04/02/2024
নিজের ব্যবসাকে কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে নিয়ে যাওয়া অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয়। আপনি কিছু নিয়ম মেনে চললে এবং সেগুলো নিয়মিত চর্চা করলে আপনার ব্যবসায়ে সফলতা পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত। তবে ব্যবসায় শুরু করার আগে থেকেই আপনাকে জানতে হবে নিয়মগুলি।
১। ব্র্যান্ডিং করা
যেকোন কোম্পানি বা বিজনেস দাড় করানোর পুর্ব শর্ত হচ্ছে সেটাকে ব্র্যান্ডিং করা। আপনি যদি মার্কেটে লং টাইম থাকতে চান এবং একটা পরিচিতি লাভ করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ব্র্যান্ডিং করতে হবে। বিজনেস ব্র্যান্ডিং করার কিছু ওয়ে রয়েছে। বর্তমানে ফিজিকালি এডভার্টাইজমেন্ট না করে, সম্পুর্ন ডিজিটালি করাটাই সাশ্রয়ী।
আপনাকে আপনার ব্যবসার ব্র্যান্ডিং এর জন্য আলাদা একটা মার্কেটিং বাজেট ধরে রাখতে হবে এবং ওই বাজেট সম্পুর্ন ব্র্যান্ডিং এর জন্য খরচ করতে হবে। আপনি Facebook, Google কিংবা Bing ইউজ করে আপনার বিজনেসের এডভার্টাইজমেন্ট করতে পারবেন অনেক কম খরচে। এতে করে অনেক ঝামেলা ছাড়াই আপনি আপনার টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পৌছাতে পারবেন।
২। একটা ফিক্সড বিজনেস প্ল্যান রেডি করা
প্রতিটা বিজনেসেই একটা প্ল্যান থাকে। তবে যাদের প্ল্যান একদম ফিক্সড এবং অটুট থাকে, তারাই মুলত শেষ পর্যন্ত সফলতা পায়। বিজনেস রান করার পরে, আপনি যদি খুব বেশী প্ল্যান অদলবদল করতে থাকেন, তাহলে আপনার বিজনেসে সফলতা আসা খুবই কঠিন হবে।
শুরুতে আপনাকে আপনি যে প্রাইমারি প্ল্যান রেডি করবেন, সেটা ফিলাপ করবেন। তার জন্য আপনার যতটুকু হার্ডওয়ার্ক বা ডেডিকেশন দেওয়া দরকার, সেটা আপনাকে দিতে হবে। এতে করেই আপনি আপনার বিজনেস গ্রো করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি, শুধু জাম্প করতে থাকেন, এই প্ল্যান থেকে ওই প্ল্যানে ঘুরাঘুরি করেন, তাহলে আপনার জন্য সাকসেস পাওয়াটা অনেক দুষ্কর হবে।
৩। অলটারনেটিভ প্ল্যান রাখা
প্রতিটা ফিক্স প্ল্যানের সাথে একটা অলটারনেটিভ প্ল্যান থাকা উচিত সব ব্যবসায়। কারন কারো প্ল্যান যে ১০০% সঠিকভাবে কাজ করবে, সেটার কোন ও নিশ্চয়তা নেই। তাই, আপনি যদি কোনভাবে আপনার প্রথম প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে যেন আপনি আরেকটা প্ল্যান আকড়ে ধরে উঠে দাঁড়াতে পারেন।
অলটারনেটিভ প্ল্যানকে আমরা ব্যাকাপ প্ল্যান ও বলতে পারি। কারন এই প্ল্যান আপনার কোম্পানির খারাপ সময়ে আপনাকে ডিসিশন নিতে সাহায্য করবে। এই প্ল্যান রেডি থাকলে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যবসাকে নতুন দিকে একটা মোড় দিতে পারবেন, যদি সেখানে কোন প্রকার সমস্যা হয়। তাই আমি মনে করি সব ব্যবসায়ীকেই একটা করে অলটারনেটিভ প্ল্যান রেডি করা উচিত, যে আমার মুল প্ল্যান সাকসেসফুল না হলে, আমি কি করবো।
৪। বিজনেসের কম্পিটিশন এনালাইজ করে বিজনেস শুরু করা
যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগেই সেই মার্কেটের কম্পিটিশন নিয়ে পুর্ন ধারনা নেওয়া উচিত। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন, যে আপনি কাদের সাথে লড়াই করতে যাচ্ছেন। আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে যদি ওই রকম খুব বেশী কম্পিটিশন না থাকে, তাহলে আপনি ইতোমধ্যে একটু এগিয়ে আছেন। কিন্তু যদি মার্কেটে অনেক বড় বড় কোম্পানি সিমিলার প্রোডাক্ট সেল করে বা সার্ভিস দিয়ে থাকে, তাহলে সেই মার্কেটে একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার ঠিকে থাকা খুবই কঠিন হবে।
৫। বিজনেসের সাথে জড়িত কাস্টমার কমিউনিটিতে নিজেকে জড়ানো
সাপোজ আপনি ব্যবসা করছে ‘ইঞ্জিন অয়েল’ নিয়ে। এখন আপনি যদি আপনার আশেপাশের সব কার কমিউনিটিতে নিজেকে জড়িয়ে নেন, তাহলে অনেক টার্গেটেড কাস্টমারের সাথে পরিচিত হয়ে যেতে পারবেন। আপনি খুব সহজেই তাদের কাছে আপনার বিজনেসের মার্কেটিং করতে পারবেন। এটা খুবই স্লো প্রসেস বা এটা সবচেয়ে বেশী ইফেক্টিভ একটা মেথড। পার্সোনাল রিলেশনশীপ বিল্ডাপ করে যেকোন বিজনেসকে প্রমোট করলে সেটা খুবই স্ট্রং মার্কেটিং হয়।
তাই আপনার উচিত হবে, আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস রিলেটেড যত, কমিউনিটি আছে, সেখানে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা। সেটা হতে পারে কোন ফেসবুক গ্রুপ কিংবা হতে পারে কোন সরাসরি অর্গানাইজেশন। যাই হোক, আপনাকে নিজেকে সেখানে একটিভ রাখতে হবে। মানুষের সাথে কানেক্টিভিটি বাড়াতে হবে।
৬। মার্কেট এনালাইজ করা
মার্কেট এনালাইজ করা অনেক বড় একটা ব্যাপার। আপনি হয়তো দেখে থাকবেন, বড় বড় কোম্পানি মাঝে মধ্যে অনেক সার্ভে করে থাকে। যা থেকে তারা মানুষের কাছ থেকে ডাটা নেয় এবং তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসে সেই ডাটা এপ্লাই করে নিজেদের ইম্প্রুভ করার চেষ্টা করে।
এই মার্কেট এনালাইজ অনেক স্ট্রং একটা ব্যাপার। আপনাকে ও আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্টের যে মার্কেট রয়েছে, সেটা সম্পর্কে যত বেশী সম্ভব জানতে হবে। এনালাইজ করে আপনাকে কাস্টমার বিহেভিয়ার বুঝতে হবে। এসব ব্যাপার যখন আপনার নখদর্পনে চলে আসবে, তখনই আপনি খুব সহজেই ব্যবসায় উন্নতি করতে পারবেন।
৭। স্মার্ট ভাবে ইনভেস্ট করা
ইনভেস্ট, রি-ইনভেস্ট যেকোন বিজনেসের একটা অন্যতম গুরুত্বপুর্ন অংশ। আপনি যদি চান আপনার বিজনেস ধীরে ধীরে গ্রো করতে থাকুক, তাহলে সেখান আপনাকে একবার ইনভেস্ট করে থেমে গেলেই চলবে না। আপনাকে রি-ইনভেস্ট করতে হবে আর সেটা করতে হবে যথেষ্ট স্মার্ট ভাবে। আপনাকে বুঝতে হবে এক্সাক্টলি কোন সময় আপনার ইনভেস্ট করা উচিত।
৮। এমপ্লয়িদের মোটিভেটেড রাখা
আপনার ব্যবসার সবচেয়ে বড় একটা অংশ হচ্ছে আপনার এমপ্লয়িরা, কারন তাদের কাজের পারফর্মেন্সের উপর আপনার বিজনেসের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে। তারা যদি কাজের জন্য মোটিভেটেড ফিল না করে, তাহলে সেটা আপনার ব্যবসার জন্য বিশাল ক্ষতিকর দিক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে, যেন আপনার এমপ্লয়ীরা সব সময় মোটিভেটেড থাকে। তাদের মোটিভেশন বাড়ানোর জন্য তাদেরকে ভালো অপরচুনিটি দিতে হবে। গোল সেট করে দিতে হবে, যেন সে নির্দিষ্ট গোলে পৌছাতে পারলে একটা রিওয়ার্ড পায়। এভাবে আস্তে আস্তে আগাতে হবে। এতে করেই আপনার এমপ্লয়ীদের মনোবল বৃদ্ধি পাবে এবং তারা কাজে মনোযোগ দিতে পারবে।