27/07/2025
আমরা ঘরে যে সোফায় হেলান দিয়ে বসি, যে বালিশে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ি, যে কম্বলে গুটিশুটি মেরে শুয়ে থাকি শীতের রাতে—ওগুলো কি সত্যিই নিরাপদ?
ভাবুন তো, চোখের সামনে কিছুই নেই অথচ শ্বাস নিতে গিয়ে হঠাৎ হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়ছে, চুলকানি, চোখ লাল, গলা ধরে যাচ্ছে, এমনকি কারো কারো বুকে শ্বাস আটকে আসছে—এই যন্ত্রণা কি শুধু ঋতু পরিবর্তনের জন্য?
না, আমাদের অজান্তেই আমরা ঘরের ভেতর পোষা একটি অদৃশ্য সেনার সঙ্গে বাস করছি—ডাস্ট মাইট। দেখতে পেতেন যদি, ভয়েই হয়ত ঘর ছেড়ে পালাতেন। এরা ছোট, ভয়ঙ্কর, আট পায়ের একেকটা লোমে ঢাকা জীব, যারা আপনার বালিশে, কম্বলে, পর্দায়, ফ্যানের ব্লেডে, কার্পেটের তন্তুতে আশ্রয় নিয়ে দিব্যি ঘোরাফেরা করে।
আর সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার? এরা ক্ষতি করে না ঠিক, কিন্তু এদের শরীরের পচা অংশ আর প্রতিদিন প্রায় বিশবার করে ফেলা মল—এই জিনিসটাই আপনার শরীরে অ্যালার্জির আগুন ধরিয়ে দেয়।
সর্দি, হাঁচি, কাশি, স্কিন র্যাশ, চোখ লাল, চুলকানি, এমনকি হাঁপানির মতো অবস্থাও তৈরি করে দিতে পারে এই ঘরের ভিতরের শত্রু। বর্ষার দিনে ঘরে ভিজে কাপড় শুকানোটা যেন ওদের উৎসবের মতো! বাড়ে ওদের সংখ্যা, আর বাড়ে আপনার সমস্যা।
তবে চিন্তা করবেন না। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই শত্রুদের পরাজিত করা সম্ভব।
• প্রতিদিন জানালা খুলে দিন, আলো ঢোকাতে দিন। সূর্যের আলো এদের শত্রু।
• রোজকার বিছানা ঝাড়া, চাদর, বালিশের ওয়াড় বদল করা দরকার।
• কম্বল, বালিশ মাঝেমধ্যে রোদে দিন।
• ঘরে ভেজা কাপড় ঝোলানো বন্ধ করুন।
• ফ্যান, কার্পেট, পর্দা—সব কিছু নিয়ম করে পরিষ্কার রাখুন।
• ঘর শুকনো রাখুন, যেন এরা বাঁচতে না পারে।
• যাদের অ্যালার্জি প্রবণতা আছে, তারা এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
• অ্যালার্জি গুরুতর হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন অবিলম্বে।
এটা ঠাণ্ডা লেগে সর্দি নয়, এটা এক অদৃশ্য অথচ প্রভাবশালী শত্রুর আক্রমণ। তার সঙ্গে লড়তে গেলে দরকার সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা, আর একটু সচেষ্ট হওয়া।
আজই নিজের বিছানা, ঘর আর ফ্যানের ব্লেডের দিকে তাকিয়ে দেখুন, আপনি কাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন আপনার জীবনে?