02/10/2022
কোটচাঁদপুরে মাদক সেবনকারী সন্দেহে যুবককে আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে, পুলিশের অস্বীকার
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-
মাদক সেবনকারী সন্দেহে এক যুবককে আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে। তবে আব্দুস সাত্তার বলছেন, আমি কোন লেনদেন করিনায়। শনিবার সন্ধ্যা রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে কোটচাঁদপুর মাছ বাজারে।
ভুক্তভোগী জীবন হোসেন বলেন, আমি শাহিন ও জুয়েল ভাইয়ের মুরগির দোকানে কাজ করি। আমি কোন মাদকদ্রব্য খায়নি। আমি মাছ বাজারে নিচে গোডাউনে মুরগী নিতে গিয়েছিলাম। এ সময় বাজারের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, সিজুসহ কয়েক জন মিলে আমাকে মারধর করতে থাকে।
এরপর পুলিশে খবর দেন তারা। পরে দারোগা সাত্তার আসেন। বলেন, তুই মাদক বিক্রি করিস, মাদক খাস। তোকে আজ মাদক মামলায় চালান দিব। এরপর তারা আমার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন।
আমি গরীব মানুষ টাকা কোথায় পাব,তখন জুয়েল ভাইকে বিষয়টি বললে,তিনি আমাকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
মুরগী ব্যবসায়ী জুয়েল হোসেন বলেন,জীবন আমার দোকানের কর্মচারি। শনিবার সন্ধ্যায় সে নিচের গোডাইনে মুরগী আনতে যান। এ সময় তারা তাকে মারধর করে আটকে রেখে আমাকে ফোন করে ডাক দেন। বলেন তাঁর আঠা খাওয়ার কথা। এরপর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুস সাত্তার আসেন। ওই সময় সাদা কাগজে সবার স্বাকর নেওয়া হয়।
পরে মাছ বাজারের সভাপতি আমিরুল ইসলাম আসেন আমার কাছে। দাবী করেন ৫ হাজার টাকা। আমার কাছে ৫ হাজার টাকা না থাকায়, তাকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে জীবন কে ছাড়িয়ে আনি।
প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল হোসেন বলেন, শনিবার তখন সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট থেকে ৮ বাজে। জীবন মাছ বাজারের নিচে মুরগী আনতে যায়। এ সময় মাছ বাজারে সভাপতি সহ কয়েক জন তাকে মারধর করে আটকে রাখে। এরপর পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। টাকা চান ৫ মাছ বাজারের সভাপতি। পরে তাদেরকে ৪ হাজার টাকা দেয়া হয়।
তিনি বলেন,জীবনকে কোন দিন মাদক বা আঠা খেতে দেখিনি। কাল তারা তাঁর বিরুদ্ধে আঠা খাওয়ার অভিযোগে মারধর করলো কেন বুঝতে পারলাম না।
কোটচাঁদপুর পৌর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুস সাত্তার বলেন, আমি ধরলাম কখন? ওই ছেলেটা মাছ বাজারের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ধরে রেখে ছিল। পরে আমি গেলাম। তবে খাই টাই কিনা আমি জানিনা।
বিষয়টি আমি ওসি স্যারকে জানাই। তিনি বলেন,যদি কিছু না পাওয়া যায়। তাহলে চেয়ারম্যানকে বলে ছেড়ে দেন। টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কোন লেনদেনে থাকিনা। যদি থাকতাম তাহলে আপনাদের সঙ্গে ও দুই একটা লেনদেন করতাম। আর ওখানে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
কোটচাঁদপুর মাছ বাজার সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, তেমন কিছুই ঘটেনি। আর তার কাছে কিছুই পাওয়া যায়নি। পরে দুই তিন চড় থাপ্পড় মেরে সই স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার অফিসে আসেন কথা বলছি।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মঈন উদ্দিন বলেন, আমার অফিসার ধরার পর আমাকে জানিয়েছিল। জানতে পারলাম ছেলেটি কম বয়সি। আর তার কাছে কিছু পায়নি। এ কারনে তাকে ছেড়ে দিতে বলেছিলাম। তবে টাকার লেনদেন হয়েছে, কিনা আমি জানিনা।
তিনি আরো বলেন, যার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, তাকে আমার কাছে পাঠান। আমি শুনে দেখি কখন কিভাবে টাকা নিয়েছেন। এরপর আমি সাত্তারকে আমি ধরছি।