07/08/2025
🎯 গল্পের নাম: “হেরে না যাওয়া মানুষটা”
তানভীর — বয়স ৩২, একটা ছোট বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেছে। কোম্পানির নামটা বড় না, কিন্তু তানভীর তার কাজটা ভালোবাসত।
বেতন কম, তবুও চেষ্টা করত সংসারের চাকা চালিয়ে রাখতে।
বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী মিতু আর দশ মাসের মেয়ে রাইসা।
স্ত্রী একটা প্রাইভেট অফিসে কাজ করে — মাসে মাত্র ১২,০০০ টাকা বেতন।
হঠাৎ একদিন কোম্পানির বস তাকে ডেকে বলে —
“দুঃখিত তানভীর, অফিসে খরচ কমাতে হচ্ছে। তোমাকে রাখাটা এখন সম্ভব নয়।”
চোখের সামনে যেন অন্ধকার নেমে আসে।
চাকরি চলে যাওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন তানভীর বোঝে না — কী করবে?
বাইরে কাউকে বলতেও লজ্জা পায়, আত্মসম্মান আঘাত
পায়।
মেয়ের দুধ শেষ হয়ে যায়, স্ত্রীর মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট।
মিতু একদিন চুপচাপ বলল:
“তুমি চাকরি হারিয়েছো, তুমি মানুষ হারাওনি। আমরা আছি তোমার পাশে।”
তানভীর কাঁদে না, চিৎকার করে না — বরং একটা খাতা নেয়, কলম হাতে তুলে নেয়।
প্রতিদিন লিখে:
কোথায় আবেদন করল,
কোন কোন কাজ শেখা দরকার,
কীভাবে নিজেকে গড়বে নতুনভাবে।
সকালে মেয়েকে কোলে নিয়ে অনলাইনে চাকরির ওয়েবসাইট ঘাঁটে।
দুপুরে পুরোনো অফিসের কলিগদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
রাতে নিজের মোবাইলে ইউটিউব দেখে ছোট ছোট স্কিল শেখে — ডিজিটাল মার্কেটিং, Canva, Resume Writing।
তানভীর এখনো চাকরি পায়নি।
তবুও সে থেমে যায়নি।
কারণ সে জানে —
“চাকরি পাওয়া না পাওয়া আমার নিয়ন্ত্রণে না,
কিন্তু চেষ্টা করা, শেখা আর লড়াই করা আমার হাতে।”
রোজ সন্ধ্যায় মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,
“তুই দেখিস রাইসা, তোর বাবা একদিন ঠিক ঘুরে দাঁড়াবে।”
🌱 শেষ দৃশ্য:
এক সন্ধ্যায় বারান্দায় বসে তানভীর মিতুকে বলে:
“আমার এখনো চাকরি নেই। কিন্তু আমি এখন ভেঙে পড়িনি, আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছি।”
মিতু পাশে বসে মাথায় হাত রেখে বলে:
“এই মনোবলই একদিন আমাদের জিতিয়ে দেবে।”
✅ গল্পের বার্তা:
সব মানুষ সফল হয় না একদিনেই।
কিন্তু যারা হেরে না গিয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে এগোয়, তাদেরই গল্প একদিন অনুপ্রেরণা হয় হাজার মানুষের জন্য।
তানভীর এখনো বেকার — কিন্তু হেরে যায়নি।