসিনার সরকার জুলুমের এক নিকৃষ্ট ইতিহাস রেখে বিদায় হয়েছে।
রাষ্ট্রনীতি বা রাজনীতি অতো বুঝি না। তবে বড় হবার পর থেকেই দেখছি, এক চোর যায় আর আরেক চোর আসে। সেদিন পত্রিকায় দেখলাম আগে যেখানে চাঁদাবাজি করতো আওয়ামী লীগ, সেই জায়গাটা এখন দখলে নিয়েছে বিএনপি। মোট কথা এই দেশে নির্বাচিত দলীয় সরকার বলতে আমি একটা চোরের গোষ্ঠী বুঝি। কেউ একটু কম চুরি করে আর কেউ বেশি, এই যা তফাৎ।
দেশের প্রায় সবগুলো ডিপার্টমেন্টই ধ্বংস হয়ে গেছে। আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত রাষ্ট্রের সংস্কার দরকার। কেউ যদি বলে যে নির্বাচন হোক, নির্বাচিত সরকার এসে সেইসব সংস্কার করবে, আমার কাছে তা এক নির্দয় মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য সংস্কারগুলো বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই করে যেতে হবে। যখনই বন্যা হয়, নদী খনন থেকে শুরু করে বন্যা মোকাবেলায় কী কী করণীয় তা নিয়ে টক শো গরম হয়। বিস্তর আলোচনা হয়। বন্যা শেষ, ব্যস, যেই লাউ সেই কদু। এইভাবে আর কত? আর কত সহস্র মানুষ ভেসে যাবে বানের জলে! বন্যা মোকাবেলায় যা যা করণীয়, আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার সবটুকু করুক। ভারত যা করছে, আন্তর্জাতিক আইনে তা অপরাধ। এ ক্ষেত্রে যা যা করণীয় সরকার তা করুক। মেরুদণ্ড সোজা করে চোখে চোখ রেখে এর প্রতিবাদ করুক। আমাদের মেরুদণ্ডহীন পররাষ্ট্রনীতিই ভারতের বাড়াবাড়ির অন্যতম প্রধান কারণ। নদীখননসহ অন্যান্য আরও যা কিছু করা দরকার, সব কিছুই সম্পন্ন হোক এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে। তাতে যত বছর সময় লাগে লাগুক। আমরা আর ভাসতে চাই না। চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে সন্তান, মা বাবা ভাই বোন, এমন করুণ দৃশ্য আমরা আর দেখতে চাই না।
তারপর না হয় নির্বাচন হবে, আমরা আবার চলে যাবো কোন ‘নির্বাচিত চোরের’ অধীনে। যেহেতু গণতান্ত্রিক দেশ, নির্বাচন তো হতেই হবে!
লেখক:কবি মুজাহিদুল ইসলাম (বুলবুল) Mujahid Bulbul