06/10/2024
আবারো শিরোনামে ডা: রেজা সেকেন্দার, ভুল অপারেশনে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ।
জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ :
ঝিনাইদহে চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। বেসরকারী ক্লিনিক গুলোতে একের পর এক রোগী মৃত্যুর পর সিভিল সার্জন অফিস থেকে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন না করায় মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
এদিকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ঝিনাইদহে রিফাত (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের পর তার মৃত্যু ঘটে।
মৃত রিফাত দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলার সড়াবাড়িয়া গ্রামের বাদশা মুন্সির সন্তান।
অভিযোগ উঠেছে, মৃত্যুর পর রিফাতের মরদেহ প্রতারণার মাধ্যমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ নিয়ে এলাকাবাসি ও রিফাতের স্বজনরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।
তথ্য সূএে জানা যায়, অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যাথা নিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্কুল ছাত্র রিফাত ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসক ডাঃ রেজা সেকেন্দার রিফাতের অপারেশন করেন। অপারেশনে শেষে কিছুক্ষন পর রোগীর খিঁচুনি শুরু হয় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এদিকে পরিস্থিতি বেগতিক ও আশঙ্কাজনক বুঝতে পেরে স্বজনদের মিথ্যা শান্তনা দিতে আইসিইউ সার্পোট লাগবে বলে মৃত রোগীকে প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন ডাঃ রেজা সেকেন্দার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রিফাতের পরিবার রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রওনা দেন এবং পথিমধ্যে রাস্তায় রিফাতের মৃত্যু হয়। রাজশাহী মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান তিনঘন্টা আগেই রোগী রিফাতের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে ক্লিনিকের একটি সুত্র জানায়, এনে্স্তেসিয়া চিকিৎসক ডাঃ অপুর্ব রিফাতকে অজ্ঞানের পর তার কার্ডেয়াক ফেল করে এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। রিফাতের পিতা বাদশা মুন্সি জানান, তার ছেলে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তিনি এর বিচার ও চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে এলাকার ইউপি মেম্বর আল আমিন জানান, রিফাত এবার এসএসসি পরীক্ষা দিত। কিন্তু ভদ্র নম্র এই ছিলেটি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার বলি হয়েছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের কসাই খ্যাত চিকিৎসক রেজা সেকেন্দারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ঢাকা ল্যাবের ম্যানেজার আসিফ মিয়া ও মালিক আশরাফুজ্জামান লিপনসহ সবাই এঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। মুঠো ফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, স্কুল ছাত্র রিফাতের মৃত্যুর পর ওই ক্লিনিকটি বন্ধ করা হবে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমঝোতার ভিত্তিতে ঘটনা মীমাংসা করে ফেলেন তাই শক্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় না।
তিনি আরো বলেন, এর আগেও একাধিক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের পর ডাঃ রেজা সেকেন্দার নিজেই আর অপারেশন করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি একের পর এক অপারেশন করে যাচ্ছেন।